তসলিমা নাসরিনের নারীবিষয়ক কবিতা এবং সেসবের লিঙ্গ-সংবেদন নিয়ে মূলত এই লেখা। কবিতাগুলো একত্রে পাই নির্বাচিত নারী নামে, বাছাই করা ৬১টি কবিতার একটি সংকলনে। তাতে বেশ সুবিধা হয়, আলাদা করে সব জায়গায় খুঁজতে যেতে হয় না। বাছাই করার ঝামেলা থেকে রেহাই পেয়ে একেবারে গোড়া থেকে পাঠ শুরু করি। চোখ যায় সংক্ষিপ্ত ভূমিকায়। তাতে লেখা আছে—‘‘নির্বাসিত নারীর অন্তরে বাহিরে’, ‘অতলে অন্তরীণ’, ‘আমার কিছু যায় আসে না’, ‘বালিকার গোল্লাছুট’ কাব্যগ্রন্থ থেকে নারীবিষয়ক কবিতা আলাদা করে এই বই। নারীর মঙ্গল কামনা করি।’’
তা নিঃসন্দেহে করেন, অধিকাংশ কবিতায় এই কথার প্রতিফলনও আছে। সামাজিক পরিমণ্ডলের অন্য গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার যে পুরুষ, তার উপস্থিতিও এখানে চোখে এসে লাগে প্রবলভাবে। তবে, পুরুষ অথবা পুরুষতন্ত্র এখানে কেবলই অত্যাচারী, প্রতারক, নির্যাতনকারী, শঠ, প্রবঞ্চক, কুচরিত্র, ধুরন্ধর, ভয়-উৎপাদনকারী, খেলোয়াড়, শিকারি, ধর্মান্ধ, অথর্ব, লোভী, নপুংসক, উদাসীন প্রভৃতি অসংখ্য বিশেষণে স্থান করে নিয়েছে অনেক কবিতায়। পুরুষের জন্য তাই ‘মঙ্গলকামনার’ সামান্য বরাদ্দ নেই। বইয়ের প্রথম কবিতা থেকে পরিচিত হই তার পুরুষ-ভাবনার সঙ্গে : তাকে আমি যতটুকু ভেবেছি পুরুষ/ ততটুকু নয়/ অর্ধেক পশু সে/ অর্ধেক পুরুষ (পরিচয় : পৃ ০৯)।
তার মূল সুর হয়ে ওঠে আক্রমণ
তসলিমা নাসরিন আক্রমণ করতে ভালোবাসেন। রোকেয়ার মতো, পৌনপুনিক আক্রমণে পুরুষতন্ত্রকে দুর্বল করে নারীকে সমাজে প্রতিষ্ঠা করতে চান তিনি। সমাজের ভেতরে-বাইরে নারীর ‘অপরায়নে’র যে গোপন-প্রকাশ্য-প্রচ্ছন্ন প্রক্রিয়া জারি থাকে প্রতিনিয়ত, তার অবস্থান এর বিরুদ্ধে। আর বিরুদ্ধে দাঁড়াতে গিয়ে বুদ্ধিবৃত্তিক প্রতিরোধের যে জায়গাটা তিনি তৈরি করেন তার মূল সুর হয়ে ওঠে আক্রমণ। বিষয়বস্তু একাধারে পুরুষ-নারী-সমাজ-রাষ্ট্র বাদ যায় না কিছুই। তার আক্রমণের যা স্বভাব, পরিচয়-এ তার সবটুকু পরিচয় পাওয়া যায় না। এখানে পুরুষ তবু ‘অর্ধেক মানুষ’, দৌড় দৌড় কবিতার বর্ণনায় পুরুষের মানুষ-সত্তা মুহূর্তে উধাও : তোমার পিছনে একপাল কুকুর লেগেছে/ জেনে রেখ, কুকুরের শরীরে যার্বিস/ তোমার পেছনে একপাল পুরুষ লেগেছে/ জেনে রেখ, সিফিলিস্ (পৃ. ৩৫)।
নারীবাদী সাহিত্য বা কবিতার গন্তব্য কেবল পুরুষ বা পুরুষতন্ত্রকে গালমন্দ করার দিকে যাওয়া নয়। তাতে করে, জেন্ডার-সংবেদনশীলতার প্রকৃত উদ্দেশ্য অর্থাৎ নারী-পুরুষ সমতা বা সমান মর্যাদার মানদণ্ড স্থাপন করা যায় না। কেবল পুরুষ-প্রজাতিকে আক্রমণ আর গালমন্দ করে নারীকে যে তার যথার্থ মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করা যায় না সেকথা তসলিমাও জানেন। আর জানেন বলে এখানেই ক্ষান্ত দেন না, কখনো ভীষণ আক্রমণ করে বসেন নারীকেও। প্রখর পরিহাসের শক্তি দিয়ে জাগাতে চান তাকে, উদ্বোধন ঘটাতে চান সত্যিকার নারীসত্তার : বাজারে এত সস্তায় আর কিছু মেলে না, যত সস্তায় মেয়ে মানুষ মেলে/ ওরা একটা আলতার শিশি পেলে আনন্দে তিনদিন না ঘুমিয়ে কাটায়/ গায়ে ঘষার দুটো সাবান আর চুলের সুগন্ধি তেল পেলে ওরা এমন বশ হয়/ যে ওদের গায়ের মাংস খুলে সপ্তাহে দুবার হাটে-বাজারে বিক্রি করা যায় (সস্তার জিনিস : পৃ. ৪৬)। আর এতে করে, নারী সচেতন হয় কিনা প্রমাণ পাওয়া যায় না। হয়তো এত কিছুর পরেও, পুরুষের সমাজ নানান কৌশলে নারীকে বন্দি করে রাখে বলেই। ঘরে-বাইরে নানাভাবে নারীর মগজ ধোলাই করা হয়। এজন্য কখনো ব্যবহার করা হয় ধর্মকে, কখনো নারীর উপর নেমে আসে অত্যাচার-নির্যাতন-বিগ্রহ। কখনো-বা ভয় দেখানো হয় তাকে: আমাকে কেউ মাঠ পার হতে দেয় নি, যতোবার দৌড়ে গেছি/ মাঝ পথে এমন আচমকা কাপড় টেনে ধরেছে ওরা, ভয়/ দেখিয়েছে— সামনের গর্তে লম্বা হয়ে শুয়ে আছে চিতাবাঘ/ অথবা অশ্বত্থের গায়ে পেঁচিয়ে আছে হলুদ চন্দ্রবোড়া (ভয় : পৃ. ৭১)।
পুরুষতন্ত্র অবিরাম ভয়-ভীতি উৎপাদন করে। নারী ভয় পায় বলেই ঘর পেরিয়ে তার আর আকাশ দেখা হয় না। আকাশ মানে জ্যোৎস্নায়-সূর্যালোকে নারীর মুক্তি। তসলিমা নাসরিন নারীর সার্বিক মুক্তির স্বপ্ন দেখেন ও দেখাতে চান। ভাঙতে চান পুরুষের নির্মাণ করা ‘নারী’ স্টিরিওটাইপ; নারীর জন্য তৈরি করে রাখা অচলায়তন। একেবারে শৈশব থেকে নারীকে ভয় দেখানো হয় হিংস্র জন্তু-জানোয়ার-দৈত্য-দানো-সাপ-খোপের। অমল বালিকা তাই মাঠ পেরিয়ে পা রাখতে পারে না নদীর ওই পারে স্বপ্নজগতে, সেখানে রাণীপুকুর, কৃষ্ণচূড়া বাগান, প্রজাপতি অথবা নক্ষত্রের মতো একশ জোনাকি, কোটি তারার আকাশ… এই নারীরা সেজন্য একইসাথে তৃষ্ণার্ত ও প্রতিবাদী; শরীরী মিথস্ক্রিয়ার বাইরে কখনো অশরীরী ভালোবাসার কাঙাল, কখনো দুর্বোধ্য, কখনো নিঃসঙ্গ বা বিষণ্ন, আবার কখনো মুক্তির স্পর্শরেখা ছুঁতে না পারার ব্যর্থতায় কাতর: আমি সামনে এগোব/ পেছনে ডাকছে আমার তাবৎ স্বজন/ সামনে কিছুই না, একটি নদী/ আমি পার হব।/ আমি সাঁতার জানি অথচ আমাকে/ সাঁতরাতে দেবে না, আমাকে পেরোতে দেবে না (সীমান্ত : পৃ. ১৩)।
তসলিমার নারীবাদী দর্শন মোটা দাগে প্রতিশোধমূলক
এই হচ্ছে নারীর অন্তরের কথা, তার দিনযাপনে সত্যিকার যন্ত্রণার আখ্যান। তার অন্তরেও এমন ছোট ছোট মানবীয় আকাঙ্ক্ষার ঢেউ ওঠে। কিন্তু পুরুষের চোখে (নারীর নিজের চোখেও!) নারী যেহেতু ‘মানুষ’ নয়, তাই তার কখনো সাঁতার দেয়া হয় না নদীজলে, পেরোনো হয় না সুনীল মাঠ। তবে এই অধীনতার জন্য পুরুষ যে সবসময় দায়ী তা নয়, কখনো নারীও দায়ী সমানভাবে। কখনো ‘নারীই তার নিজের সবচেয়ে বড় শত্রু’ পুরুষের পৃথিবীর আধিপত্যশীল মতাদর্শগুলোকে চেতনে-অবচেতনে নারী তার নিজের ভেতরে জারি রাখে, ধারণ করে। ‘অধিকাংশ নির্বোধ নারী সাধ করে শৃঙ্খলে জড়ায়’। তসলিমার নারীবাদী দর্শন মোটা দাগে প্রতিশোধমূলক। হাতে ছুরি নিয়ে তিনি মোকাবিলা করতে চান অত্যাচারী পুরুষতন্ত্রের। তাই কি হয় কখনো খুনের বদলে খুন! লেখক কি তবে মানুষের সমাজের বাইরে কোথাও বাস করেন? সংকলনের অনেক কবিতাই পুরুষ বা পুরুষতন্ত্রের প্রতি প্রবল ঘৃণায় ভরা, প্রতিশোধমূলক। ‘খুনের বদলে খুন’ নীতিতে বিশ্বাসী। যেমন : খোলা মাঠে ধূর্ত হাতে সাপখেলা দেখায় পুরুষ।/ পুরুষের সতীত্বের সনদ লাগে না’’ (সনদপত্র : পৃ ৪৫)।
ঠিক আছে তাই বলে মুক্তির জন্য, সমতার জন্য নারীকেও খোলামাঠে সাপখেলা দেখাতে হবে? বিসর্জন দিতে হবে সতীত্ব? সাপখেলা নয়, সতীত্বের সনদপত্রও নয়, নারীর মুক্তি তার সত্যিকার শিক্ষায়-সচেতনতায়-আত্মার উদ্বোধনে। এবং তা হতে পারে পুরুষের সাথে যথার্থ সামাজিক চুক্তি ও বোঝাপড়ার ভিত্তিতে। প্রবল ঘৃণায় পুরুষকে বাতিল করে দিয়ে নারীর মুক্তি যদি সম্ভব হতো, তবে আর সংবেদনশীলতা-সমতা-অধিকার-মানবিকতা প্রভৃতি অর্থে নারীবাদের আবির্ভাব হতো না বর্তমান পৃথিবীতে। এক্ষেত্রে পুরুষের আন্তরিক সহযোগিতা, উদ্যোগ ও অংশীদারত্বের মনোভাব যেমন দরকার, তেমনি নারীকেও পালন করতে হবে তার যথার্থ ভূমিকা। নারীমুক্তির জন্য সামাজিক চুক্তি ও সহযোগিতার যে মনোভঙ্গি দরকার, কবিতাগুলোতে তার দৃষ্টান্ত খুব বেশি নাই। তার চেয়ে অনেক বেশি আছে পুরুষের প্রতি অহেতু ঘৃণা আর বিদ্বেষ ছড়ানো।
ফ্রয়েড বলেন, নারীর শরীরই তার নিয়তি। নারীবাদীরা এই বক্তব্যকে চরম প্রতিক্রিয়াশীল বলে খারিজ করে দিয়েছেন। তবে, সমকালীন সমাজ-সংস্কৃতি-শিল্প-সাহিত্য-দর্শন সর্বত্রই নারীর শরীরকে তার নিয়তি হিসাবে নির্মাণ করার বাস্তবতা আছে। সেই বাস্তবতায় আমাদের সামনে নারীর বিবিধ আঙ্গিক। কবিতাগুলোতেও এর অনেক রূপকাঠামো দেখা যায়। কান পেতে শোনা যায় নারীর কণ্ঠস্বর। লজ্জ্বা-ভয়-সংশয়-সংকোচ দূরে রেখে সে ব্যবচ্ছেদ করে নিজের এনাটমি, তুলে ধরে অতৃপ্ত কামনা-বাসনার বিবরণ। অনবরত প্রশ্ন করে সে, প্রশ্ন রাখে দেশ-সমাজ-মানুষের কাছে। প্রশ্নে-জিজ্ঞাসায়-আক্রমণে ভেঙে ফেলতে চায় পুরুষ-আধিপত্যের শক্ত দেয়াল। লৈঙ্গিক রাজনীতিতে পরাজিত-অধস্তন নারীকে সে মানুষের মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করতে চায়। মুছে দিতে চায় দূরত্বের দ্রাঘিমারেখা: পাশাপাশি শুয়ে আছে দুজন মানুষ/ কেউ কারো ভেতরের খবর জানে না/ কার মনে পাখি ওড়ে, বন্ধ খাঁচা কার/ কে ঘুমায়, কার কাটে না ঘুমিয়ে রাত? (দূরত্ব : পৃ. ১৫)।
তাঁর পথ এখানে অনেকটাই একরৈখিক
প্রশ্নটা অনেক সহজ। উত্তর আরও সোজা। সমাজে পুরুষ ভোগ করে অবাধ স্বাধীনতা। আর ঘরে-বাইরে নারী বন্দি থাকে শৃঙ্খলে। তার সময় কাটে ‘অন্ধের দিনরাত্রির’ মতো পুরুষের রক্তচক্ষু-শাসনের ভেতরে। নারীর কোনও স্বাধীনতা নাই। পুরুষের অধীন সে। পুরুষের তৈরি পরিবেশ-প্রতিবেশ-পরিম-লে তার জীবনযাপন প্রতিনিয়ত। ‘সীমানা’ কবিতায় নারীকে তাই দেখা যায় পুরুষতান্ত্রিক বিধিনিষেধের শিকার হতে : বোধোদয় হবার পর যখন সে পৃথিবীর/ রূপরসগন্ধ ও বর্ণ দেখবে বলে চৌকাঠ ডিঙোতে চাইল/ তাকে বলা হলো—না। এই দেয়াল দিগন্তরেখা/ এই ছাদ তোমার আকাশ (পৃ. ৬৯)।
আজ আর সবটুকু সত্য নয়। দেয়াল দিগন্তরেখা ছাদ চৌকাঠ পেরিয়ে নারীর আকাশ অনেক ক্ষেত্রেই আজ বিস্তৃত হয়েছে স্বপ্নঘুড়ির মতো সত্যিকার আকাশের সীমানায়। প্রায় এক শতাব্দী আগে দেখা রোকেয়ার সুলতানার স্বপ্ন ছিল বিস্ময়কর এক নারী-পৃথিবীর ইউটোপিয়া। সেই পৃথিবীর নারীরা কাজ করে বাইরে, প্রযুক্তি আর বিজ্ঞানের আবিষ্কার দিয়ে সমাজ-সভ্যতাকে এগিয়ে নিয়ে যায়। সমানে-সমানে লড়াইয়ের ব্যাপার সেখানে ছিল না। নারী-পুরুষ সামাজিক ভূমিকাটুকু বদলে দিয়ে নারীকে আপাত-যোগ্যতম একটা জায়গায় স্থাপন করে সেই স্বপ্নে উৎসাহ জোগানো এবং আগামীর প্রতিকূল লড়াই মোকাবিলা করার কল্প-আখ্যান সুলতানার স্বপ্ন। তসলিমা নাসরিনও স্বপ্ন দেখান। এখানে তিনি তাই রোকেয়ার অনুসারী। সমতার স্বপ্ন আর অধিকারের আকাক্সক্ষায় দুজনের পথ অভিন্ন হলেও পদ্ধতি অনেক ভিন্ন। রোকেয়া সংবেদনশীল, যুক্তিবাদী, অগ্রসর ও সত্যিকারের অগ্রদূত। আর তসলিমার সংবেদনশীলতা নিয়ে অনেক প্রশ্ন থেকে যায়। তাঁর পথ এখানে অনেকটাই একরৈখিক।
লৈঙ্গিক সংবেদনশীলতা মানে নারী-পুরুষের জন্য সমান মর্যাদা নিশ্চিত করার দিকে খেয়াল রাখা। তবে পুরুষের সমাজে নারী যেহেতু আজও অত্যাচার-নির্যাতন-শোষণ-বিগ্রহ ও বঞ্চনার শিকার, তাই সংবেদনশীলতার বিষয়টি শেষ পর্যন্ত হয়ে দাঁড়ায় নারীর প্রতি সংবেদনশীলতার সমার্থক। এর জন্য প্রথমত জেন্ডার-বৈষম্যকে প্রাকৃতিক নয়, সামাজিকভাবে সৃষ্ট বলে স্বীকার করা দরকার। দ্বিতীয়ত চিনে নিতে হবে পুরুষ-নারীর স্পর্শবিন্দু ও ভেদরেখার জায়গাগুলো। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রচেষ্টা হতে পারে নারীকে খণ্ডিত-বিচ্ছিন্ন-অর্ধেক মানুষ (অর্ধেক মানবী তুমি অর্ধেক কল্পনা!) হিসেবে না-দেখে পরিপূর্ণ মানুষ হিসেবে দেখা। নারী কোনও কবি-কল্পনার পেটেন্ট কপিরাইট নয়, পুরাণ থেকে উঠে আসা চরিত্রও নয়। এই সমাজের আর সবার মতো রক্ত-মাংসের মানুষ সে।
প্রতিশোধমূলক কিছু প্রচেষ্টা থাকা সত্ত্বেও, প্রতিবাদে-পরিহাসে-আকাঙ্ক্ষায়-আত্মবিশ্লেষণে কবিতাগুলো শেষ পর্যন্ত তুলে ধরে সেই ব্যথা-বেদনা-দুঃখ-যন্ত্রণার আখ্যান, যা নিরবচ্ছিন্নভাবে সমগ্র নারীসমাজের অভিজ্ঞতা। বিতর্কে-বুদ্ধিতে-যুক্তিতে-পরিহাসে এই নারীরা সেই স্পর্শবিন্দু ছুঁতে চায়, যা জগতের সকল নারীর আরাধ্য। এখানে তারা স্বপ্ন দেখে পুরুষ-আধিপত্যের পৃথিবীকে পাল্টে দিয়ে নতুন এক পৃথিবী গড়ার; যেখানে প্রতিষ্ঠিত হবে নারী-পুরুষের সামাজিক-রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক-অর্থনৈতিক সাম্য। এরা নিজেরা শুধু স্বপ্ন দেখে না, দেখায় সমাজের আর সমস্ত নারীকেও। তাই বেহুলা ভাসিয়ে দেয় ভেলা, যমুনায়।