পর্ব-২০
শফিক হায়দার বসে আছে খেলাঘর আসরের অফিসে।
খেলাঘর এই দেশের বিশিষ্ট রাজনৈতিক নেতা, লেখক ও ইতিহাসবিদ সত্যেন সেন প্রতিষ্ঠিত শিশু কিশোর সংঘঠন। দৈনিক সংবাদের একটি পাতা খেলাঘরের জন্য বরাদ্দ। খেলাঘরের পাতায় খেলাঘরের সাংগঠনিক সংবাদের পাশাপাশি গল্প কবিতা ছড়া ছাপা হয়। খেলাঘরের পাতার জন্য দেশের নানা অঞ্চল থেকে লেখা যেমন ডাকে আসে, তেমনি প্রতি পনেরো দিন পর পর ঢাকার কাকরাইলের মোড়ে, ভেতরের দিকে একটা বাসার নিচতলায় ভাড়া নিয়ে সাহিত্য আসর বসে।
ঢাকার নানা এলাকা থেকে লেখকেরা ছড়া কবিতা গল্প লিখে নিয়ে হাজির হয় নির্দিষ্ট দিনের নির্দিষ্ট সময়ে। প্রতি আসরে পনেরো থেকে বিশ জন লেখক আসেন। মেঝের ওপর গোল হয়ে বসে নিজের নিজের লেখা পাঠ করে। লেখা পাঠের আগে উপস্থিত লেখকদের মধ্যে থেকে সিনিয়র একজনকে পঠিক লেখার ওপর আলোচনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। গোটা অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করছেন সালাম জুবায়ের।
সালাম জুবায়ের ছোটখাটো হালকা পাতলা গড়নের মানুষ। কথা বলেন স্পষ্টস্বরে কিন্তু আন্তরিকতার সঙ্গে। তিনি এই খেলাঘরের পাক্ষিক সাহিত্য বাসর পরিচালনার পাশাপাশি সংবাদের খেলাঘরের পাতাও সম্পাদনা করেন। তিনি নিষ্ঠার সঙ্গে সুচারুভাবে দায়িত্ব পালনে সব সময়ে সচেষ্ট থাকেন। লেখা পাঠ শুরু হয়ে য়ায় আর লেখকদের একজন হয়ে বসে বসে অবাক ঘটনা দেখে শফিক হায়দার। লেখা পাঠের আগে লম্বা একটা খাতায় লেখকদের নাম লিখে, কী পড়বে, ছড়া কবিতা বা গল্প; সেটাও লেখেন লেখকেরা। লেখকের নাম ও লেখার শিরোনাম দেখে দেখে আসর উপস্থাপনা করেন একজন। জমে ওঠে মজার আসর। বিচিত্র লেখার সঙ্গে পরিচয় ঘটে শফিকের। একসঙ্গে এতজন লেখকের দেখা পাওয়া, লেখকদের নিজের রচনা পাঠ শোনা…বিরল ঘটনা।
পাশেই বসে আছেন বিশিষ্ট ছড়াকার খালেক বিন জয়েনউদ্দীন। তিনিই খেলাঘর সাহিত্য আসরের খবর দিয়ে বলেন, তুমিও যাও। অনেক লেখকের সঙ্গে পরিচয় হবে। লেখকদের সঙ্গে পরিচয় না হলে, অভিজ্ঞতার সংযোগ না ঘটলে লেখক হওয়া যায় না। লেবার পার্টির অফিসে যেদিন মাওলানা আবদুল মতিন আসে না, সেদিন শিল্প সাহিত্যের প্রসঙ্গে আলোচনা হয়।
আমাকে নিয়ে যাবেন?
খালেক বিন জয়েনউদ্দীন সিগারেটে টান দিয়ে বলেন, ঠিক আছে। আগামী শুক্রবার নিয়ে যাবো। আমি বিকেলে আসবো, তুমি প্রস্তত থেকো।
সত্যি পরের শুক্রবার খালেক বিন জয়েনউদ্দীন আসেন সেগুনবাগিচায় মাওলানা মতিনের লেবার পার্টির অফিসে। শফিক আগেই প্রস্তত হয়েছিল। দুজনে হেঁটেই চলে আসে কাকরাইলের খেলাঘরের অফিসে। সালাম জুবায়েরের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয় খালেক ভাই, ওর নাম মনি হায়দার। লেখালেখির চেষ্টা করছে।
সালাম ভাই নাকের নিচের গোঁফে তা দিতে দিতে প্রশ্ন করে, কী লেখো?
মুখ শুকিয়ে যায় শফিক হায়দারের? কী লেখে শফিক হায়দার? বলতে পারে না, আমি লিখি গল্প কবিতা। আড়ষ্ট সময়ের ভার নেয় খালেক ভাই, নতুন তো। লেখে গল্পই।
ঠিক আছে বস। সবার লেখা শোনো আর নিয়মিত আসো। বুঝলা, এই আসরে বাংলাদেশের অনেক নামী লেখকেরা আসেন।
ঠিক আছে, ঘাড় কাৎ করে শফিক হায়দার। আধাঘন্টার মধ্যে লেখকেরা এসে যায়। খাতার নাম লেখা হয়। লেখা পাঠও শুরু করে লেখকেরা।
শফিক শোনে আর অবাক হয়, সাহিত্যর বিচিত্র অলিগলির সন্ধান পেয়ে নিজেকে নিয়ে কি করবে ভেবে পায় না। বিস্ময়ের সঙ্গে শোনে লেখকদের লেখা পাঠ। লেখা পাঠের মাঝখানে কেউ একজন বলে, ম্যান্ডেট দিন।
ম্যান্ডেন্ট? শফিক হায়দার বুঝতে পারে না।
সালাম জুবায়ের বলেন, যারা খেলাঘরের সাহিত্য বাসরে নতুন এসেছেন, সেই নতুনদের জন্য বলছি; আসরের পঠিত লেখার উপর আলোচনার শেষে আমরা পুরি বা সিঙ্গাড়া খাই। সেই পুরি বা সিঙ্গাড়ার জন্য উপস্থিত লেখকবন্ধু বা অতিথিরা সামর্থ্য অনুযায়ী অর্থ দেবেন। এটাই ম্যান্ডেট। সর্বনিম্ন ম্যাডেন্ট পঞ্চাশ পয়সা।
সঙ্গে সঙ্গে লেখকেরা পকেট থেকে যে যার মতো টাকা দেয়। শফিকও দেয় পঞ্চাশ পয়সা। লেখা পাঠ চলতে থাকে। লেখকদের মধ্যে বয়োকনিষ্ঠর হাতে ম্যান্ডেটোর টাকা গুনে দেওয়া হলো। চলে গেলো সিঙ্গাড়া আনার জন্য। এদিকে লেখা চলতে থাকে। প্রায় ঘণ্টা দুয়েক একটা প্রাণহরা সময় কাটায় শফিক হায়দার। কয়েকজন লেখকের সঙ্গে পরিচয় হয়। লেখা পাঠের পর আলোচনা পর্বটা খুব ভালো লাগে ওর। এমন একটা জায়গাই তো খুঁজছিল এতদিন। খালেক বিন জয়েনউদ্দীন সেই জায়গার সূত্র ধরিয়ে দেয়।
খেলাঘরের সাহিত্য বাসরে যেতে যেতে লেখক বন্ধুদের সঙ্গে পরিচয় হতে হতে জানতে পারে, দৈনিক বাংলার বাণীও একটা বাচ্চাদের সাহিত্য পাতা চালায়। পাতার নাম শাপলা কুঁড়ির আসর। শফিক হায়দার বেশ কয়েকটা গল্প লিখে পাঠ করেছে খেলাঘর সাহিত্য আসরে। গল্প ভালোও হয়েছে কিন্তু সালাম জুবায়ের সংবাদের পাতায় শফিক হায়দারের গল্প ছাপে না। প্রতি শনিবার গভীর আগ্রহ নিয়ে সংবাদের খেলাঘরের পাতা খোলে। না, নেই শফিক হায়দারের গল্প।
লেবার পার্টির অফিসে থাকার একমাত্র ইনকাম মাওলানা মতিন যেদিন রাত্রে পত্রিকায় বিবৃতি পাঠায়, সেই সময়ে পঞ্চাশ থেকে ষাট টাকা দেয়। পত্রিকার অফিসে যেতে যেতে সব চিনে যাওয়ার রিকশায় না উঠে বাসে, হেঁটে পত্রিকা অফিসগুলোতে যায়। এবং অর্ধেক টাকা বেঁচে যায়। মাওলানা মতিনের পার্টির মূল কেন্দ্র পুস্তক বাঁধাই শ্রমিক শ্রেণী। সেইসব শ্রমিকের নিয়ে মাঝে মধ্যে ঢাকায় মিছিল মিটিং করে মাওলানা মতিন। সেই কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকার ফলে দুপুরে ও রাতে খাবারের জন্য প্রতিদিন বিশ টাকা করে দেয় মাওলানা মতিন। সেই টাকা যক্ষের ধনের মতো রেখে মাসের শেষে দুই থেকে তিনশত টাকা বাড়িতে পাঠায় শফিক হায়দার। দুপুরে ও রাতে সচিবালয় এবং প্রেসক্লাবের মধ্যেখানের খালি জায়গায় জঙ্গলের মধ্যে কয়েকটা ছোট ছোট হোটেল ছিল। দুই টাকার ভাত আর তিন টাকার তরকারিতে পেট ভরে খায় শফিকসহ রিকশা-শ্রমিকসহ অনেক পেশাদার মানুষ।
জীবনের এই বাস্তবতার মধ্যে বাংলার বাণীর শাপলা কুঁড়ির আসরের জন চোর গল্প লিখে মতিঝিলে যায় শফিক হায়দার। মতিঝিল! বাংলাদেশের রাজধানীর হার্ট পয়েন্ট। নিউজপেপারের ওপর গল্পটা লিখে খুব ভয়ে ভয়ে বাংলার বাণীর অফিসের দোতলায় উঠে ডেস্কে কর্মরত একজনকে জিজ্ঞেস করে শফিক, আমি শাপলা কুঁড়ির জন্য একটা গল্প এনেছি।
কাজ করতে করতে সাংবাদিক ইশারায় পাশের টেবিলের ওপর একটা বক্স দেখিয়ে বলেন, ওই বক্সের মধ্যে রেখে যান।
শফিক হায়দার খুব দ্রুত বক্সের মধ্যে গল্পটা রেখে আরও দ্রুত সিঁড়ি বেয়ে নেমে যায়। প্রচণ্ড ভয় লাগে ওর। কেউ যদি জিজ্ঞেস করে কেন এসেছ বাছাধন? আর তোমারে গল্প লিখতে কইচে কেঠা? কী উত্তর দেবে শফিক হায়দার? সুতরাং মানে মানে কেটে পড়াই ভালো। পরের শুক্রবার বাংলার বাণীর শুক্রবারের শাপলা কুঁড়ির পাতায় শফিক হায়দারের ‘চোর’ গল্পটা ছাপা হয়। অবিশ্বাস্য চোখে নিজের না দেখে শফিক হায়দার। প্রেসক্লাবের সামনে থেকে পত্রিকাটা ক্রয় করে চোখের সামনে মেলে ধরে দেখে আর হাঁটে, হাঁটে আর দেখে। আমার গল্প, আমার লেখা গল্প পত্রিকার পাতায় ছাপা হলো? নিজের নামটা দেখে দেখে আর দেখে। দেখার সাধ আর শেষ হয় না। মাওলানা মতিনের লেবার পার্টির অফিসের সবাইকে দেখায়। কেউ দেখে, কেউ দেখে না। কিন্তু নিজের নাম নিজে দেখার সাধ ফুরোয় না।
সংবাদের পরের খেলাঘরের আসরে গেলে লেখক বন্ধুরা জানায়, তোর গল্প পড়লাম শাপলা কুঁড়ির পাতায়। ভালো লিখছোস!
শফিক হায়দার অনেক দূরের হলেও একটা কূল দেখতে পায়। খেলাঘরের আসরে পরিচয় ঘটে নজরুল কবীর, ইয়াসির ইয়ামীন বা নজরুল ইসলাম সুমন, মিয়া মনসফ, যাযাবর স্বপন, মানিক রহমান, হোসনে আরা সোমা, বাকীউল আলম সুমন, অমল সাহা, মাহাবুব রেজা, রোমের রায়হান, নাসের মাহমুদ, আইরীন নিয়াজী মান্না, মোমিনুর রহমান, সারওয়ার উল ইসলাম, এবরার হোসেন, শাহ নিসতার জাহান, লিয়াকত আমিনী, মুমু আনসারী।
মাঝে-মধ্যে খেলাঘরের আসরে আসতেন তুখোড় ছড়াকার লুৎফর রহমান রিটন, আমীরুল ইসলাম, আহমাদ মাযহার, আসলাম সানী। ৪ জনের একটা দল। মেরেকেটে তেড়ে ঢাকা শহরের তরুণ সাহিত্যবাজারকে মাতিয়ে রাখেন ৪ জনে। লুৎফর রহমান রিটন প্রদীপ্ত উচ্চারণে প্রতিটি লেখা খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পড়ে নৃশংস আলোচনায় লেখকের চামড়া তুলে নেন পরম নিষ্ঠায়। আমীরুল ইসলাম বিশাল দেহী, গমগমে গলা, মাথায় ঝাকড়া চুল। নতুন লিখিয়েদের লেখা হাতে নিয়ে চোখ বুলিয়ে এমনভাবে তীর্যক বাক্যে প্রতিটি লেখা খারিজ করে দিতে থাকেন, লেখকের মনে হয়, আত্মহত্যা করি। আহমাদ মাযহারের আলোচনায় থাকে সাহিত্যের তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ নিজের অর্জিত প্রজ্ঞা আর অভিজ্ঞতার নির্মাণে। খুব মার্জিত মানুষ তিনি, প্রগলভ নয় কিন্তু সাহিত্য চিন্তায় মগ্ন। এক আসরে লুৎফর লহমন রিটন আলোচনায় অংশ নিয়ে শফিক হায়দারের লেখা গল্পকে যাচ্ছে তাই বলে বাতিল করে দেয়। বলে, এই লেখকের গল্প লেখার চেয়ে রাস্তার কাগজ টোকানোর কাম করা উচিত।
শফিক হায়দারের চোখ ফেটে জল আসে। মনে মনে প্রতিজ্ঞা নেয়, আর লিখবো না। লেখালেখি করার জন্য এত কষ্ট, এত পরিশ্রম। যথারীতি লেখা পাঠ, আলোচনা শেষে ম্যান্ডেটের সিঙ্গাড়া খেতে খেতে শান্তিনগরের গলির মধ্যে খেলাঘরের একতালা ঘর থেকে বাইরের রাস্তায় আবদুল্লাহ ফারুক ট্রিনিটি স্কুলের সামনে দাঁড়িয়ে লেখকেরা নতুন উদ্যোমে আলোচনায় মেতে ওঠে। কিছুক্ষণ আগের চামড়া তুলে নেওয়ার মতো তুমুল তুখোড় আলোচনা সমালোচনা ভুলে সবাই হাসি ঠাট্টায় মশগুল। শফিক হায়দার লেখক সত্তার নতুন দিক আবিষ্কার করে, খেলাঘরের সাহিত্য আসরে যেতে যেতে নজরুল কবীরের সঙ্গে শফিক হায়দারের ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। নজরুল কবীর ছোটখাটো গড়নের মানুষ। গলায় প্রচণ্ড ঝাঁজ। যখন তখন চটে যেতে পছন্দ করে নজরুল কবীর। কোনো হেটেলে খেতে গেলে মনে হবে, হোটেলের মালিক নজরুল কবীরের মামা। সেই অধিকারে চেঁচামেচি শুরু করে, এই পিচ্ছি টেবিলটা পরিষ্কার কর।
গলার ঠাটে আর শরীর অনুপাতে ভারিক্কি চালে গোটা হোটেল নড়েচড়ে বসে। সেই নজরুল কবীরের সঙ্গে শফিক হায়দারের দারুণ সখ্য গড়ে ওঠে। শফিক হায়দার পুরনো ঢাকার জুরাইনে নজরুল কবীরের বাসায় যায়। বাসায় গিয়ে অবাক। স্বপ্ননীড় বাড়ির নাম। একটা সড়কের শেষ মাথায় একতলা বাড়ি। বাড়ির মধ্যে এক টুকরো উঠান। উঠানের পাশে পানির কল। রাস্তা সংগলগ্ন নজরুল কবীরের ছোট রুমটার মধ্যে বই বই আর বই। দুজনে মিলে অনেক গল্প করার পর নজরুল কবীর বলে, চল।
কোথায়?
এই তো কাছেই, আমার এক বন্ধুর বাসায়।
চল।
স্বপ্ননীড় থেকে শ্যামপুরের দিকে মিনিট দশের হাঁটার পর, ছোট্ট রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে একটা বড় বাড়ির সামনে দাঁড়ায় দুজনে। রাস্তার সঙ্গে বিরাট বাড়ির ওয়াল। ওয়াল পার হয়ে ভেতরে ঢুকলে এল আকৃতির একতলা বড় একটা বাড়ি। বাড়ির মধ্যে মস্ত উঠানে আজ জাম পেয়ারা গাছের সারি। কয়েকটা ছাগলও বাঁধা।
বাড়ির বড় ড্রয়িংরুমের সামনে দাঁড়িয়ে নজরুল কবীর চিরায়ত গম্ভীর গলায় ডাকে, তারিন? তারিন? কই গেলি? দ্যাখ কারে নিয়া আইচি।
নজরুল কবীরের গলায় স্বরে দৌড়ে আসে হিমু, আসেন, ভেতরে আসেন। ড্রয়িংরুমের দরজা খুলে দিলে নজরুল কবীরের পেছনে পেছনে ভেতরে ঢোকে শফিক হায়দার। বিরাট রুম। রুমের অর্ধেকজুড়ে বড় একটা খাট। বকি অর্ধেকের দেয়ালজুড়ে সোফা। সোফার সামনে একটা কাঠের টি-টেবিল।
হিমুর দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করে নজরুল, চিনেছিস? দেখায় শফিক হায়দারকে।
ঘাড় নাড়ে হিমু না, রিপন ভাই।
শফিক হায়দার প্রথম জানলো নজরুল কবীরের ছোট্ট একটা নাম আছে। রিপন একটু বিরক্ত হিমুর ওপর, শফিক হাযদারকে না চেনার জন্য। একটু ধমকের স্বরে বলে, তারিন কই? তারিনকে পাঠা।
যাচ্ছি, হালকা পাতলা গড়নের হিমু রুম থেকে বের হয়ে যায়। শফিক বুঝতে পারে, এই পরিবারের ওপর রিপনের একটা প্রভাব আছে। আর রিপন যেখানে যায় নিজের মতো একটা প্রভাব বলয়তো তৈরি করে ফেলে। অদ্ভুত ক্ষমতা ওর। কিন্তু তারিন কে?
শফিকের ভাবনার মধ্যে শ্যাম বর্ণের একটি মেয়ে, মাথায় ঘনকালো চুল, খুব লম্বা না, শরীর একটু মেদময়; দরজা দিয়ে ছন্দশীল পায়ে ভেতরে প্রবেশ করে খাটে বসে। তাকায় গভীর কালো দুটি চোখ তুলে। শফিকের মনে হয়, এই চোখ দুটিসহ শ্যাম বর্ণের মেয়েটিকে কোথাও দেখেছে।
চিনেছিস? রিপন প্রশ্ন করে তারিনকে, শফিক হায়দারকে দেখিয়ে।
মাথা নাড়ায় তারিন, নাহ।
শফিক হায়দার, বলেছি না, নতুন একজন গল্পকার আসছে আমাদের সাহিত্য; এই সেই শফিক হায়দার।
তারিন আখতার গভীর আয়াত দুটি চোখের দৃষ্টি তুলে বিনম্র সুন্দরের সঙ্গে তাকায় এবং হালকা ঘাড় নেড়ে অনুমোদন করে, হ্যাঁ তুমি বলেছ।
চলছে…