চিন্তাসূত্র ডেস্ক
চর্যাপদ সাহিত্য একাডেমি দোনাগাজী পদক ২০২০ ও ২০২১ উঠলো ১২ জানের হাতে। স্বাস্থ্যবিধি মেনেই এই পদক বিজয়ীদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার (২৮ মে) সকাল ১০টায় চাঁদপুর শহরের নিউ ট্রাক রোডস্থ অনলাইন নিউজ পোর্টাল ফোকাস মোহানার কার্যালয়ে এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই পদক তুলে দেওয়া হয়।
একাডেমির সভাপতি নূরুন্নাহার মুন্নির সভাপতিত্বে ও উদযাপন পরিষদের প্রধান সমন্বয়কারী জয়ন্তী ভৌমিকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি গোলাম কিবরিয়া জীবন। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন লায়ন মাহমুদ হাসান খান এবং স্বাগত বক্তব্য রাখেন চর্যাপদ সাহিত্য একাডেমির মহাপরিচালক রফিকুজ্জামান রণি।
শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর লেখক পরিষদের সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেন, একাডেমির পরিচালক দুখাই মুহাম্মাদ, জুরিবোর্ডের প্রধান সমন্বয়কারী শিউলী মজুদার, সহযোগী পরিচালক ফেরারি প্রিন্স, লাইব্রেরি পরিচালক আইরিন সুলতানা লিমা, বিজ্ঞান ও আইসিটি পরিচালক রাসেল ইব্রাহীম প্রমুখ।
করোনার কারণে গত বছর এই আয়োজন বন্ধ থাকায় এবার দুই বছরের পদক একসঙ্গে দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ১২ জন পেয়েছেন এই পদক।
২০২১ সালের পদক
কবিতায় মোহাম্মদ নূরুল হক, কথাসাহিত্যে নিলুফা আকতার, প্রবন্ধে ফারুক সুমন, অনুবাদে মামুন রশীদ, ফিচার ও ভ্রমণসাহিত্যে আবু আফজাল সালেহ, লিটলম্যাগ সম্পাদনায় কবি প্রত্যয় হামিদ এই পদক দেওয়া হয়েছে।
২০২০ সালের পদক
কবিতায় আজিজ কাজল, প্রবন্ধে জোবায়ের মিলন, নাটকে প্রণব কুমার রায়, ফিচার ও ভ্রমণসাহিত্যে রিফাত কান্তি সেন, সংগঠনে নীহার রঞ্জন হালদার এবং বাচিকশিল্পে দীপান্বিতা দাসকে এই পদকে ভূষিত করা হয়েছে।
এছাড়া করোনাকালে সাহসী ভূমিকা পালন করায় এবং সাধারণ মানুষের সেবায় নিরলসভাবে কাজ করে যাওয়ায় হাইমচর লেখক ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা ইমরান শাকিরকে দেওয়া হয়েছে বিশেষ সম্মাননা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক দুলাল চন্দ্র দাস, আল-আমিন সানি, আবদুর রাকিব।
তবে, করোনা সংক্রমণ ঝুঁকি এড়াতে পদকপ্রাপ্তদের বেশিরভাগই অনুষ্ঠানে যোগ দেননি। তারা ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠানে যুক্ত ছিলেন। তাদের পক্ষে সংগঠনের দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা এই পদক গ্রহণ করেন। পরবর্তী সময়ে বিজয়ীদের ঠিকানায় এই পদক কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে পাঠিয়ে দেবে চর্যাপদ সাহিত্য একাডেমি।
চর্যাপদ একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা রফিকুজ্জামান রণি বলেন, করোনার ভয়াবহতার কারণে এবং চাঁদপুর রেড জোনে পরিণত হওয়ায় বড় ধরনের আয়োজন করতে পারিনি। আমরা সাধারণত চাইনিজ রেস্টুরেন্টগুলিতে অনেক ঘটা করে এ ধরনের আয়োজন করে থাকি। কিন্তু রাষ্ট্রের বিধি-নিষেধ থাকায় সীমিত পরিসরে আয়োজন করতে বাধ্য হয়েছি। দূরদুরান্তের যে সব লেখক পদক গ্রহণ করতে আসতে পারেননি, আমাদের একাডেমির নিজস্ব খরচে তাদের ঠিকানায় পদক পৌঁছে দেওয়া হবে। পরিস্থিতি বিবেচনা করে, অনুষ্ঠানে সশরীরের যোগদানের ব্যাপারে আমরা তাদের খুব একটা উৎসাহিত করিনি। মূলত স্বাস্থ্যবিধির বিষয়টি চিন্তা করে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
এরআগে, গত ২৩ মে রোববার সন্ধ্যায় জুরিবোর্ডের প্রধান সমন্বয়কারী কবি শিউলী মজুমদার ও উদযাপন পরিষদের প্রধান সমন্বয়কারী জয়ন্তী ভৌমিকের যৌথ বিবৃতিতে পদকপ্রাপ্তদের নাম ঘোষণা করা হয়।
উল্লেখ্য, মধ্যযুগের কিংবদন্তি পুঁথিসাহিত্যিক, চাঁদপুরের কীর্তমান কবি দোনাগাজীর সম্মানে ২০১৯ সালে প্রথমবারের মতো পদক প্রবর্তন করে চর্যাপদ একাডেমি। এরপর প্রতি বছর সারাদেশ থেকে শিল্প-সাহিত্যের শুদ্ধতম ব্যক্তিদের খুঁজে বের করে এনে পদক প্রদান করা হয়। ২০১৯ সালে কথাসাহিত্যে মনি হায়দার, কবিতায় অনু ইসলাম, গবেষণা সাহিত্যে এ এসএম ইউনুছ, সার্বিক সাহিত্যে মোস্তফা হায়দার, লিটলম্যাগ সম্পাদনায় সুমন কুমার দত্ত, সংগীতে মোহাম্মদ ইউসুফ ও বাচিকশিল্পে জেরিন সিঁথিকে এই পদক দেওয়া হয়।