[পর্ব-২৭]
মাঝরাতে তীব্র অস্বস্তি নিয়ে ঘুম ভাঙলো তিতলির। চোখ বুজে হঠাৎ ঘুম ভাঙার কারণটা বুঝতে চেষ্টা করলো সে। পরক্ষণেই টের পেলো। তলপেট বেয়ে নেমে যাচ্ছে তীব্র, তীক্ষ্ণ একটা ব্যথা। উরু বেয়ে নামছে উষ্ণ স্রোত। কী করবে বুঝতে সময় লাগলো খানিক। পাশে অরুন্ধতী ঘুমে কাদা। ও পাশের ঘরে বাদলের নাক ডাকার আওয়াজ শোনা যাচ্ছে এ ঘর থেকেও। ব্যথাটা তীব্রতর হচ্ছে ক্রমশ। হাত বাড়িয়ে সাইড টেবিল থেকে ফোনটা টেনে নিলো তিতলি। ফোন দিলো বাদলের নম্বরে। বেজে যাচ্ছে। বেজেই যাচ্ছে। অনন্তকাল বাজছে, মনে হলো তিতলির। নাক ডাকার আওয়াজ থামলো একসময়। লাইট জ্বলে উঠলো তিতলির ঘরে। লুঙ্গি পরা, খালি গা, ঘুম ঘুম ফোলা মুখের বাদলকে কেমন অসহায় আর অপ্রস্তুত দেখালো। হঠাৎ বাদলের জন্য খুব অচেনা একটা মায়া ঢেউ তুললো বুকের ভেতর। উদ্বেগ আর আশঙ্কায় পাংশু মুখে এগিয়ে এসে তিতলিকে বললো, কী হয়েছে?
-ব্যথা! প্রায় ফিসফিস করে বললো তিতলি। কোমর থেকে পা পর্যন্ত অসাড় লাগছে তার। তলপেট ছিঁড়ে যাচ্ছে ব্যথায়।
-ব্যথা মানে? কোথায় ব্যথা? বাদলের কণ্ঠে ভয় স্পষ্ট।
-তলপেটে।
-বেবি ঠিক আছে তো? বাদলের ব্যাকুল প্রশ্নে এই ঘোর বিপদেও হেসে ফেললো তিতলি। আহা রে পুরুষ! তিতলি মরে যাচ্ছে, তখনো বাদলের সব উৎকণ্ঠা তার অনাগত সন্তান নিয়ে।
-আমি মারা যাচ্ছি বাদল। আমাকে হাসপাতালে নিয়ে চলো, দ্রুত! বলতে বলতেই চোখ উল্টে জ্ঞান হারালো তিতলি। বাদল হকচকিয়ে গেলো ভীষণ। তিতলির মুখ দুহাতে উঁচু করে ধরে সে ফুঁ দিতে থাকলো জোরে। দৌড়ে পানি এনে ছেটাতে থাকলো তিতলির চোখে-মুখে। কিছুক্ষণ পর চোখ মেললো তিতলি। শ্বাস চলছে দ্রুত। অস্থির, ভাষাহীন চোখে তাকিয়ে থাকলো ক্ষণকাল। অরুন্ধতীর ঘুম-ঘুম, ভয়ার্ত মুখের দিকে চোখ পড়তেই চোখ ফেটে গড়িয়ে পড়লো জল। না, তাকে বাঁচতে হবে, অন্তত তিতলির জন্য।
পাশে দাঁড়িয়ে থাকা নার্সটা তাকে তুলা ভিজিয়ে ভিজিয়ে চিপে দিচ্ছিল জিবের ওপর, বুভূক্ষুর মতো টেনে নিচ্ছিলো সে-ও। তার শুধু মনে হচ্ছিল, মারা যাচ্ছে সে, হারিয়ে যাচ্ছে অনেক দূরে, কেউ যেন তাকে টেনে নিচ্ছে অনেক দূরের কোনো গন্তব্যে, দুর্নিবার টানে।
-অ্যাম্বুলেন্স ডাকো। মারা যাচ্ছি আমি। বলে চোখ বন্ধ করলো তিতলি। উঠে বসার শক্তিটুকু নাই আর। পেট ফুলে উঠেছে ততক্ষণে, রক্তে ভেসে যাচ্ছে বিছানা।
-অরুন্ধতী শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো মাকে। কাঁদছে।
-কী হয়েছে মা? ফোঁপাতে ফোঁপাতে বললো মেয়ে।
কিছু না মা। ঠিক হয়ে যাবে। ডাক্তারের কাছে গেলেই সুস্থ হয়ে যাবো। ফিসফিসিয়ে টানা কথাগুলো বলে হাঁপিয়ে গেলো তিতলি। বিছানা থেকে ওঠার চেষ্টা করতেই জ্ঞান হারালো আবার।
অ্যাম্বুলেন্স পেতে সময় লাগলো। এই মাঝরাত্তিরে অ্যাম্বুলেন্স পাওয়া সহজ নয়। পাওয়া গেলো অবশেষে। বাদল পাঁজাকোলা করে অ্যাম্বুলেন্সে তুললো তিতলিকে। রাতের নির্জনতা চিরে অ্যাম্বুলেন্স ছুটলো কাছের হাসপাতাল অভিমুখে। তিতলির মুখ ততক্ষণে, ফ্যাকাসে, সাদা। ইমার্জেন্সি মেডিক্যাল অফিসার তিতলিকে দেখেই কালবিলম্ব না করে পাঠালো আল্ট্রাসনো রুমে। সনোলজিস্ট আর সহকারী মেয়েটার কথোপকথন অস্পষ্ট শুনলো তিতলি। যেন বহুদূর থেকে ইথারে ভেসে আসা কথামালা শুনতে পেলো সে। কয়েকটা শব্দ সে আলাদা করতে পারলো সেখান থেকে। একটোপিক, বাচ্চা, হার্টবিট, টিউব বার্স্ট, অপারেশন, পাঁচমিনিট—শব্দগুলো শুনতে শুনতে গভীর ঘুমে ডুবে গেলো তিতলি। ঘুমে ডুবতে ডুবতে তার স্মৃতিতে ভেসে উঠলো প্রিয় কিছু মুখ। আহা। অরুন্ধতী। মাকে ছেড়ে থাকতে তার কষ্ট হবে খুব। তরুণ? তার ভাইটা? কোথায় যে হারিয়ে গেলো! ভাইটাকে বড় দেখতে ইচ্ছে করতো আজকাল। আর দীপন? এ জীবনে আর বুঝি দেখা হলো না মুখটা তার। বাদল? নাহ। বাদলের আর কী! সামলে নেবে। সংসার গুছিয়ে নেবে দ্রুতই।
পরের সময়টুকু যেন দৌড়ে যেতে থাকলো, বাদলের কাছে অন্তত তেমনই মনে হলো। জ্ঞানহীন তিতলিকে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়ার সময় বন্ডে সাইন করে ব্লাড ডোনার জোগাড় করা, ডাক্তারদের নির্দেশ অনুযায়ী ওষুধ এনে দেওয়া—নানান কাজে এতটাই ব্যস্ত থাকলো সে, সময় যে কোনদিক দিয়ে গড়িয়ে গেলো, টেরই পেলো না একদম। অপারেশন শেষে, বিকেল নাগাদ পোস্ট ওটিতে পাঁচমিনিটের মধ্যে তিতলিকে দেখার অনুমতি পেলো বাদল। পোস্ট ওটির সামনে পাংশুমুখে বসে ছিল অরুন্ধতী। চোখের নিচে জলের দাগ স্পষ্ট। শুকিয়ে গেছে। মেয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে বুকটা মুচড়ে উঠলো বাদলের। মনে পড়লো সারাদিন খাওয়া হয়নি মেয়েটার, তারও। মেয়েটার না জানি কত কষ্ট হয়েছে। আহা। খিদেয় তো কখনো কষ্ট করতে হয়নি অরুকে। বাচ্চা মেয়েটা তবু কোনো অনুযোগ করলো না, বাদলের সঙ্গে শুকনো মুখে ঢুকলো তিতলিকে দেখতে। তিতলি তখনো অচেতন। সাদা চাদরে ঢাকা শরীর। একহাতে স্যালাইন চলছে, অন্যহাতে রক্ত। মুখটা অস্বাভাবিক সাদা, ফ্যাকাসে। মাকে এ অবস্থায় কখনো দেখেনি অরুন্ধতী। রুমে ঢুকে থমকে গেলো সে। এগিয়ে গেলো পায়ে পায়ে তিতলির বেডের দিকে। তারপর ফুঁপিয়ে উঠলো মেয়েটা। ঝুঁকে পড়লো মায়ের মুখের ওপর। ফিসফিসিয়ে ডাকলো, মা!
নিষেধ করলো বাদল। বললো, থাক মা। তোমার মা ঘুমাচ্ছে। ডেকো না এখন।
অরুন্ধতী উঠলো না। তেমনি ঝুঁকে থেকেই আবার ডাকলো, মা! মা!
চোখের পাতা কেঁপে উঠলো তিতলির। চোখ মেললো আস্তে আস্তে। প্রথমে কেমন অচেনা দৃষ্টিতে তাকালো। সব ঝাপসা আর অপরিচিত লাগলো তার। তারপর স্পষ্ট হলো অরুন্ধতীর মুখ। চমকে উঠলো তিতলি। অবাক হলো নিজেই। এতক্ষণে অরুন্ধতীর কথা তো কই একবারও মনে পড়েনি তার! মাঝে অনেকটা সময় জ্ঞান ছিল না তার, মনে না পড়াটাই স্বাভাবিক, কিন্তু ওটিতে, যখন অপারেশন চলছিল তার, কানে আসছিল ডাক্তার-নার্সদের ফিসফিসানি কথার আওয়াজ, মনে হচ্ছিল অনেক দূর থেকে ভেসে আসছিল সেসব শব্দ, তবু টের পাচ্ছিল সবই, ভীষণ গলা শুকিয়ে আসছিল তিতলির, পানি খাবো! পানি! –বলে চিৎকার করছিল সে, কিন্তু আদতে তার ঠোঁট নড়ছিলো শুধু, কণ্ঠ দিয়ে কোনো আওয়াজ বের হচ্ছিলো না মোটেই, সে শক্তিই অবশিষ্ট ছিল না আর তার। পাশে দাঁড়িয়ে থাকা নার্সটা তাকে তুলা ভিজিয়ে ভিজিয়ে চিপে দিচ্ছিল জিবের ওপর, বুভূক্ষুর মতো টেনে নিচ্ছিলো সে-ও। তার শুধু মনে হচ্ছিল, মারা যাচ্ছে সে, হারিয়ে যাচ্ছে অনেক দূরে, কেউ যেন তাকে টেনে নিচ্ছে অনেক দূরের কোনো গন্তব্যে, দুর্নিবার টানে। কিন্তু কই, তখনো একবারও অরুন্ধতীকে মনে পড়েনি তার! কাউকেই মনে পড়েনি তখন। মনে হচ্ছিল, ভীষণ নৈঃশব্দ্যের কোনো জগৎ দারুণ আকষর্ণে নিজের দিকে টানছে তাকে। সেখানে সে ছাড়া আর কেউ নেই। এমনকি পৃথিবীও নেই। সে বেঁচে আছে নাকি মারা গেছে, সে অনুভূতিটুকুও তার ছিল না তখন আর। জগৎটা তখন ছিল অদ্ভুত প্রাণহীন, ভীষণ অচেনা।
অরুন্ধতীর ডাকে যেন ঘোর কাটলো তিতলির। জেগে উঠলো তার ঘুমন্ত পৃথিবী। নিজেকে মনে পড়লো নতুন করে। মনে পড়লো অরুন্ধতীকে। আহা। তার মেয়েটা। চোখের নিচে শুকনো জলের দাগ, শুকিয়ে যাওয়া মুখ। অথচ এ মুখটা পর্যন্ত এতক্ষণ ভুলে ছিল সে! চোখে কান্না উপচে পড়লো তিতলির। হাত দিয়ে অরুকে ছুঁয়ে দিলো একটু। ব্যথা। স্যালাইন চলছে হাতে।—খেয়েছিস মা? দুর্বল গলায় মেয়েকে জিগ্যেস করলো তিতলি।
এপাশ-ওপাশ মাথা নাড়লো মেয়ে। চোখ বেয়ে আবার নেমেছে অঝোর শ্রাবণ। এবার বাদলের দিকে চোখ পড়লো তিতলির। শুকনো, না খাওয়া মুখে খোঁচা খোঁচা দাড়ি। কেমন দুঃখী আর অসহায় দেখাচ্ছে তাকে। বাদলের চোখে কিছুক্ষণ চোখ রাখলো তিতলি। বললো, ক’টা বাজে?
—সাড়ে চারটা। যন্ত্রের মতো উত্তর দিলো বাদল। তিতলির হঠাৎ ক্লান্ত লাগলো খুব। মনে হলো গভীর ঘুমে সে তলিয়ে যাচ্ছে আবার। জড়ানো গলায়, তোমরা খেয়ে নাও কিছু, বলেই চোখ বুজলো তিতলি। হারিয়ে গেলো আবার ঘুমের রাজ্যে।
তবু কেন যে এত কার্পণ্য তার তিতলির প্রতি! কেন যে এত অবহেলা! কী করছে দীপন এখন? হাজার মাইল দূরের কোনো এক শহরে কী করে কাটছে তার একাকী জীবন?
অরুন্ধতীকে নিয়ে হাসপাতালের ক্যান্টিনে বসে হালকা কিছু খেয়ে নিলো বাদল। খেতে বসে টের পেলো প্রচণ্ড খিদে পেয়েছে তার, কিন্তু খেতে পারছে না কিছুই। কেমন গা গুলাচ্ছে, মাথাব্যথা। জ্বর আসবে সম্ভবত। অরুন্ধতীও প্রায় খেলো না প্রায় কিছুই। খাবার নিয়ে নাড়াচাড়া করলো, সামান্য কিছু মুখে দিলো, তারপর প্লেট সরিয়ে রাখলো। অন্যমনস্ক, মনমরা। আচমকা বাদলের দিকে তাকিয়ে বললো, মা কি মরে যাচ্ছে বাবা?
চমকে অরুন্ধতীর মুখের দিকে তাকালো বাদল। অরুন্ধতীর চোখ থেকে জল পড়ছে টপটপ, ঠোঁট কাঁপছে তিরতির, কষ্টে কান্নার শব্দ আটকে রেখেছে মেয়েটা, যন্ত্রণা গিলে নিচ্ছে ঠোঁট কামড়ে। অরুন্ধতীর দিকে তাকিয়ে বাদলের হঠাৎ নিজের মাকে মনে পড়লো। সারাদিনে কাউকে মনে করার ফুরসতই মেলেনি তার। অবশ্য মনে করার মতো কেউ নেই্ও তেমন। অরুন্ধতীর কান্না মনে হলো তার মধ্যেও সংক্রমিত হতে চাইছে। সাবধানে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করলো বাদল। মেয়ের মাথায় হাত রেখে ম্লান হাসলো। বললো, না মা। তোমার মায়ের কিছু হবে না। ঠিক হয়ে যাবে সব। দেখেছ না মাকে? এখন ভালো আছে তো। ঘুমাচ্ছে।
কেমন, অনিশ্চিত দেখালো অরুন্ধতীকে। চিন্তিত। বাদলের পেছন পেছন আবার সে বসলো গিয়ে পোস্ট ওটির সামনে। ভেতরে তিতলি তখনো অচেতন। অক্সিজেন দিয়ে রাখা হয়েছে তখন তাকে।
মাঝরাত্তিরে আবার জ্ঞান ফিরলো তিতলির। তাকিয়ে দেখলো চারপাশ। প্রথমে সব কেমন অনিত্য মনে হলো তার। প্রথমে বুঝতে চেষ্টা করলো সে আসলে কোথায়। পাশ ফিরতে চেষ্টা করলো। তীব্র একটা ব্যথা ছড়িয়ে পড়লো শরীরজুড়ে। পরক্ষণেই মনে পড়লো সব। অদূরে টেবিলে মাথা রেখে দুজন নার্স ঝিমাচ্ছে। কিংবা ঘুমাচ্ছে হয়তো। সাদা ড্রেসে হঠাৎ তাদের দিকে চোখ পড়ায় তাদের অন্যজগতের প্রাণি বলে ভ্রম হলো তিতলির। আস্তে আস্তে সব মনে পড়লো তার। অরুন্ধতীকে মনে পড়লো। আহা। তার মেয়েটা। কোথায় কী করছে সে? নার্সকে ডাকলো অস্ফুট স্বরে, সিস্টার!
লাল চোখে তাকালো মেয়েটা। চোখভরা ঘুম। ভারী, মোটা গলায় বললো, কী হয়েছে?
-আমার মেয়েটা কোথায়?
আপনার মেয়ে আর হাজব্যান্ড রুমের সামনেই বসে ছিল তো। এই একটু আগে কেবিনে গেলো। চিন্তার কিছু নেই, আপনি ঘুমান।
সঙ্গে সঙ্গেই স্বস্তিতে চোখ বুজলো তিতলি। চোখ বেয়ে জল গড়ালো। সরকারি শিশু পরিবারে বড় হওয়া তিতলিকে জীবন আর কতবার যে বুঝিয়ে দেবে, পৃথিবীতে সে আসলে একা, আপনার বলতে কেউ নেই তার, যে তার অবর্তমানে অরুন্ধতীর মাথায় হাত রেখে বলবে, ভয় নেই, আছি, আমি আছি! কে জানে! পরক্ষণেই মনে হলো, না, অরুন্ধতী তার মতো একা নয়। তার বাবা আছে। বাদল পাগলের মতো ভালোবাসে মেয়েকে। অরুন্ধতীকে আগলে রাখবে সে। তাকে অন্তত তিতলির মতো গ্লানিময় কোনো পথ পাড়ি দিতে হবে না, নিয়ত পান করতে হবে না অপমানের তীব্র গরল। এতক্ষণে দীপনকে মনে পড়লো তিতলির। আহ্! দীপন! তিতলি যদি মরে যায় আজ, মরে যেতো যদি এতক্ষণে, দীপন কি জানবে সেটা? জানলে কতদিন পর? জীবন তবু তেমনি বয়ে চলবে তার। শুধু হঠাৎ হঠাৎ হয়তো তার বুকের ভেতর চলকে উঠবে তিতলির মুখ, বলকে উঠবে তিতলির কোনো ঝাপসা স্মৃতি। ব্যস! ওটুকুই। আর কিছু চায় না সে দীপনের কাছে। চায়ওনি কখনো। তবু কেন যে এত কার্পণ্য তার তিতলির প্রতি! কেন যে এত অবহেলা! কী করছে দীপন এখন? হাজার মাইল দূরের কোনো এক শহরে কী করে কাটছে তার একাকী জীবন? ভাবতে ভাবতে আবার ঘুমে তলিয়ে গেলো তিতলি। নার্স এসে স্যালাইন পাল্টে দিলো তার, ব্লাড শেষ দেখে খুলে দিলো ব্লাডব্যাগ। আবার সকালে ব্লাড দিতে হবে তিতলিকে। অনেক ব্লাড গেছে শরীর থেকে তার। মুখ তখনো ফ্যাকাসে। তবে আগের চে অনেকটা ভালো সে এখন। অক্সিজেন খুলে নেওয়া হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই শ্বাস নিচ্ছে সন্ধ্যা থেকে।
চলবে…
উজানে গড়াই-২৬॥ শিল্পী নাজনীন