একুশে পদকপ্রাপ্ত দেশবরেণ্য সাংবাদিক রিয়াজ উদ্দিন আহমেদের মৃত্যুতে সহৃদয় একজন আপন মানুষকে হারিয়ে ফেলেছি। তার সঙ্গে আমার দীর্ঘদিনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। সম্পর্কটা পারিবারিক হয়ে উঠেছিল। আত্মীয়ও ছিলেন। সবচেয়ে বড় ব্যাপার হলো, তিনি আত্মার আপনজন ছিলেন। তার মৃত্যুতে গভীরভাবে শোকাহত।
আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছি। তিনি আমার এক বছরের বড় ছিলেন। আমরা এসএম হলে থাকতাম। আমি ছোট হওয়ার পরও তিনি অসম্ভব সম্মান করতেন। সাহিত্য সংস্কৃতি দেশের অর্থনীতি বহু বিষয়ে আমাদের আলোচনা হতো। গুলশানে বসবাস করায় আমাদের প্রতিদিনই দেখা হতো। সকালে একসাথে হাঁটতাম। জগিং করতাম। নাস্তা করতাম। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করতাম। এমনকি আমার বাসা থেকে রান্না করে মাঝেমধ্যে তার বাসায় পাঠাতাম। তিনিও তার বাসার রান্না আমাদের বাসায় পাঠাতেন।
পারিবারিক গভীর একটা সম্পর্ক ছিল আমাদের। নিরহঙ্কার এ রকম সদালাপী মানুষ এই সময়ে বিরল। আমরা বিরল মানুষটিকে হারিয়ে ফেললাম। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আমাদের দেখা হতো। দেখা হলেই নিজেই আগে এগিয়ে এসে কথা বলতেন। কুশলাদি জানতে চাইতেন। কাছে বসাতেন। এখন তাকে খুব অনুভব করবো।
সাংবাদিকতা জগতের এই কিংবদন্তি এতটা সাধারণভাবে চলতেন, তাকে দেখে কখনো মনে হয়নি তিনি দেশখ্যাত বিখ্যাত সাংবাদিক। এরকম সাংবাদিক বহু যুগের সাধনায় একজন জন্মে।
অনেক আগে এক অনুষ্ঠানে তিনি আমাকে নিমন্ত্রণ করেছিলেন। সেখানে মধ্যমণি ছিলেন আমেরিকান রাষ্ট্রদূত। তিনি আমাকে অনেক সমীহ করে রাষ্ট্রদূতের পাশে বসালেন। এই সম্মান আমাকে আবেগ আপ্লুত করেছিল। তাকে নিয়ে আমার অজস্র স্মৃতি অজস্র কথা। মনটা ব্যথায় ভরে গেছে। তার চলে যাওয়ায় আমার চারপাশটা শূন্য মনে হচ্ছে। সাংবাদিকতা জগতের এই কিংবদন্তি এতটা সাধারণভাবে চলতেন, তাকে দেখে কখনো মনে হয়নি তিনি দেশখ্যাত বিখ্যাত সাংবাদিক। এরকম সাংবাদিক বহু যুগের সাধনায় একজন জন্মে।
তার চলে যাওয়ায় দেশ একজন কীর্তিমান পুরুষকে হারালো, যা পূরণ হওয়ার নয়।
লেখক: উপাচার্য, নর্দান বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ