মানবজীবনে প্রেম চিরন্তন বিষয়। প্রেম কখনো মানব-মানবীর একপাক্ষিক, কখনো দ্বিপাক্ষিক মনস্তাত্ত্বিক বোঝাপড়ার সমষ্টি। এর বাইরেও সংসার জীবনে প্রেমের নানাবিধ রূপ আমরা দেখতে পাই। প্রেম কখনো কামতাড়িত, কখনো নিষ্কাম। কখনো মিলনাত্মক, কখনো বিরহকেন্দ্রিক। তবে ব্যক্তিগত প্রেম ছাড়াও বস্তুগত প্রেমের দৃষ্টান্ত পৃথিবীতে কম নয়। এরই ধারাবাহিকতায় কবিতায়ও প্রেম অনিবার্য এক সত্য হয়ে উঠেছে। সে সত্য কেবল কবিকেই আলোড়িত করে না, পাঠককেও যুক্ত করে। সেই সর্বব্যাপী প্রেম যেন ভর করে আছে কবি আবু হাসান শাহরিয়ারকে।
যদিও সেই প্রাচীন যুগ থেকে মধ্যযুগ হয়ে আধুনিক যুগে এসেও একচ্ছত্রভাবে বাংলা কবিতায় আধিপত্য বিস্তার করে আছে প্রেম। রাজনৈতিক অস্থিরতা, ধর্মীয় মনোভাব, যুদ্ধবিধ্বস্ত পৃথিবী, সামাজিক অবক্ষয়, মানসিক অস্থিরতা ও সমকালীন সমস্যার পাশাপাশি চিরকালীন মানবীয় প্রেম-বিরহও স্থান করে নিয়েছে কাব্যে। নিঃসঙ্গ কবির ব্যক্তিজীবনের দুঃখ-দুর্দশাও কবিকে প্রেমের কবিতা রচনায় উদ্বুদ্ধ করেছে।
কবি আবু হাসান শাহরিয়ার সেই অর্থে প্রেমের কবি। তবে শুধু ব্যক্তিপ্রেমের কবিতাই নয়, সেখানে প্রস্ফুটিত হয়েছে বস্তুপ্রেমও। বালিকা আশ্রমের কবি আমাদের ভালোবাসতে শিখিয়েছেন। তার কবিতা পাঠে কী এক অপার্থিব ভালোবাসায় আন্দোলিত হই আমরা। সংক্ষিপ্ত অথচ সাবলীল বয়ানে তিনি অসংখ্য প্রেমের কবিতা উপহার দিয়েছেন আমাদের। চিরকালের প্রেমকে বহুরৈখিক ব্যঞ্জনা দিতে তার তুলনা বিরল। জগতের তাবৎ বিষয়কে কবিতার বিষয় জানলেও ‘প্রেমের কবিতাগুলো চিরকালই প্রতিপত্তিশালী।’ অথচ প্রতিপত্তিশালী প্রেমের কাছে তিনি ভীতু। কেননা রমনীর প্রতি ভালোবাসা কবিকে ভীত করে। কবি তাই বলেন:
অথচ তোমার ডাকে আজও সেই প্রথমেই ভয়:
একবার গেলে যদি বার বার যেতে ইচ্ছে হয়?
(ভয়)
এই ভয়কে জয় করতেই কবির ভালোবাসা আরও মরিয়া হয়ে ওঠে। বিস্তৃতি লাভ করে শরীর থেকে আত্মায়। অজাগতিক প্রেম এসে জাগতিক টানাপড়েন নিমিষেই নিষ্প্রভ করে দেয়।
মাঝে মাঝে কবি কার যেন মুখ দেখতে পান ইতিহাসের পাতায়, ক্যালেন্ডারে বা শুক্রবারে। প্রেমিকার শব্দাকাশে চাঁদ দেখে কবিও ‘আঁকাশে’ চাঁদ ওঠাতে চান। এ থেকেই বোঝা যায়, জগতের এমন অনেক তুচ্ছ বিষয়ও তার কবিতায় বৃহৎ বা মহৎ হয়ে উঠতে পারে। কবির চাঁদ আবার বালিকাবিহারে যায়। তার একখানা রাত ভোর হয়ে যায় টেলিফোনে-টেলিফোনে। যখন সব জানালার বাতি নিভে যায় কবি তখন সেই জানালায় তারাদের ছবি আঁকেন। কবি বলেন:
আমার তারারা উজালা বালিকা
ঘন ঘন প্রেমে পড়ে
একটি কবিতা ডুব দিয়ে ওঠে
রাত্রির সরোবরে।
(বালিকা আশ্রম ৪)
উজালা বালিকা রাত্রির সরোবরে ডুব দিয়ে একেকটি কবিতার জন্ম দেয়। স্রষ্টার অগাধ আস্থা তৈরি করে নেয় অনায়াসেই।
রমনী ছাড়াও কবির প্রেম যদি হয় বইয়ের সঙ্গে। তবেই তো তিনি বলেন, ‘বই কখনও ধার দিতে নেই’। তাহলে খোয়াতে হয়। কবির প্রশ্ন: ‘বইচোরা কি কাব্যরসিক? ছন্দ জানে?’ তবে চোর এটা হয়তো জানে না, তার চুরি করা বইটি কবির আদ্যোপান্ত মুখস্থ। তার ‘আদ্যোপান্ত’ কবিতার বাহ্যিক দৃশ্য এমন হলেও আমরা কি বলতে পারি না যে, উপমাশ্রিত বই যদি হয় কোনো নারী, সে নারী যদি অন্যের দ্বার পরিগ্রহ করেও থাকে, তবে ‘চোর কি জানে? চোর কি জানত,/ আমি তোমায় মুখস্থ পাই আদ্যোপান্ত?’ এছাড়া কবির বাড়িতে আসে কলেজপড়ুয়া এক প্রেমের কবিতা। যে পয়ারে পয়ারে হাঁটে; কথা বলে সলাজ লিরিকে।
কৈশোরের অনুচ্চারিত প্রেমও কবিমনে নাড়া দেয়। ছুটির ঘণ্টা বাজলে স্কুলড্রেস পরা ঝাঁক বাঁধা কিশোরীও কবির চোখে কবিতা হয়ে ধরা দেয়। তিনি থুতনির বিরানব্বই পৃষ্ঠায় প্রথম চুম্বনের জলরঙে আঁকেন বর্ষার কবিতা। কখনো কখনো তার ভালোবাসার সাক্ষী একজন রিকশাঅলা। ভালোবাসা না থাকলে কবি কোথাও বেড়াতেও যান না। তার ভালোবাসা এতটাই নিখুঁত যে, তা ঢেঁকিছাটা প্রেম হয়ে যায়। কেননা প্রেমে না এঁটুলি হলে টান পড়ে রসের ভাঁড়ারে।
কবিতাকে ভালোবেসে কবি অনন্ত প্রেমের মাঠে কবিদের বাদাম বিক্রেতা বলেছেন। কেননা:
ছোট ছোট কবিদের বড় বড় কথা থাকে মুখে
লঘু মেঘে বৃষ্টি হলে কবিতার বাড়াভাতে ছাই
তার মানে এই নয়, মাঠে মাঠে আড্ডা মুছে যাবে
(বালিকা আশ্রম ২৪)
আগেও বলেছি, কবির প্রেম কেবল মানবীর প্রতিই নয়। তার প্রেম সর্বজনীন। নারী, প্রকৃতি, কবিতাচর্চা, মূল্যবোধ—সবকিছুর প্রতিই তার প্রেম চির জাগরুক। পৃথিবীর যাবতীয় বস্তু যেন কবিতার কাছে তুচ্ছ। ভালোবাসার মানুষটির জন্য দুই ছত্র কবিতা-ই যথেষ্ট হতে পারে। বৈষয়িক আনন্দের চেয়ে অপার্থিব ভালোবাসা কোনও অংশেই কম নয়। কবি বলতে চেয়েছেন:
দু’-চার পঙ্ক্তি কাব্য ছাড়া আমার দেওয়ার আর কী আছে?
নিরস কাব্যগ্রন্থে পুরে পাঠিয়ে দেব তোমার কাছে।
(নিরন্তরের ষষ্ঠীপদী ১)
কবি অন্যত্র এও বলেছেন:
হাজার নারীর পুরুষ আমি, থাকি তেপান্তরের মাঠে
ছন্দ যদি শিখতে পারো, শরীর দেব কাব্যপাঠে।
(নিরন্তরের ষষ্ঠীপদী ২)
এ থেকেই বোঝা যায়, কবিতার প্রতি কবির ভালোবাসা কতটা গভীর। কতটা নিবেদিত প্রাণ তিনি কবিতার জন্য। পাশাপাশি প্রকৃতির প্রতি কবির ভালোবাসা অমোঘ। কেননা বাংলাদেশর অপরূপ মহিমা দু’চোখ ভরে দেখতে গিয়েও তিনি কবিতাকে সঙ্গে নিয়ে ফেরেন। একই কথা উচ্চকিত হয় তার অন্য কবিতায়:
বদ্ধপ্রেমে পাগল যদি উষ্ণতা চায় মাঘের শীতে
আমার মতো সে-ও যেন যায় পদ্মাপারের রাজশাহীতে।
(নিরন্তরের ষষ্ঠীপদী ১৩)
তার প্রেমের কাছে ধরা পড়ে নদীও। নদীমাতৃক এই দেশে নদীর প্রতি তার প্রেম আজন্মকালের। তার বেশির ভাগ কবিতায় আমরা নদীর উপস্থিতি লক্ষ করেছি। কবি বলেন:
আমাদের পাড়াদের ছিল আরও কত শত নদী
নদীদের কথা কেন ফিরে ফিরে এত মনে পড়ে?
(আমাদের পাড়াদের গ্রুপফটো)
তার ‘অসময়ে নদী ডাকে’ কাব্যগ্রন্থেও নদীপ্রেম দেখেছি। অনুভব করেছি নদীর প্রতি তার অকৃত্রিম ভালোবাসা আর অনুভূতিগুলো। কেননা নৌকায় নদীতীরবর্তী জনপদে ঘুরে বেড়ানো কবির নেশা। কবি তাই বলেন, ‘গাছ আর নদী ছাড়া আমি কোনও মুনিকে চিনি না।’ এই নদী তাঁর শৈশবের, যৌবনের, তারুণ্যেরও। নদীর মতোই সরলভাবে বহমান তাঁর জীবন। নদীর মতো স্বচ্ছ তাঁর পথচলা। কবির নদীরা অনেক কথা বলে। কবি বলেন, ‘শব্দ না ধারালো হলে কবিতাও বোবা/ ঢেউ নেই, ভাষাও অচল।’ (ঢেউভাষা)
বস্তুগত পৃথিবীর বাসিন্দাই তার প্রেম রূপায়ণের অনিবার্য উপকরণ। আমাদের মতো রক্ত-মাংসে গড়া মানুষের যাপিত জীবন ও প্রকৃতিতে তার কাব্যভাষা প্রয়োগ আমাদের কাছে সর্বত্রগামী মনে হয়। প্রেম ও নিসর্গের এই তাত্ত্বিক সংযোগ রয়েছে তাঁর কবিতায়। ফলে এর বাস্তব প্রতিফলনও ঘটেছে তাঁর কাব্যে। তবে তাঁর বর্ণনা কখনো গতানুগতিক ধারায় হয়নি বরং বৈচিত্র্যময় এবং ক্রমেই তা নতুন নতুন পথে এগিয়েছে।
এছাড়া আমরা দেখি, প্রেম ও নিসর্গের মিলন কবির স্বাতন্ত্র্যকেই উচ্চকিত করে। নৈসর্গিক শব্দের ব্যবহারে তাঁর প্রেম চিত্তাকর্ষক হয়ে ওঠে। জাগতিক সব প্রক্রিয়া স্বাভাবিকভাবে সম্পন্ন হলেও কবি ফেলে আসা অতীতের কাছে ফিরে প্রশান্তি খোঁজেন। সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে সবই স্বাভাবিক চললেও শুধু তার প্রেম নেই যেন আগের মতো। প্রেম-বিরহে কাতর কবি শুনতে পান তার স্মৃতিধ্বনি যার সঙ্গী এখন অন্যজন। তাই তো কবি বলেন,
তোমার খবর নিতে প্রতিদিন একদল ধুলোকে পাঠাই
ঝেঁটিয়ে বিদায় করো, সে-খবরও পাই
তোমাকে নিয়েই বাঁচি তোমাকে ছাড়াই
(পেরেক-পাচিঁল… নেটের জানালা…)
তবে এ বিষয়টি সত্য যে, ‘অল্প বয়সের কবিতা অনুভূতি সচেতন, বেশি বয়সের কবিতা অভিজ্ঞতাকেন্দ্রিক। …জীবন এক জটিল অরণ্য, কবিতা তার চাঁদ, ফাঁকফোকর থেকে এসে পড়েই। অরণ্য যত দীর্ঘ জটিল আচ্ছন্ন হোক না, চাঁদের আলো সূর্যের আলোকে কবে রোধ করতে পেরেছে? ভেতরে যেতে না পারলেও শিখরে সে এসে পড়েই।’ (আবদুল মান্নান সৈয়দ)
কবিতার বিষয় নির্বাচনে, দৃশ্যকল্প নির্মাণে তার উপমাগুলো সার্থক হয়ে ওঠে। হয়ে ওঠে প্রেমময়। ‘তোমার বুকের মাপে চাঁদ ওঠে সাহেববাজারে’—কথাটি কেবল তিনিই বলতে পারেন। কেননা তিনি আজন্ম শিশুর মতো সরল। এই সারল্যই তাকে বিশিষ্টতা দান করেছে। তারই বৈশিষ্ট্য আলোকিত করেছে কাব্যসংসার। কখনো কখনো তার শিরোনামগুলোই একেকটা কবিতা হয়ে ওঠে। যেমন:
১. পোড়াতে পোড়াতে ছাই ওড়াতে ওড়াতে যাই
২. তোমাকে ঘষিব বলে কিনিয়াছি পিতল-পালিশ
৩. পেতেছি নিমের হাত; দাও কন্যা নিশিন্দার তিতা
৪. কুড়িতে বুড়িয়ে গেছ; তোমার রোগের নাম কামশীতলতা
৫. ফলিত যৌবন কবে থেমেছিল বুকের বোতামে
৬. তোমার বাঁধানো দাঁত হেসেছিল নকল সোনাতে
৭. তোমার বাঙ্ময় ঠোঁটে টিপসই দিয়ে যেতে আসি
৮. আমার মনের পরকীয়া পাখি না-ডাকিতে আসে
৯. তোমাকে কাছে না পেয়ে বিষণ্ন দুপুরই আজ কবি হয়েছেন
১০. যার জন্য জেগে-থাকা, সে ঘুমায় চন্দনের খাটে
১১. চম্পকনগর থেকে ট্রেনে ওঠে প্রেমের কবিতা
এ রকম বহু শিরোনাম রয়েছে তাঁর কবিতার, যা কবিতাটি পাঠ করতে পাঠককে উদ্বুব্ধ করবে। মূলত বৃহদার্থে তার প্রেমের কবিতার বিশ্লেষণ ক্ষুদ্র বাক্যব্যয়ে কখনোই সম্ভব নয়। তার সারাজীবনের লিখিত আবেদন ক্ষণিকেই হৃদয়স্থ করা কিঞ্চিৎ দুরূহ বটে। দীর্ঘ পঠন-পাঠনই তার প্রেমকে আমাদের সামনে প্রজ্জ্বলিত করে।
খুব অল্প কথায় অধিক ব্যঞ্জনার ক্ষেত্রে অতুলনীয় পারঙ্গমতা তিনি বরাবরই দেখিয়েছেন। তার ‘বালিকা আশ্রম’, ‘কিছু দৃশ্য অকারণে প্রিয়’ ও ‘অসময়ে নদী ডাকে’ কাব্যগ্রন্থের মতো কালজয়ী হৃদয়গ্রাহী বহুলপঠিত গ্রন্থগুলোই এর উৎকৃষ্ট উদাহরণ। কবি বলেন:
শাড়িটা দারুণ বলে স্তনে মুখ ঘষে দিল মাঘের বাতাস
… … … …
আমি তো বাতাস নই; কাছে ঘেঁষতেও ছিল ভয়।
(মাঘের বিকেল)
আবু হাসানের শাহরিয়ারের কবিতায় পর্ববিন্যাস চমৎকার আবহ তৈরি করে। ছন্দ, তাল, লয় নতুন আবেশ এনে দেয়। তার কবিতার সার্থকতা এখানেই। শব্দের পর শব্দ টেনে পাঠককে টেনে নিয়ে যায়; পাঠক হয়ে ওঠেন কবিতাগ্রস্ত। তার কবিতার ছন্দে ছন্দে যে সুর বেজে ওঠে, অন্ত্যমিলেও তার রেশ রয়ে যায়। কী এক ব্যাকুল তৃষ্ণা জেগে ওঠে কবিমনে। যা পাঠককেও আন্দোলিত করে। কবি বলেন:
বৃষ্টিমুখরিত প্রেমে মনও আজ শরীরবিচারী
স্তনে কি লাবণ্য ধরে জলে যদি না-ভেজাও শাড়ি!
(দুই খিলি পদ্য)
কবিতার এই আকুলতা পাঠকের আকাঙ্ক্ষাও বাড়িয়ে তোলে। যেন তার কবিতারই উপমা। কবিতায় মাধুর্যই যদি না থাকে তাহলে পঙ্ক্তিতে লাবণ্য আসবে কোথা থেকে? ছন্দসচেতন কবি ব্যবহৃত সব ছন্দের উত্তম ব্যবহারই করেছেন। মুক্তক ছন্দেও কাব্য রচনা করে তথাকথিত ছন্দবিরোধীদের বুঝিয়ে দিয়েছেন ছন্দ সর্বকালেই পূজনীয়।
কবি আরও বলেন:
বেয়াড়া স্মৃতির হাতকড়া
ধাতব শূন্যতা দিয়ে গড়া
(আড়াই অক্ষর ২)
কবি আবু হাসান শাহরিয়ারের একটি দীর্ঘ প্রেমের কবিতা ‘যে-গোলাপ অনন্ত সুন্দর’ যেন একটি গাথা। যেন একটি গল্প চমৎকারভাবে বলে গেছেন কবি। কবিতার শেষে কবি বলেন:
অমিত বর্ষণে তুমি স্নিগ্ধ হলে নামে নিথরতা। এইভাবে
তোমাকে বিভক্ত করি শত অঙ্গে; পুনশ্চ বানাই।
কবি তাঁর কবিতাকেও যেন বিভিন্ন অঙ্গে রূপ দান করেন। একটি কবিতা থেকে অন্য কবিতা আরো বেশি সুনির্মাণের দিকে ধাবিত হয়। এভাবে বানাতে বানাতেই তিনি হয়ে ওঠেন সার্থক প্রেমের কবি। ব্যক্তির সারল্য, শিশুমনের প্রেম, তীব্র অভিমান, চারিত্রিক অহংবোধ কবিকে চিরকালীন বিশিষ্টতা দান করে। পাঠক তার ভালোবাসার বিশাল সমুদ্রে অবগাহন করে কুড়িয়ে আনবেন মহামূল্যবান মণি-মুক্তা—এমন প্রত্যাশা করি।