মানুষ যুগ-যুগ ধরে যেসব সামাজিক প্রতিষ্ঠান বা আচার-অনুষ্ঠান সম্পর্কে চিন্তা-ভাবনা করে আসছে তার মধ্যে রাষ্ট্র হচ্ছে সর্বাপেক্ষা সর্বজনীন ও গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান।এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমেই মানুষের সামাজিক জীবনের সূচনা এবং এর মাধ্যমেই তার জীবনের গতি প্রবহমান। সর্বকালে,সর্বস্থানে রাষ্ট্র নামক এই প্রতিষ্ঠান যদিও মানুষের জীবনকে নিয়ন্ত্রণ করে আসছে।তবু এই প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে মানুষের চিন্তাধারা একই খাতে প্রবাহিত হয়নি। বিভিন্ন যুগের মনীষীরা বিভিন্ন পরিবেশের প্রভাবে রাষ্ট্র সম্পর্কে বিভিন্ন রকমের চিন্তা-ভাবনা করে এসেছেন।ফলে আমরা বিভিন্ন যুগে রাষ্ট্র ও তার আনুষাঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে বিভিন্ন রকমের চিন্তাধারা ও মতামতের সম্মুখীন হয়েছি। বস্তুত রাষ্ট্র সম্পর্কে বিভিন্ন যুগে বিভিন্ন মনীষীদের এই যে চিন্তা,ইতিহাসে এটিকেই রাষ্ট্রচিন্তা বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে।ভিন্ন এক দৃষ্টিকোণ থেকে রাষ্ট্রচিন্তার ইতিহাসকে রক্ষণশীল ও প্রগতিবাদী এই দুই ভাগে বিভিক্ত করা হয়েছে।যারা প্রচলিত পরিবেশ ও মতামতকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়াসী তাদের রক্ষণশীল বলা হয়। ‘অতীতের ঐশ্বরিক অধিকার তত্ত্ব’ এই ধরনের রাষ্ট্রচিন্তার একটি প্রকৃষ্ট উদাহরণ। অন্যথায়, যারা প্রচলিত অবস্থার পরিবর্তন করে নতুন মতবাদের মাধ্যমে রাষ্ট্র তত্ত্বের উৎকর্ষ সাধনে প্রয়াসী তাদের প্রগতিবাদী বলা হয়। জনলক, জেন জ্যাকুয়েস রুশো প্রমূখ রাষ্ট্রবিজ্ঞানীর সামাজিক চুক্তি ও প্রাকৃতিক অধিকার সম্পর্কিত মতবাদ তৎকালীন পরিবেশে এই ধরনের প্রগতিবাদী রাষ্ট্রচিন্তার অন্যতম প্রকৃষ্ট উদাহরণ। তাঁদের এই মতামত ঐশ্বরিক তত্ত্বের বেদীমূল ধ্বংস করে। যা সপ্তদশ শতাব্দীতে ইংল্যান্ডের গৌরবময় বিপ্লবের এবং অষ্টাদশ শতাব্দীতে ফরাসি ও মার্কিন বিপ্লবের পথকে সুগম করে। রক্ষণশীল ও প্রগতিবাদী উভয় মতবাদেরই পক্ষে ও বিপক্ষে যথেষ্ট যুক্তি আছে।সে দিকটি নিয়ে আলোচনার প্রয়োজন আছে বৈকি। কিন্তু রাষ্ট্র,রাষ্ট্র একটি বিমূর্ত ধারণা। তার কোনো ধর্ম নেই।ধর্ম মানুষের জন্য এবং তা ইহজগতেই পালনীয়। বাংলাদেশে বহু ধর্মাবম্বী লোক একত্রে বসবাস করে। সবাইকে য়ে বাঙালি জাতি এবং সবার অবদানের ফসল বাঙালির সমন্বিত সংস্কৃতি। চেতনাগত দিক দিয়ে যেহেতু কবিতা শিল্প-সাহিত্যের প্রথমে অবস্থান করে। তাই মানবমন এবং অগ্রসর রাষ্ট্রের বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে কবিতা তার ঐতিহাসিক দায়িত্ব কতটুকু পালন করেছে তা অবশ্য দেখার বিষয়।
কবিতা কেবল ব্যক্তি মনের চিন্তা-চেতনা,অনুভূতি এবং সৌন্দর্যের বহিঃপ্রকাশ এই যৌক্তিকতার নিরিখে কবিতাকে সংজ্ঞায়িত করার অবকাশ এখন আর নেই। মানবচেতনা, ঐতিহ্য চেতনা, ইতিহাস চেতনা, সমাজ চেতনা, সৌন্দর্য চেতনা ইত্যাদি বাদ দিয়ে যেমন সার্থক কবিতা রচনা করার কথা চিন্তা করা যায় না।তেমনি রাষ্ট্রচিন্তাও কবিতায় যে দম্ভের সঙ্গে আশ্রয় নিয়ে তার স্থান দখল করে বসে আছে। রাষ্ট্রীয় মূল্যবোধের যে প্রকাশ তাই কবিতায় রাষ্ট্রীয় চেতনা।রাষ্ট্রীয় চেতনার দিকটি বিভিন্ন আলোচনার একটি যথার্থা সংলাপ। আমাদের এই রাষ্ট্রীয় চেতনার কবিতা ফুটে উঠেছিল বিভিন্ন সময়ের আন্দোলনগুলোর মাঝে।এখানে সেই সময়ের কবিতার পটভূমির উপাখ্যান নিয়ে আলোকপাত করার প্রয়াস ঘটাবো। যা বিভাজিত চেতনার রূপরেখা ঘেটে সত্যের নির্যাসটুকু নিঙ্ড়ে বের করার মত। ১৯৪৭ সালে ধর্মভিত্তিক ভারত বিভক্তির প্রেক্ষাপটে পাকিস্তানের একটি ভূখণ্ড হিসেবে পূর্ব বাংলার সৃষ্টি হয়। নতুন এই ভূখণ্ডে মানুষের জীবনের যেমন নতুন চাহিদা সৃষ্টি হয়েছে তেমনি সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, ধর্মীয় জীবন এবং রাষ্ট্রীয় জীবনের নানান চাহিদার অভাব দেখা গেছে। এই সময়ে শাসক গোষ্ঠী ঔপনিবেশিক কায়দায় বাঙালির স্বপ্নভঙ্গের পথকে জাগ্রত করে। সেই থেকেই ভাষাভিত্তিক চেতনার নতুন পথ উজ্জীবিত হতে থাকে। যা সাংস্কৃতিক আঘাত হিসেবে বেছে নেওয়া হয়।
এরই ধারাবাহিকতায় প্রথমত ভাষা আন্দোলন,এই ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে কবিতায় রাষ্ট্রচিন্তার একটি নতুন সিঁড়ির পথ উন্মোচন হয়েছিল একথা অনস্বীকার্য।এই চেতনাই যদিও খুব বেশি একটা আলোর পথ সুগম করতে পারেনি। তবু ভাষা আন্দোলনের সময়কার কিছু কবিতা রাষ্ট্রীয় অনুভূতির এক প্রখর প্রকাশ বলেই মনে হয়।তন্মাধ্যে মাহবুব-উল-আলম চৌধুরীর ‘কাঁদতে আসিনি ফাঁসির দাবি নিয়ে এসেছি’ কবিতাটি এক মাইলফলক হয়ে আছে।এই ধারায় অগ্রগমনের একটি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ হচ্ছে ১৯৫৩ সালে হাসান হাফিজুর রহমান সম্পাদিত প্রথম একুশের সংকলন,একুশে ফেরুয়ারি। যেখানে শামসুর রাহমান, বোরহানউদ্দিন খান জাহাঙ্গীর, আব্দুল গণি হাজারী, ফজলে লোহানী, আলাউদ্দিন আল আজাদ, সৈয়দ শামসুল হক, আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ, হাসান হাফিজুর রহমান তারা সবাই একুশের কবিতা শিরোনামে কবিতা লিখেছিলেন যেখানে রাষ্ট্রচিন্তার প্রতিফলনই ঘটেছিল। কেননা যখন একটি রাষ্ট্রের রাষ্ট্র ভাষা লুণ্ঠন হয়ে যাওয়ার উপক্রম তখন ভাষা রক্ষার জন্য রাষ্ট্রীয় চেতনা কবিদের কবিতায় ফুটে উঠবে এটাই স্বাভাবিক। হয়েছেও তাই।
দ্বিতীয়ত, ১৯৫৮ সালের সামরিক সরকার প্রতিষ্ঠার পর সরকারবিরোধী আন্দোলন ক্রমান্বয়ে ছাত্রদের ৬ দফা আন্দোলন সমন্বিত হয় যা ১১ দফায় পরিণত হয়ে ১৯৬৯ এর গণ অভ্যুত্থানে রূপ লাভ করে।এখানেও রাষ্ট্রচিন্তার অভিপ্রায় প্রকাশিত হয় কবিদের কবিতার মাঝে। এই সময়ের কবিতায় রাজনৈতিক ঐতিহ্য বহন করে ধর্মনিরপেক্ষতা, গণমুখী জীবনবোধ, অসম্পদায়িক চেতনা, বাঙালির স্বাতন্ত্রবোধ ও স্বভূমি চেতনা। এই সময়ে কবিরা ছিলেন আন্দোলনের উল্লেখযোগ্য কর্মী। যেখানে অনেক সংগ্রামী কবিতা রচনা করে কবিরা অগ্রগণ্য ভূমিকা পালন করেছেন একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য।এই সময়কার কবিতার মধ্যে শামসুর রাহমানের ‘আসাদের শার্ট’ কবিতাটি একটি উল্লেখযোগ্য কবিতা।
তৃতীয়ত, ৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ। মুক্তিযুদ্ধের সময়কার ঘটনাকে উপজীব্য করে এদেশের কবিরা বাংলা কবিতাকে আরও একধাপ এগিয়ে নিয়ে গেছেন। যা বহিঃবিশ্বের অন্যান্য যুদ্ধগ্রস্ত দেশগুলোর মতো বাংলাদেশের কবিরা তাদের নিজস্ব অভিজ্ঞতা দিয়ে কবিতাকে সমৃদ্ধ করেছেন।করেছেন আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন। মুক্তিযুদ্ধের কবিতাতে উঠে এসেছে আকস্মিক হত্যাযজ্ঞ। নারী, শিশু, যুবক,বৃদ্ধ সব বয়সের মানুষকে অসভ্য বর্বর পাকিস্তানিরা লাঞ্ছিত করেছে, হত্যা করেছে। এই হত্যাযজ্ঞ ছিল চরম মর্মান্তিক। যা একটা রাষ্ট্রের জন্য কলঙ্ক। একটা রাষ্ট্রের জন্য এই ধরনের ঘটনা কখনোই কাম্য নয়।তবু বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের শুরুতে এই ধরনের ঘটনা বাংলাদেশকে একটা কলঙ্কময় অধ্যায় দিয়ে গেছে।উপরন্তু এই রাষ্ট্রের জন্য বাঙালিরা আত্মাহুতি দিয়ে পূর্ব বাংলাকে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রে রূপান্তরিত করে গেছেন। এই যে আমাদের বাংলাদেশ। এই বাংলাদেশের জন্য কবিরা তাদের কবিতাতে জীবনের সবটুকুন সাহস আর মেধা দিয়ে রাষ্ট্রের জন্য ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ করে গেছেন। যা রাষ্ট্র নামক প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সম্ভব নয়।কিন্তু একজন কবি তার রাষ্ট্রের বাইরে নয়। এই বিবেচনা বোধ একজন কবিকে যেমন তাড়িয়ে বেড়ায়।তেমনি রাষ্ট্রের প্রতি দায়িত্ববোধকে অবহেলা করা যায় না।এই দুয়ের সমন্বয়ই কবিতায় রাষ্ট্রচিন্তার উপাখ্যান হিসেবে বিবেচিত। মুক্তিযুদ্ধর কবিতা গুলোর মধ্যে শামসুর রাহমানের স্বাধীনতা তুমি, তোমাকে পাওয়ার জন্য হে স্বাধীনতা, টেলেমাকাস, হাসান হাফিজুর রহমানের- গেরিলা, শত্রুর লাশ চাই, আহসান হাবীবের মিছিলে অনেক মুখ, শহীদ কাদরীর নিষিদ্ধ জার্নাল, রুদ্র মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর কনসেন্ট্রশন ক্যাম্প ইত্যাদি কবিতাগুলো সবচেয়ে বেশি প্রসারিত ।
চতুর্থ, মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের কবিতায় উঠে এসেছে স্বাধীনতা উত্তর একটি রাষ্ট্রের স্বপ্ন ভঙ্গের কথা। যা কবিদের নিরাশ করেছে। স্বদেশের প্রতি অনুরাগে রাজনৈতিক সচেতন কবিরা সেই সময় আক্ষেপে ফেটে পড়েছেন। সেই সময়কার রাজনৈতিক পরিবেশ ছিল সুস্থতাহীন। মানুষ মাত্রই তার মৌলিক চাহিদার প্রতি আকৃষ্ট থাকবেন এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এই স্বাভাবিক চাওয়ার কোনো প্রাপ্তি মানুষের ছিল না। বরং হতে হয়েছে লাঞ্ছিত।তাই এই সময়ে কবি রফিক আজাদ তাঁর ‘ভাতদে হারামজাদা’ কবিতায় মানুষের মৌলিক চাহিদার জন্য রাষ্ট্রের কর্ণধারদের প্রতি আহ্বান করেছেন। এই সময়ে জিল্লুর রহমান সিদ্দিকী, নাসির আহমেদ, আবু হাসান শাহরিয়ার, মাহবুব হাসান রাষ্ট্রের এই রূপ পরিস্থিতি নিয়ে তাদের রাষ্ট্রের প্রতি যে ভাবনা তা তুলে ধরেছেন কবিতার মধ্য দিয়ে।
পঞ্চমত, ৮০র দশকে এসে ৯০ দশক সময় ধরে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের ক্ষমতার পরিবর্তনে যে স্বৈরাচারী মনোভাব প্রকাশ পায় তা কবিদের আরও বেশি উৎকণ্ঠিত করে তোলে। এই সময়ে রাজনৈতিক কবিরা সময়ের প্রয়োজন মেটাতে সমাজে শোষণের বিরুদ্ধে, স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে নিজেদের মত প্রকাশ করতে থাকেন প্রতিনিয়ত একজন শিল্পীর মেজাজে। এই সময়ে শামসুর রাহমান, নির্মলেন্দু গুণ, মহাদেব সাহা, জুলফিকার মতিন প্রমুখরা কবিতা লিখেছেন। তন্মাধ্যে ১৯৮৭ সালে লেখা নুর হোসেনকে নিয়ে লেখা কবিতাগুলো বিপ্লবের প্রতীক, বিদ্রোহের প্রতীক হয়ে ফুটে ওঠে। এই সময়ে ‘শৃঙ্খল মুক্তির জন্যে কবিতা ৮৭’, স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে কবিতা ৮৮, ‘সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে কবিতা ৮৯’ এবং ‘কবিতা রুখবেই সন্ত্রাস ১৯৯০’ ইত্যাদি কবিতাগুলো উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছেন এদেশের কবি সমাজ।
নব্বই দশকের থেকে কবিতায় রাষ্ট্রচিন্তার প্রতিফলন ঘটেছে অতি আধুনিক ভাবে। যেখানে কবিরা তাদের রাষ্ট্রীয় চিন্তাগুলো কবিতার আড়াল হিসেবে ব্যবহার করেছে। এই আড়ালকে এক কথায় সৎ সাহসের অভাব হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। আবার কবিতার নান্দনিক সৌন্দর্য হিসেবেও দেখা যেতে পারে। এই সময়ের কবিদের কবিতায় রাষ্ট্রচিন্তার কথা সরাসরি বলার মতো অবস্থা খুব বেশি একটা বিরাজমান নয়। কিন্তু আমরা যদি ৫২-এর ভাষা আন্দোলন, ৬৯-এর গণ অভ্যূত্থান,৭১-এর মুক্তিযুদ্ধর দিকে তাকাই তবে আমরা প্রত্যক্ষ করব, সেই সময়কার কবিরা তাদের কবিতায় সরাসরি রাষ্ট্রচিন্তার প্রতিফলন ঘটিয়েছেন অনেকে। আবার অনেকে কবিতার সিম্বল ব্যবহারও করেছেন। কিন্তু এই সময়ে কি হচ্ছে কবিতায়? কবিরা কিভাবে দেখছেন তাদের রাষ্ট্রীয় চেতনাবোধকে।
সম্প্রতি শাহবাগ আন্দোলন এই আন্দোলনকে ঘিরে রাষ্ট্রের যে মোক্ষম পরিস্থিতি যাচ্ছে যে পরিস্থিতিতে দেখা যাচ্ছে যে, নাটকীয় নানা ঘটনার মধ্য দিয়ে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। এই সব ঘটনা নিয়েও কবিরা বেশ কবিতা লিখেছেন। কিন্তু আমাদের রাষ্ট্রের যে দায়িত্ব সেই দায়িত্ব কতটুকুন পালন করেছে নিজে রাষ্ট্র। রাজনীতিবিদরা যখন ঘুমান কবিরা তখন রাষ্ট্রের পাহাড়াদার হয়ে পড়েন এটা সত্যি। সেই দায়িত্বে বোধ থেকে কবিরা যে কবিতা লিখেছেন তার অধিকাংশ কবিতার বৈশিষ্ট্য হচ্ছে আড়াল। রাষ্ট্র-চিন্তার কবিতার ক্ষেত্রে কবিদের এই আড়ালগত বিষয়টা এতটাই প্রবল হয়ে উঠেছে যে মনে হয় কবিরা তাদের কথা বলার সাহস হারিয়ে ফেলছেন। কিন্তু সবাই না। অনেকেই আছেন যারা রাষ্ট্র সম্পর্কীয় ভাবনাগুলো সরাসরি তাদের পাঠকের কাছে তুলে ধরছেন নিজেদের কবিতার মধ্য দিয়ে। তাই অনায়াসে বলা যেতে পারে, আমাদের এই গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে কবিদের রাষ্ট্র চিন্তার যে প্রেক্ষাপট তা রাষ্ট্রের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদের চেয়ে কোন অংশে কম নয় এবং এই চিন্তা সর্বসাধারণের কাছেও গ্রহণযোগ্য।