বেশ কিছুদিন ধরেই ওয়েব সিরিজ নিয়ে বিতর্ক চলছে গণমাধ্যম ও ফেসবুকজুড়ে। আলোচনায় আছে কয়েকটি নাম। মূল আলোচ্য বিষয় বা অভিযোগ—অশ্লীলতা। যদিও ‘বিতর্কিত’ সিরিজের তালিকায় থাকা এসব ওয়েবের সবক’টি দেখার সুযোগ হয়নি। ‘আগস্ট ১৪’ পুরোটা আর ‘বুমেরাং’ দুই পর্ব দেখেছি, বাকিটা পাইনি। এছাড়া ‘সাদরঘাটের টাইগার’-এর প্রমো দেখার সুযোগ হয়েছে। প্রমো দেখেই দেখার আগ্রহ হয়েছিল। কিন্তু কোথাও খুঁজে পাইনি। কাজেই সব ওয়েব সিরিজের বিরুদ্ধে ঢালাওভাবে অশ্লীলতার অভিযোগ আনতে পারছি না। যদিও অশ্লীলতা নিয়ে কথা বলারও ইচ্ছা নেই। এ অভিযোগও নেই। তবে যখন এত অশ্লীলতার ধুয়া তুলেছেন অনেকে, তখন দুটি কথা বলা প্রয়োজন মনে করি।
আমি সিনেমা, নাটক বা ওয়েব সিরিজবোদ্ধা নই। রিভিউ লিখিতেও বসিনি। সাধারণ দর্শক হিসেবে যা যা দেখতে চেয়েছিলাম, অথচ পাইনি, তা নিয়ে একটু বিশ্লেষণ করেছি। দর্শক হিসেবে সীমাবদ্ধতা থাকতেই পারে। তবে বলার অধিকার নিশ্চয়ই আছে।
অশ্লীলতা নিয়ে দুটি কথা বলি। আগেই বলে নেই, এটি একান্তই আমার অভিমত। যারা অভিযোগ করছেন, তারা অশ্লীলতা বলতে সম্ভবত যৌনতাকে বুঝিয়েছেন। (আমার কাছে এই অশ্লীলতা শব্দটিই অশ্লীল ও চরম আপত্তিকর মনে হয়)। কিন্তু একই ধরনের বিষয়গুলো যখন হলিউড, বলিউড বা টালিউডে দেখেন, তখন প্রশংসার তুবড়ি ছোড়েন। বলেন কী সাহসিকতা দেখিয়েছে! কী উপস্থাপনা! এ রকম আমাদের দেশে কেন হয় না? যখন ‘টাইটাইনিক’ আমাদের দেশের হলে এলো, তখন স্কুলে পড়ি। ‘টাইটানিকে’ই আলোচিত দৃশ্যটিও অশ্লীলতার মাপকাঠি উৎরাতে পারেনি। তখনো অশ্লীলতার অভিযোগ শুনেছি। অনেকে বলেছেন আমাদের দেশের হলেই এরকম সিনেমা চললে যুবসমাজ নাকি উচ্ছন্নে যাবে। যে দৃশ্য নিয়ে আপত্তি ছিল, শুনেছি একসময় ওই দৃশ্যটুকুর ওপর কালি লেপে দেওয়া হয়েছিল। সিনেমার গল্প আগে থেকেই বান্ধবীদের কাছে শুনেছিলাম। একদিন হুট করেই আমার গৃহশিক্ষকও আমাকে গল্প শোনাতে শুরু করলেন। আমার তো খুব অস্বস্তি বোধ হতে লাগলো। শেষমেষ তিনি কিন্তু আমাকে সিনেমার গল্পটা বলেছিলেন। আমার অস্বস্তি জায়গা হলো—ওই যে আপনাদের ভাষা ‘অশ্লীল’ দৃশ্যটা নিয়ে। ভাবছিলাম স্যার যদি এটা নিয়েই কথা বলেন। না তিনি সেটা বলেননি। এটুকু মাত্রাজ্ঞান তার ছিল। কিন্তু নারী-পুরুষ যৌনতা নিয়ে সরাসরি কথা বলবে—এর অনুমোদন তো সমাজ বা পরিবার দেয় না। সমস্যা সেখানেই।
যা বলছিলাম, দেশে যখন এমন মানের দর্শকের তুলনায় আপগ্রেটেড মুভি বানানো হলো, তখন সেটা অশ্লীলতা। এখানে তো লেখাই আছে ১৮+ দের জন্য। তাহলে কি পরিবারের সব সদস্যতে নিয়ে কেউ দেখেছেন?
সিনেমা, নাটক আর এ ধরনের সিরিজ দেখার বিষয়ে ওর রিভিউ আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ ওর দেখার ভঙ্গি আলাদা। ওর থেকে আমি চিন্তার নানা দিকও পাই।
যারা অভিযোগ করেছেন, তাদের কাছে প্রশ্ন—যৌনতাই কি অশ্লীলতা? কিন্তু অভিযোগ করে যারা মুখে ফেনা তুলে ফেলছেন, তারাই ঘরের দরজা বন্ধ করে নীল ছবি দেখেন। তারাই কাঁথার নিচে মোবাইলে লুকিয়ে সানি লিওন বা আর যারা আছেন, তাদের ছবি দেখেন। কই তখন তো যৌনতাকে অশ্লীল লাগে না! সিনেমার ফিতায় বাস্তবতা দেখালে যৌনতা তখন অশ্লীলতা হয়ে যায়। এই বিষয়টি নিয়ে মনে হয়—এদেশে কথা বলা বারণ। কারণ সমাজ এই খোলামেলা আলোচনা মেনে নিতে পারে না। পরিবার তো অনুমতিই দেয় না। কিন্তু যখন প্রতিদিন ধর্ষণের খবর পান তখনও এটাকে নৃশংশতা বা চরম অশ্লীলতা বলে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন না। তখন তো বিবৃতি দিতে দেখা যায় না। রাস্তায় হেঁটে যাওয়ার সময় পাশে হাঁটতে থাকা মেয়েটির শরীরের হাত দেন, চোখ দিয়ে তাকে ধর্ষণ করেন তখন অশ্লীল লাগে না? ওড়না না পরার কারণে তাকে অশ্রাব্য কথা বলেন কিংবা চ্যাটবক্সে বা কথা বলার সময় নানা ধরনের ইঙ্গিতপূর্ণ কথা বলেন, তখন খারাপ লাগে না। যখন মুখের বুলি থাকে গালি তখন অশ্লীল লাগে না? যখন স্কুল বা মাদ্রাসাশিক্ষকরা শিক্ষার্থীকে যৌন নির্যাতন করেন, তখন কোথায় যায় অশ্লীলতা? কারণ তখন তো আপনি একাই দর্শক। শ্রোতা হচ্ছেন ভিকটিম। কেউ দেখছে না, শুনছেও না।
বাণিজ্যিক চলচ্চিত্রে যখন বছরের পর বছর কাটপিস নামক বিষয় চলতো, কাটপিস না হলে নাকি হলে মানুষ যেতো না তখনো তারা অশ্লীলতার ধুয়া তুলেছেন। কাটপিসও তাদের কাছে অশ্লীলতা আবার ওয়েব সিরিজে দেখানো দৃশ্যগুলোও অশ্লীল। আসলে এই অশ্লীলতার সংজ্ঞা জানেতে চাই। ধর্ষণ বা অন্তরঙ্গ দৃশ্যের নামে যা দেখানো হয় তা তো রীতিমতো ভালো গার লাগে। ওটাই অশ্লীলতার চরম পর্যায়ে। আসলে যারা অভিযোগ তোলে তাদের উচিত—শ্লীলতার একটা সীমারেখা টেনে দেওয়া, যাতে নাটক, সিনেমা, ওয়েব সিরিজ বানানোর সময় সেই সীমারেখা সবাই মেনে চলেন।
এই শ্লীল-অশ্লীলতার ভিড়ে আমার মূল কথাই হারিয়ে যাচ্ছে। ফেসবুক ও গণমাধ্যমের কল্যাণে ‘আগস্ট ১৪’ বেশ আলোচনায় ছিল। তবে এটা যে বানানো হবে, তা নিয়ে আরও আগে থেকেই খবর ছিল। মানে টুশি বা ঐশীর ঘটনা নিয়ে যে কিছু একটা বানানো হবে, সেটা তো আগেই খবর ছিল। ফেসবুকে বেশ কয়েকজন ভালো রিভিউ দিলো। আমি দেখবো দেখবো করছিলাম। কিন্তু সময় করে উঠতে পারছিলাম না। পরে এক বান্ধবী জানালো, ও দেখেছে। আমাকেও দেখতে বললো। বললোম, আগে দ্যাখ, এরপর এ নিয়ে কথা হবে। সিনেমা, নাটক আর এ ধরনের সিরিজ দেখার বিষয়ে ওর রিভিউ আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ ওর দেখার ভঙ্গি আলাদা। ওর থেকে আমি চিন্তার নানা দিকও পাই। সে এটা নিয়ে পড়াশোনা করে বা করছে। আমি কোনো এককালে কিছু পড়েছিলাম পাঠ্যসূত্রে। ওই সময়ই শিক্ষকরা এগুলো দেখার দৃষ্টিভঙ্গিগত বিষয় বলেছিলেন। সেখানে থেকেই শুরু।
এখানে অনেক ভাবতে পারেন—আমি মা-বাবাকে দায়ী করছি। টুশির দায় নেই। না তা নয়। সন্তানকে একটা পর্যায় পর্যন্ত গড়ে তোলা মা-বাবারই দায়িত্ব। সেদিকে অবহেলা করলে এরকম অনেক টুশি তৈরি হবে সবার অজান্তে।
যাই হোক, এক রাতে টানা সাড়ে তিন ঘণ্টা ধরে সিরিজটা দেখেই ফেললাম। ঘটনা, চরিত্র সবই জানা। এত এত লেখালেখি হয়েছে যে, এর অজানা কিছু নয়। ওয়েব সিরিজ আমিও দেখলাম। টানটান উত্তেজনা পুরাটা সময়। ক্যামেরার কাজ ভালো, দৃশ্যায়নও চমৎকার। অভিনয় শিল্পী ঐশী-রূপী-টুশি তো মারাত্মক। পুরো চরিত্র সেভাবেই ফুটিয়ে তুলেছেন, যেভাবে কাহিনিতে লেখা হয়েছে। বাদবাকি টেকনিক্যাল বিষয় সেভাবে বুঝি না। তাই বলতেও পারবো না। তবে সুখদেখ্য বলা যায় সিরিজটা।
আমার প্রশ্ন অন্য জায়গায়। কেন সিরিজটা একপাক্ষিক হলো? একজন ঐশী স্যরি টুশি, টুশি হয়ে ওঠার কারণগুলো কেন থাকলো না? এজন্য কি শুধু সে একাই দায়ী? এখানে আর কারও দায় থাকে না। তার পরিবার, পরিজন, স্কুল, সমাজ, বন্ধু-বান্ধব, পরিবেশ সব কিছু তাকে টুশি হয়ে উঠতে সর্বাত্মক সাহায্য করে। সেই বিষয়টি তো নেই। অপরাধীকে যদি এত স্পষ্ট করে অপরাধী প্রমাণিত করা যায়, তাহলে বাবা-মায়ের এই উদাসীনতাও স্পষ্ট করে দেখানো উচিত।
যৌনতার শিক্ষা আমাদের দেশে নেই বলেই লুকিয়ে লুকিয়ে দেখে লোকজন। আলোচনাও করে গোপনে। এ নিয়ে জানার জন্য আলোচনা সম্ভবত করে না উত্তেজনা সৃষ্টি জন্যই করে। এ বিষয়ে শিক্ষা থাকলে টুশির মতো হয়তো ল্যাপটপে লুকিয়ে দেখতো না।
যা দেখানো হলো সেটা তো জানা কাহিনি। শুধু ফিউশন করে একটু সুন্দরভাবে সেলুলয়েডের ফিতায় দেখানো হলো টুশি কী ধরনের ভয়ঙ্কর অপরাধী। টুশির বাবা-মায়ের অবহেলার দায়টা কি নেই? সেই বিষয়টি কেন আনা হলো না? সন্তান দিনের পর দিন ‘উচ্ছন্নে’ যাচ্ছে সেটা বাবা-মায়ের নজরেই নেই। মেয়ে কী করছে, সে বিষয়ে তারা উদাসীন। বাড়ি কে এলো, কে গেলো—সেটা জানা তো দূরের কথা। মেয়ে যে নানা ধরনের নেশায় আসক্ত হয়ে পড়ছে, সেদিকেও বাবা-মায়ের কোনো খেয়াল নেই। টুশিকে যখন এমন জঘন্য অপরাধী হিসেবে দেখানো হয়েছে, তখন তো অপরাধী হয়ে ওঠার পেছনে যাদের উদাসীনতা রয়েছে, সেটাও দেখানো উচিত। এখানে অনেক ভাবতে পারেন—আমি মা-বাবাকে দায়ী করছি। টুশির দায় নেই। না তা নয়। সন্তানকে একটা পর্যায় পর্যন্ত গড়ে তোলা মা-বাবারই দায়িত্ব। সেদিকে অবহেলা করলে এরকম অনেক টুশি তৈরি হবে সবার অজান্তে।
আমি মফস্বল শহরে বড় হয়েছি। ২৪ ঘণ্টা মায়ের নজরদারিতে থাকতে হতো। তার চোখ ফাঁকি দিয়ে কিছু করা সম্ভবই ছিল না। আমার সময়ের সব মেয়ের গল্পই এমন ছিল। বিশেষ করে যারা মফস্বল শহর থেকে আসে। মা কর্মজীবী ছিলেন না। ঘরের কাজ করতেন। সে কাজ নেহাত কম নয়। কিন্তু তিনি তো জানতেন কোন সময় কিভাবে চালাতে হবে সন্তানকে। কঠোর নজরদারি কারণে সেই সময় মনে হতো ‘বেশি বেশি শাসন করছেন’। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার সময়ও কড়া নির্দেশনা ছিল, সন্ধ্যার আগে হলে ঢুকতে হবে। কোনোভাবেই যেন রাত না হয়। হলে ওঠার পর অনেক বছরই বিকাল বিকাল হলে ঢুকতাম। অনেক পরে গিয়ে সন্ধ্যায় হলে গেটে আড্ডা দেওয়া শুরু করি। কাজের সূত্রে সন্ধ্যা হতো ফিরতে। সেই সময় অনেক কিছু থেকেই বুঝতে পারি মায়ের ওই সময়ের কঠিন শাসন কতটা প্রয়োজন ছিল।
চিন্তার ভিন্ন জায়গা বা দৃষ্টিভঙ্গিগুলো থাকলে আলোচনায় শুধু অশ্লীলতা বা যৌনতা থাকতো না। নতুন ঘটনা হিসেবে সবাই যৌনতাই হয়তো পেয়েছে, তাই তা নিয়েই আলোচনায় মুখর
কোনো মেয়ে যখন ধর্ষণের শিকার হয় বা কোনো ঘটনার ভিকটিম হয় কিংবা যদি ডিভোর্স দেয়, তাহলে সমাজ চলে আসে তার চরিত্র বিশ্লেষণে। সে কেমন ছিল, ছেলেদের সঙ্গে মিশতো কি না, বাসায় ছেলেদের আসা-যাওয়া ছিল কি না, পোশাক কেমন ছিল—এ রকম হাজারো বিষয়ে গবেষণা শুরু হয়। কিন্তু আসল ঘটনা চলে যায় অন্তরালে। সবশেষে বিষয়টি দাঁড়ায়—মেয়েটার চালচলন ভালো ছিল না, রাত করে বাইরে থেকে বাসায় ফিরতো। অনেক ছেলে বন্ধু ছিল। ও ধর্ষণের শিকার হবে না তো কে হবে? এর সংসার ভাঙবে না তো কার ভাঙবে? এখানেও টুশির বিষয়টি তাই হয়েছে। শেষমেষ তাকেই অপরাধী করা হলো। তার এমন হওয়ার পেছনের উপাদানগুলো নিয়ে কেউ কথাই বললো না। যেভাবে দেখানো হলো, তাতে মনে হলো সে জন্মগতভাবে অপরাধী। একজন ভালো পুলিশ কর্মকর্তার ঘরে এরকম অপরাধী থাকলো, আর তিনি ধরতেই পারলেন না!
মেয়ে কাদের সঙ্গে মিশছে মা-বাবা তা জানেই না। কারা তার বন্ধু-বান্ধর, তাও জানে না। সন্তানকে যে সময় দিতে হয়, তার বালাই নেই। বলতে পারেন, ব্যস্ত সময়ে সময় কোথায় সময় দেওয়ার! তাহলে কেন অপরাধী হওয়ার জন্য শুধু টুশিকেই দায়ী করা হবে। টুশি কিভাবে এমন একটি চক্রের সঙ্গে জড়িয়ে পড়লো, তাও নেই। খুনের পর তার বন্ধুরা তাকে টাকা আর স্বর্ণের জন্য চাপ দিতে দেখা গেছে। অথচ তারা খুনের সঙ্গে জড়িত নয়। তারা খুনের পরিকল্পনার কথা জানতো অথচ খুনের সময় তাদের কেউ ছিল কি না, সেই প্রশ্নের মীমাংসা নেই। বিষয়টা খানিকটা সংশয়ের। নেশাখোর ও অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে জড়িত বন্ধুদের দেওয়া হলো ক্লিনচিট। এসব বিষয় কোনো রকম দেখিয়েই ফোকাস করা হলো—টুশিকে কতটা নৃশংস অপরাধী দেখানো যায়, তা।
টুশি অপরাধ করেছে—এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। সেটা প্রমাণতিও। সেজন্য সাজাও পেয়েছে। কিন্তু তার অপরাধী হয়ে ওঠার পেছনে গল্পটাও তো জানা দরকার। সব অপরাধীকেই তার আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া হয়। তার বক্তব্য উপস্থাপন করা হয়। এখানে সেটা নেই। যেসব দর্শকের যৌনতা নামক সুড়সুড়ি নেই, তারা অন্তত এ বিষয়টা দেখতে চায়। কেন সে অপরাধী তার কথাগুলো কেন নেই? কিভাবে সে এতটা নৃশংস হয়ে উঠলো বলে প্রমাণিত হয়েছে, জানানোর প্রয়োজন ছিল। অন্তত কারণ খোঁজার চেষ্টা করা দরকার ছিল।
নাটক, সিনেমা, ওয়েব সিরিজ শুধু বিনোদন তো নয়। অনেক মানুষের কাছে মেসেজ দেওয়ার একটি মাধ্যমও। শুধু বিনোদন দেওয়া জন্য এ ধরনের সত্য ঘটনা অবলম্বন করে কিছু বানানোর প্রয়োজন কী? যখন দাবি করা হচ্ছে—সত্য ঘটনা অবলম্বন করে মুভি বানানো হচ্ছে, তখন শুধু সাদাচোখে সবাই যা দেখে বা জানে, তাই আবার রঙিন ফিতায় এত ক্লাইমেক্স দিয়ে দেখানোর কী আছে?
অবশ্য কিছু বিষয় আছে, চাইলেও দেখানো যায় না হয়তো। হাত-পা বাঁধা থাকে. সেটাই করতে হয়। চিত্রনাট্য অন্য কোথাও আগেই রচিত হয়ে থাকে। আগেই বলা থাকে, এভাবে করতে হবে। সেটা ভিন্ন বিষয়। এগুলো সম্পূর্ণই অনুমান নির্ভর হয়ে বললাম। ভিন্ন চিন্তার জায়গা ইচ্ছা করেই করতে দেওয়া হয় না। এজেন্ডা আগেই ঠিক করা থাকে। চিন্তার ভিন্ন জায়গা বা দৃষ্টিভঙ্গিগুলো থাকলে আলোচনায় শুধু অশ্লীলতা বা যৌনতা থাকতো না। নতুন ঘটনা হিসেবে সবাই যৌনতাই হয়তো পেয়েছে, তাই তা নিয়েই আলোচনায় মুখর। কিংবা এটি মুখরোচক বিষয়, এটি নিয়ে আলোচনা তুলে বাকিগুলো আড়াল করে দেওয়া হচ্ছে।
লেখক: সংবাদকর্মী