[পর্ব-৩৮]
কাল বার্ষিক পরীক্ষা। এই পরীক্ষায় সব বিষয়ে পাস করলেই ক্লাস সেভেনে ভর্তি হতে পারবো। না হয় আরও একবছর থাকতে হবে সিক্সে। খোকন-ধনু কাকারা আমার সিনিয়র হয়ে যাবে। কী যন্ত্রণা! একই ক্লাসে দুই বছর থাকতে ইচ্ছা করে না। আবার পড়তেও মন চায় না। না পড়লে পাস করবো কিভাবে? শীতের সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে হাত-মুখ ধুয়ে হারিকেন জ্বালিয়ে পড়তে বসে গেলাম।
কাল পরীক্ষার প্রথম দিন। হঠাৎ মনে পড়লো, পরীক্ষার ফিস তো জমা দেইনি। হলে ঢুকতে পারবো তো! প্রথম দিন হেডস্যার অনুমতি দিয়ে দেবেন, এই বিশ্বাস আছে। এর আগে প্রথম ও দ্বিতীয় সাময়িক পরীক্ষায়ও প্রবেশপত্র পাইনি। বিশেষ অনুমতি নিয়েই পরীক্ষা দিয়েছি। পরে কাকা পরীক্ষার ফিস জমা দিয়ে দিয়েছেন। আমার কাছে যে পরিমাণ টাকা-পয়সা আছে, চাইলে আমিও ফিস জমা দিতে পারি। কিন্তু কেন জানি মনে হয়, আমি দেবো কেন? পরীক্ষার ফিস, বই কেনার টাকা, মাসিক বেতন কাকা দেবেন। আমার পকেটে যত টাকাই থাকুক, দেওয়া যাবে না। ভাবতে ভাবতে পড়ছি, অথবা পড়তে পড়তে ভাবছি। প্রথম দিন বাংলা পরীক্ষা। অত কঠিন কিছু না। প্রতিটি গল্প-কবিতা-গদ্য মুখস্ত। সুতরাং প্রশ্ন যেখান থেকে যেভাবেই আসুক, উত্তর দিতে পারবো। কেবল হলে ঢোকার অনুমতি পেলেই হয়।
কে তাকে পেছন ফেলে এগিয়ে গেলো, কে তাকে উপেক্ষা করলো, তাতে তার কিছুই এসে-যায় না। তার কোনো পরীক্ষা নেই, পড়াশোনার তাড়া নেই, নেই কোনো প্রতিযোগিতার প্রস্তুতিও।
নাহ! সারারাত পরীক্ষার জন্য পড়ে লাভ নেই। মনে হলো, কোমলমতি শিশুদের প্রতি পরীক্ষা একটি অযৌক্তিক-অন্যায় আচরণ। সোজা কথায় অত্যাচার। বছরজুড়ে না বুঝে, না জেনে কেবল আজগুবি সব বিষয় মুখস্ত করো, এরপর পরীক্ষার খাতায় তাই উগরে দাও। স্যাররাও দেখেন, পরীক্ষায় খাতা লেখা সেই উত্তরের সঙ্গে পাঠ্যবইয়ে ছাপার অক্ষরে থাকা বিষয়ের মিল আছে কি না। মিল থাকলে দশে সাত থেকে শুরু করে নয় পর্যন্ত দেন। মিল না থাকলে, যতটুকু গরমিল, ততটুকু নম্বর কাটতে থাকেন। এতে শিক্ষার্থীর কী শেখা হলো, আর কীই-বা জ্ঞান অর্জিত হলো, আমার মাথায় ঢোকে না। স্যাররা এসব নিয়ে মাথা ঘামান কি না, জানি না। অবশ্যই স্যারদের জিজ্ঞাসা করার সাহসও হয়নি।
যাক। পরীক্ষার মতো কঠিন আজাব নিয়ে ভাবার দরকার নেই। তারচেয়ে বরং পরীক্ষার আগের রাতেই অভিজ্ঞতা কেমন, অনুভূতি কেমন, তা নিয়ে কবিতা লিখলে কেমন হয়? যেই ভাবা, সেই কাজ। খাতার পাতার পর পাতা লিখে চলেছি ‘কবিতা’। কিন্তু কিছুতেই মনঃপুত হচ্ছে না। তাই পাতা ছিঁড়ে ছিঁড়ে কাছারির মেঝেতে ফেলছি। দুই দিস্তা কাগজে বাঁধাই করা সাদা খাতা ছিঁড়তে ছিঁড়তে প্রায় শেষ হয়ে এলো। কবিতা হলো না কিছুতেই। অস্থির লাগছে। কী করি, কী করি! একটু বাইরে থেকে হেঁটে এলে কেমন হয়। লেপমুড়ি দিয়ে বসেছিলাম। এবার লেপটা গা থেকে ফেলে চাদর গায়ে চড়ালাম। আস্তে দরজা খুলে নামলাম কাছারির বাইরে। ঘন কুয়াশায় চাঁদ দেখা যায় না। বিড়ালের মতো পা ফেলে ফেলে রাস্তায় এসে দাঁড়াই। সোজা পশ্চিম দিকে যতদূর চোখ যায়, কেবল ঘন কুয়াশা। এই কুয়াশায় ঘাস যেমন ভিজে গেছে, তেমনি ভিজেছে ক্ষেতভরা খেসারির লতা, ধানের নাড়াও।
মাথা নুয়ে ভালো করে দেখলে বিস্ময় জাগে। ঝাপসা চাঁদের আলোয় খেসারির বেগুনি ফুলগুলো কী এক জ্যোতির্ময় আলো ছড়াচ্ছে। চিক-চিক করছে চাঁদের আলোয়। ফুলগুলো সব লতার ডগায়, একটু নিচের দিকে কচি-কচি অপুষ্ট ডাল। খোসা ছাড়িয়ে এমনিতেই খাওয়া যায়।
মাথায় ভূতি চাপলো। পরীক্ষার পড়া পড়বো না, ডাল ক্ষেতে হাঁটবো। হাঁটতে হাঁটতে কচি কচি ডাল খাবো। কচি-কচি ডাল খেতে খেতে হঠাৎ চিৎ হয়ে শুয়ে পড়ি। কুয়াশায় চাদর ভিজতে থাকতে, সেদিকে খেয়াল নেই। তাকিয়ে আছি আকাশের দিকে। দেখি, খণ্ড-খণ্ড মেঘমালা ভেসে যাচ্ছে ধীরে ধীরে দক্ষিণ আকাশ থেকে উত্তর আকাশের দিকে। একেক খণ্ড মেঘ ভেসে যাওয়ার পর মুহূর্তের জন্য চাঁদের আলো ঠিকরে পড়ছে পৃথিবীতে, এই ডাল ক্ষেতেও। আমার চোখ যেন ঝলসে যাচ্ছে সেই মুহূর্তের জোছনায়। এরইমধ্যে চোখ গেলো একখণ্ড মেঘের দিকে। যেন মেঘ নয়, একটি বুনো মহিষ খুব শান্ত-ধীর-স্থিরভাবে হেঁটে যাচ্ছে উত্তরের দিকে। তার কোনো তাড়া নেই, কোনো লক্ষ্য নেই। কিন্তু চলা আছে। সেই চলা নীরবে, নিঃশব্দে। কে তাকে পেছন ফেলে এগিয়ে গেলো, কে তাকে উপেক্ষা করলো, তাতে তার কিছুই এসে-যায় না। তার কোনো পরীক্ষা নেই, পড়াশোনার তাড়া নেই, নেই কোনো প্রতিযোগিতার প্রস্তুতিও। মেঘের ভেতরে মহিষ, কিভাবে সম্ভব! আমার দেখার ভুল? চোখ কচলে আবার তাকাই। এবার মহিষের শিং দুটি হাওয়া হয়ে যায়। অবয়বটা এখনো আছে। যত উত্তরে যাচ্ছে মেঘ, ততই মহিষের দেহ ভেঙে ভেঙে মিলিয়ে যাচ্ছে। নাহ! আর তাকাতে পারছি না। চোখ বন্ধ করি। কতক্ষণ বন্ধ রেখেছি, মনে পড়ছে না। চোখ মেলতেই দেখি, মহিষের চিহ্নমাত্র নেই। তাহলে কি এতক্ষণ ভুল দেখলাম?
তাতে লেখেন, ‘একদিনের জন্য অনুমতি দেওয়া গেলো।’ সবাই পরীক্ষার হলে ঢুকলো প্রবেশপত্র নিয়ে, আমিই কেবল বিশেষ অনুমতিপত্র হাতে।
ভাবনায় ছেদ পড়ে একজন হাঁটুরের গলার আওয়াজে। চকিতে চেয়ে দেখি, লোকটি আমার থেকে বেশ খানিকটা দূরে। অত দূর থেকে আমাকে চেনার কথা নয়। আমিও তাকে চিনতে পারছি না। একবার কেবল লোকটি উচ্চস্বরে বললো, ‘কে রে?’কোনো সাড়া শব্দ না পেয়ে ভূত দেখার মতো ভয় পেলো যেন, প্রায় রুদ্ধশ্বাসে দিলো দৌড়। সোজা পশ্চিম দিকে। ঘটনার আকস্মিকতায় আমিও কিংকর্তব্যবিমূঢ়। মনে হলো এভাবে ডাল ক্ষেতে শুয়ে থাকলে লোকজন ভাববে আমাকে ভূতে ধরেছে। তখন কেলেঙ্কারির সীমা থাকবে না। এরচেয়ে কাছারিতে ঢুকে পড়াই ভালো। সকালে পরীক্ষা। তাড়াতাড়ি ঘুমানোও দরকার।
কাছারিতে ঢুকেই জামাকাপড় বদল করে শুয়ে পড়ি। গাঢ়ঘুমে চোখ বুজে আসে। দেখি—আমি স্কুলে যেতে যেতেই পরীক্ষা শেষের পথে। বিকাল বেলা পরীক্ষা মনে করে তাড়াতাড়ি এলাম, এখন শুনি সকালে ছিল পরীক্ষা। হলের গেটে দাঁড়াতেই হেড স্যার বললেন, ‘যাও। আরও একবছর সিক্সে থাকো। গর্দভ কোথাকার!’ বকুনি খেয়ে মন খারাপ হয়ে গেলো। সাইকেলটা নিয়ে দ্রুত স্কুলের মাঠ পার হলাম। এখন কোথায় যাবো? ক্লাসমেটদের সবাই তো পরীক্ষা দিচ্ছে। কাকে বলি মনের দুঃখের কথা! না! কাউকে বলবো না। চুপচাপ কোথাও গিয়ে বসে থাকি। যেখানে কেউ যাবে না। সাইকেল চালাতে চালাতে আনমনে এসে ঢুকে পড়ি স্কুলের পেছনে বিশাল কবরস্থানে। পুরো কবরস্থানে বাবলা গাছ, নাটাইগাছ। মাঝেমাঝে বুনোলতা-পাতা। সাইকেল নিয়ে কবরস্থানের ঠিক মাঝখানে চলে আসি। এত ভেতরে কেউ ঢুকবে না। মাঝেমাঝে গরু-মহিষ ঢুকে পড়ে বটে, তবে ঘন কাঁটা আর ঝোপের কারণে এত ভেতরে আসতে পারে না। সাইকেলটা বাবলা গাছের সঙ্গে ঠেস দিয়ে রেখে চিৎ হয়ে শুয়ে পড়লাম। চাদরখানা গায়ের ওপর দিয়ে। মনে হলো অনন্ত নিঝঝুম কোনো গ্রহলোকে এসে গেছি। এখানে আমাকে আর কেউ পাবে না। চোখ বন্ধ করে অনুভব করার চেষ্টা করছি কবরস্থানের পরিবেশ। গাছেগাছে পাখিদের কিচির-মিচির। কোকিলগুলো এক নাটাই গাছ থেকে অন্য নাটাই গাছে হয়তো উড়ে উড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আর পাকা নাটাই ঠোকর মেরে মেরে খেয়ে দেখছে। যতটা না খায়, তারও বেশি নিচে ফেলে দেয়। তারই দুই একটা টুপ করে পড়ছে আমার বুকের ওপর, নাকের ওপর, কপালের ওপর।
এভাবে কতক্ষণ ছিলাম জানি না। হঠাৎ বেশ কয়েকজন মানুষের পদধ্বনি কানে এলো। তারা বলাবলি করছে, ‘আহা লোকটা অল্প বয়সেই মরে গেলো। গতকালও কত হাসাহাসি। কত আড্ডা। আর আজ কবরে চলে যাবে।’ বলতে বলতে আমাকে ঘিরে দাঁড়ালো, ‘এই কেরে তুই? এত গভীর বনে কী করোছ? কার পোলা তুই?’ বলতে বলতে তারা চাদর ধরে দেয় টান। অমনি চোখ খুলে দেখি—খোকন, ধনু কাকা, খায়রুল বাসার।
ধনু কাকা ধমক দিয়ে বলে, ‘কীরে সকাল সাড়ে আটটা বাজে। তুই এখনো ঘুমে? দশটা বাজে পরীক্ষা শুরু অইবো। উঠ উঠ।’ আমি চোখ ঢলতে ঢলতে উঠে বসি—‘ওহ। তোরা?’
খোকন বলে, ‘হ্যাঁ। আমরাই তো। ঘুমের ভেতর কী বলিস এসব? কার লগে এত কথা কইলি?’ থতমত খেয়ে বলি, ‘কই? কারও লগে না।’
চার জনেই সাড়ে নয়টার মধ্যে স্কুলে হাজির। সবার পকেটেই প্রবেশপত্র আছে। আমার নেই। কী করি? ভয়ে ভয়ে গিয়ে দাঁড়াই হেড স্যারের সামনে। স্যার আমার দিকে একপলক তাকান মাত্র, এরপরই চোখ ফিরিয়ে নিয়ে বলেন, ‘কী চাই?’ পরীক্ষার ফিস দিতে না পারার বিষয়টি বলতেই বললেন, ‘ও আচ্ছা। দাঁড়াও।’ এরপর নীল রঙের একটি ছোট্ট কাগজ টেনে নেন। তাতে লেখেন, ‘একদিনের জন্য অনুমতি দেওয়া গেলো।’ সবাই পরীক্ষার হলে ঢুকলো প্রবেশপত্র নিয়ে, আমিই কেবল বিশেষ অনুমতিপত্র হাতে।
তার চোখে বিষের বাণ, তীব্র ক্রোধ, প্রচণ্ড ঘৃণা, যেন সেই বাণ আমার ফুসফুস বিদ্ধ করে পিঠ দিয়ে বেরিয়ে যাবে। আমি চোখ ফিরিয়ে নেই।
পরীক্ষা শুরু। বিশ মিনিট যেতে না যেতেই কোলাহল শুরু। এমন সময় বেত হাতে ঢুকলেন হুজুর স্যার (মাওলানা নূরউল্লাহ), ‘এই কেউ কথা বলবে না। কেউ কারও খাতা দেখবে না। নকল ধরা পড়লে এক্সফেল।’ বলতে বলতে সপাং করে টেবিলে বেতের বাড়ি মারেন। একযোগে সবাই চমকে উঠি। আর তখনই আমার চোখ যায়, বেলালের দিকে। যে বেলাল কেরামতপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে এসেছে। যার রোল নম্বর ১ ছিল। আর আমার ১১ ছিল বলে যে আমাকে বিদ্রূপ করেছি। দেখি, তার বেঞ্চের ভেতর থেকে চিকন একখানা কাগজ বের হচ্ছে। আর সে তা দেখে দেখে লিখছে। কোনো দিকেই তাকাচ্ছে না। ভাবখানা এমন যে, সবই তার কমন পড়েছে। বাকিরা কেউ মাথা চুলকে চুল ছিঁড়ছে, কেউ ফিস ফিস করছে, কেউ কলম কামড়ে বসে আছে। হুজুর স্যার সবার উদ্দেশে হুঙ্কার ছাড়েন—‘এত কথা কিসের? সবাই দ্যাখ বেলাল কী সুন্দর করে লিখছে। ঘাড়ও নাড়াচ্ছে না। আর তোরা?’ স্যারের কথা শেষ হয় না। বলি, ‘তার কারও দিকে তাকাতে হয় না? কথাও বলতে হয় না। বেলাল তো স্বয়ংসম্পূর্ণ!’
আমার কথায় হুজুর স্যার যতটা অবাক হন, তারও বেশি ক্ষেপে ওঠে বেলাল। বলে, ‘তুই স্যার নাকি? আমি নকল করি, না নিজে থেকে লিখি, সেই কথা বলার তুই কে?’ আমিও ছাড়ার পাত্র নই। বলি, ‘তুই নকল করছিস, এই কথা কখন কইলাম?’ এবার হুজুর স্যারের দিকে তাকিয়ে বলি, ‘হুজুর দেখছেন, আমি কিন্তু কই নাই যে, সে নকল করছে। সে কিন্তুক নিজেই স্বীকার করলো।’
এবার বেলালের দিকে আগাতে থাকেন হুজুর স্যার। ভয়ে বেলাল থত্থর করে কাঁপে। এক ফাঁকে কাগজের টুকরোখানা টেবিলের নিচে ফেলে দেয়। হুজুর স্যার তাকে দাঁড়াতেই বলতেই সে কাগজের টুকরোখানা পায়ের তলায় চেপে ধরে। এ সময় স্যার তার খাতা, টেবিল, শার্টের পকেট পরীক্ষা কিছুই পান না। এবার আমার ওপর ক্ষেপে যান, ‘ফাইজলামি করিস? পিঠের ছাল তুলি নিমু মিছামিছি একজনকে দোষারোপ করলে।’ আমারও জিদ চেপে যায়। সোজা বেঞ্চ থেকে উঠে দাঁড়াই। হুজুর স্যারের দিকে যেতেই তিনি বলেন, ‘কই যাস?’ আমি কোনো কথা না বলে বেলালকে একটা ধাক্কা দিতেই সে টাল সামলাতে না পেরে এক কদম সরে যায়। অমনি পায়ের তলা থেকে কাগজখানা বের হয়ে আসে। আমি ঝুঁকে পড়ে তুলে আনি। হুজুর স্যারের হাতে দিয়ে বলি, ‘দেখেন হুজুর, এটা কী?’
হুজুর স্যার, আমাকে বেঞ্চে বসতে বলেই বেলালের খাতা ও টুকরো কাগজের লেখা মিলিয়ে দেখতে থাকেন। স্যার লেখার বিষয় মিলিয়ে দেখতে দেখতে দাঁড় কড়মড় করতে থাকেন। আর একবার বেলালের দিকে তাকান, একবার খাতার দিকে। পুরো পরীক্ষার হলে নেমে আসে পিনপতন নীরবতা। কেউ জানি না, কী ঘটতে যাচ্ছে! বেলাল একবার মাত্র আমার দিকে তাকালো। তার চোখে বিষের বাণ, তীব্র ক্রোধ, প্রচণ্ড ঘৃণা, যেন সেই বাণ আমার ফুসফুস বিদ্ধ করে পিঠ দিয়ে বেরিয়ে যাবে। আমি চোখ ফিরিয়ে নেই। নিজের পরীক্ষায় মনোযোগ দিতে চাই। কিন্তু আমার হাত কাঁপতে থাকে। কাঁপতে থাকে।
চলবে…
জীবনের যতিচিহ্নগুলো-৩৭ ॥ মোহাম্মদ নূরুল হক