মামুন রশীদকে সমকালীন কাব্য আকাশের উজ্জ্বল নক্ষত্র বললে নিশ্চয়ই ভুল করা হবে না। আমার দৃষ্টিতে তা-ই মনে হয়। পেশায় সংবাদকর্মী এই পরিশ্রমি শব্দসৈনিক এ পর্যন্ত চারটি কাব্যগ্রন্থ আমাদের উপহার দিয়েছেন। তাঁর প্রথম বই ‘কালোপাতা, ওড়ো, সাদাছাই’। দ্বিতীয় বই ‘কুশল তোমার বাঞ্ছা করি’। তৃতীয় বই ‘তোমার পরে মেঘ জমলে’। চতুর্থ বই ‘এই বইটির কোনও নাম দিবো না’। চমৎকার নামে আর কর্মে দারুণ আকর্ষণীয়। চারটি গ্রন্থেই চমৎকার সব কবিতা স্থান পেয়েছে।
মামুন রশীদের প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘কালোপাতা, ওড়ো, সাদাছাই’ প্রকাশ হয় ২০০৫ সালের একুশে বইমেলায়। তবে গ্রন্থটির কবিতাগুলো রচিত হয়েছে ১৯৯৬ থেকে ২০০২ সালের মধ্যে। এতেই বোঝা যায়, যথেষ্ট সময় নিয়ে কাজ করেন তিনি। নিরীক্ষা, অভিজ্ঞতা, পরিসংখ্যান ও অনুভূতির মিশেলে রচিত হয় তাঁর প্রতিটি কবিতা।
সময়ের সঙ্গে সংবাদের সংসর্গে পাল্লা দিয়েই চলে কবির কলম। অথচ কখনো কখনো সময়কেই অস্বীকার করেন তিনি। কেননা তাঁর ‘সময়’ কবিতায় শুনতে পাই—‘সময় বলে কিছু নেই। বন্ধ খামের ভেতরে বয়ে বেড়ানো শূন্যতা শুধু।’ তবু সময়কে ধরে রেখেছেন কাব্যের ফ্রেমে। একেকটি আলাদা সময়, একেকটি আলাদা ফ্রেম।
কখনো কখনো গদ্যছন্দেও কবিতা রচনা করেছেন তিনি। তাতে অলঙ্কারের খুব বেশি ঘাটতি লক্ষ্য করা যায়নি। গঠনশৈলীও পাঠককে আকৃষ্ট করার মতো। কবিতাকে কবিতার মতো করেই নির্মাণ করেছেন। কবি বলতে চান—‘শহর আর আয়নার মাঝামাঝি আমাকে রেখে পৃথিবীর এই লুকোচুরি।’
এমন শৈল্পিক অভিযোগ শুধু মামুন রশীদের কাব্যেই খুঁজে পাওয়া যাবে। অভাব-অভিযোগ-অভিমান প্রকাশের এমন শৈল্পিক রূপও পাঠককে অনায়াসে মুগ্ধ করবে।
কবিতায় শিল্পকে ভুল নির্মাণ বলে অভিহিত করেছেন কবি। তবে এ সিদ্ধান্ত তার ব্যক্তিগত হলেও স্থির ছিলেন কি না—বলা মুশকিল। কবি বলেছেন, ‘শিল্প কেবলি ভুল নির্মাণ’। শিল্প মানেই নকল। শিল্প মানেই অনুকরণ। একথা সবাই কম-বেশি মেনে নেবেন। তাতে কোনো সন্দেহ নেই। তাহলে শিল্প ভুল নির্মাণ বলেও আমরা মেনে নিতে পারি। যদি তা প্রমাণসাপেক্ষ হয়। হবে হয়তো অথবা হবে না। এ কেবল কবির ব্যক্তিগত উপলব্ধি।
কবি মামুন রশীদ হয়তো রবীন্দ্রনাথ দ্বারা প্রভাবিত। আবার নাও হতে পারে। হওয়াটাও অমূলক নয়। কাব্যচর্চা যিনি করবেন, তিনি রবীন্দ্রনাথের শব্দ-বাক্য-উপমা-অলঙ্কার দ্বারা প্রভাবিত হবেন না—একথা কেমন করে বলি।
তবে এই গ্রন্থের কোনো কোনো কবিতাকে আবার কবিতাও বলা যায় না। মনে হয়, কিছু অনুভূতি বা টুকে রাখা কথামালা। কেননা যখন দেখি তিনি লিখেছেন—‘কেউ কোথাও চলে যাবে জানলে বুকের ভেতর রেল ইঞ্চিন টানা/ বাতাসের একটানা শব্দ হতে থাকে। শো শো বাতাস হঠাৎ বদ্ধ কুঠুরিতে/ আটকে ছটফট করতে থাকে। একটানা ছটফটানি রেল ইঞ্জিনের নিঃসঙ্গ/ আর্তি সয়ে যেতে হয়। অথচ আমি চাই প্রিয় মুখ কাছে এসে বেদনা/ দেখুক।’ একে কি কেবল একখণ্ড অনুভূতিই মনে হয় না?
আবার কবিতা সম্পর্কে কবির অভিব্যক্তি পাওয়া যায় তার ‘কবিতা কিছুই বলে না’ শিরোনামের কবিতায়। কবি বলেছেন—
এভাবে জন্ম নিতে পারে একটি কবিতা
শষ্যভূমি ভরে যেতে পারে শব্দে-ছন্দে-অলঙ্কারে
যদি প্রশ্ন ছুড়ে দাও কিভাবে?
বলব না, কেননা—
কবিতা কিছুই বলে না, হয়ে ওঠে—
হয়ে উঠতে টানে না রমণীর শেমিজ
ছায়ার আড়ালে লুকানো মসৃণ তলপেট খাঁমচে খাঁমচে
হাঁটে না গোপন স্বপ্নে- শুধু হয়ে ওঠে।
কবিতা হোক বা না হোক শিল্পকর্ম থেমে থাকার নয়। রবীন্দ্রনাথও থেমে থাকেননি। সব কবিতাই কবিতা নয়। হওয়ার দরকারও নেই। প্রভাবের ব্যাপারটা থাকলেই হলো। অর্থাৎ পাঠক এই কবিতা দ্বারা প্রভাবিত হলেন কি না? হয়তো কবি কখনো রবীন্দ্রনাথের দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলেন। তাই তো এইখানে এসে কিছুটা রাবীন্দ্রিক আভাস পাওয়া যায়। যেহেতু কবি বলতে চেয়েছেন—
ব্রাত্যজনে কী কথা শোনালে সই বসন্তদিনে!
বন্ধুজনে প্রকাশিলে কিশোরীয় বল্কল খুলে, খরতোয়া ভঙ্গিমায়-
জমে ওঠা ঈদ-উদ্দীপনায়।
বাঞ্ছা ছিল, প্রকাশিব জলের স্বভাবে!
কী ছিল তোমার মনে, কব না সে কথা আজি এ বাদলদিনে, ভ্রমণে।
ভূতে ও ভবিষ্যে সেই প্রত্নছায়া এক উপচ্ছায়া হয়ে জাগ্রত পরাণে।উড়ে উড়ে লিখে রাখা উত্তরে আজি পরাণ- বসন্ত দিনে, ছুঁয়ে;
রঙের উচ্ছ্বাসে কেঁপে, ঋণ বাড়ে উষ্ণ অন্তরঙ্গে; বার্ধক্য বুদ্বুদে।’
সে যাই হোক–প্রথম গ্রন্থেই মন কেড়ে নেওয়ার মতো একটা ব্যাপার লক্ষ্য করা গেছে। তাঁর দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ ‘কুশল তোমার বাঞ্ছা করি’ প্রকাশ হয়েছে ২০০৭ সালের অমর একুশে গ্রন্থমেলায়। তাঁর দ্বিতীয় গ্রন্থটি পাঠে মনে হবে প্রথম গ্রন্থের চেয়ে অনেকটা পরিণত সৃষ্টিকর্ম উপহার দিয়েছেন তিনি। তাঁর দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থে গদ্যকবিতার আধিক্য লক্ষ্য করা যায়। তিনি বগুড়া ও সিরাজগঞ্জের স্মৃতিচারণ করেছেন। তাঁর কবিতায় উঠে এসেছে জমিদার বাড়ির প্রসঙ্গ। অতীতের হারানো অনেক স্মৃতি। তবে একটা ব্যাপার লক্ষণীয় যে, তাঁর কোনো কোনো কবিতা শিরোনাম ছাড়াই শুধু নম্বরাঙ্কিত রয়েছে।
সে ভিন্ন কথা—তবে তার কবিতায় অন্য এক আবেশ ফুটে ওঠে। খুব সহজেই তিনি বলতে পারেন অনেক না বলা কথা। তিনি বলতে পারেন—
আচমকা কোনোদিন
মরচে ধরা মন ঝাত করে উড়ে গেলে
দিকবিদ্বিক, ধরে রাখা দায়।
ভালোবাসা কবিকে অনেক কিছুই শিখিয়েছে। আবার অপেক্ষার যন্ত্রণাও কবিকে তাড়িয়ে বেড়ায়। প্রিয়তমার পাশে বসে কত বাহানার কথা বলেছেন কবি অবলীলায়—
চুমুতেই পরিতৃপ্তি। তবু কেন যেন
কাছে এসে হাত ধরে পাশাপাশি বসে
দীর্ঘক্ষণ শুধু বাহানা করে করে গড়িয়ে দিয়েছি জল।
ভালোবাসার উপলব্ধি হয়তো একেকজনের কাছে একেক রকম। কবি তার কবিতায় ভালোবাসার সঙ্গে ভূগোলেরও একটি যোগসূত্র আবিষ্কার করেছেন। উপমায় স্পষ্ট হয়ে ওঠে ভালোবাসার ভূগোল, মানচিত্র, দেশ—সর্বোপরি সেখানকার সেই চেনা মুখ। তাই তো ‘একটি প্রেমের কবিতা’য় কবি বলেছেন—
ভূগোল না জানলে চেনা পথও অচেনা মনে হয়
অথচ বহুদিন গমনে ধীরে ধীরে মুখস্ত হয়ে আসে পথের সীমানা
তখন ভূগোল সম্পর্কেও কিঞ্চিত জ্ঞান লাভ হয়।
মুখস্ত মানচিত্র থেকে হঠাৎ কোন এক পরিচিত দেশ
খুঁজে না পেলে বড় অস্বস্তি লাগে।
ভুলে যাবার কোন কারণ নেই, তবু কেনো যে মুখস্ত
মানচিত্র থেকে চেনা মুখ হারিয়ে যায়, দূরে, বহুদূরে।
কবির তৃতীয় কাব্যগ্রন্থ ‘তোমার পরে মেঘ জমলে’ ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে একুশে বইমেলা উপলক্ষে প্রকাশ হয়। দ্বিতীয় গ্রন্থের চেয়ে এটা একটু অপেক্ষাকৃত বেশি সময় পরে প্রকাশিত হয়েছে। এ সময়টা হয়তো তাকে আরও সমৃদ্ধি দান করেছে। তিনি হয়তো আরও পরিণত বাক্যালাপ, দৃশ্যকল্প নির্মাণ বা নতুন ভাবনার উন্মেষ ঘটাতে চেয়েছেন।
আগেও একবার হয়তো বলেছি—কবি মামুন রশীদ হয়তো রবীন্দ্রনাথ দ্বারা প্রভাবিত। আবার নাও হতে পারে। হওয়াটাও অমূলক নয়। কাব্যচর্চা যিনি করবেন, তিনি রবীন্দ্রনাথের শব্দ-বাক্য-উপমা-অলঙ্কার দ্বারা প্রভাবিত হবেন না—একথা কেমন করে বলি। কবিই তো তাঁর ‘রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর’ কবিতায় কবি বলেছেন—
আমাদের অস্থিরতায়, আমাদের প্রেমে—
আমাদের বিরহে, আমাদের রক্তাক্ত ক্ষতে-
আমাদের আর্তনাদে, আমাদের ক্লান্তিহীন চলায়-
আমাদের অশ্রুস্রোতে, আমাদের জীর্ণ মলিনতায়-
আমাদের তৃষ্ণার্ত হৃদয়ে, বিরহের মরীচিকা দ্বীপে-
নির্ভার নেশাতুর আলো।
তিনিও চেয়েছেন মানুষ তাকে মনে রাখুক।‘একটু একটু করে মানুষ আমায় মনে রাখুক’ কথাটা কবি হয়তো পাঠকের উদ্দেশেই বলেছেন। তাঁর সৃষ্টিকর্ম, সাধনা, কর্মপ্রচেষ্টা তাকে মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়েছে। তার কবিতার মাঝে তাই মানুষের দুঃখ, কান্না, তৃষ্ণা ফুটে ওঠে চিরাচরিত নিয়মেই।
তার মানে এই দাঁড়ালো যে, তিনি দেখেছেন, ভেবেছেন, বুঝেছেন, অনুভব করেছেন—তারপর প্রকাশ করেছেন। তিনি হুট করেই পাঠকের সামনে হাজির হননি। পাশাপাশি নিয়মিত লেখালেখি করেছেন বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায়। নিয়মিত চর্চার ফসল ঘরে তুলেছেন ধৈর্য আর অভিজ্ঞতার আলোকে।
কবি আবার বলেছেন ‘স্মৃতির শহরে ফিরে যেতে নেই’। কিন্তু কেন? জবাব তিনি কবিতার ভাষাতেই দিয়েছেন। পরক্ষণেই বলেছেন—
কেঁপে ওঠে বুক। দক্ষিণা জানালা থেকে
দুচোখে ভেসে ওঠে উদার আকাশ।
বাঁশবনে, নিবিড় করে, ক্রমশ নির্জন হয়ে ওঠা
দুপুরে, কোন না কোন কিছু অনন্ত অতীত
থেকে ক্ষিপ্র চিৎকার তুলে মাথা চাড়া দেয়-
ভবিষ্যতে- ভীষণ অতীত থেকে।
কখনো কখনো তার কবিতায় খাঁটি করুণ বাস্তবতা ধরা দিয়েছে অকপটে। শিল্পীর বিদগ্ধ মন-চক্ষু কিছুই এড়িয়ে যায়নি সমকালীন সভ্যতা, বাস্তবতা কিংবা লাম্পট্যের আখড়া। কবি জীবনকে উপভোগ করেছেন কবিতায়। কেননা কবি মানুষের ভিড়েও একা হয়ে যান। নিজেকে একা একা উপভোগ করেন। কবিতার খাতায় গড়ে তোলেন ঘর-গেরস্থালি। তাই তো কবি বলেন—
মানুষের ভীড়ে দাঁড়িয়ে যখন
একা- একা হয়ে যাই, তখন গাছেদের
মত চোখ কান বন্ধ করে দেই।
আমার ভেতরে কোন হাওয়া আসে না,
বরং আমি একা হাওয়া করে যাই।
মামুন রশীদের চতুর্থ গ্রন্থ ‘এই বইটির কোন নাম দিবো না’ ২০১৪ সালে প্রকাশ হয়েছে। এতে কবিতার কোনো শিরোনাম নেই। আসলে ভাবনার বা কল্পনার বা স্বপ্নের কোনো শিরোনাম হয় না। তবে দিনক্ষণ উল্লেখ থাকতে পারে। মনে হতে পারে এটা অমুক দিন ভেবেছিলাম। অথবা এই স্বপ্নটা ঈদের রাতে দেখেছিলাম। দিন-মাস-বছরই তবে যথেষ্ট। তাই তো তিনি শিরোনামের পরিবর্তে শুধু তারিখ উল্লেখ করেছেন। এটাও নতুন একটা আউডিয়া বা স্টাইল। উদাহরণ স্বরূপ এই কবিতাটাই দেখুন—
২৫.০৯.২০১৩
বুনো অজগর পড়ে আছে বহু বাঁক পেরিয়ে নিঃসাড় ছায়াহীন মধ্যমাঠে। নিস্তরঙ্গ
মর্গে অশনাক্ত মৃতদেহ- গলায় ঝুলছে নম্বরপ্লেট। মানুষ বড় দুর্ধর্ষ, দুর্ধর্ষ তার
করতালি। জলতরঙ্গে সে খোঁজে মেয়েলি আঙুল। ঝড়াপাতায় ফাঁকে হিসহিস
শব্দ, হাটদরজায় দিব্যি আকাশ আর ওষ্ঠমায়ায় পরস্ত্রী।
কবি যা-ই বলতে চান, তা-ই যেন পাঠকের কথা হয়ে যায়। গণমানুষের কথা হয়ে যায়। জীবনকে অনেকটাই ঘনিষ্ঠভাবে দেখেছেন তিনি। সেই ঘনিষ্ঠতার ছোঁয়া পাই আমরা তার কবিতায়। অন্তর্জালায় জ্বলে-পুড়েও কবি অবলীলায় বলে যান—
পুড়ছি, আমি যে নিপুণ পুড়ছি এই শোকাবহ করুণ
রোদন তোমাকে কাঁপিয়ে দেয় না।
ভাঙছি, আমি যে আহত আর্তনাদে ভেঙ্গে যাচ্ছি—
এই শঙ্কার সমগ্রতা তোমাকে ভয় পাইয়ে দেয় না।
তাঁর কাব্যগ্রন্থে নতুনত্ব খুঁজে পাওয়া যায়। শব্দের চমৎকার গাঁথুনি, উপমার সাবলীল ব্যবহার, অলঙ্কারের যথাযথ নির্মিতি আমাকে মুগ্ধই করেছে বটে। কবি শব্দে শব্দে স্বপ্নময়তার আবহ তৈরি করেছেন। তীব্র আলিঙ্গনের মতোই কেঁপে উঠেছে অনুভূতির স্বর্গোদ্যান। কী যেন এক আবেশ ছড়িয়ে দিয়ে যান চরণে চরণে। তাঁর কবিতার কথাগুলোই কাছে টানে। টেনে নেয় পরবর্তী রসা আস্বাদনের আসরে। কবি বলেন—
দূরত্ব ঘোচে না কখনো, দূরের ওই চাঁদটার মতো
এত স্পষ্ট, তীব্র আলিঙ্গনে কেঁপে উঠছে-
শিহরণে থরথর। পরস্পরের গাঢ় ভাপে ভিজে
ওঠা চোখের আদ্রতায় ম্লান হয়ে উঠছে কুয়াশার
সারি। দূরের কথা থাক, যে তীব্র আলিঙ্গনে
আমরা জড়িয়ে ধরেছি- স্বপ্নবিন্দুর মতো মনে
হয়। রূপকথা? পরাবাস্তব স্বপ্ন? এতো স্পষ্ট হয়?
মামুন রশীদের চারটি কাব্যগ্রন্থ পাঠে একটি জিনিস হয়তো আপনার মনে হবে যে, তিনি পরিবর্তন আনতে চেষ্টা করেছেন। প্রথম কাব্যগ্রন্থ থেকে চতুর্থ কাব্যগ্রন্থ পর্যন্ত কোনো না কোনোভাবে নতুনত্বের সন্ধান করেছেন। ভিন্নভাবে উপস্থাপনের চেষ্টা করেছেন। সে হোক শিরোনামে, উপস্থাপনে, নির্মাণে কিংবা ছন্দে-অলঙ্কারে।
তাঁর প্রথম গ্রন্থ প্রকাশ হয় ২০০৫ সালে। চতুর্থটি প্রকাশ হয় ২০১৪ সালে। দীর্ঘ একযুগে তিনি মাত্র চারটি গ্রন্থের জনক হয়েছেন। লেখালেখি তো শুরু করেছেন তারো অনেক আগে। তার মানে এই দাঁড়ালো যে, তিনি দেখেছেন, ভেবেছেন, বুঝেছেন, অনুভব করেছেন—তারপর প্রকাশ করেছেন। তিনি হুট করেই পাঠকের সামনে হাজির হননি। পাশাপাশি নিয়মিত লেখালেখি করেছেন বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায়। নিয়মিত চর্চার ফসল ঘরে তুলেছেন ধৈর্য আর অভিজ্ঞতার আলোকে।
আজ জন্মদিনে কবির জন্য শুভকামনা। চতুর্থ ছাড়িয়ে আরও এগিয়ে যাক সৃষ্টিকর্ম। মানুষের মাঝে আপন আলো ছড়িয়ে দিক পরম মমতায়।
আরও পড়ুন: মামুন রশীদের কবিতা: সামাজিক পরিপ্রেক্ষিত ॥ মোহাম্মদ নূরুল হক