॥পর্ব-২৪॥
আমার মায়ের কথা বলি। মায়েরা ছিলেন তিনি বোন, একভাই। আমাদের একমাত্র মামা সবার ছোট। মা তিন বোনের মেঝো। নানা ইসমাইল তালুকদার। বারহাট্টার সেই এক গ্রামের তালুক ছিল তার। গ্রামের নাম জামালপুর। কলমাকান্দা থানা। নেত্রকোণার শেষ মাথা। তারই পরপর লাগোয়া সুনামগঞ্জ। তখন বৃহত্তর সিলেট জেলার অন্তর্ভুক্ত ছিল।এখন সুনামগঞ্জ জেলা হয়েছে। জামালগঞ্জ থানা। গ্রামের নাম চান্দের নগর। সেখানে আমার দাদার আবাস। ইসরাইল পুরকায়স্থ। দাদির নাম মালেকা বেগম। মায়ের বিয়ে হয়েছিল এখানেই। ইসরাইল পুরকায়স্থের বড় সন্তান আমার বাবা। গ্রামের সেই আমলে দশ গাঁয়ের একমাত্র শিক্ষিত ছেলে। নাম মোহাম্মদ আব্দুল হক। জামালপুর গ্রামের ইসমাইল তালুকদারের মেঝো মেয়ে আনোয়ারা খাতুন। তার সঙ্গেই বিয়ে হলো খুব সহজ সাধারণ ঘরের শিক্ষিত বড় ছেলে আব্দুল হকের। পাঁচ ভাইয়ের মধ্যে বড় তিনি। জামালপুর গ্রামে আজও দোতলা বাড়ির সামনের বারান্দায় দাঁড়িয়ে যত দূরে চোখ যায়, ততদূর ইসমাইল তালুকদারের তালুক; আজও মাথা তুলে আছে। তবে দাপটের লোক নেই। তালুক চালানোর লোক নেই। তাই জরাজীর্ণ। কোনোমতে।
আমি জীবনে একবার গেছি সে তালুকে। খুব ছোট তখন। বয়স বড়জোর ছয়। দূরত্ব-বিরাটত্ব তালুক-মুলুক জমিদারি—এসব বোঝার বয়স নয় তখন। আমি গেছি গাড়িতে চড়ে। নৌকায় দুলে দুলে। বন পথের মধ্যে দিয়ে হেঁটে হেঁটে যেতে হয়েছিল এটুকু মনে আছে। মনে আছে পুকুর। মনে পড়ে সেই আম কাঁঠালের ভরা মৌসুমে গিয়েছিলাম মায়ের সঙ্গে। জীবনে একবারই। আমার এই পুরো জীবনে মাকে দেখেছি একবার মাত্র বাপের বাড়ি যেতে।নানি জীবিত থাকতে।মা বার বারই বলতেন একটা কথা। এখনো কানে বাজে—আমি বাপের বাড়ি বেড়িয়ে বেড়ালে ছেলেমেয়েদের পড়াশোনায় মন বসবে না। মা যখন-তখন হাতের নাগালে থাকা লাগে।
একবার মাত্র নানাবাড়ি যাওয়ার ইতিহাস ভোলার নয়। ভোলার নয় সে জৌলুস। এখনো মনে পড়ে দই-চিড়ার ফলাহারে সকাল। বিকেলে খড় পোড়ানোর গন্ধে মাতাল বাতাস। সন্ধ্যার দিকে ক্রম ধাবমান। মনে পড়ে বন্দুকের গুলিতে শিকার করা বক। কবুতরের মাংস। পুকুর সেচে তোলা বড় বড় জিওল মাছ। নানার কবর। এক উঠোনভরা কাজের লোক বসেছিলেন পিঠা বানাতে। তাদের হাতের পিঠা। আমরা নানিকে ডাকতাম নানাবুজি বলে। এখনো মনে আছে তার তেজ। দারুণ দাপট। মনে আছে বাড়িভরা লোকজন। চাকর নোকর। সবাই নানাবুজির প্রচণ্ড দাপটে সবসময় ভীত-সন্ত্রস্ত। তিনি মালেকা জারিনুস। নানা ভাইয়ের মৃত্যুর পর সতেরোটি বছর এই জারিনুসই ধরে রেখেছিলেন প্রতাপশীল সে তালুকদারি। দারুণ ধৈর্যে। দোর্দণ্ড প্রতাপে। একা। গ্রামীণ রাজনীতি মানে ভিলেজ পলিটিক্স তার ধারেকাছে ঘেঁষতে পারেনি। নানা ভাই অর্থাৎ তালুকদার সাহেবকে দেখা হয়ে ওঠেনি আমার। আমার জন্মের আগেই তিনি নেই। জন্মের পর থেকেই এই জানি।
নানা ভাই মারা গেছেন। নানাবুজিও গেলেন। তার তিন মেয়ে এক ছেলের ভরা সংসার রেখে। গেলেন একা। নিঃস্ব। কেউ নেই কাছে তখন। তখন আমি খুব ছোট। মাত্র বাবা ট্রান্সফার হয়ে ময়মনসিংহে এলেন। নানাবুজির ছিল ক্রনিক ডায়াবেটিস। বেড়ে গিয়েছিল যখন খুব। বাড়িভর্তি চাকর-বাকর। বোঝার কেউ ছিলেন না। ওই অজ-পাড়াগাঁয়ে ডাক্তার পাওয়াও মুশকিল ছিল। তিনি যখন মারা গেলেন, তখন বাড়িভরা ছিল মানুষ। অনেক মানুষ। প্রচুর মানুষ। কিন্তু কেউই আপন নন তারা। আমার মায়ের চাচাত ভাই-বোনেরা ছিলেন। এরাই হয়েছিলেন শেষ বয়সে নানাবুজির শারীরিক ভরসার জায়গা। তবু কি ভরসা করতে পেরেছিলেন তিনি? যারা সবাই নিজের আখের গোছাতে ব্যস্ত ছিল। শোনা গেছে তিনি খুব গোপন আর জরুরি একটা কথা বলার জন্য নিজের কোনো সন্তানকে খুঁজেছিলেন অন্তিম মুহূর্তে। নানাবুজি ব্যাংক বিশ্বাস করতেন না। কেন যে বিশ্বাস করতেন না, তার মতো প্রখর বুদ্ধিসম্পন্ন একজন গ্রাম্য বধূ? যিনি স্বামীর মৃত্যুর পর সতেরো বছর তালুক সামলেছেন। তার ব্যাংক বিশ্বাস না করার কারণটা আমি আজ বুঝতে পারি। আসলে মানুষের দরকার একজন মানুষ। তাকে ভালোবাসার জন্য। তার নিরাপদ নির্ভরতার জন্য। শারীরিক অসুস্থতায় মাথার কাছে বসার জন্য। কপালে হাত রাখার জন্য। একগ্লাস জল ঢেলে দেওয়ার জন্য। ব্যাংকে টাকা জমা দেওয়ার জন্য। টাকা তুলে দেওয়ার জন্য। বিষাদে বুকে জড়িয়ে ধরার জন্য। বেড়াতে যাওয়ার জন্য। ঘাসের মাঠে হাঁটার জন্য হাতে হাত রাখার জন্য। সর্বোপরি মানুষের নিঃসঙ্গতায় একজন মানুষই দরকার। আর কিছু নয়। নানাবুজির সে মানুষটা ছিল না। চারপাশে দেবর ভাসুরের ছেলেরা। চাকর-বাকর। কাউকে বিশ্বাস করার ছিল না। তিনি টাকা রাখতেন মাটিতে গর্ত করে বিশাল মাটির ঘড়ায়। নানাবুজি মারা গেছেন সে খবর যখন এলো আমার মায়ের কাছে। তড়িঘড়ি করে দু’চারটা কাপড় নিয়ে মা খালারা পৌঁছুলেন নানা বাড়িতে। ততক্ষণে খালি হয়ে গেছে বাড়ির সব আলমারি। আলামারিতে রাখা শাড়ি। কাঁচের বাসন। সোনার অলঙ্কার। নাকছবি। কোমরের বিছা। গলার সীতাহার। বিছানার দামি চাদর। পিতল কাঁসার দামি দামি সব হাড়ি-পাতিল-গ্লাস-জগ। মাটির নিচে পুতে রাখা বিশাল ঘরায় ছিল সোনার বেশ কিছু মোহর। উধাও সব। সারাবাড়িতে একটি টাকাও পাওয়া যায়নি, যা দিয়ে দাফন-কাফনও হতে পারে। ইভেন আমার মা খালারা যে রাতে ফিরে আসবেন, সব কাজ সেরে, সেদিন মধ্যরাতে বাড়ির সিঁদ কেটে চুরি হয়ে গিয়েছিল তাদের সমস্ত ল্যাগেজ। আটপৌঢ়ে একটা শাড়ি পড়ে ঘুমিয়েছিলেন বোধ করি। সেটাই পরে বাড়ি ফিরে এসেছিলেন সবাই। আমরা হতবাক হয়েছিলাম, সেদিন মায়ের ফিরে আসা দেখে। বিশাল এক তালুকের শাসন শেষ হলো আমার নানাবুজির মৃত্যুর সঙ্গে-সঙ্গে।
ঢাকায় বাস করা বাংলাদেশে ট্যারিফ কমিশনের ডেপুটি ডিরেক্টর আমার একমাত্র মামা। ফজলুল হক তালুকদার আর ঢাকায় বসে শাসন করে যেতে পারেননি সে তালুক। তিনি কেবল ধরে রেখেছেন লাগামটা। আজও ধরা আছে। এখন আর কারও নামে সেখানে বাঘে-মহিষে একঘাটে জল খায় না। মাটির ঘরে দোতলা দালান উঠেছে। দিনে দিনে বেড়েছে বাড়ির চাকচিক্য। শান-শওকতে ভরা গ্রামের মাটির মায়ার মমতায় জড়িয়ে থাকা বাড়ির ঘরগুলোতে লেগেছে শহরের কনক্রিট বাতাস। শরীর জুড়ানো গাছের পাতার বাতাসের বদলে লেগেছে শুনেছি ফ্যানেরও বাতাস। দোতলা বৈঠক ঘর। কাচারি ঘর সবই নতুন। আমার আর কোনোদিন তারপর নানা বাড়ি যাওয়া হয়নি। এ অবধি। দিনে দিনে ঘৃণা গাঢ় হয়েছে। কেবল। ওই তালুকদারির প্রতি নানা জনের তীক্ষ্ণ ঘৃণ্য নজর।
দিনে দিনে বিষাক্ত করে তুলেছে আমার মায়ের মনও। নানা বাড়ি থেকে আগে বড় মাছ আসতো। গাছের কাঁঠাল আসতো। খেতের কালিজিরা ধান আসতো। মুড়ি-মুড়কি আসতো। সেগুলো সব কমতে লাগলো। চাকর-বাকর কামলারা আসতেন ছোট খালার বাসায়। সত্যিকার অর্থে কুমিল্লায় থাকতে এসব আসতো খুব কম। নেত্রকোণা থেকে কুমিল্লা যাওয়ার পথ বড় দীর্ঘ। হঠাৎ কোনো একদিন নানাবুজি যেতেন। সঙ্গে চাকর-বাকর। মিষ্টি-দই-চিড়া ফল ফলান্তি আরও আরও কত কী! বাবা ময়মনসিংহে আসার পর এসব বেশি আসতে শুরু করে। ময়মনসিংহের আমলা পাড়ায় আমার ছোট খালার বাড়ি। খালুর নাম নওয়াব আলী আকন্দ। বড় খালা আর ছোট খালা একই বাড়িতে বাস করেন। বিশাল বাড়ি ঘর তাদের। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় হিন্দু রাজা জমিদাররা যখন নামমাত্র মূল্যে বিক্রি করে দিয়েছিলেন, তাদের জমি বাড়ি ঘর, ঠিক তখনই এক হিন্দু রাজার বিশাল মহল কিনেছিলেন খালু। খুবই কম দামে। সে আমলের বড় বড় পিলারের ওপর বাড়িটি দাঁড়ানো। দুই/তিন জনে হাতে হাতে ধরে তবে এর বেড় পাওয়া যায়।
শুনেছি বাড়িটির একেবারে ওপরে পিলারের মাথার ওপরে ছিল দুটি সিংহের মূর্তি। খালু এই মূর্তি দুটোই ভেঙে ফেলেছিলেন। সে জায়গাটায় লেখা ছিল ‘আকন্দ লজ’। এছাড়া আর সবই অবিকল রাখা আছে। আজও। সেই বাড়িতেই গ্রাম থেকে আসা কামলারা থাকতেন। খাওয়া-পরা আর ঘুমানোর জায়গার অভাব ছিল না সেখানে। পাঁচ মেয়ে আর দুই ছেলে ছোট খালার। বড় খালার এক মেয়ে এক ছেলে। নয় ভাই বোন তারা একসঙ্গে বড় হয়েছেন। আমরাই আলাদা। আমার মায়ের এক ফুপু ছিলেন। নানাভাইর সৎ বোন। আমার মায়ের সৎ ফুপু যাকে আমরা নানাবিবি বলে ডাকতাম। তিনি বেঁচে ছিলেন সুদীর্ঘকাল। শতবর্ষ হয়েছিল তার যাপনের কাল। এই পৃথিবীতে। মৃত্যুর আগ অবধি দুধে আলতা গায়ের রঙে আভা ছড়িয়েছে। এতটুকু মলিনতার দাগ ছিল না কোথাও। নানা ভাইয়ের সৎ বোন—আমাদের মা খালার কাছে এতটা আদরে ছিলেন। এতটাই সম্মানের ছিলেন এ এক অদ্ভূত বিস্ময়। এমনকী পরে আমার খালাতো বোন গিনি আপা, মাসুম আপা, রুমী আপা, কচি আপার কাছেও কতটা পরম যত্নে ছিলেন, তা অবিশ্বাস্য। তার কোনো সন্তান ছিল না। কিন্তু আমার মা খালাদের কারণে তার সন্তানের কোনো অভাব ছিল না কোনোকালেই। এমনকী সন্তানদের সন্তানেরাও হয়ে উঠেছিল একটা সময় তারই সন্তান। অথচ ঘরে ঘরে আজও আপন ভাই বোনের বিভেদে ভেঙে পড়া জীবন দেখেছি এই আমিই। টুকরো হয়ে যাওয়া প্রতাপশালী মানবজন্মে দেখেছি। রুগ্ন প্রতারিত অবহেলিত মৃত্যু আমি দেখেছি পাশাপাশি। এই আমারই জীবনে। আমারই রক্তে। কত মৃত্যুর যাতনা এখানে জমে আছে কী করে বলি তার সব! কী করে হতে পারে এই সব প্রবল ক্ষতের নিরাময়। আজও খুঁজে চলি গোপনে। নীরবে। চোখের জলগুলো মুক্তো নয়, মাঝে মাঝে মনে হয় ধূলি। বালির কণা। এত তুচ্ছ করে এইসব মরণ! এত কালের সাধনা। যুদ্ধ আর ভারবহন! সবই ভুল আমি দেখেছি। সব মিথ্যে। আমি দেখেছি। সব মায়া মরীচীকা জেনে পৃথিবীকে বিদায় জানায় যে জন তার যাতনার প্রহর কত যে বড়। কত যে লং তার জীবনের মার্চ। কত যে দীর্ঘ… সে এই এক জীবনের দেখা আছে।
আমি দেখেছি আমার বাবার করুণ মৃত্যু। লাইফসাপোর্টে পড়ে থাকা বাবার তিন ছেলে আর দুই কন্যার কেউ থাকতে পারিনি তার কাছে। এই ঢাকা শহরেই সবার বাস। তিন ভাই টাকা দিয়ে রেখে দিয়েছিল একটি ছেলেকে। আর শেষ চেতন অবস্থায় তিনি নার্সের ঘাড়ের ওপর দিয়ে উঁকি দিয়ে বার বার কাকে যেন খুঁজছিলেন। আমি জানি তিনি খুঁজছিলেন ছয় সন্তানের কোনো একজন কি আছে কোথাও! হয়তো শেষ বেলায় খুব দেখতে ইচ্ছে হয়েছিল তার কোনো একটি মুখ। হয়তো বুকে জড়িয়ে ধরতে চেয়েছিলেন কাউকে। হয়তো চুমু খেতে চেয়েছিলেন আমারই কপালে। হয়তো হাসি মুখেই বলতে চেয়েছিলেন আমি চললাম। তোমরা ভালো থেকো। তারপরই কোমায় চলে গিয়েছিলেন। কত যে বিবর্ণ এই মানবজীবন আমার। বাইরে হেসে মরে যাই। লিখে ভেসে যাই। রঙে সেজে যাই। ভেতরে কী প্রচণ্ড ঘৃণা! কী প্রচণ্ড যাতনা! কী অসম্ভব আগুন! কী করে দেখাই তার সব! কী করে বলি! কেন বলতে পারিনা সব! কেন খুলতে পারি না হৃদয়! কেন দেখাতে পারি না যাতনা! কেন দেখাতে পারি না সব কালো; সব নষ্ট! কারণ আছে। কারণ এই সব আমার। আমারই সব স্থূলতা। সব পচে যাওয়া, গলে যাওয়া জীবের দেহের ছাড়নো জীবাণু একা বুকের ভেতর নিয়ে বসে থাকি। আমি অন্ধকার। আমি পরাজিত। আমি আহত। আমারই রক্তে কেন জমে আছে এত বিষ! এত নোংরা, এত মানবের আত্মার ক্ষয়। এক জীবনে কত আর কত নেব পরাজয়ের গ্লানি। আমার তো যুদ্ধ জয়ের পথ। আমার তো শেখা পথেরই কাছে। আমার চলার পথ তৈরি করি আমি নিজে। ৎ
তবু কোন সে বেদনার গ্লানি শূন্য করে আমায়! প্রতি নিশিথে। কোন সে নীরব প্রতারণা নির্বাক করে রাখে সময়। একাকী। বেদনায় বেদনায় নীল করে সারা আকাশ আমার। হাহাকারে ভরে যায় জীবন জীবন। যখন লিখতে বসেছিলাম নারী। ভেবেছিলাম এক বর্ণও মিথ্যে লিখব না এখানে। সাজানো নয় এখানে কোনো জীবন। এ হবে জীবনের অনুরূপ আরও এক। লিখব অবিকল। মিথ্যে লিখিনিও আজ অবধি। এও সত্যি। কিন্তু যা লিখব বলে ভেবেছিলাম। পারিনি। পারছি না তার সবও। এও এক জটিল জীবনপ্রণালী। এই সব জট। এই সব জাল। কেবলই আমাকে পাঁকে ফেলে। কেবলই বেঘোরে জাল ফেলে আর গুটোয়। তারপরে ধরে তোলে জিওল মাছ। আর ছুড়ে ফেলে দেয় ডাঙায়
চলবে…