॥পর্ব-৩॥
প্রকৃতি আর মানবমন এই দুইকে একাকার করে উপস্থাপনে নজরুলের কৃতিত্ব অনন্য। বিশেষত প্রকৃতির কানভাসে মানুষের আবেগের রঙ উদ্ভাসিত করে তোলার ক্ষেত্রে তাঁর জুড়ি নেই। আর এই কাজ করতে গিয়ে তিনি বারবার সৃষ্টি করেছেন নতুন নতুন চিত্রকল্প। সেসব চিত্রকল্প একইসঙ্গে প্রকৃতিরও, বিমূর্ততারও। যেমন তাঁর রচিত ‘ফিরিয়া এসো এসো হে ফিরে ’ গানটির ‘ললাটে কর হানি কাঁদিছে বাতাস / শ্বসিছে শন-শন হুতাশ বাতাস / তোমারি মত ঝড় হানিছে দ্বারে কর/ খোঁজে বিজলী তোমারি পথ-রেখা।’ অনুচ্ছেদে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে থাকা দুটি চিত্রকল্প আছে। দুটি চিত্রকল্পই ধারণ করেছে ঝড়বৃষ্টির ভয়ঙ্কর প্রকৃতিকে। আবার একইসঙ্গে ধারণ করেছে বিরহী-মানুষের বিচ্ছেদ-উৎসারিত হা-হুতাশ ও মিলনপ্রত্যাশা-উৎসারিত দুর্দমনীয় প্রণয়াকাঙ্ক্ষাকে। চিত্রায়িত প্রকৃতির ছবি প্রবল ও পরাক্রান্ত । আবার সেসবের গায়ে উদ্ভাসিত মানবীয় বেদনা-বাসনার রঙ সমানভাবে সিদ্ধান্তজ্ঞাপক। বাস্তব প্রকৃতির অভিজ্ঞতা আর নিবিড় কল্পনা দুই একত্রিত হয়ে সৃষ্টি করেছে নতুন দ্যোতনাজ্ঞাপক চিত্রকল্প। নর-নারীর প্রেমের বিরহকে তিনি আরেকটি গানে ব্যবহৃত একটি চিত্রকল্পে তুঙ্গীয় রূপদান করেছেন যা শিল্পসৌন্দর্যে এবং অর্থব্যঞ্জনায় চূড়ান্ত সাফল্যে উত্তীর্ণ হয়েছে: ‘‘বিরহের অশ্রু-সায়রে বেদনার শতদল / উদাসী অশান্ত বায়ে টলমল টলমল।’ তেমনি অপূর্বসুন্দর ‘সাঁঝের আঁচলে রহিলো হে প্রিয় ঢাকা / ফুলগুলি মোর বেদনার রঙ মাখা। ’ চিত্রকল্পটি।
বিরহ-বিচ্ছেদজনিত আর্ত-অনুভূতিকে বেদনার ফুল হিসেবে কল্পনা করে তাকে সাঁঝের আঁচলে ঢেকে রাখার ছবি সত্যিই অভাবনীয়ভাবে সুন্দর ও ব্যঞ্জনাজ্ঞাপক। এই বেদনা ফুলের মতোই পবিত্র ও কোমল; এই বেদনা ধুলি লেগে মলিন হতে পারে না; তাই তাদের স্থান দিগন্তের এককোণে যেখানে পৌঁছাতে পারে না কারও পা বা পাদুকা। আর এই বেদনা একান্তভাবেই প্রাতিস্বিক বলে বলে অন্যরা দেখতে বা বুঝতে অক্ষম। সেজন্যই তা সাঁঝের আঁচলে ঢাকা, দিনের আলো যা উদ্ভাসিত করে তুলতে অপারগ।
H. Fogle বলেছেন- The essential quality and function of imagery is a kind of creation; by bringing together of diverse objects, states of mind, or concepts, new relationships (…) born of the fruitful matching of ideas and things apparently disparate and isolated from each other.৪ বাহ্যিকভাবে বিচ্ছিন্ন কিন্তু অন্তরের দিক থেকে একই সূত্রে গ্রোথিত বিষয়কে একসাথে নিয়ে একটি ছবি প্রস্ফুটিত করে তার ভেতর মানবমনের ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়াকে সুসাজুয্যপূর্ণভাবে মিলিয়ে দেয়ার কাজটি নজরুল করেছেন সবচেয়ে বেশি। তিনি শুধুই প্রকৃতির ছবি এঁকেছেন এমন কবিতা-গানের সংখ্যা কম; তিনি প্রকৃতি আর মানবমনকে একই রঙে রাঙিয়ে একই ছন্দে বেঁধে একই তালে স্থাপন করে এবং একই প্রাণে জুড়ে দিয়ে কবিতা-গান বিশেষত গান রচেছেন অজস্র। গান শুনে বা তা কবিতাকারে পড়ে প্রকৃতির ছবি দেখতে পাওয়া যায় কিন্তু গানের মর্মবাণী নিয়ে ভাবতে গেলেও মানবমনের ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার ছবি বের হয়ে আসে প্রকৃতির প্রচ্ছদ ভেদ করে।
ও কে মুঠি মুঠি আবির কাননে ছড়ায়
রাঙা-হাসির পরাগ ফুল আননে ছড়ায়॥
কার রঙের আবেশ লাগে চাঁদের চোখে
তার লালসার রঙ জাগে রাঙা অশোকে
তার রঙিন নিশান দোলে কৃষ্ণচূড়ায়॥তার পুষ্পধনু দোলে শিমুল শাখায়
তার কামনা কাঁপে গো ভোমরা পাখায়,
সে খোঁপাতে বেল-ফুলের মালা জড়ায়॥সে কুসুম শাড়ি পরায় নীল বাসনায়
সে আঁধার মনে জ্বালে লাল রোশনাই
সে শুকনো বনে ফাগুন আগুন লাগায়॥
এই গানের বাণীতে ফালগুন প্রকৃতির রূপ-রস-রঙ জীবন্ত হয়ে ফুটে উটেছে। সে ছবি রঙিন সৌন্দর্যে উদ্ভাসিত। কিন্তু সেখানেই শেষ নয়। বসন্তে পরাগায়ন ঘটে। ফুল ফোটে । অতঃপর ফল। এই প্রক্রিয়ায় অপরিহার্যভাবেই আসে শারীরিক মিলন। মানুষের যৌবন হচ্ছে প্রাকৃতিক বসন্তের অনুরূপ। মানুষের শারীরিক মানসিক কামনা-বাসনা এবং মিলনপিপাসা এবং সেসব বাস্তবে রূপান্তরের ছবি প্রকৃতির রূপকে উপস্থাপিত হয়েছে গানের বাণীতে। বসন্ত প্রকৃতি উন্নীত হয়েছে রক্তমাংসের মানুষে। চিত্রকল্পগুলো শুধু চিত্রই তুলে ধরেনি, একইসাথে কামনা-বাসনা-মিলনপিপাসা প্রভৃতি বিমূর্ত বিষয়গুলোকেও জীবন্ত ও দর্শনগ্রাহ্য রূপ দিয়ে ফুটিয়ে তুলেছে। আবেগ, অনুভূতি, হর্ষ, বেদনা অধিকতর ব্যঞ্জনায় প্রকাশলাভ করেছে।
মানবমনকে প্রকৃতির প্রচ্ছদে উপস্থাপন করাটা নতুন কিছু নয়। পৃথিবীর বিভিন্ন ভাষার কবিগণ সেকাজটি যুগেযুগে করে এসেছেন। নতুন হচ্ছে উপস্থাপনের কৌশল যাকে বলা য়ায় শিল্পশৈলী। অভিনব চিত্রকল্প নির্মাণের মাধ্যমে নজরুল একাজটি করেছেন প্রশংসনীয় সাফল্যে। তিনি এমনসব উপমা-উৎপ্রেক্ষা-চিত্রকল্প-কল্পচিত্র নির্মাণ করেছেন যেসবের সাথে পাঠক-শ্রোতার পূর্বপরিচয় ছিল না। অমন অভিনব চিত্রকল্পে সমৃদ্ধ একটি গানের বাণী পাঠ করা যায়:
সহসা কি গোল বাঁধালো পাপিয়া আর পিকে
গোলাপ ফুলের টুকটুকে রঙ চোখে লাগে ফিকে॥
নাই বৃষ্টি বাদল ওলো,
দৃষ্টি কেন ঝাপসা হলো?
অশ্রজলের ঝালর দোলে চোখের পাতার চিকে॥পলাশ-কলির লাল আঁখরে বনের দিকে দিকে
গোপন আমার ব্যথার কথা কে গেল সই লিখে।
মনে আমার পাইনে লো খেই,
কে যেন নেই, কী যেন নেই।
কে বনবাস দিল আমার মনের বাসন্তীকে॥
নজরুলের অনুভবশক্তি ছিল প্রখর, শাণিত ছিল তাঁর প্রেম চেতনা। প্রকৃতির পাতায় মানব মনের লেখা পাঠ করার কবি দৃষ্টিও ছিল সুগভীর। ফলে তাঁর প্রকৃতিপাঠ যতখানি প্রকৃতির বিমুগ্ধ অবলোপকন, তার চেয়ে বেশি প্রকৃতির মাঝে মানুষের বিচিত্র আনন্দ বেদনার অনুভুতির প্রতিরূপ অবিস্কার। প্রকৃতি যেন প্রকৃতি নয় মানুষের নানান অনুভুতির বিচিত্র বর্ণ গন্ধ রসময় আধার। টুকটুকে লাল গোলাপ ফুলের রঙ সহসাই ফিকে হয়ে উঠেছে নারীর চোখে। প্রকৃত প্রস্তাবে ফুলের রঙ পরিবর্তিত হয়নি অথচ তাকে ফিকে দেখাচ্ছে। এমনটি ঘটেছে পাপিয়া আর কোকিলের কারসাজিতে। তাদের ডাক নারীর হৃদয়ে গভীর প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে। তার বুকের চাপা বেদনা মাখা চাড়া দিয়ে উঠেছে। যন্ত্রণাবিদ্ধ চোখে রঙিন পৃথিবী তার সবরঙ হারিয়ে ধুসর হয়ে ওঠে। সেই যে রবীন্দ্রনাথ বলেছেন, আমার চেতনার রঙে পান্না হল সবুজ। এখানে নারীর চেতনা বিষাদগ্রস্ত হয়ে পড়ায় পৃথিবীও হয়ে উঠেছে বর্ণহীন নিরানন্দ। বৃষ্টি কিছু নেই অথচ চোখের দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে গেছে, কারণ অন্তরঙ্গ বেদনাজানত গোপন অশ্রু চোখের কোণে বর্ষা রচেছে। প্রকৃতির লালরঙ হয়ে উঠেছে রক্তাক্ত হৃদয়ের প্রতীক। মনের মধ্যে শূন্যতার হাহাকার খাঁ খাঁ করে উঠেছে। এতে ব্যথিত, তেমনি বিস্মিত নারী। কই এতদিন তো কোনো অভাববোধ ছিল না। মনে হতো সবই আছে জীবন পূর্ণ কানায় কানায়। অথচ পাপিয়া ও কোকিলের ডাকের প্ররোচনায়াা উস্কে উঠেছে হৃদয়ের তলদেশে চাপা পড়া স্মৃতি। হয়তো সে স্মৃতি মধুরতায় ভরা অতীতের হয়ত তা প্রথম প্রেমের স্বপ্নভরা বসন্ত দিনের। সেই অতীত ঐশ্বর্যের তুলনায় বর্তমান জীবন অনেকটাই শূন্য ও ফাঁকা ঠেকেছে সহসায়। ফলে প্রকৃতিতে বিরাজিত কোকিল ডাকা বসন্তের রাঙা অনুভূতি নিমিষেই উবে গেছে হৃদয়ের উঠোন থেকে। প্রকৃতিতে বসন্ত অটুট রয়ে গেলেও মনের বসন্ত নির্বাসিত হয় গেছে। এ ভাবটুকু অত্যন্ত চমৎকার কাব্যময়তায় প্রকাশ পেয়েছে ‘‘কে বনবাস দিল আমার মনের বাসন্তীকে’’ চরণটিকে। গানটির আরম্ভ চমকোর নাটকীয়তায় ভরা ‘‘ সহসা কি গোল বাঁধালো পাপিয়া আর পিকে/ গোলাপ ফুলের টুকটুকে রঙ চেখে লাগে ফিকে’’ চরণ দিয়ে। সমাপ্তিটাও তাৎপর্যপূর্ণ। মানুষের মনের রঙ কিভাবে ছড়িয়ে যায় প্রকৃতির গায় আর প্রকৃতিও কতভাবে মানুষের মনকে প্রভাবিত ও প্রণোদিত করতে পারে, সে কথাই সুরে সুরে কথায় নান্দনিক ভঙ্গিমায় ফুটিয়ে তুলেছেন কবি।
নজরুল প্রধানত প্রেমের কবি-গীতিকার । প্রেমের যত ধরনের অনুষঙ্গ আছে, তা নজরুলের গানে ফুটে উঠেছে। প্রেমের প্রথম ধাপ হচ্ছে দর্শন-মুগ্ধতা। প্রধানত সেটা শারীরিক সৌন্দর্যভিত্তিক। নজরুল নারী-অঙ্গের অথবা মানব-অঙ্গের স্থূল ও রগরগে বর্ণনা দেননি কখনো। তাঁর সৌন্দর্যচেতনা খুবই উন্নতমানের ছিল। তিনি নারীর শারীরিক সৌন্দর্য, ব্যক্তিত্বের আকর্ষণ এবং মনের মাধুরীকে সমন্বিত একাকারে দেখেছেন এবং প্রকৃতি থেকে উদাহরণ, উপমা, তুলনা নিয়ে সেসবকে ফুটিয়ে তুলেছেন। এই পরিস্ফুটনের পথে তিনি সৃষ্টি করেছেন অজস্র মনোলোভা এবং অপূর্বসুন্দর চিত্রকল্প। কখনো একটি গানে একাধিক চিত্রকল্প ব্যবহার করেছেন, কখনোবা পুরো গানটি একটি চিত্রকল্প অথবা একাধিক চিত্রকল্পের কোলাজ হয়ে নির্মাণ করেছে শিল্পের সৌধ। সে সৌধ তাজমহলের মতো অনিন্দ্যসুন্দর।
আধখানা চাঁদ হাসিছে আকাশে
আধখানা চাঁদ নিচে
প্রিয়া তব মুখে ঝলকিছে
গগনে জ্বলিছে অগণন তারা
দুটি তারা ধরণীতে
প্রিয়া তব চোখে চমকিছে॥তড়িৎ-লতার ছিঁড়িয়া আধেকখানি
জড়িত তোমার রঙিন ফিতায় রানী!
অঝোরে ঝরিছে নীল নভে বারি
দুইটি বিন্দু তারি
প্রিয়া তব আঁখি বরষিছে॥মধুর কণ্ঠে বিহগ বিলাপ গাহে,
গান ভুলি তারা তব অঙ্গনে চাহে,
তাহারও অধিক সুমধুর সুর তব
চুড়ি কঙ্কণে ঝনকিছে॥
বলা হয় যে চিত্রকল্প হয় যে কবির মনের সৃষ্টি। বাস্তবে ঘটছে না অথচ কবির মন তাকে সৃষ্টি করছে একটা পার্থিব কোনো কিছুর রূপ দিয়ে। কবি তার মনের অবস্থা বা অনুভূতিকে একটা দৃষ্টিগ্রাহ্য রূপ দিতে গিয়ে সেই বিমূর্ত ভাবনা বা রূপহীন অনুভূতিকে পার্থিব কোনো বস্তুর মতো করে বা তার সাথে তুলিত করে একটি ছবি আঁকেন। উপযুক্ত শব্দ তাকে সেই ছবি আঁকায় কার্যকর সহায়তা দেয়। এরই নাম চিত্রকল্প। অর্থাৎ কল্পনার সাহায্যে আঁকা শাব্দিক ছবি। নজরুল রোমান্টিক ঘরানার কবি ছিলেন। তাঁর কল্পনা শক্তি ছিল অসীম। তিনি শব্দের তুলিতে তাঁর কল্পনার বিষয়কে চিত্রায়িত করেছেন বারবার। সেসব চিত্র অভিনব এবং নান্দনিক উৎকর্ষে অতুলনীয়ভাবে সফল। মুখনিঃসৃত বাণী অথবা গান আকাশে ইথারের ঢেউয়ে ভেসে ভেসে শ্রোতার কানে পৌঁছায়। নজরুল তাঁর গানের বাণীতে সৃষ্ট কথাচিত্রে ভেতর হৃদয়িক আবেগ-অনুভব এবং শারীরিক স্পর্শ অনুভূতির উপস্থিতি সৃষ্টি করেছেন এতটা নিবড়িভাবে এবং সাফল্যের সাথে যে সেসব চিত্রকল্পে ফুটে ওঠা ছবিকে বিরাজিত বাস্তবতা বলে বিশ্বাস করতে প্রবলভাবে প্রস্তুত হয়ে যায় পাঠক-শ্রোতার মন। তেমন একটি গান নিম্নরূপ যেখানে একাধিক অভিনব ও অনবদ্য চিত্রকল্পের শিল্প-সংহত সমাবেশ ঘটেছে:
আকাশে আজ ছড়িয়ে দিলাম প্রিয়
আমার কথার ফুল গো
আমার গানের মালা গো-
কুড়িয়ে তুমি নিও॥আমার সুরের ইন্দ্রধনু
রচে আমার ক্ষণিক তনু,
জড়িয়ে আছে সেই রঙে মোর
অনুরাগ অমিয়॥আমার আঁখিপাতায় নাই দেখিলে
আমার আঁখিজল,
আমার কণ্ঠের সুর অশ্রুভারে
করে টলমল।আমার হৃদয়-পদ্ম ঘিরে
কথার ভ্রমর কেঁদে ফিরে,
সেই ভ্রমরের কাছে আমার
মনের মধু পিয়॥
ইথারের বুকে তৈরী কথাচিত্র বা সুরের অদৃশ্য রেখা কি শারীরিক উপস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে? পারে না। অথচ কবি বলেছেন তার সরের ইন্দ্রধনু সেখানে তাঁর ক্ষণিক তনু রচনা করে এবং এতে করে শ্রোতা-নারী সেই গান শোনার সময় কবির শারীরিক স্পর্শের সুখানুভূতি লাভ করতে পারেন। আকাশে কথার ফুল বা গানের মালা রচিত হতে পারে কি না, তা বৈজ্ঞানিক পন্থায় প্রমাণ করা সম্ভব নয়। কিন্তু কবি তেমন চিত্রকল্পই গানে রচনা করেছেন এবং এই শোনার সময় অথবা কবিতা হিসেবে পাঠ করার সময় শ্রোতা-পাঠকের মনে-জ্ঞানে তা বিশ্বাসযোগ্য বাস্তবতায় উত্তীর্ণ হয়ে যায়। অথচ সমগ্র বিষয়টি কবির কল্পনামাত্র। কল্পনা হয়েও তা বিশ্বাসযোগ্যতা লাভে সমর্থ হয়েছে একারণে যে কল্পনার অনুষঙ্গগুলো বাস্তব অভিজ্ঞতার সাথে সম্পর্কিত। এটি অনেকটা মাটিতে পা রেখে আকাশে হাত বাড়িয়ে রাখার মতো দৃশ্য।
চলবে…