চিন্তাসূত্রের কর্মকাণ্ডের ভূয়সী প্রশংসা করলেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, গবেষক, অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ ঘোষ। তিনি বলেন, ‘চিন্তাসূত্র পত্রিকা সম্পর্কে যে তথ্যটুকু জেনেছি, তা হলো তারা খুঁজে খুঁজে বিশেষত প্রান্তিক অবস্থানে যারা আছেন, যারা রাজধানীতে নন, তাদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করেন। তাদের সামনে আনেন। এই সূত্রে আমি চিন্তাসূত্রকে ধন্যবাদ জানাবো।’ শুক্রবার (২০ অক্টোবর) বিকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচাস্থ কচি-কাঁচার মেলা মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত চিন্তাসূত্র সাহিত্য পুরস্কার-২০২৩ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. বিশ্বজিৎ বলেন, ‘চিন্তাসূত্র আয়োজিত আজকের পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানের অতিথি ও পুরস্কৃত ব্যক্তিগণ, সবাইকে আন্তরিক অভিবাদন জানাই। চিন্তাসূত্র নামটি বড় তাৎপর্যপূর্ণ। চিন্তা করতে অনভ্যস্ত আমরা একটি পত্রিকার নাম দেখে ধাক্কা খাই। এটি আমাদের চিন্তিত হওয়ার আহ্বান জানায়।’
এই শিক্ষাবিদ আরও বলেন, ‘আজকে নানা কথা হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই গাজা উপত্যকায় যে বর্বরতা চলছে, সে প্রসঙ্গ তো আসবেই। আমরা প্যালেস্টাইনে যারা শহীদ হয়েছেন, তাদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করি। ইসরাইলের এই মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানাই। একইসঙ্গে বিশ্ববিবেককে জাগ্রত হওয়ার আহ্বান জানাই। আজ যারা চিন্তাসূত্র পুরস্কার পাচ্ছেন, তারা চিন্তাশীল লেখক। প্রায় সকলের সঙ্গে আমার ঘনিষ্ঠতা রয়েছে।’
পুরস্কার প্রসঙ্গে ড. ঘোষ বলেন, ‘যারা বাংলা একাডেমি পুরস্কার, একুশে পদক ও স্বাধীনতা পদক পেয়েছেন, চিন্তাসূত্র তাদের পুরস্কারের দেওয়ার ক্ষেত্রে সসম্মানে এড়িয়ে চলে, বিষয়টি ভালো! কিন্তু প্রত্যাশা করবো, যারা চিন্তাসূত্র পুরস্কার পাবেন, তারা ভবিষ্যতে ওইসব পুরস্কার পাবেন। তাহলে চিন্তাসূত্র শনাক্ত করে দিচ্ছে ক-খ-গ ভালো লেখক, চিন্তাশীল লেখক। তারা ওইসব পুরস্কারের জন্য বিবেচিত হতে পারেন।’
ড. বিশ্বজিৎ ঘোষ আরও বলেন, ‘দেখুন, আমাদের দেখে কতকিছুই তো আছে। জেলায় জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় আছে। এরপরে উপজেলায় হবে। কিন্তু জেলায় জেলায় দরকার সাংস্কৃতিক বিশ্ববিদ্যালয়। জেলায় জেলায় দরকার সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। কয়েকদিন আগে আমি বরিশালে বিভাগীয় সাহিত্য সম্মেলনে উপস্থিত ছিলাম। এমন দরিদ্র ও দৈন্য সাহিত্য সম্মেলন হতে পারে, এটা আমার ভাবনার বাইরে। আমাদের অনেক কিছু আছে।’ তিনি বলেন, ‘ভৌত অবকাঠামো খুব দরকার। সেতু কালভার্ট, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, এগুলো খুব দরকার; সন্দেহ নেই। কিন্তু সাংস্কৃতিক মুক্তি যদি না ঘটে, তাহলে এসব কোনো কাজে আসবে না। আমাদের সাংস্কৃতিক মুক্তি দরকার। সাংস্কৃতিক মুক্তি না ঘটলে কোনো কাজ টেকে না।’
অনুষ্ঠানে ৫ জনকে চিন্তাসূত্র সাহিত্য পুরস্কার-২০২৩ প্রদান করা হয়েছে। তারা হলেন, প্রবন্ধে মহীবুল আজিজ, কবিতায় হেনরী স্বপন, কথাসাহিত্যে হাসান অরিন্দম, তরুণ কবি মালেক মুস্তাকিম ও ছোটকাগজ সম্পাদনায় পুনশ্চ সম্পাদক রবু শেঠ।