[পর্ব—৩০]
স্মৃতির ফুলগুলো আমার
এক.
সেদিন সকালটা ছিল ধুপছায়া মেঘ-মেঘ।
রাতের বৃষ্টিতে ধোয়া ঘাসের মতো সতেজ ও সাবলীল সকাল। অহেতু বাতাসেও উড়ছিল মিহি দারুচিনি গুঁড়া। রুটিন অনুযায়ী নীলিমা ইব্রাহীম আজ আমাদের প্রথম ক্লাস নেবেন। সে কথা মনে হতেই বুকটা দুরু দুরু কাঁপছিল। তিনি আমাদের বিভাগীয় প্রধান। ভর্তির মৌখিক পরীক্ষার সময় তাঁকে প্রথম দেখেছি। কিছুটা ভয়ও পেয়েছিলাম তাঁর প্রশ্নের উত্তরে মৃদু ধমক খেয়ে।
নীলিমা আপার সেই চেহারা মনে হলেই মামার বাসার মুখোমুখি সামনের উঁচু লাল ইটের দর-দালানটি কেন যেন রক্তচক্ষু নিয়ে ভেসে ওঠে আমার চোখে। আজ অনেকদিন পরে মামার মুডও খুব ভালো মনে হলো। এডিপিআই হিসেবে চাকুরির শেষ প্রান্তে এসে পৌঁছেছেন তিনি। প্রতিদিন অফিস যেতে এক মিনিটও দেরি করেন না। সকালে উঠেই গোসল সেরে নাস্তা খেয়ে শিক্ষা ভবনের অফিসে চলে যান মামা।
মামি তখনো ঘুমে থাকেন, ধীরে-সুস্থে ওঠেন। দশ সন্তানের জননী জীবনের শেষে নেতানো শরীরটাকে টেনেটুনেই চলতে হয় তাকে। বয়সের চেয়ে ভারী মনে হয় তার দেহবল্লরী। কাজের মেয়েটি এসে নাস্তা দিয়ে যায় তার টেবিলে—সেসব খেয়ে-দেয়ে বেলাবেলি করে ওঠেন।
কী রান্না হবে সবার জন্যে, কাজের মহিলাই ঠিক করেন। কেননা মামা অফিস যাওয়ার আগে বাজারের জন্যে তার হাতে যা টাকা দিয়ে যান, সেই অনুপাতে বাজার করে তিনি রান্না করেন। কোনোদিন মাছ কোনো কোনো দিন মাংস। এত প্লেটের মধ্যে তা বণ্টন করেন তিনিই। প্রায় প্রতিদিনই আমিও মামার সঙ্গে সঙ্গে বেরিয়ে যাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশে।
জয়কালি মন্দিরে মামার বাসা থেকে রিকশায় যাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্টস ফ্যাকাল্টির সবুজ ক্যাম্পাসে। কলাভবনের সামনে তখন তৈরি হচ্ছে ‘অপরাজেয় বাংলা’নামের ভাস্কর্যের কাজ। রিকশা থামিয়ে নেমে পড়তাম সেখানেই। যতদূর মনে পড়ে রিকশাভাড়া ছিল ২/৩ টাকার মতো।
শৈল্পিক সৌকর্যে নির্মিত অসাধারণ এই ভাস্কর্যটিতে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ছাত্রসমাজসহ সমাজের বিভিন্ন শ্রেণির মানুষের অংশগ্রহণের দৃশ্য শিল্পী তুলে ধরেছেন অসীম মমতায়। সর্বজয়ী মানুষের স্বাধীন সত্তার মনোময় এক উদাত্ত ভঙ্গিমার চিত্রণে বলাই বাহুল্য কৃতিমান একজন সার্থক শিল্পী সৈয়দ আবদুল্লাহ খালিদ।
১৯৭৩ সালেই ভাস্কর্যের কাজটি প্রথম শুরু হয়েছিল। একই বছরের শুরুতে সম্ভবত ফেব্রুয়ারি-মার্চে ১ম বর্ষ বাংলা সম্মানশ্রেণীতে ভর্তি হয়েছি আমরা।
অন্যান্য শিক্ষার্থীর মতো আমিও কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে মুক্তিযোদ্ধা ও ভাস্করশিল্পী সৈয়দ আবদুল্লাহ খালিদের হাতের কাজ দেখতাম আর ভেতরে ভেতরে অনুভব করতাম ফেলে আসা যুদ্ধের সেই ভয়াবহ দিনগুলোকে।
সিঁড়ি ভেঙে ওপরে এলেই দোতলার আমাদের বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ। বিভাগের কড়িডোরে দাঁড়ালে ভাস্কর্যের পেছন দিকটার কাজ দেখা যেতো স্পষ্ট। ভাস্কর্যটি তৈরির কাজ শুরু হয়ে শেষ হতে সময় নিয়েছিল ছয় বছর। ১৯৭৯ সালে ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে ‘অপরাজেয় বাংলা’ ভাস্কর্যের উদ্বোধন করা হয়। শৈল্পিক সৌকর্যে নির্মিত অসাধারণ এই ভাস্কর্যটিতে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ছাত্রসমাজসহ সমাজের বিভিন্ন শ্রেণির মানুষের অংশগ্রহণের দৃশ্য শিল্পী তুলে ধরেছেন অসীম মমতায়। সর্বজয়ী মানুষের স্বাধীন সত্তার মনোময় এক উদাত্ত ভঙ্গিমার চিত্রণে বলাই বাহুল্য কৃতিমান একজন সার্থক শিল্পী সৈয়দ আবদুল্লাহ খালিদ।
রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পরেও মানুষের ভেতরে যে অপরাজেয় শক্তির উন্মেষ তিনি দেখেছেন, তাকেই যেন চিত্রিত করেছেন গভীর ভালোবাসা ও ধ্যানীর মমতায়। এমনকি মুক্তিযুদ্ধে তাঁর অভিজ্ঞতার মর্মমূলে যে বেদনা লুকিয়েছিল, তারই উদ্ভাসন যেন ভাস্কর্যের সৌন্দর্যে ফুটিয়ে তুলেছেন অসাধারণ প্রজ্ঞায়।। ভাস্কর্যটির ‘অপরাজেয় বাংলা’ নামকরণটি করেছিলেন মুক্তিযাদ্ধা ও সাংবাদিক সালেহ চৌধুরী (১৯৩৮-২০১৭)।
শেষদিকে কবি ও স্থপতি রবিউল হুসাইনের বাসার যেকোনো আয়োজনে নিরাভরণ এই শিল্পী খালিদ ভাইকে দেখেছি, রফিক আজাদ ও আমার সঙ্গে তাঁর স্মৃতিময় অনেক সময় কেটেছে। কবি রফিক আজাদের প্রয়াণের পরের বছর ২০১৭ সালে তিনিও হারিয়ে গেলেন আমাদের মর্ত্যের জীবন থেকে।
দুই.
প্রথম বর্ষে প্রতিটি ক্লাস উপস্থিত থাকতে চেষ্টা করতো সব শিক্ষার্থী। আমিও দুর্নিবার এক টানে ক্লাস শেষ করেই অন্যদের মতো করিডোরে এসে দাঁড়াই, দুচোখজুড়ে ঢেউ তোলে সামনের সবুজ তৃণ-বেছানো মাঠ। আর ভেতরে ভেতরে বাঁজে এক অচেনা বাঁশি, স্বাধীন বট-পাকুর আর আমের মিলিত কোরাস যেন।
সব কিছুতেই নতুনের আনকোরা গন্ধ, শিক্ষক নতুন নতুন, সহপাঠীরা নতুন, পাঠ নতুন, দেশের স্বাধীনতা নতুন। এত নতুন সামলে নেওয়াও খুব কঠিন আমার মতো এক মফস্বল পেরোনো মেয়ের জন্যে।
এদের সবার সঙ্গে কথা বলবো কিভাবে, তাও তো জানি না। কাজেই সহপাঠীদের মুখের দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে শুনি তাদের বলা-কওয়া। ক্লাস শেষে বারান্দার করিডোরে এলেই সবার মুখে যেন কথার খই ফুটতে থাকে কারণে-অকারণে।
প্রায় আমি, হাসিনা লিলি আর সাইদা বেগম মিলে এক ত্রিকোণ বন্ধুত্বের দিকে হাত বাড়াই। অন্যদের সঙ্গে হাই হ্যালো শেষ হলে তিন জন মিলে গভীর আড্ডায় মেতে উঠি কখনো সখনো। তিন জনেই একই হলের সিট-প্রার্থী, এটা জানতে পেরে কেন যেন এই দু’জনকে আলাদাভাবে আপন মনে হতে থাকে। এই তিনজন ছাড়া অন্য ২/৩ জন এসে সেই আড্ডায় যোগ দিলে আমি যেন লজ্জায় লজ্জাবতী লতাটির মতো চুপসে যাই। কোনো কথাই বলতে পারি না। চুপ মেরে যাই। অন্যদের বাতচিত কেবল শুনে যাই নিবিষ্ট মনোযোগী শ্রোতার মতো। মনে হয়, ওরা যে যাই বলছে না কেন, সবই গুরুত্বপূর্ণ কথা। কেবল আমি যা বলবো বা বলতে পারি, তা যেন সবাই জানে—তার মধ্যে কোনো নতুনত্ব নেই। এত সাধারণ কথা বোধ হয় না শুনলেও চলে। কাজেই আরও বেশি চুপ হয়ে যাই। এতে কিছুদিন পরেই নানা ধরনের গুনগুন শুনি, অন্যেরা নাকি আমাকে অহঙ্কারী ভাবছে কথা কম বলি বলে। কী বিপদ!
রূপ-গুণ জ্ঞানের গরিমা যার কিচ্ছুটি নেই, সে আবার অহঙ্কার করবে কী নিয়ে?
তিন-চারের অধিক সহপাঠী একত্র হলেই আমি যে লজ্জায় কথা বলতে পারি না, কী করে বোঝাই তাদের। নতুন এক ঝামেলা, আরেক উদ্বেগ হলে সিট পাওয়ার প্রত্যাশা। শামসুন্নাহার হলে মিট পাবো পাবো করেও মাস চারেক পার হয়ে গেলো। ক্লাস শেষ করেই টিফিন আওয়ারে হাঁটতে হাঁটতে হলের বর্তমান আবাসিকদের সঙ্গে শামসুন্নাহার হলে যাই সিটের অগ্রগতির খোঁজ খবর করতে। ফাস্ট ইয়ারের ছাত্রীদের আবেদন গ্রহন করতেন মাকসুদা আপা। মাঝারি হাইটের মানুষ যদিও অহঙ্কার ছিল আকাশচুম্বী।
তিনি চতুর্থ বর্ষের মনোবিজ্ঞানের ছাত্রী। আমি বাংলা বিভাগ। ম হামিদ ছিলেন তখন নাসিমা খালার সহপাঠী। ম হামিদের সঙ্গে প্রথম পরিচয় হয়েছিল নাসিমা খালার কাছে যখন তখন মনোবিজ্ঞান বিভাগে ছোটাছুটি সূত্রেই।
ছাত্রীদের সঙ্গে কোনোদিনও তাকে হেসে কথা বলতে দেখিনি। তবু ভয়ে ভয়ে জিজ্ঞেস করতাম, আপা, আমার সিট হবে তো এ মাসে? হলের সিট নিয়ে কি বসে আছি? চাইলেই তোমাকে দিয়ে দেবো! নিয়ম কানুন আছে না? আপা, প্লিজ তাহলে আমার আবেদনটি ফেরত দিন, আমি রোকেয়া হলে না হয় জমা দেবো।
দেখছো, দেখছো—কী বেয়াদব মেয়ে! আমার কাছ থেকে আবেদন ফেরত চায়। হলে এখনো সিট হয়নি, তাই এভাবে কথা বলে, এত দুঃসাহস! হলে সিট দিলে তো কোনো নিয়মই মানবে না এ মেয়ে।
দাঁড়াও প্রোভোস্টকে এখনি আমি জানাচ্ছি।
আমার সঙ্গে আপা কেন এমন ব্যবহার করছেন আমি বুঝতে পারছি না। কেন এত চটে গেলেন তাও বুঝতে পারছি না। রোকেয়া হলের এক সহপাঠী বলেছিল, রোকেয়া হলে আবেদন করলে অনেক দ্রুত তোমার সিট হবে। সেই ভরসায় আবেদনটি ফেরত চেয়েছি, এতে কী এমন অপরাধ—আমার মফস্বলী মগজের অ্যান্টেনা কিছুতেই তা ধরতে পারছিল না।
মোদ্দা কথা, তার সঙ্গে কথা বলে বিষাদের নদী ফুলে ফেঁপে কূল কিনারা হারিয়ে ফেললো যেন। হতোদ্যম হয়ে ফিরে এলাম আবার ক্লাসে। হলের সিট পাওয়ার কোনো দিক-দিশা দেখছি না।
বাংলা বিভাগের সিনিয়র মিতু আপা, চিনু আপার সঙ্গে কথা বললাম। জোহরা জেসমিন ইসলাম মিতু আপা তখন ছাত্র ইউনিয়নের নেত্রী। মিতু আপা, চিনু আপা দুজনেই খুব ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন। চিনু আপা আমাকে বাংলার নোট দিয়ে অনেক সাহায্য করেছিলেন পরবর্তী সময়ে।
রোকেয়া সুলতানা রাকা আপা রোকেয়া হলের নেত্রী তখন। তার সঙ্গে অবশ্য পরিচিত হয়েছিল আরও পরে। এছাড়া আরও ২/১ জনের সঙ্গে কথা বলে জানলাম ভয়াবহ এক সংবাদ। তিন-চার জোড়া চটি-জুতোর সুকতলা ক্ষয় না হলে নাকি হলে সিট পাওয়ার কথা ভাবতে নেই।
কী সর্বনাশ। কী হবে তাহলে আমার। মামার বাসার গাদাগাদি জ্যামে বসে বসে গল্প জমে ভালো কিন্তু পড়া তো হয় না কিছুই। ক্লাসে মাইকেল, রবীন্দ্রনাথের পাঠ শুরু করে দিয়েছেন নীলিমা ইব্রাহিম ও সনজিদা খাতুন আপা। সেদিকেও একাগ্র মনোযোগ দিতে পারছি না। মেয়েদের রাত্রি যাপনের নিরাপদ ঠিক-ঠিকানা না হলে কিছুতেই মনোযোগ আসে না।
তবে, তবে বলেও কথা আছে। কেউ কেউ পরামর্শ দিয়ে বললো, ছাত্র-নেত্রীদের ধরে সহজে সিট পেতে পারো। তবে, নেত্রীদের নির্দেশে যখন-তখন তোমাকে মিটিং মিছিলে যেতে হবে। নেত্রীদের আজ্ঞাবহ হয়ে কাটাতে হবে দিন-রাতের অধিকাংশ সময়। আরও একটা পথ আছে। যদি হাউজ টিউটারদের মধ্যে কাউকে বলার মতো যোগসূত্র থাকে, তাহলে চেষ্টা করে দেখতে পারো সেপথে। তাহলে সামান্য সহজে পেতেও পারো একটি নির্ভেজাল সিট।
কবি জাহানারা আরজু আপার ছোট বোন শবনু আপা তখন ইতিহাসের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী। তিনি যেহেতু শামসুন্নাহার হলের আবাসিক ছাত্রী, তিনিই আমাকে ডাবলিং লেটার দিয়েছিলেন, হলে ওঠার প্রথম এবং প্রধান শর্ত পূরণের জন্যে। শবনু আপা বেশির ভাগ সময়ে আরজু আপার র্যাংকিং স্ট্রিটের ‘কবিতাঙ্গন’এর বাসায় থেকে ক্লাস করতেন, মাসে ৩/৪ দিন হলে থাকেন। তার সিটটি প্রায় শূন্য পড়ে থাকে। আপাতত তার রুম মেইটদ্বয় কাজে অকাজে, আড্ডায় তার ব্যবহার করতেন। আমি হলে উঠতে পারলে সিটটির যথার্থ ব্যবহার হবে ভেবেই ডাবলিং লেটার দিয়েছিলেন শবনু আপা।
শবনু আপার মুখেই জেনেছিলাম, চিরকুমারী হাউজ টিউটার নিলুফার আপা আরজু আপার বন্ধু, একই বছর দুজনে ঢাবির বাংলা বিভাগ থেকে এমএ পাস করেছেন। আরজু আপা যদি নীলুফার আপাকে ফোনে একটু বলে দেন তবে, কম সময়ের মধ্যে হয়তো সিটটি পাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেবে আমার।
অনেক ভেবে চিন্তে একদিন আরজু আপার বাসায় গিয়ে আপাকে অনুরোধ করলাম, আপা আমার কাজটি করেদিলেন, তবে বললেন, মানিকগঞ্জ দেবেন্দ্র কলেজে তো বাংলা অনার্স খুলেছে এ বছর। ওখানে ভর্তি হলেই তো পারতি। খামোখা ঢাকা ঢাকা করিস তোরা।
মাথা নিচু করে শুনলাম, মুখে কিছু বললাম না। মনে মনে ভাবলাম, প্রাচ্যের অক্সফোর্ডখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বপ্ন থাকে অনেকেরই, তার মধ্যে আমিও হয়তো মফস্বল শহরের এক অনামা ছাত্রী, তাই বলে কি স্বপ্ন থাকতে নেই!
আরজু আপার বাসা থেকে ফেরার পথে থামলাম আমার মামির এক আত্মীয়ার বাসায়, আপাতত বেশিরভাগ দিন নাসিমা খালার সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ে যাতায়াত করি। তিনি চতুর্থ বর্ষের মনোবিজ্ঞানের ছাত্রী। আমি বাংলা বিভাগ। ম হামিদ ছিলেন তখন নাসিমা খালার সহপাঠী। ম হামিদের সঙ্গে প্রথম পরিচয় হয়েছিল নাসিমা খালার কাছে যখন তখন মনোবিজ্ঞান বিভাগে ছোটাছুটি সূত্রেই।
চলবে…
বালিকার চরৈবেতি-২৯॥ দিলারা হাফিজ