[পর্ব-২৫]
আমার মায়ের শয়ন-মন্দিরের নাম ‘বড়ঘর’।
অন্যটি দক্ষিণ ভিটার ঘর, সামান্য ছোট। পশ্চিম দিকে পশ্চিম ভিটার ঘর একখানা। পশ্চিম ভিটার এই ঘরে আমার মাকেসহ বোনদের এবং সেলিমের স্ত্রী লতার আঁতুর ঘর হিসেবে ন্যূনতম উনিশ-কুড়িজন সন্তান ভূমিষ্ঠ হয়েছে চট বিছানো মাটির ওপরে। এই ঘরে সন্তান ভূমিষ্ঠের সাতদিন পরে প্রসূতি মা চলে যেতেন তার বড় ঘরে। অবশ্য ছয় দিনের ছয়সাটুরার উৎসব রাত্রিতে একটুপ্রাপ্ত বয়েসী অর্থাৎ বয়ঃসন্ধির নিচে নয়; এমন মেয়েরা, আঁতুড় ঘরের শিশুর সঙ্গে ছয়সাটুরার এই উৎসবে রাত্রি যাপনের অনুমতি পেতাম।
এদিনে প্রসূতি মায়ের জন্যে মুরগীর মাংসসহ ভালো-মন্দ প্রোটিনজাতীয় খাবার রান্না হতো। শিশুর নাম রাখাসহ তার সিথানে বই-পত্র-কলম রেখে বিদ্যা-বুদ্ধির জন্যে প্রার্থনা করা হতো। সঙ্গীতেও সুর মিলিয়ে আনন্দ করা নিয়ম ছিল। দাইমাকে নতুন শাড়ি দেওয়া হতো। আঁতুড় ঘরের একপাশে বেশ খানিকটা চুলার মতো গর্ত করে সেখানে কাঠের ভারী গুঁড়ি ফেলে রাখা হতো।
শিখা অনির্বানের মতো সপ্তাহখানেক জুড়েই সেই আগুনের কুণ্ডু ধূপ-ধোঁয়ার গন্ধসমেত প্রজ্বলিত হতো। শিশুর স্টেরিলাইজজনিত নিরাপত্তা এবং ভূত-প্রেতের নজর থেকে রক্ষার্থেই পালন করা হতো এই নিয়ম। অঞ্চল ভেদে অবশ্যভিন্ন ভিন্ন নিয়মও প্রচলিত ছিল তখন গ্রাম বাংলায়। এই সাতদিন ‘ছটি’ঘরে শিশুর হাগু-মুতুর কাঁথা, তার জামা-কাপড়, মায়ের খাবার-দাবার যা কিছু আঁতুড় ঘরে পাঠানো হতো বাইরে থেকে, সবকিছু আগুনে সেঁকে দেওয়া হতো ভেতরে। আগুনে কাঠ-পোড়াধূপ-ধুনো এবং প্রসূতির রক্তস্রাবের দূষিত গন্ধ, বুকে উপচেপড়া আসন্ন শাল-দুধের সৌরভ মিলেমিশে যে অদ্ভূত এক গন্ধ ছড়াতো ঘরময়, তাকে বলা হতো ‘ছটির’গন্ধ।
নব সৃষ্টির গন্ধ উন্মাতাল এক ঐশ্বরিক সময় যেন নতুন মা ও তার শিশুকে ঘিরে বয়ে যেতো উত্তাল। যা-শুধু আঁতুড় ঘরের বাতাসকে মথিত করে প্রবাহিত হতো। পরের দিন প্রসূতিকে পবিত্র গোসলের পরে শিশুটিকে মায়ে বুকে পুরে নিয়ে তার ঘরে যেতেন। সপ্তাহব্যাপী রক্ত-পানির এই অপবিত্রকাল শেষ করে আমার বড় বোন, হাওয়া আপা, রানু, লতা সবাই শিশুকে কোলে নিয়ে যেতো দক্ষিণ ভিটার ঘরে। দরোজা জানালা বন্ধ করে চল্লিশ দিন কাটানোর পরে তবে দরোজা জানালা খোলা রাখা হতো।
নানা রকম ভূত-প্রেতের কুসংস্কারের গল্প তো প্রচলিত ছিলই। নোয়াখালীর একজন হুজুর আমাদের বাড়িতে জায়গীর ছিলেন। পরিবারের সব ছেলে মেয়েদের আমসিপারা পাঠ শেষ করে কোরান শিক্ষা দিতেন। পাঁচওয়াক্ত আমাদের বড় চাচার কবরের পাশে দাঁড়িয়ে আজান দিতেন। বছরে একবার শুধু তার পরিবারের সঙ্গে মিলিত হতে ১৫দিনের ছুটিতে যেতেন। আমার মায়ের তিন জন সন্তান শিশুকালেই মারা যায়। আমার পাঁচ মাসের ভাই আলিম মারা যাওয়ার পরে মা শোকে ভীষণ বিমর্ষ ছিলেন কিছুদিন। বাড়ির এই মৌলভি সাহেবের কাছে শোকে দিশেহীন মা একদিন জানতে চাইলেন, এভাবে সামান্য দুধের-বাতাস লেগেই শিশুরা মারা যায় কেন?
আমার এখনো মনে আছে, তিনি তার মতো পবিত্র কোরানের এক ব্যাখ্যা দিয়ে মাকে সান্ত্বনা দিয়ে বললেন, পবিত্র আত্মার শিশুদের খুব চোখে চোখে রাখতে হয়, মা। কচি শিশুরা ফেরশতাদের খুব প্রিয়।কিন্তু নানা ওসিলায় শয়তানেরা তাদের মেরে ফেলতে চেষ্টা করে। এত কাঁদিবেন না মা, তাছাড়া আপনার এই সন্তানই তো আপনার মৃত্যুর পরে বেহেশতের দরোজায় আপনাকে রিসিভ করিবে।
বাংলা অনুবাদসহ কোরান পাঠ করা আমার মা, কী বুঝেছিলেন সেদিন, জানি না। তবে সেদিন আর কথা না বাড়িয়ে ভেতর বাড়ি চলে গেলেন। আস্তে আস্তে সন্তান হারানোর শোককে নিজের মধ্যে মা শোষণ করে নিলেন অন্য জীবিত সন্তানদের কলকাকলির নিত্যতায়।
শুভ্র শ্মশ্রূময় এই হুজুরের মুখখানা ছিল বেশ গোলগাল। তার হাতে আমারও কোরান শিক্ষা হয়েছে। দীর্ঘদিন আমাদের বাড়িতে ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের আগে একবার ছুটিতে গিয়ে আর আসেননি তিনি। ষষ্ঠবারের মতো বড়’পা আঁতুড় ঘরে দুই যমজ কন্যা সন্তানের জন্মদিলেন। তখনো দুলাভাই দ্বিতীয়বারের মতো কলকাতায় অবস্থান করছিলেন। কলকাতা থেকে ফিরে এসে কন্যাদ্বয়ের মুখ দর্শন করে তাদের নাম রাখলেন। ফরাসি মানবতাবাদী লেখক রোমাঁ রোলাঁ ( ১৮৬৬–১৯৪৪) নামটিকে ভাগ করে দুই টুকরো দুজনকে দিলেন, রোমা ও রোলা। ফরাসি উচ্চারণের চন্দ্রবিন্দু ফেলে দিলেন বাংলার বেলায়। ধারণা করি যুদ্ধের ভয়াবহ সময়ে জন্ম নেওয়া সন্তানদের নাম রাখার বেলায় আজীবন যুদ্ধবিরোধী ও মানবতাবাদী ফ্রান্সের এই মহামানবের কথাই হয়তো তার মনে পড়েছিল ভীষণভাবে।
হতে পারে তা দেশের মুক্তিযুদ্ধে,অনাকাঙ্ক্ষিত কোনো বিগ্রহে কিংবা হতেই পারে তা অধিক শান্তি ও স্বস্তির জন্যেও।
আমি যখন দুলাভাইয়ের কাছে তার যমজ কন্যাদ্বয়ের নামের তাৎপর্য জানতে চাইলাম, তখন তিনি বললেন, শোন, উনিশ শতকের প্রখ্যাত চিন্তাবিদ, মানবতার পূজারী এবং প্রগতিবাদী মহান সাহিত্যিকদের মধ্যে রোমাঁ রোলাঁ ছিলেন প্রথম সারির অন্যতম। তিনি একাধারে ছিলেন একজন চিত্র ও ভাস্কর্য শিল্পে পৃষ্ঠপোষক, সংগীত ও সাহিত্যের মরমি শিল্পী।যুগ ও জীবনের গভীর স্রষ্টা। ছিলেন মানবমন্ত্রের রূপকার, ছিলেন বিশ্বশান্তির প্রবক্তা, শিক্ষাবিদ, জনদরদী ও শ্রেষ্ঠ আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্বসম্পন্ন পুরুষ। রবীন্দ্রনাথের সঙ্গেও ছিল তার অকৃত্রিম সৌহার্দ্য। তার রচনার মাধ্যমেই ইউরোপের বুদ্ধিজীবীরাও সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছেছিল ভারতাত্মার সনাতন শান্তির বাণী। ভারতবর্ষের আধ্যাত্মবাদের প্রতি ছিল রোলাঁর অপরিসীম আগ্রহ। ইউরোপের বুদ্ধিজীবী, শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষদের তিনি অনুপ্রাণিত করেছিলেন ভারতবর্ষের স্বাধীনতা আন্দোলনে সহযোগিতা করতে।
নিশ্চয় তুমি জানো, রবীন্দ্রনাথ তার গীতাঞ্জলির জন্যে নোবেল পেয়েছিলেন ১৯১৩ সালে। এরপরের বছরে অর্থাৎ ১৯১৫ খ্রিষ্টাব্দে রোমাঁ রোলাঁ তার বিশ্ববিখ্যাত গ্রন্থ ‘জাঁ ক্রিস্তফ’-এর জন্য নোবেল পুরস্কার অর্জন করেছিলেন। বলাই বাহুল্য, জীবদ্দশায় দু’জনের মধ্যে এই ভাববিনিময় সূত্রেই রোলাঁ হয়ে উঠেছিলেন প্রাচ্য-পাশ্চাত্যের মহামিলনের সেতুবন্ধনের অগ্রণী পুরুষ। জানি না আমার মেয়েরা জ্ঞানে-গুণে কতটা কী হবে। তবে আশা করতে তো দোষ নেই, কী বলো?
-জি, দুলাভাই, পিতার মনোবাসনা বুঝতে পেরেছি এবার।
দুই.
দক্ষিণমুখী আমাদের বড়ঘরের দীর্ঘ বারান্দায় দুই পাশে ছোট দুটো রুম ছিল। মধ্যখানে খোলা বারান্দায় বসবার জন্যে একটা দীর্ঘ বেঞ্চ গোটা দুই চেয়ার আর টুল থাকে প্রয়োজন অনুযায়ী। ঘর থেকে বের হওয়ার মুখে বা দিকের রুমটিতে আমি একাই ঘুমাতাম। ছোট্ট একটা চৌকিতে। আমার মায়ের কোলের সন্তান রাতে বেশি কান্নাকাটি করলে আমি উঠে ওদের কোলে নিয়ে সামাল দিলে সেই ফাঁকে মা কিছুটা বিশ্রাম নিতেন।
বিশেষভাবে আমার মেজো ভাই, নাম হাবিব আহমেদ, ডাক নাম নান্টু। তাকে লালন-পালনে মাকে খুব পেরেশান হতে দেখেছি। আমার পরে জন্ম গ্রহণ করে সেলিম ও রানু। রানুর পরে বোন মানুর জন্ম। সে জন্মের ১৭ দিনের মাথায় মৃত্যুবরণ করে। এরপরে নান্টুর জন্ম। ছোটবেলায় এই ভাইটি খুব রোগাটে আর হ্যাংলা পাতলা ছিল। প্রায়ই পেটের পীড়ায় কাঁদতো, মা প্রায় সারা রাত ধরেই তাকে ঘুম পাড়াতে কোলে নিয়ে খাটজুড়ে পায়চারী করতেন। কিন্তু কিছুতেই সে ঘুমাতো না। হাঁটাহাঁটি বন্ধ করলেই কারণহীন কান্নায় ভেঙে পড়তো।
শীতের রাত, ঠাণ্ডায় মাটিতে পা রেখে হাঁটা যেতো না, মা তাই খাটের পরেই হেঁটে হেঁটে সন্তানকে শান্ত রাখতে চেষ্টা করে যেতেন নিরলসভাবে। ঘুমাতেও পারতেন না। অকুলান হলে মা তখন আমাকে ঘুম থেকে ডেকে তুলে নান্টুকে আমার কোলে দিয়ে একটু ঝিমিয়ে নিতেন। ততক্ষণ মায়ের মতো আমিও নান্টুকে কোলে নিয়ে সারা খাটের এপাশ-ওপাশ হেঁটে বেড়াতাম। যেন সে না-কাঁদে। তখন আমার বয়ঃসন্ধির কাল, ওই বয়সেই আমি মায়ের মতো করেই ওকে কোলে করতাম, বোতলে দুধ খাওয়াতাম। স্কুল শেষ হলে বাড়িতে এসেই ওকে কোলে নিয়ে ঘুরতাম, কুতকুত খেলতাম, পাড়াও বেড়াতাম ওকে কোলে রেখে।
স্কুলের সময়টুকু বাদে সারাক্ষণ নান্টু আমার কোলে কোলে থাকতো। অন্য কারও কোলে দিলেই আবার ভ্যা করে কেঁদে উঠতো। কাজেই আমার কোলে বেশি রাখতে হতো। দীর্ঘক্ষণ ওকে কোলে নিতে নিতে আমার কোমরে এক ধরনের জারকাটা হয়েছিল। এজন্য হাফপ্যান্ড খুব টেনেটুনে পরতাম সব সময়। (লোমকূপের গোড়াগুলো ফুলে যাওয়াকে বলা হতো—জারকাটা)। অন্যকোথাও এই শব্দ ব্যবহার হয় কি না, জানি না।
এরপরে নান্টু যখন একটু বড় হলো, মজার মজার দুষ্টুমি শুরু হলো তার। মায়ের ভীষণ নেওটা। যেকোনো ধরনের খাবার খেতেবসে আগে মাকে জিজ্ঞেস করতো, মা তুমি খেয়েছ তো? একটু খাও।
আমরা অন্য ভাই বোনেরা ওর মতো করে বলতে পারতাম না। মাকে যেমন ভয় পেতাম তেমনি ভালোবাসতাম। ভাবতাম, যে অন্নপূর্ণা দেবী সকলের জন্যে খাবার তৈরি করে নিজ হাতে পরিবেশন করছেন, সে খেয়েছে কি না—তা জিজ্ঞেস করা যেন বাহুল্যকথা মনে হতো আমার। কিন্তু সববেলায় খেতে বসে নান্টু মাকে একইকথা জিজ্ঞেস করতো বার বার। একটু রুগ্ন ছিল বলে আব্বারও সব মনোযোগ মনে হতো এই ছেলেটির জন্যেই রাখা ছিল।
স্কুলে গেলেই স্কুলসংলগ্ন দোকান থেকে কটকটি, বাদামটানা, আচার কিনে খেতো টিফিনের সময়ে। বারণ করলেও শুনতো না। অথচ ওর পেটে মোটে সহ্যই হতো না এইসব খাবার। আব্বা নান্টুকে নিজের কাছে রেখে ঢাকার সেন্ট গ্রেগরি স্কুলে ভর্তি করে দিয়েছিলেন। প্রতিদিন আব্বার দেওয়া টিফিনের টাকায় কিনে খেতো তেঁতুল ও চালতার আচারসহ নানাপদের আজেবাজে খাবার। ফলে হঠাৎ যখন অসুস্থ হয়ে পড়লো, তখন ঢাকায় চিকিৎসা দিয়ে দ্রুত আব্বা ওকে বাড়িতে নিয়ে এলেন। মাকে বললেন, তোমার ছেলে তুমি দেখো, আমার কথা সে মোটে শোনে না। গ্রামের স্কুলেই ভর্তি করে দাও আবার।
সেই থেকে এসএসসি পর্যন্ত গ্রামই ছিল তার বিচরণক্ষেত্র। এসএসসি পাস করে ভর্তি হলো সরকারি তিতুমীর কলেজে। ওকে ভর্তি করাতে গিয়ে তিতুমীর কলেজের টিচার্স স্টাফ রুমে ঢুকে দেখা হলো সহপাঠী খন্দকার শওকতের সঙ্গে। পাস করার পরে ওই কলেজের বাংলার শিক্ষক হিসেবে সে যোগ দিয়েছিল প্রথম। পরবর্তী সময়ে প্রশাসন ক্যাডারে যোগ দিয়ে সর্বশেষ গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব হিসেবে চাকরিজীবন শেষ করেছে।
তিতুমীর কলেজে নান্টুকে ভর্তির সময়ে বাংলাদেশে তখন এরশাদের আমল। অচিরেই সেখানে এরশাদের জাতীয়তাবাদী ছাত্ররাজনীতি শুরু হলে প্রথম কমিটিতেই নান্টু সাংস্কৃতিক সম্পাদক হয়ে গেলো। রাজনীতি ও পড়াশোনা পাশাপাশি চালিয়েশেষ পর্যন্ত এইচএসসি পাস করার পরে ভর্তি হলো জগন্নাথ কলেজে, সেখানেও রাজনীতি তার পেছন পেছনে। এক পর্যায়ে জীবনও বিপন্ন হওয়ার উপক্রম যখন, তখন রফিক আজাদ নান্টুকে বিদেশ পাঠানোর ব্যাপারে আব্বাকে বুঝিয়ে-রাজি করিয়ে তবে জার্মানিতে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছিলো। জার্মানিতে বিশেষ সুবিধে করতে না পেরে বছর তিনেক পরেই সে স্যুইজারল্যান্ডে গিয়েসে টেল্ট হলো পাকাপাকিভাবে।
কিছুকাল চাকরিতে বহাল ছিল, পরবর্তী পর্যায়ে নান্টু ডেলিমন্ড শহরে একমাত্র বাঙালি, যে কিনা অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে হাউজিং ব্যবসা করে স্যুইসদের চেয়ে ভালো অবস্থান তৈরি করতে পেরেছে। ইতোমধ্যে ডেলিমন্ড শহরে আমার আব্বার নামে বিশাল একমার্কেট গড়ে তুলেছে অকল্পনীয় দক্ষতায়।
শুধু ব্যবসা ক্ষেত্রে নয়, ব্যক্তিজীবনেও চমৎকার দু’জন সন্তান রয়েছে তাদের। একমাত্র কন্যা অনন্যা ক্যানসারের ওপর গবেষণা করছে, পুত্র প্রীতম গ্রাজুয়েশন শেষ করে জার্মানিতে মাস্টার্স শেষ করে চাকরিতেও জয়েন করেছে ইতোমধ্যে। ফলে অদূর ভবিষ্যতে আমার আব্বার তৃতীয় প্রজন্মের একটি শাখার পরিচয় হয়তো এভাবে উৎকীর্ণ হবে যে, বাঙালি বংশোদ্ভূত স্যুইস নাগরিক তারা। যাদের মাতৃভাষা ফরাসি, বাংলা তাদের সেকেন্ড ল্যাঙ্গুয়েজ। আদিম সভ্যতার শুরু থেকে যাযাবর প্রকৃতির মানুষ এভাবেই হয়তো ছড়িয়ে পড়েছে দেশ থেকে দেশান্তরে।
হতে পারে তা দেশের মুক্তিযুদ্ধে,অনাকাঙ্ক্ষিত কোনো বিগ্রহে কিংবা হতেই পারে তা অধিক শান্তি ও স্বস্তির জন্যেও।
চলবে…
বালিকার চরৈবেতি-২৪॥ দিলারা হাফিজ