চতুর্থ পর্বের পর:
আজ সকাল থেকে দিদির কোনো সাড়াশব্দ নেই। আছে তো নিজের ঘরে কিংবা গবেষণাগারে। নাকি বাইরে বেরুলো। চন্দ্র গবেষণাগারের দিকেই প্রথম এগুয়। দরজায় নক্ করে
দিদি, দিদি…
হুম
ধাক্কা দিতেই দরজা খুলে যায়। খুব গভীর মনোযোগে কি একটা দেখছে দিদি। মনিটরে চোখ। গাড়ির মতো কিছু একটার ছবি খুব খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছে। এরই মধ্যে একটা ফোন আসে
হ্যাঁ ঈশান। হ্যাঁ কখন? দুপুর দুটোয়? আচ্ছা, আচ্ছা। আমি দেখছি। জানাচ্ছি তোমাকে কিছুক্ষণ পরেই।
চন্দ্র কিছু বলে ওঠার আগেই দিদি তাগাদা দেয়,
একটু রেডি হয়ে নেতো।এয়ার পোর্ট যেতে হবে।
কেন?
ঈশান আসছে আমেরিকা থেকে।
সেটা আবার কে? আজ ছুটির দিন ভাবলাম সারাদিন বাড়িতে কাটাব। গান শুনব। বিকেলে তোকে নিয়ে ঘুরতে যাব।
ধুর। আমার ওসব ঘোরাটোরা ভালো লাগে না।
তুই তো একটা মেশিন। ভালো লাগবে কেন? তুই কি মানুষ?
ঠিক ধরেছিস। এখন ওঠ। দ্রুত খেয়ে ১২টার মধ্যে স্টার্ট করিস।
চন্দ্র তো আরও অবাক। আমি একা? একা যাব?
হ্যাঁ। তো কী হয়েছে? ঈশান তো আছেই। ও তোকে বুঝিয়ে দেবে সব।
দিদিইইই। কী বুঝিয়ে দেবে। চিনি না, জানি না, একটা ছেলে আসবে তাকে আমার টেক অফ করতে হবে। তার কেউ নেই না কি?
আরে তা নয়। চিনিস না, চিনে নিবি। আর তোর চিনতে হবে না। ও তোকে চিনে নেবে। ছবি দেখেছে তোর। ভালো করে চেনে তোকে। ও কিছু যন্ত্রপাতি নিয়ে আসছে। সেগুলো নিয়ে বাসায় আসবি ওকেসহ। এগুলো আমার ল্যাবরেটরি তে লাগবে।
মানে কী?
রূপকে খুব উৎফুল্ল লাগে এই মুহূর্তে। চন্দ্র অবাক হয়ে চেয়ে থাকে রূপের দিকে। দিদি তার চেয়ে কালো। কিন্তু অদ্ভুত সুন্দর। মুগ্ধ করা হাসি। কিন্তু হাসে সে খুব কম। সারাক্ষণ কি সব জটিল তত্ত্ব নিয়ে ভাবে। আবার কি সব আয়রোনিক বিষয় আষয় দেখে ইন্টারনেটে। আবার সেদিন চন্দ্র খেয়াল করেছে টিভিতে ডিসকোভারি চ্যানেলে গাড়ির যন্ত্রাংশ কারখানা আর বানানোর কৌশলের ওপর একটা পর্ব দিদি খুব মনোযোগে দেখছিল। আজ মনে হচ্ছে তার খুব মন ভালো। সব ভালো কি ওই ঈশানের মধ্যে? কৌতূহল জাগে চন্দ্রর,
দিদি আসলে কী বা কে আসছে বল তো? ঈশান সে কি বিশেষ কেউ?
অদ্ভুত বিস্ময়ের চোখে তার দিকে তাকায় রূপকথা। যা সে কোনোদিন কোনোভাবেই ভাবছে না বা ভাবেনি তাই নিয়ে চন্দ্রর ভাবনা দেখে সে নির্বাক। পরক্ষণেই খুব খুশির একটা আমেজ এনে বলে,
আসছে টাইমমেশিন।
চলবে…