॥পর্ব-৩॥
০৮
আজকের বিকালটা কেমন থমথমে, তাই না শাহরিয়ার?
হুম, ঝড়-বৃষ্টির পূর্বাভাষ।
চমৎকার! নামুক ঝড়-বৃষ্টি। ভিজবো। শাহরিক বৃষ্টি তো রোগ-সোগে ভরা। নামুক বৃষ্টি, মন-শরীর ভরে ভিজবো।
মিলি, তুমি যেভাবে বলছো বৃষ্টি শুনলে এখনই নেমে পড়বে।
মজা নিলা?
একটু। মিলি, এটা ধরো।
এটা তো মাকড়সার জাল।
হুম। সেজন্যই তো দিলাম। এটা চুলে মাখো। দেখবে চুল বড় হবে।
আচ্ছা! মাখলাম। দেখি তোমার কথা কতটুকু কাজে আসে।
আমরা ছোটবেলায় এমন করতাম। মাকড়সার জাল উড়ে গেলে দৌঁড়ায়া ধরতাম, পরে চুলে মাখতাম।
শাহরিয়ার, এজন্যই তোমার চুল এতো বড় ও সুন্দর।
পাম দিতে হবে না মিলি। আমি জানি আমার সুন্দরতা নিয়ে।
ঠিক আছে। বাদ দিলাম এ টপিক। তুমি গতদিন আলাপে ময়নুলের কথা বলেছিলে, তার সম্পর্কে বলবে?
তার বাড়ি সাইতুনদের পাশের চরে। পরোপকারি আদর্শ নিয়ে বেড়ে ওঠা ছেলে।
মিলি, তুমি না ঢাকায় গেছিলা, আবার আসলা কবে?
গতকাল রাতেই এসেছি। ভাবলাম তোমার সাথে আরেকটু সময় কাটাই। তাই চলে এলাম।
আবার যাবে কবে?
পরশু, তরশু চলে যাবো। শোনো, আজ সকালে হাঁটতে বেরিয়েছিলাম। দেখলাম ব্যারেজের দক্ষিণ পাশে, ক্যানেলের ওপরে অনেকগুলো ছোট ছোট ঘর। কারা থাকে ওখানে বলতে পারো?
ওই অংশের নাম সিলট্রাপ। চর ভাঙার পর সাইতুনদের মতো অনেকেই এখানে বাড়ি করে। বলতে পারো এটা নদীভাঙা মানুষের আশ্রয়কেন্দ্র।
সিলট্রাপ?
শোনো, নদী তো এখানে ছিলো না। বর্তমানে যে পানি উন্নয়ন বোর্ড, এর একটু পরেই নদী ছিলো। বাবার কাছে শুনেছি তারা নদীপথে নৌকায় করে গিয়ে দেখেন শুকনায় ব্যারেজ হচ্ছে। তারপর ওই গতিপথটাকে দোয়ানি গ্রামের দিকে নিয়ে আসে, বর্তমানে যেখানে তিস্তা ব্যারেজ। নদীর একদিকে চর পড়েছে। ব্যারেজের গেট খুলে কৌশলে বালুগুলোকে কাটায়। সেচ প্রকল্পের জন্য যে পানি দরকার তা দিতে হলে গেট বন্ধ করে চাপ দিতে হয়। দিলে ব্যারেজের মাঝে, উজানের দিকে একটা লাইন আছে, ওই লাইনে লেগে পানি ফুলে উঠে। আর দক্ষিণে বন্ধ রাখা কপাট খুলে দিয়ে পানি প্রবাহিত করা হয় সেচ কাজে। তিস্তা পানি তো সরাসরি ক্যানেলে যাচ্ছে না। ক্যানেল মেইনটেইনের জন্য এ অংশ বন্ধ রাখে। নদীর বালু তুলে সিলট্রাপে রেখেছে। চর ভাঙা মানুষেরা ওই বালুর ওপরেই ঘর তুলে আছে। ব্যারেজ পাড় হয়ে দোয়ানি বাজারে প্রবেশের আগে যে কাঁচা রাস্তা দেখেছো না, এ রাস্তাও ব্যারেজের সঙ্গে সম্পর্কিত।
ক্যামন করে?
ওই অংশটুকু হলো ফ্ল্যাট বাইপাস। ভারত পানি বেশি ছেড়ে দিলে ব্যারেজের ওপর পানির চাপ বাড়ে। তখন পানি অটোমেটিক ওইদিকে চলে যায়। ব্যারেজে পানির চাপ কমে যায়। ওই রাস্তার পরে অনেক অংশেই রাস্তা পাকা হয়েছে, কিন্তু এটুকু কাঁচাই রয়ে গেছে। ওভারলোডের পানি যাতে এদিকে সরানো যায় সেজন্যই এ অংশটুকু পাকা করা হয়নি। বন্যার সময় দোয়ানি বাজারের চারপাশেও পানি ভরা থাকে। এ সময় বাজারের মানুষ কষ্ট করে তাদের কাজ চালিয়েছে।
বুঝলাম। শাহরিয়ার, পুরানো গল্পে ফিরবে, সমীরণ সাইতুন সম্পর্কে পরে কী জানালেন?
শোনো।
০৯
ইয়ার পর সাইতুন কয়, সমীরণ আপা, হ্যারা অ্যাকদিন কইয়্যা গেলো আমরা যে খাস জমিনো আছি ওইহান থাইক্যা তুইল্যা দিবো। তাইলে আমরা যায়াম কই? আঙ্গোর আবার নদীর মইধ্যে বাড়ি হরুন লাগবো। দাক্কা দ্যা তলো ফালায়া মাইরা হালাইবো। আঙ্গোর তো আর মজুত ট্যাহা নাই যে আমরা অ্যাক জাগাত জমিন কিনাম। অ্যাহন জমির যে দাম। এইনো সরহার থাইক্যা বুড লাগায়া গেছে। এইনের সব মানুষরে উইড্যা যাইবার কয়। কাম যে হরবো, কামেরও জমিন কিন্তু আছে। হুদাই মানুষগুলার ওপর হামলা মারে। এদুন অইলে আমরা কই যায়াম? আঙ্গোর লগে থাকতে আওয়া শেফালি কয়, ব্যবস্থা হইরা পরে উডাইবো। অজিরন কয়, সরহারে ব্যবস্থা হইরা না উডাইলে, আমরা উডতাম না। ফরিদা খালা কয়, ব্যবস্থা কি? পাচ আত জাগা দিবো। এই জমিনো পোলাপাইনের গর খাড়া হরবো কই? আঙ্গোর বুড়াবুড়িরও তো গর লাগবো, ওই গরই খাড়া হরাম কই? গরু পুষাম কই? ওই চিপার মইধ্যে চলবো? পাচ আত জাগাত তোমার সংসার চলবো? তোমারে ওই খড়ের মইধ্যে ডুহায়া থইবো। ওই খড়ো তোমার প্যাট বাচপো? গুচ্ছ গেরামের মতো হরবো। হের লাইগ্যা নুটিশ দ্যাও, আমরা এইহান থাইক্যা সরতাম না। সালেহা কয়, ট্যাহা দিয়াও যদি এইহান থাইক্যা সরায়, তারপরেও তো মানুষের জাগা নাই। কই যাইবো অ্যাতো মানুষ? যাওয়ার ব্যবস্থা তো নাই। এইনো আওয়ার পর দ্যাশো গেছলাম। যায়া দেহি পানি হুগাইছে। বালু বারোইছে। ওই বালুর বিতরেই আবাদ হরছি। একটা হইরা বাদামো একটা হইরা ট্যাহা গেছে। সিলটাপ থাইক্যা যায়া যায়া আবাদ হরছি। আনতেও কষ্ট, নিতেও কষ্ট। অজিরনরে কই, যে চাইড্ডা বাদাম আবাদ হরছি অ্যাহন দাম সতরো-আঠারো শ’। যহন বাদাম থাকতো না তহন দাম দিবো পচিশ-ছাব্বিশ শ’ ট্যাহা। হ্যায় আবার কয়, হ, বুজান এইরহমই তো অয়। অ্যাহন দানের দামডা কি দিছে দেখছুইন! অ্যাক আজার ট্যাহা মুণ। দানের দাম দ্যা দনীগরে তাজা হরতাছে, গরিবগরে দিতাছে আইখ্যাওয়ালা বাঁশ দিতাছে। অ্যাহন তো গরিবগর গরো দানের চুচাও নাই। বাদাম বেচছি আঠারো শ’ ট্যাহা মুণ। আবার কামলার দাম দিন লাগছে। অ্যাকদিন কাম হরলে ছয় শ’ ট্যাহা। দুইডা কামলা নিছি। খাওয়া-দাওয়া ফ্রি। তাইলে কামলা নিলো গ্যা বারো শ’। আর বাহি কত থাহে? গিরস্থগর থাইহ্যা কামলাগরই বালা যাইতাছে। যে ক্যাশ খাডাইছি ওই ক্যাশটাই আইতো না। যহন বিছুন বাদাম কিনছি, তহনই তো অ্যাকসের বাদামের দাম নিছে ছয়-সাত শ’ ট্যাহা। সার-সুর আনছি। তিন-চাইর আজার ট্যাহা খরচ অইছে। বাদাম যদি পাচ মুণ অইতো তাইলে পুষাইতো। হেইনো তিনমুণ বাদামও অইতো না। বাদাম ম্যালা অয়। একটা গাছো অ্যাত্তুগুলা হইরা বাদাম দরে। ইবার তো দরছে না। একবারে বালু মাডিত বাদাম অয় না। পানি দিতে দিতে নাই। ইবারের খরাডা তো আল্লার মর্জি। চরের মানুষ যেদুন চালাক ওইদুন বুদাই।
সাইতুনক কনু এইটা ভাঙি কতো!
অয় কইল, আপা, দরুইন চাইর-পাচ শ’ মুণ বুট্টা আবাদ হরলে হেই মানুষের আতো ট্যাহা-পয়সা না। হেই ট্যাহায় টানো জমিন কিনলে দিশা পায়ুন যায় না। হেইডা তারা হরে না। চরের ট্যাহায় চরোই বন্দক নেয়। চরোই আবার দালান গাতে থাক আর না থাক। ওই দালানগুলা অ্যাহন ডাইব্যা গেছে। চরো পানি দাবরাইবই।
১০
হ্যালোও মিলি, বেশ কদিন পর তোমার ফোন। সব ঠিক তো?
হুম, সব ঠিক। তোমার গবেষণার কাজ কেমন আগাচ্ছে?
এই আগাচ্ছে। বুঝলে মিলি, চরের মানুষের যন্ত্রণার শেষ নেই। তারা স্বপ্ন দেখে নতুন জীবনের। সুখ-শান্তিতে বাঁচার আকাক্সক্ষা তীব্র হয়ে ওঠে। স্বপ্ন কিংবা আশা-আকাক্সক্ষা যাই বলো না কেন তাদের সবই অপূর্ণই থাকে। প্রতিকূলতা অনেক। প্রকৃতির বিরুদ্ধে লড়াই দিয়ে শুরু হয় জীবন কিংবা বলা যায় প্রত্যেক সকাল। প্রতিনিয়ত তারা কচুরিপানার মতো ভেসে বেড়াচ্ছে।
মিলি, শুনছো?
শুনছি তো। বলে যাও।
আলাপ শুরুই হলো দুঃখ-যন্ত্রণার প্রসঙ্গ দিয়ে, বিরক্ত হলে না তো?
বিরক্ত হবো কেন! তোমার আলাপে তো এসব থাকাই স্বাভাবিক। বরং না থাকলে অস্বাভাবিক লাগবে। তোমার কাজের ক্ষেত্রে এগুলো খুবই প্রাসঙ্গিক।
বেশ, বুঝতে পেরেছো দেখছি। অনেক ধন্যবাদ।
ন্যাকামি ছেড়ে গল্প বলো।
আচ্ছা! শোনো, চরে যারা গরিব, তারা ছোটবেলা থেকেই জানে তাদের কাজ করে খেতে হবে। হয় অন্যের বাড়িতে বা জমিতে কামলা খেটে খেতে হবে, না হয় ঢাকায় গার্মেন্টসে কাজ ধরতে হবে। তারা এটাও জানে যে, ষোলো-সতের বছর হলে তাকে বিয়ে দিবে। বাচ্চা-কাচ্চার বাপ হতে হবে। আর যাদের কিছু টাকা-পয়সা আছে, জমি-জমা আছে, তাদের ইচ্ছার দৌড় হচ্ছে মেম্বার-চেয়ারম্যান পদে দাঁড়াবে। বিচার-আচার করবে। সবাই সম্মান করবে। কারো ইচ্ছা দেওয়ানিগিরি করবে। সন্তানদের বাইরে রাখবে, গ্রামে ছায়াও পড়তে দিবে না। পরিশ্রম না করলে খেতে পাবে না, মধ্যবিত্ত থেকে নি¤œবিত্ত সকলেই এটা ভাবে। তারা টাকা সহজে ভাঙতে চায় না, টাকার মায়া অনেক। তারা কোনো রকমে নামটা বলতে ও লিখতে পারলেই কাজে মনোযোগী হয়ে ওঠে। পড়ালেখার থেকে কাজটাকেই বেশি গুরুত্ব দেয়। সংসারের দারিদ্র্য তাদের এটা করতে বাধ্য করে। যে দারিদ্র্যের চাপে আছে কৃষক মোখলেসও।
১১
আব্বা, তোমরা কুটে গেছনেন।
গেছনো আইনুদ্দি চাচার বাড়িত। বাট্যা তমিজ, তুই স্কুলত গেছলু?
গেছনু। স্কুল থাকি ফিইরবার নাগছং আস্তাত মুক্তার মাও মোক দেখি কবার নাগছে, বাড়িত নাই কোনো টিকাত মাখায় স্নো। আব্বা, এইকথা ক্যা কইল?
কোউক, ওমার যা কবার মন চায়। তোমরা কান দিবার নন। স্কুলত যাইমেন, বাড়িত আসমেন, পড়মেন, খাইমেন, ঘুমাইমেন, খেলাইমেন। তোমার মাক যায়া কও ডাইকপার নাগছং।
কুড়াল দিয়া কি কোবাবার নাগছেন?
আসছিস তমিজের মাও। এই খড়িগুইলা বান্দেক, হাটত নেওয়া নাগবে।
শোনেন, আইজ সকালত জরিনার বাপ আসছিল, ট্যাকা চায়া গেইছে।
দেইময়ে তো। ওমরা এতো ঘোরাঘুরি করে ক্যা?
কবে দিমেন? ওইয়াক তো কয়েক মাস ঘুরি ফেলাইছেন।
দেইম।
কি দিয়া দিমেন? থুইছেন কিছু? আড়াবাড়ির অটে অ্যাকনা ভুই আখি সোগে তো বন্দক থুইছেন। অ্যালা ঘরের ভাত কিনি খাওয়া নাগে। কি না আছিল, কন তো? হামার ভুইয়ত মাইনষে ভুইট্টা আবাদ করে। কালাই আবাদ করে। সইস্যা আবাদ করে। পাট আবাদ করে। আলু আবাদ করে। হামাক চায়া চায়া দ্যাখা নাগে। এইগল্যা তোমার গাওত নাগে?
তোর সোগ জমিয়ে হাতত আসপে, চিন্তা করিস না।
বাল ছিড়ি ছিড়ি বেচি ট্যাকা পাইমেন, আর ওগইল্যা দিয়া শোধ দিমেন। একটা দুইটা ট্যাকা? নাখ নাখ ট্যাকা মারা খাইছে। ট্যাকা ধরি দেখনু না। খায়া দেখনু না। অ্যালা য়িনদার আসি বাড়িত ঘ্যানর ঘ্যানর করে।
তুই অ্যাতো চড়া চড়া কথা কবার নাগছিস ক্যানে? তুই শোধ দিবু য়িন, না মুই শোধ দেইম?
শোধ তো তোমরায় দিমেন। অ্যালা বন্দক থুইছেন, পরে বেচি দিমেন। নিজে তো অ্যাক শতক ভুই কইরবার পাইনেন না। বাপে যেইগল্যা করি গেইছে ওইগল্যা বন্দক থুইছেন, আর কয়দিন পর সস্তাদরদ বেচমেন। যেটে দুইদোন বেচলে হইবে, অটে বেচমেন পাচদোন। তোমার নেচার মুই জানং না।
তুই তো সোগে জানিস। অ্যালা চুপ করবু?
এইকনায় কবার পান। আর কিছু শিখছেন? শ্বশুরখান বাড়িত টোপলা নাগি পড়ি থাকে। আগত ঘাস কাটছিল, অ্যালা তাও করে না। ঘাস কাইটপার যাইবে কোটে? কোনো ভুই বাকি থুইছেন যে যাইবে অটে। আইলত ঘাস কাটপে। নিজের মনে করি কোনো ভুইয়ত যাইবে। নিজের জমিনত মাইনষে আবাদ করে। ওই ভুইয়ত ক্যামন করি ঘাস কাইটপার যায়? সেদিন যায়া চিৎপাটাং হয়া পড়ি আছে। সবায় যায়া ধরি আনিল। এইগল্যা চিন্তাত যায় তোমার? আছেন খালি আলু খোজার নামত। আইতত নাইটখান নিয়া যাইমেন, আলুর বাল ফ্যালে শ্যাষ আইতত বাড়িত আসমেন। দিনত ঘুমাইবেন। আর শিখে দিমেন য়িনদার আসলে কবু বাড়িত নাই। শ্বশুর বাড়িত গেইছে। এই গান ছাড়া আর কি শিখছেন? কবার পাইমেন?
তোর ক্যাসেটটা অ্যালা বন্ধ করবু?
অ্যালা তো কইমেনে এই কথা। তোমার যে গোয়া জ্বলি যাবার নাগছে এইটা তো বুইঝবার পাইছং। নাইলে বাতাসত অ্যাতো ধোয়া ভাসে ক্যামন করি? সময় সামনত ম্যালা পড়ি আছে। সোজা আস্তাত হাটো। আড়াবাড়ির ভুইখানত ওয়া নাগাইমেন, বিছন ফেলমেন কোটে? সেই জমি আখছেন? মাইনষের চ্যাটের তলত যাও। যায়া কও, হামারো তো অ্যাকনা বিছনপাড়া নাগে, তোমার অ্যাটে জাগা হইবে? মুখ ঝামটে কইবে, না, হবার নয়। আবার আরেকটে যাইমেন, অটেও ওইদোন করি কইবে। শ্যাষত জাগা পাইমেন যেটে মানুষ বিছন পাড়ে না, অটে। ছাগল খাইবে, মানুষে পাড়াইবে, অট্টে তোমরা সিজদা দিমেন।
তুই অ্যাতো কথা শিখলু কোটে? তোক তো পুরুস্কার দেওয়া নাগে।
বালধানা খান, কোনো কথা তোর শরীরত ঢুইকপার নাগছে? ক্যানেলত যে পানি থাকে না, স্যালোর ব্যবস্থা করা নাগবে, এইটা কি তোর চান্দিয়া মাথাত আছে, না উড়ি দিছিস?
তোক কয়া দেওয়া নাগবে? মনে হচ্ছে অয়য়ে সংসারত কর্তা।
কর্তা তোমরা, আর সংসার দ্যাখা নাগে মোক। চ্যাংরাটা স্কুল যাইবে, কি নিয়া যাইবে, খাইবে কি, স্কুলের কাপড়-চোপড় এইগল্যা তো মোকে বানে দেওয়া নাগে। সংসারের তিনবেলা ভাত মোকে আন্দা নাগে। তোমরা বাইরত বাইরত বাল ফেলে আসি বাড়িত কইমেন, ভাত-টাত হইছে কিছু? এইটা ছাড়া তো তোমার কোনো কথা শুইনবার পাং না।
ক্যাসেটটা অফ করি খড়িগুইলা বান্দেক, হাটত যাওয়া নাগবে, বেলা হয়া গেইল। ঘুরি আইসপার নাগছং।
১২
সাইতুনক জিগানু, বাপ-মাও তোক স্কুলত পাঠাছিল? কইল,
সমীরণ আপা, আমরা খুবই গরিব। আব্বা-মা বেশিদূর লেহাপড়া হরাইবার পাইছে না। প্রাইমারি স্কুলো পড়বার দিছে। কুনুদিন পাইছি না খাতা-কলম, ত্যাল-সাবান, কাপড়-চুপড়। কুনু জিনিসই ঠিক মতন পাইছি না। টুয়ের বইডা লইয়া স্কুলো গেছি, আর বাড়িত আইছি। এইহানিই আঙ্গোর লেহাপড়া। গ্রামের নামডা, নিজের নামডা লেখপার পাই। কেউ জানি কইবার না পায় নিজের নামডা কইবার পায় না, লেখপার পায় না, গ-ার মূর্হো। আব্বা কামলা দিলে যে ট্যাহা পাইতো ওই ট্যাহাতেই চাইল-ডাইল আনছে, তারপর খাইছি। যেদিন কামাই হরবার পাইছে না হেইদিন আমরা না খায়াই হুইত্যা আছলাম। আব্বারে মাইনষে পাগলা কয়। আসলে হেইরহম পাগলা না। বুদ্দি আছে। গরিবরে যেদুন খুশি হেদুন হইরা কয়ুন যায়। আব্বারেও কইছে। গরিবরে আল্লাই বালোবাসে না, মানুষ কি বালোবাসপো? আল্লা যদি বালোবাসতো তাইলে আঙ্গোর কপালো এতো দুঃখু, কষ্ট, যন্ত্রণা কি দিতো? দিতো না। আল্লা বালোবাসলে আঙ্গোরে দনী বানায়া দুনিয়াত পাডাইতো। গরীবের দাম কুনু জাগাতি নাই। মামলায় যাও, বিচারে যাও, খাইতে যাও, পরতে যাও, দুহানো যাও, পাড়া-পড়শীর বাড়িত যাও কুনুহানো গরীবের দাম নাই। অ্যাকটা উহিলের কাছে গেলে গরীবের পুলা দিবো অ্যাক আজার, আর দনীর পুলা দিবো দুই আজার। অ্যাক আজারের দাম বেশি না দুই আজারের দাম বেশি? গরীবের দাম থাকলো? গরীবের গরো জন্মা অওয়াডাই বুল। আল্লা আঙ্গোরে বানায়া ক্যান এতো দুঃখু দেয়? আমার বড় বইনের বিয়াডাও সুহের না, বড় দুঃখুর।
সাইতুনের এই কথা শুনি মুই কনু, কপালের কথা কি কায়ো কবার পায়? কায় সুখের ঘর করবে, কায় দুঃখের ঘর করবে। পরে কি হইল, ওই কথা কবার কনু।
আপা, অর সতীন আছে। সতীনের গরো তিনটা পুলা-পুড়ি। সতীন থাহার কপাল অনেক দুঃখুর। আঙ্গোর আব্বার ট্যাহা-পয়সা থাকলে হেইরহম গরো বিয়া দিতো। জামাই সংসারে থাহে, থাহে না। দুই বাড়িত যায়। এইডা তো কষ্টই। বইনের বয়স যহন সাত বৎসর আব্বা-মা তহন পরতমবার বিয়া দেয় আমার আপন ফুফাতো ভাইয়ের লগে। চরের মাইনষে তারে গুডু পাগলা কয়া ডাকতো। ডাইন আত আর বাম আত চিনতো না। আব্বা-মা বইনরে ওইনো বিয়া দিবার পরেও দুই বছর সংসারো রাহে। বইন আরেকটু বুজনাদার অইলে তারে জামাই বাড়িত পাডাইবার চাইলে হ্যায় যাইবার চায় না। বান্দবীর লগে খেলবার গেলে সবাই কইতো, গুডু পাগলার বউ আইছে। এই ডাকটা বইনের শইল্লো সইতো না। বইন কয়, মা, আমি আর ওই সংসারো যাইতাম না, ভাত খাইতাম না। ওই ডাকটা আমার সয় না। আমারে ওইনো দিয়ো না। তহন আব্বা-মা কয়, যদি বাত না খাবার পারো, যহন ফিইরা আসবা তহন আমি তোমাক পালবো কি দিয়া? তোমাক আবার বিবাহ দিব কি দিয়া? আঙ্গোর ট্যাহা নাই, পয়সা নাই। আমরাই চলতাছি কষ্ট হইরা। বইন কইলো, আমারে তুঙ্গর পালুন লাগতো না। যদি বাইরে যাই, যদি কুনো গার্মেন্সে যাই তাইলে অবশ্যই কামাই হইরা খাইবার পায়াম। বালা জামাইয়েরটে বিয়া বইবার পায়াম। আব্বা-মা হুনলো তার কথা। মা তারে ওইহান থাইক্যা ছাড়ায়া আনলো। আনার পর বাড়িত পাচ-ছয় মাস আছিন। থাহার পর আলাপ অয় অ্যাহনকার স্বামী লোকমানের লগে। তার আবার চরো ট্যাহা-পয়সা ম্যালা আছিন। তহন টাপুর চরের মইধ্যে হ্যার বালাই নাম-ডাক আছিন। লোকমান বইনরে বিয়া হরার সময় চরো তিনবিগা জমিন লেইহ্যা দিছে। হেইসময় তো অ্যাহনের লাহান চর আছিন না। বালা মাডি আছিন। বইন লোকমানের কথায় মত দিলো। কিন্তু আব্বা-মা এইডা মাইন্যা নেয় না। কয়, দুই সতীনের মইধ্যে সংসার হইরা খাইতে পাবি না। বইন কইলো, ঢাহা শহর গেলে মান-সম্মান এমনি থাকতো না। তিন বিগা জমি যদি লেইহা দ্যায় তাইলে কইরা-মিইল্যা খায়ুন লাগলে খায়াম। কষ্ট হইরাই সংসার চলতাছে। সতীনের মইধ্যে থাকলে অবশ্যই দুই-চাইর-দশ কথা অয়। এইত্যা মাইন্যা লইয়াই বইন সংসার হরা শুরু হরলো। স্বামী বাগ অইলো। সময় বাগ অইলো। এই গরো চাইররাইত, ওই গরো চাইররাইত। অ্যার মইধ্যে সপ্তা গুরুক আর না গুরুক। চাইররাইত কইরাই থাকপো অ্যাকজুনের গরো। আঙ্গোর কপাল দুঃখুর। এই দুঃখু মাইন্যা লইয়াই সংসারো বাইচ্চা থাহুন লাগে। বইনের সতীন না থাকলে স্বামী অন্য কারো গরো যাইতো না। যহন চাইররাইত তার কাছে থাহে তহন নাহি বইনের চোক্ষো খুবই গুম অয়। যহন না থাহে তহন গুম তো আয়ে না, আয়ে পানি।
এইকথা শোনার পর মজা করি কনু, ভালোই তো। ওই পানি দিয়া চর ভিজায়া আবাদ কইরবার পাইবে।
অয় কইল, সমীরণ আপা, মজা নিয়েন না। দুইডা বউ থাকলে শান্তি জিনিসটা থাকতো না। বউ থাকতে বউ আনলে এইডার সমান আগুন দুনিয়ার কুনুহানো নাই। শান্তি চাইলে কেউ জানি বউ থাকতে বউ আনার কথা বুলেও মুহে না আনে। দ্যাশো তো বিদুৎ নাই। ছোলার কিইন্যা চালান লাগছে। ঠিক মতো লাইটই জ্বলে না। ছোলার কিনতেও লাগতো বিশ-তিরিশ আজার ট্যাহা। অ্যাতো ট্যাহা একলগে করা কঠিন অইতো। আঙ্গোর ট্যাহা মাইনষেরে দিতেই তো শ্যাষ অয়া যায়। বইন ঋণ হইরা বুট্টা আবাদ হরে। আবাদ তুইল্যা হেই ঋণ দেওয়ার পর আর ট্যাহা আতো থাহে না। এইটুক না হরলে তো প্যাডো বাতও যাইতো না। আঙ্গোর চরের মানুষ ফির খুব বালা। কারো কাম না থাকলে যার কাম আছে তারে আগায়া দ্যায়। অরেও আবাদের সময় অনেকেই কাম হইরা দিছে। বইন, বুট্টা আবাদ হইরা যে কয় ট্যাহা বাঁচাইতো হেই ট্যাহা স্বামী লইয়া যাইতো। ট্যাহা লইয়া কি হরে তাও বইনরে জানায় না। জিগাইলে কইছে, ট্যাহা আমি খাইছি। তরে, হিসাব দিন লাগতো হা। লোকমান বইনরে হিসাব দিতো না। সব সময়ই বইন কষ্ট বেশি হরতো। স্বামী কিরুমে চলতাছে, কি হরতাছে, এই হিসাবটা বইনরে দিতো না। বইনের হিসাব থাহে সংসারডা যাতে বালা হইরা চলে। ট্যাহা নিলে গা সংসারের বালা-মন্দর কুনু হিসাব রইলো? ট্যাহার হিসাব চাইলেই কাইজ্জা লাগায়া দেয়। ইদো ব্যারেজের পাড়ো মেলা বইছিন। বইনও গেছিন, কিন্তু কিছু কিনবার পাইছে না। কিনবো কি দিয়া তারটে তো ট্যাহা আছিন না। ম্যালাত গুইরা গুইরা দেখছে। দেহার সময় টাটকা মুখ, যহন দুহানদার কইছে, নিবেন? তহন হুগনা মুখ। ট্যাহা না থাকলে কি আর জিনিস কিনুন যায়? হুগনা মুখ লইয়া আয়া পড়ছে। গরীবের দেহাডাই শুবা। লোকমানের লগে বিয়াডা যে সহজে অইছে তা না। বিয়া হওয়ার আগে ম্যালা কাহিনি অয়।
ওই কাহিনির কথা জাইনবার চাইলে কয়, আপা, লোকমানের বড় বউয়ের বাচ্চা-কাচ্চা কিচ্ছুই অয় নাই। বাঞ্জা। স্বামীডা পরে মাইজলাডারে আনছে। দুই জাউয়ে সব সময় লড়াই লাইগাই থাকতো। মাইজলাডার বাচ্চা অইলে বড়ডারে কুলো নিবার দিতো না। মাইজলাডা চাইছিন বড়ডার বাচ্চা অয় না কিছু না। অরে সংসারতে খেদায়া দেই। বড়ডা আবার আঙ্গোর বইনরে খুব বালোবাসতো। দুইনলা বাত যদি খাইতো একনলা বইনের লাইগ্যা থইতো। একনলা খাইলে অদ্দেকটা রাখতো। বড়ডার লগে বইন খুবই মজা হরতো। পোলা-মাইয়া না থাহায় বইনরে কাছে টানতো বেশি। মাইজলাটা জল্পনা-কল্পনা হরে, বড়ডারে যদি খ্যাদাবার পাই তাইলে বাড়ি-টারি, সংসার সব কিছু নিজের অইবো। বড়ডাও মনে মনে কয়, আমি কষ্ট হইরা সংসার ঠিক হরছি, আর অ্যাহন আমারে খেদাইবার চাছ। সরুনই যুদি লাগে তাইলে আরেকজনরে সংসারে তুইল্যা দিয়া তারপর আমি যায়াম। আমার বইন তো বড়ডার মনের কথা জানতো না। বড়ডা একদিন বইনরে কইলো, আয়েশা, চল আমরা ঢাহা যায়াম। বইন অ্যাক সংসার ছাইড়া বাড়িত আইছে। বড়ডার কথা হুইন্না রাজি অয়। বইন বাবছে, ট্যাহা কামাই হরবার পাইবো। নিজের মতো হইরা কাউরে বিয়া হরবার পাইবো। বইন এই পস্তাবে খুশি অয়। বড়ডা আরো কইছে, আমরা যদি কামাই হরবার পাই তাইলে দুইজুনে এক গরো থাকলে বাড়া কম লাগবো। আমরা বালা হইরা চলবার পায়াম। তহন বইন কইলো, ঠিক আছে আমরা দুনুজুনি যায়ামগা।
বড়ডা কয়, তুই রেডি অয়া থাহিছ, আমি তরে লইয়া যায়াম।
পরে গাডো গ্যা স্বামীর আতো তুইল্যা দ্যায়। তহন তো বইন খুবই দুঃখু পায়। কইলো,
তুই আমার লগে এই কাম হরলি ক্যার লাইগ্যা?
অয় কয়, তুই যা, তর কিচ্ছু অইতো না।
বইন কয়, অর বয়স ম্যালা। অর দুইড্ডা বউ আছে, তাইলে আমি কুন দুঃখুতে অইনো বিয়া বইয়্যাম?
পরে আঙ্গোর আব্বা মামলা হরলো লোকমানের নামে। লোকমান ফির বইনরে কইলো, তুই যুদি আমারে বিয়া না হরছ তাইলে তরে খুন হরাম। তরে আব্বা-মা আর দ্যাখপার পাইতো না। এদুন ম্যালা হুমকি-দামকি দিছে। পরে ঠা-া মাথায় বইনরে বুঝায়া কইছে, তুই যদি আমারে বিয়া হরছ তাইলে তর নামে তিনবিগা জমি লেইখ্যা দ্যাম। বইন চিন্তা হইরা দেখলো, জমিন লেইখ্যা দিলে, ওই সংসারো যদি বাত নাও অয়, তাইলে তিন বিগা জমি লইয়া হইরা খাইবার পাইবো। এই কথা মনে হইরা বিয়াত রাজি অয়। লোকমান বইনরে লইয়া আইলো সংসারো। তহন বড়ডা আর মাইজলাডা কইলো আঙ্গোরেও জমি দিয়ুন লাগবো। বইন নিলো সাতকাউলা, অরা নিলো জীবন শর্ত। যতদিন বাইচ্চা থাকপো ততদিন তারা জমিন বুগ হরবার পাইবো। মইরা গেলে আর পাইতো না। বইন যহন ডুকলো তাগোর সংসারো, তহন তারা অইলো তিন সতীন। বড়ডা কইলো, আয়েশা, আমি আর বাত খাইতাম না, তুই থাক এই সংসারো, আমি সইরা যায়াম। আরো কইলো, এই সংসারো মাইজলাডার যয়টা বাচ্চা অইবো, তরও অয়ডা বাচ্চা নিন লাগবো।
বইন কইলো, তুই আনলি আমারে সংসারো। তুই কইরা না খায়া চইল্যা যাইবি ক্যা?
না, আমি বাত খাইতাম না। তুই সংসার হইরা খাইবার পাইবে।
বইন কইলো, তুই সংসার হইরা খাইবার পাইলে না, আর আমি আগুনের মইধ্যে খাইবার পায়াম?
বড়ডা কইলো, তুই পাইবে, আমি পাইতাম না। আমার তো ছাও-টাও অইতো না। ছাও অইলে মাইজলাডা আইতো না, তুইও আইতি না। তোর পোলা-মাইয়া অইবো। তুই সংসার হইরা খাইতে পারবি।
পরে বড়ডা ট্যাহা লইয়া চইল্যা যায়। লোকমান আপুষে ট্যাহা দিছিন। অয় গার্মেন্সো কাম হইরা খাইতাছে। বিয়াত মাইক লাগাইছিন। লোকমানের বাবিরা গীত গাইছে। বর আওয়ার সময় পুলাপাইন আগেই আয়া ফটকা ফুডাইলো। আমরা বুজবার পাইলাম বরযাত্রী আইতাছে। বিয়া পরায়া বরের আতো আব্বা-মা তুইল্যা দিলো বইনেরে। আমরা গেলাম। দেহি বরের বাইত খাওন-দায়ুন অইতাছে। ফটকা ফুডাইতাছে। কইন্যারে পরতম দিন পিড়িত তুলি। পরের দিন আবার গাও-গোসল হরায়া পিড়িত তুলি। বর আয়ে, বিয়া অয়, বইনরে লইয়া যায়। তারপরের দিন আমরা যায়া বইনরে লইয়া আয়ি। চাইর নম্বরদিনো হ্যারা আয়া আবার বইনরে লইয়া যায়। চাইরদিন দইরা বিয়া পাড় হরি। বিয়াত যারা আইছিন তাগোরে পান-সুপারি আর শরবত খাওয়াইলাম।
ওমার বিয়া চাইরদিন ধরি চলে বলে কনু হামার বিয়া তো দুই-তিন দিনে শ্যাষ হয়া যায়। অয় কইল, আপা, আঙ্গোর বিয়া চাইরদিন দইরাই চলে। এইডা নিয়ম। মুই পরেরটুক জাইনবার চানু। কবার ধরিল,
আপা, বইনরে লইয়া যাইবার সময় বর পক্ষের মুরুব্বিরা কইলো, কালহা কয়শজুন যাইবা? আঙ্গোর পক্ষ থাইক্যা একজন কইলো, দেড়শজুন যায়াম। তারা অমনেই সব কিছু ঠিক হরলো। খাওয়া-দাওয়া শ্যাষ হইরা আইবার সময় আঙ্গোর পক্ষ থাইক্যা একজুন কইলো, তোমরা কয়শজুন যাইবা? অরা কইলো, দুইশজুন। অরা অটোরিসকা, গুড়ার গাড়ি, মইষের গাড়িত হইরা আইলো। কেউ কেউ আইলে আইড্যা।
আবার জিগানু, নিজেরাই যেটে খাবার পাইস না অটে দেড়শ’-দুইশ’জনের খাওনের ব্যবস্থা করিস ক্যামন করি? অয় কয়,
আপা, এইডাও আঙ্গোর চরের নিয়ম। এতোজুন হইরাই মানুষ আয়ে। খাওয়ান লাগে। দার-করজা হইরা অইলেও তাগোর খাওনের ব্যবস্থা হরে। নাইলে কইন্যারে স্বামীর বাড়িত যাইবার পর কেইচ্চা কেইচ্চা কথা কয়।
চলছে…