মেক্সিকোর লেখক ভ্যালেরিয়া লুইসেলি পেলেন ২০২১ সালের ইন্টারন্যাশনাল ডাবলিন সাহিত্য পুরস্কার। ‘লস্ট চিলড্রেন আর্কাইভ’ উপন্যাসের জন্য তাকে এই পুরস্কার দেওয়া হয়। পুরস্কার হিসেবে তিনি পাবেন এক লাখ ইউরো।
একটি অদ্ভুত উপন্যাস অদ্ভুতভাবে লিখেছিলেন ভ্যালেরিয়া লুইসেলি। নাম ‘দ্য স্টোরি অব মাই টিথ’ (২০১৩)। এ উপন্যাসে দেখা যায়, একজন অকশনিয়ার বিবিধ খ্যাতনামা ব্যক্তিত্বদের দাঁত সংগ্রহ করে। উপন্যাসটির রচনা প্রক্রিয়াও চমকপ্রদ-লুইসেলি মেক্সিকোর একটি পানীয় প্রস্তুতকারক কারখানার কর্মীদের উপন্যাসটির কয়েকটির অধ্যায় পড়তে দিতেন। তাদের মতামতের ভিত্তিতেই এগোত থাকে রচনা। ইংরেজি অনুবাদে (২০১৫) প্রকাশের পর উপন্যাসটি আন্তর্জাতিক সাহিত্যজগতে সুপরিচিত করে তোলে ভ্যালেরিয়া লুইসেলিকে। এবং তিনি আজও পাঠককে চমকে দিচ্ছেন তার ভাবনা ও রচনার বিস্তৃতি ও গভীরতায়।
গত বছর লস্ট চিলড্রেন আর্কাইভ উপন্যাসের জন্য ভ্যালেরিয়া লুইসেলি পেয়েছেন রথবোনস ফালিও পুরস্কার। ২০২১ সালে ইন্টারন্যাশনাল ডাবলিন সাহিত্য পুরস্কারের জন্য সংক্ষিপ্ত তালিকায় মনোনয়ন পাওয়া ৬টি গ্রন্থকে।
যেসব মানুষ মেক্সিকো সীমান্ত পেরিয়ে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করে, সেই ‘অনাহূত’-দের নিয়ে লেখা উপন্যাস লস্ট চিলড্রেন আর্কাইভ।
ভ্যালেরিয়া লুইসেলির জন্ম ১৯৮৩ সালে। লুইসেলির আগে ইন্টারন্যাশনাল ডাবলিন লিটরারি প্রাইজ় পেয়েছেন ডেভিড মালুফ, হাভিয়ের মারিয়াস, হের্টা ম্যুলার, অরহান পামুক-এর মতো সাহিত্যিকরাও।
উল্লেখ্য, বর্তমানে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যতগুলো সাহিত্য পুরস্কার রয়েছে, তার মধ্যে ইন্টারন্যাশনাল ডাবলিন লিটারারি অ্যাওয়ার্ড বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। অর্থমূল্যে সেটি এক লাখ ইউরো এবং বই নির্বাচনে বিশেষ পদ্ধতি থাকায় এই পুরস্কারটি পুরো দুনিয়ার সাহিত্যামোদীদের নজর কাড়তে সক্ষম হয়েছে।
এই পুরস্কারের তত্ত্বাবধানে রয়েছে ডাবলিন সিটি কাউন্সিল। শুরুতে পুরস্কারটির নাম ইন্টারন্যাশনাল আইএমপিএসি ডাবলিন লিটারারি অ্যাওয়ার্ড থাকলেও ২০১৫ সাল থেকে এটি বর্তমান নাম গ্রহণ করেছে। পৃথিবীর ১৭৭টি দেশের ৪০০টি লাইব্রেরি সিস্টেম এই পুরস্কারের জন্য উপন্যাসের মনোনয়ন করে থাকে। শর্ত একটিই—উপন্যাসটি হতে হবে ইংরেজি ভাষায় লেখা অথবা অন্য যেকোনো ভাষা থেকে ইংরেজি ভাষায় অনূদিত। জানিয়ে রাখা যেতে পারে, অনূদিত কোনো উপন্যাস পুরস্কারের জন্য বিবেচিত হলে মূল লেখক পান ৭৫ হাজার ইউরো এবং অনুবাদক পান ২৫ হাজার।