আঠারো শতকে ইউরোপে শিল্পবিপ্লব ঘটে গেছে। সারা পৃথিবীতে ইউরোপের নবজাগরণের ধারা ক্রমান্বয়ে প্রসারিত হতে থাকে। ভারতবর্ষে ব্রিটিশের শাসন এক পর্যায়ে পাকাপোক্তভাবে আসন গেড়ে বসে। ঊনিশ শতকের প্রথম ভাগ। ছেলেদের জন্য স্কুল প্রতিষ্ঠিত হলেও মেয়েদের শিক্ষার জন্য তখনো কোনো স্কুল স্থাপিত হয়নি। তখনো সেকালের তথাকথিত সমাজপতি ও পণ্ডিতদের মতে, বিদ্যাশিক্ষা নারীদের জন্য অমঙ্গলের কারণ হিসেবে বিবেচিত। সেকালের পত্রিকায় লেখা হয়েছিল, ‘বালিকাগণকে বিদ্যালয়ে পাঠাইলে ব্যাভিচার সংঘটনের আশঙ্কা আছে।’
নারীর শিক্ষার প্রতিকূল পরিবেশে ১৮৫১ সালে বেথুন সাহেব মাত্র একুশটি ছাত্রী নিয়ে মেয়েদের শিক্ষার জন্য কলকাতায় বেথুন স্কুল স্থাপন করলেন। তথাকথিত সমাজপতিদের অসহযোগিতার জন্য ঊনিশ বছর পরেও ছাত্রী সংখ্যা কিন্তু তিরিশের ওপরে ওঠেনি। সামাজিক ও ধর্মীয় বাধা-নিষেধের ফলে ভারতীয় উপমহাদেশের সেকালের মেয়েরা অন্ধকার বৃত্তে অবরুদ্ধ থেকেছে যুগ যুগ ধরে।
কলকাতার প্রগতিশীল ঠাকুরবাড়ির ও ব্রাহ্মসমাজের অন্যতম পুরোধা কেশবচন্দ্র সেন বাড়ির মেয়েরা পর্যন্ত কী ধরনের অন্ধকার বৃত্তে অবরুদ্ধ ছিলেন তা উঠে এসেছে সেই বাড়ির কয়েকজন মহিয়সী নারীর লেখা থেকে।
ব্রাহ্ম সমাজের অন্যতম পুরোধা কেশবচন্দ্র সেনের মা সারদা সুন্দরীর লেখা থেকে আমরা প্রথমে দেখার চেষ্টা করব ঊনিশ শতকের এক অবরোধবাসিনী এক কিশোরীর করুণ কাহিনির ভেতর। তিনি লিখেছেন, ‘আমার ৯ বৎসর বয়সে বিবাহ হয়। হিন্দুর নিয়মমতে এক বৎসর বাপের বাড়ি ছিলাম। তারপর ১০ বৎসর বয়সে শ্বশুরবাড়ি আসি।’
বাংলা সাহিত্যে প্রথম আত্মচরিত লেখিকা রাসসুন্দরী দেবী ( জন্ম ১৮০৯) শুনিয়েছেন তার বালিকাবধূর জীবনের মর্মস্পর্শী কাহিনী। রাসসুন্দরীর বিয়ে হয় দশ বছর পেরোনোর পর। কিন্তু অন্য মেয়েদের পুতুল খেলার বয়স পেরোনোর আগেই বিয়ের পিঁড়িতে বসতে হতো। তারই প্রমাণ আমরা পাই অতীতের পত্রপত্রিকা ও আত্মজীবনী থেকে।
আঠারো বছর বয়স পর্যন্ত ছেলেমেয়েরা শিশু হিসেবে আজ স্বীকৃত। অথচ ঊনিশ শতকের অতিশিশু বয়সের মেয়েদের পরিণতি ছিল অতি করুণ। সেকালের মেয়েদের করুণ অবস্থার ঐতিহাসিক প্রমাণ উপস্থাপনের জন্য সে সময়ের কয়েকজন শ্রেষ্ঠ বাঙালির নাম করা যেতে পারে। তাঁদের নামের পাশাপাশি তাঁদের স্ত্রীদের বয়সের তালিকা উপস্থাপন করলে আমাদের বুঝতে কষ্ট হবে না, সে যুগে মেয়েদের ব্যক্তিজীবন কেমন করুণ ছিল।
দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের বয়স ১৮ কিংবা ১৫, তাঁর স্ত্রীর সারদা দেবীর বয়স মাত্র ৬। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের বয়স ১৪, তাঁর স্ত্রীর বয়স ৮, বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের বয়স ১৪, আর তাঁর স্ত্রীর বয়স মাত্র ৫। কেশবচন্দ্র সেনের বয়স ১৮, তাঁর স্ত্রীর বয়স ৯, রবীন্দ্রনাথের বয়স ২২, আর স্ত্রী মৃণালিনী দেবীর বয়স ১১ । এখানে সে যুগের খ্যাতিমান ব্যক্তি শিশিরকুমার ঘোষ, মতিলাল ঘোষের বোন সৌদামিনীর (জন্ম ১৮৪২) বিয়ে হয়েছিল অতি বাল্য বয়সে। শুনলে অবাক হতে হয়, তাঁর মায়ের বিয়ে হয়েছিল মাত্র আড়াই বছর বয়সে। এ থেকে সহজেই বুঝতে পারা যায়, সেকালে মেয়েদের বিবাহিত জীবন কেমন ছিল।
রায়গুণাকর ভারতচন্দ্র বাঙালি বধূর সেকালের যে চিত্র তুলে ধরেছেন, তার মধ্যে স্বামীগৃহে বালিকা বধূর অবস্থার করুণ চিত্র ওঠে এসেছে। রায়গুণাকর ভারতচন্দ্র লেখেন, ‘শাশুড়ি রাগিনী, ননদী বাঘিনী, সতিনী নাগিনী বিষে ভরা।’
বালিকা বয়সে বিয়ের সঙ্গে সঙ্গে স্বামীর বহু বিবাহ তো আর একটি উপসর্গ যা মরার ওপর খাড়ার ঘা রূপে প্রায়ই দেখা দেয় বহু বালিকা বধূর কপালে।
বৃদ্ধস্য তরুণী ভার্যা হলেও কথা ছিল! বৃদ্ধের সঙ্গে যুবতী মেয়ের বিয়ে না হয়ে অসংখ্য বৃদ্ধের সঙ্গে বয়ঃসন্ধী কিশোরীর বিয়ে হয়েছিল, যার ভূরি-ভূরি প্রমাণ আছে সেকালে বই পুস্তকের পাতায় পাতায়।
সেকালের মেয়েদের শিক্ষাবিষয়ক ধ্যান-ধারণা, আদেশ-নির্দেশ ও ধর্মের অনুশাসনের দুই-একটা নমুনা এখানে তুলে ধরা যেতে পারে। গৌর মোহন বিদ্যালঙ্কারের স্ত্রীশিক্ষা বিষয়ক বইয়ের সেই মেয়েটিকে মনে পড়ে? সে বলেছিল, সেকালে স্ত্রী লোকেরা কহেন যে, লেখাপড়া যদি স্ত্রীলোকে করে তবে সে বিধবা হয়, এ কি সত্য কথা, যদি ইহা হয়, তবে তবে আমি পড়িব না।, কি জানি ভাঙা কপাল যদি ভাঙে।’
হিন্দুধর্মের শাস্ত্রকার জীমূতবাহনের ‘দায়ভাগ’ গ্রন্থের একটি শ্লোক ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরকে বড়ই মর্মাহত করে। দায়ভাগ গ্রন্থে বলা হয়, ‘স্তন প্রকাশের পূর্বেই কন্যা দান করিবে। কন্যা যদি বিবাহের পূর্বেই ঋতুমতি হয়, দাতা ও গ্রহীতা উভয়েই নরকগামী হয় এবং পিতা, পিতামহ, প্রপিতামহ বিষ্ঠায় জন্মগ্রহণ করেন। অতএব ঋতু দর্শনের আগেই কন্যা দান করিবে।’ এ কারণেও তৎকালীন হিন্দু সমাজের বাবা-মা তাদের কন্যাদের বাল্যবিবাহ দেওয়ার জন্য উৎসাহী, অনুপ্রাণিত এমনকি বাধ্যও হয়। কুলীন নামধারী হিন্দুদের মধ্যে কিশোরী বিবাহের প্রবণতা ভয়াবহ রূপ পরিগ্রহ করে হিন্দুধর্মের গোড়া অনুশাসন ও পুরোপুরি মেয়েদের শিক্ষা বঞ্চিত করে অন্তঃপুরে আবদ্ধ রাখাসহ নানাবিধ কারণে।
সেকালের মেয়েদের শিক্ষাবিষয়ক ধ্যান-ধারণা, আদেশ-নির্দেশ ও ধর্মের অনুশাসনের দুই-একটা নমুনা এখানে তুলে ধরা যেতে পারে। গৌর মোহন বিদ্যালঙ্কারের স্ত্রীশিক্ষা বিষয়ক বইয়ের সেই মেয়েটিকে মনে পড়ে? সে বলেছিল, সেকালে স্ত্রী লোকেরা কহেন যে, লেখাপড়া যদি স্ত্রীলোকে করে তবে সে বিধবা হয়, এ কি সত্য কথা, যদি ইহা হয়, তবে তবে আমি পড়িব না।, কি জানি ভাঙা কপাল যদি ভাঙে।’
হিন্দুধর্মের অনুশাসন সেকালের মেয়েদের কিভাবে এক অন্ধকার জগতে অবরুদ্ধ করে রেখেছিল তা জানতে হলে হিন্দুধর্মীয় অনুশাসন ও তা কার্যকর করার প্রতি দৃষ্টিপাত করতে হয়। আর্য ঋষি মনু বলেছেন, ‘স্ত্রীলোকের কাজ পুত্রোৎপাদন, ধর্মকর্মের অনুষ্ঠান, শুশ্রূষা, উত্তম রতি এবং পিতৃলোক এবং স্বর্গলাভ।’
আবারও আমরা রাসসুন্দরীর জবানীতে এই বিষয়ের ওপর আলোকপাত করে দেখার চেষ্টা করব মনুর উল্লিখিত অনুশাসনের পরিণতি কেমন ছিল। রাসসুন্দরী লেখেন, ‘১৮ বৎসরে আমার প্রথম সন্তানটি হয় আর ৪১ বৎসরে সর্বকনিষ্ঠ পুত্রটি হইয়াছে। ইহার মধ্যে ২৩ বৎসর আমার যে কী প্রকার অবস্থায় গত হইয়াছে তাহা পরমেশ্বর জানিতেন, অন্য কেহ জানিত না।’
কন্যা সন্তান জন্ম দিলে প্রসূতির ভাগ্যে চরম দুর্ভোগ নেমে আসার কথা লিখেছেন, ঊনিশ শতকের লেখিকা কৈলাশবাসিনী দেবী। একজন বিবাহিতা নারীর কৈশোর ও যৌবনের ২০ থেকে ২৫ ভাগ সময়ই ব্যয় হতো গর্ভধারণ প্রক্রিয়ায়।
ঊনিশ শতক কিংবা তারও আগে হিন্দু নারীসমাজ তমস আঁধারের গহীন সমুদ্রে ডুবতে বসেছিল। শাস্ত্রের নামে কালো অনুশাসন তৎকালীন হিন্দু নারী সমাজকে আষ্ঠেপৃষ্ঠে বেঁধে ফেলেছিল। সতীদাহ প্রথার বিরুদ্ধে রাজা রামমোহন রায়ের প্রতিবাদ বাঙালি হিন্দু নারীর প্রাণে সঞ্জীবনী শক্তি যুগিয়েছিল। রাজা রামমোহন রায় ‘জ্ঞানপূর্ব্বক স্ত্রী হত্যা’ বা ‘সতী’র বিরুদ্ধে পুস্তিকা লিখে সতীদাহ নিবারণের জন্য আন্দোলন গড়ে তোলেন। সতীদাহ নিবারণের জন্য বড়লাট উইলিয়াম বেন্টিংক তৎপর হন। রামমোহন বেন্টিংক-এর পাশাপাশি আরও দুটি নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তারা হলেন চার্লস মেটকাফ এবং ডব্লিউ বি বেলি। তাঁদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ১৮৩০ সালের ২ ফেব্রুয়ারি সতীদাহ প্রথা নিষিদ্ধকরণ আইন পাস হয়।
বিদ্যাসাগর এর বিরুদ্ধে ঘোরতর আপত্তি তুলে নামধাম উল্লেখ করে কিছু কুলীনের সন্ধান দেন যারা বহুবিবাহ করে শিশু অথবা কিশোরীদের স্ত্রী হিসেবে ঘরে তুলেছিলেন। তাঁর দেওয়া তালিকায় দেখা যায় ১৮৭১ সালে হুগলির ৩৩ জন কুলীন ব্রাহ্মণ কয়েক শ মেয়েকে বিয়ে করে বহাল তবিয়তে সংসার যাত্রা নির্বাহ করেছেন
পুরুষের বহুবিবাহে সে যুগে ব্যাপক আকার ধারণ করে, অসংখ্য বালিকাকে বহুস্ত্রীর অধিকারী পুরুষকে স্বামিত্বে বরণ করতে হয় কোনো প্রকার বাদপ্রতিবাদ না করে। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর পুরুষদের বহুবিবাহ সম্বন্ধে ভাবিত হয়ে বহুবিবাহ রোধ কল্পে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। তিনি বহুবিবাহ বিষয়ক প্রথম বইটিতে ব্যঙ্গচ্ছলে বহুবিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ পুরুষদের উদ্দেশে লেখেন, ‘তাহাদের চরিত্র অতি বিচিত্র। চরিত্র বিষয়ে তাদের উপমা দিবার স্থান নাই। তাহারা তাহাদের একমাত্র উপমা।’ বিদ্যাসাগর যখন প্রবল উৎসাহে বাল্য বিবাহ ও বহুবিবাহ রোধের আন্দোলনে অবর্তীর্ণ হন তখন এমন একটা কথা শোনা গিয়েছিল যে, কুলীনের বহুবিবাহ জনশ্রুতি মাত্র।
বিদ্যাসাগর এর বিরুদ্ধে ঘোরতর আপত্তি তুলে নামধাম উল্লেখ করে কিছু কুলীনের সন্ধান দেন যারা বহুবিবাহ করে শিশু অথবা কিশোরীদের স্ত্রী হিসেবে ঘরে তুলেছিলেন। তাঁর দেওয়া তালিকায় দেখা যায় ১৮৭১ সালে হুগলির ৩৩ জন কুলীন ব্রাহ্মণ কয়েক শ মেয়েকে বিয়ে করে বহাল তবিয়তে সংসার যাত্রা নির্বাহ করেছেন। এই সংখ্যার প্রতি দৃষ্টিপাত করলে আজকের দিনে অবিশ্বাস্য মনেও হতে পারে। বহুবিবাহ ও বাল্য বিবাহের ফলে বহু বিবাহিতা শিশু কিংবা বালিকা যৌবনবতী হয়ে উঠতে না উঠতেই তার স্বামীর মৃত্যু হতো। ফলে অকালবৈধব্য তাদের সারা জীবনের সাথী হিসাবে জীবনের আষ্ঠেপৃষ্ঠে বাঁধা হয়ে যেত। বালবিধবাদের ভগ্যে ঘটত অশেষ দুর্গতি। বিদ্যাসাগর মহাশয় বিধবাদের বিবাহের আন্দোলনে অবতীর্ণ হন বালবিধবাদের জীবনের করুণ পরিণতি উপলব্ধি করেই। বিধবা বিবাহ আন্দোলনের পরেই বিদ্যাসাগর শুরু করেন কৌলিন্য প্রথা উচ্ছেদের জন্য আন্দোলন।
সেকালের বাঙালি হিন্দু নারী সমাজের পাশাপাশি বাঙালি মুসলমান মহিলাদের অবস্থাও কোনোক্রমেই সুখকর ছিল না। তারা ছিল সম্পূর্ণ অন্তঃপুরবাসিনী। মুসলিম মেয়েদের অন্ধকার বৃত্ত হতে আলোয় আনতে যে সব মহিয়সী মহিলারা এগিয়ে আসেন তাদের মধ্যে প্রথমেই নাম করতে হয় মুশিদাবাদের জনৈক নবাবপত্নী ফেরদৌস মহলকে। তিনি প্রথম ১৮৯৭ সালে কলকাতায় মুসলিম বালিকা বিদ্যালয় স্থাপন করেন।
ঊনিশ শতকের হাতেগোনা আরও কয়েকজন মহিয়সী মুসলিম নারী মুসলিম মেয়েদের অন্ধকার বৃত্ত থেকে আলোয় আনার সংগ্রামে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখেন। এদের মধ্যে বিবি তাহেরুননিসা,নওয়াব ফয়জুনন্নেসা চৌধুরানী, করিমুন্নেসা খানম প্রমুখের নাম করতে হয়। তৎকালের বামাবোধিনী পত্রিকায় বিবি তাহেরুননিসার লেখা একটি লেখা থেকে সেকালের মুসলিম মেয়েদের সামাজিক ও পারিবারিক অবস্থার চিত্র ফুটে উঠেছে।
মুসলিম নারীর শিক্ষার অগ্রদূত বেগম রোকেয়া। আজ থেকে প্রায় একশ’ বত্রিশ বছর আগে নারী শিক্ষার অগ্রদূত বেগম রোকেয়া জন্ম গ্রহণ করেন রক্ষণশীল এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পবিবারে। ধর্মীয় শিক্ষার বাইরে মুসলিম নারীদেরকে শিক্ষা লাভের সুযোগ না থাকলেও বেগম রোকেয়া নিজের অক্লান্ত চেষ্টায় স্বশিক্ষিত হয়ে এক পর্যায়ে নিজেকে সঁপে দেন নারী শিক্ষা প্রসারে জন্য। তিনি মাত্র আট জন ছাত্রী নিয়ে ১৯১১ সালে কলকাতায় প্রতিষ্ঠা করেন সাখাওয়াত মেমোরিয়াল গালর্স স্কুল। অন্ধকার বৃত্তে আবদ্ধ মুসলিম সমাজের নারীদেরকে আলোর বৃত্তে আনার জন্য বেগম রোকেয়া যে অবদান রাখেন তা কিংবদন্তীতুল্য।
ঊনিশ শতকে সাধারণ বাঙালি মুসলিম সমাজে নারী শিক্ষার আলো যেমন পৌঁছয়নি, তেমনি বাল্যবিবাহ, বহুবিবাহ স্থায়ী আসন গেড়ে বসেছিল। তাছাড়া, ছিল তালাকের মতো অনুশাসন। তালাকের যাঁতা কলে পিষ্ট হয় অগণিত মুসলিম নারী। তাদের যাপিত জীবনেও হিন্দু নারীদের মতো নেমে আসে তমসা।
সেকালের নারী সমাজের রুদ্ধ বাতায়ন আজ খুলে গেছে, তা আজ বলতেই হবে। নারীর অন্ধকার বৃত্তে আলোর উদ্ভাসকে স্বাগত জানাই।