মাসুদ খানের কবিতাভুবনে ভ্রমণের অভিজ্ঞতা এক কথায় চমৎকার, অনন্যসাধারণ; যেন এক পূর্বাপর রূপক-সংকেতের মহাদেশ। যা এই ছায়াচ্ছন্ন, এই রৌদ্র-ঝলকানো। যে দেশে বালি ও ধূলিকণা, ঝরাপাতা ও কাঁকর, ঝাপসা হয়ে আসা প্লাস্টিক ও পলিথিন, পথের ধারে পড়ে থাকা কোচকানো সিগারেটের রাংতা, এসব তুচ্ছ দ্রব্যও হয়ে ওঠে প্রাণবন্ত, চকচকে, ঝিলিকপ্রবণ ও মানবীয়, মাসুদ খান যেন সে দেশই নির্মাণ করেন।
ভূকেন্দ্রিক বিভিন্ন বিবেচনা ও প্রত্যয় বারংবার অগ্রাহ্য হয়েছে তাঁর কবিতায়। প্রচলিত কেন্দ্রকে ভূ থেকে সরিয়ে নিয়ে কবি ছড়িয়ে দেন ভূমায়, মহাবিশ্বে। এই কবির জগতেও আছে পতঙ্গ ও পাতাবাহার। আর সেই পতঙ্গ, সেই পাতা ও পাতাবাহারও স্পন্দনশীল, তবে এক মহাজাগতিক ছন্দোস্পন্দে; এবং রঞ্জিত নিখিলেরই রঙে।
নিছক এই ভূমণ্ডলের অধিবাসী হয়ে নয়, কবি জীবিত থাকেন, তুমুলভাবে জীবিত থাকেন, অন্তত থাকতে চান, মহাবিশ্বের এক অনিবার্য অংশ হয়ে। ক্ষুদ্র কিন্তু অনিবার্য সেই অংশ। নিখিলে প্রকাশিত থাকেন, অন্তত থাকতে চান, যেন এক কালো বিন্দু! কালো, কিন্তু অব্যর্থ এক বিন্দু একইসঙ্গে সৃজনশীল ও দ্রুত প্রসারণক্ষম!
এসব উচ্চারণের কোনো ভিন্ন পাঠ থাকে না আর আমাদের কাছে, যখন আমরা দেখি, কুড়িগ্রামের মতো ছোট্ট একটি অখ্যাত অবজ্ঞাত বঙ্গীয় শহর-নয় তিলোত্তমা প্যারিস ভিয়েনা রোম, কিংবা মক্কা মদিনা মস্কো হলিউড, কিংবা নয় কুহেলিলিপ্ত সুদূর বিম্বিসার, ব্যাবিলন, কামাখ্যা-কামরূপ-তার আটপৌরে ধরলা নদী, তার যত ক্ষত আর আবিল্য-আবিলতা, কাঠিন্য ও ক্লেশ, সবসমেত গোপনে উজ্জ্বল জ্যোতিষ্কে রূপান্তরিত হয় পৃথিবীর আকাশে আকাশে, রাত্রিভাগে।
এখন উত্তর-মধ্যরাত্রি। এবং কুড়িগ্রাম পৃথিবীর হৃৎপিণ্ড। আর কবি এরকম কবিতা লেখেন বলেই বোধ হয় এই ধরিত্রী, আমাদের এই প্রচলিত ধরিত্রী, সত্যি-সত্যিই পড়ে থাকে অর্থহীন, কুড়িগ্রামহীন, অর্থাৎ হৃদয়বিহীন। আক্ষরিক অর্থেই পড়ে থাকে রাত্রিবেলা।
বিকীর্ণ হয় সংকেত ওই আটপৌরে কুড়িগ্রাম থেকে, সংকেত বিকীর্ণ হয় ফেলনা প্লাস্টিক, ধূলিবালি, রাংতা ও সিলিকা-সিলিকন থেকে, অপ্রতিভ ভ্যাবাচ্যাকা ছাতিমগাছ থেকে, নিরীহ বঙ্গীয় এক ফল আতাফল থেকে, একটি বিড়াল আর তার রোমরাজি থেকে, অলস দুপুরে পাঁচিলের ওপর দিয়ে মন্থর গতিতে হেলেদুলে চলা বেড়ালের কৌতুক-জাগানো গমনভঙ্গি থেকে, কুকুরের লেজতরঙ্গ থেকে (স্বর্গের পথে যুধিষ্ঠিরের আগে-আগে লেজ নাড়তে নাড়তে চলতে থাকা সেই কুকুর!)। সংকেত বিকীর্ণ হয় ‘নদীকূলে করি বাস’ কিংবা ‘কন্যা বারবার ঘুমিয়ে পড়ছে নদীতীরে আজ সকাল থেকেই’ এইসব সাধারণ ঘটনা থেকে। সংকেতেরা উচ্চতরঙ্গ হয়ে নাচতে নাচতে ছুটে আসে পতঙ্গবৎ। সংকেতেরা আত্মাহুতি দেয় কবির উচ্চসংবেদী এন্টেনায়। এরপর শুরু হয় এক রসায়নপর্ব। কবির গ্রাহকযন্ত্রের বিচিত্র গোলকধাঁধা, আশ্চর্য সব ম্যাজিক আর নানা রকমের বকমেশিনের মধ্য দিয়ে যখন ওইসব শাদামাটা সংকেতেরা প্রবাহিত হয় আর পরিস্রাবণ আর ডিমড্যুলেশন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যখন যেতে থাকে আহা, তখন ওই অখ্যাত কুড়িগ্রাম, ওই ভ্যাবাচ্যাকা ছাতিমগাছ, ওই আনস্মার্ট ছাতিমগাছ, কী রকম সম্ভ্রান্ত আর খ্যাতিমান হতে থাকে। ওই ফেলনা প্লাস্টিক, কাঁকর, মিহি বালিকণা, সবই সুবর্ণ হতে থাকে। মর্যাদায় রঙিন হতে থাকে ওই কৌতুকভঙ্গি বেড়াল। স্পর্ধায় বেগুনি হয়ে যায় নাম-না-জানা সব পতঙ্গরা। আর পথের পাশে পড়ে থাকা কোচকানো সিগারেটের রাংতা হতে থাকে রূপবান।
পথের ধারে পড়ে থাকে শাদামাটা নিরেট পাথর। কতই তো পড়ে থাকে! কেউ তাকিয়েও দ্যাখে না। কিন্তু কবি যখন তা অবলোকন করেন, শিশুর বিস্ময় আর কৌতূহলের সঙ্গে তিনি লক্ষ করেন-ওই পাথরখণ্ডটি, অভ্যন্তরে কী এক অবিশ্বাস্য গতি ও স্পন্দন, চাঞ্চল্য ও কোলাহল, এবং এক বিচিত্র বর্ণাঢ্য জগৎ ধারণ করে নিয়ে কী রকম স্তব্ধ হয়ে পড়ে থাকে! ধূসর পাথর হয়ে পড়ে থাকে! যেন বহুরকমের চাঞ্চল্য ও নীরব কোলাহল এককালে অশ্মীভূত হয়ে, স্তব্ধ হয়ে গিয়ে, তবে ওই নিরেট পাথর। যেরকম, সমস্ত শব্দরাজি ক্রমে কাষ্ঠীভূত হয়ে তবে ওই সার-সার সাজানো বৃক্ষ। এই কবি সেই স্তব্ধ নিরেট জড়ত্বে জাগিয়ে তুলতে চান সুপ্ত প্রাণের তরঙ্গ।
স্পিনোজা ভাবতেন, বিশ্বজগতের সকল কিছুই চিন্ময়। জড় আর চেতনায় কোনো ভেদ নাই, অভেদ। আলাদা নয়, আলাদা করা যায় না। যেমন ভাবতেন দার্শনিক কপিল প্রায় আড়াই হাজার বছর আগে। এই যে দৃষ্টিভঙ্গি, যা কিনা পরিত্যক্ত ও বাতিল হয়ে গেছে এই তুমুল আধুনিকতাবাদী, তুমুল ভোগবাদী সভ্যতায়, তাকে যেন পুনরায় জাগিয়ে তুলতে চাইছেন মাসুদ খান নতুন বিন্যাস ও প্রকরণে, নতুন অবলোকন ও অনুভবে। চাইছেন নতুন এক সর্বপ্রাণবাদের ধারা কল্লোলিত করে তুলতে।
বৃক্ষে বৃক্ষে আর দ্রব্যে দ্রব্যে আর ভূতে ভূতে, সর্বভূতে কবি দেখতে পান সেই প্রাণ, প্রাণের মুহুর্মুহু উদ্ভাস। প্রায় বাতিল হয়ে গেছে যেখানে সর্বপ্রাণবাদী দৃষ্টিভঙ্গি, সেখানে, বলা হচ্ছে, এই গ্লোবাল ভিলেজে, আরও নানা জানা-অজানা কবি ও ভাবুকের সঙ্গে মাসুদ খানও যেন এক শেষ ও পরিত্যক্ত সর্বপ্রাণবাদের বাদী।
মাসুদ খানের কবিতার আরও একটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এপিকধর্মিতা। কবিতা হ্রস্ব বা দীর্ঘ যা-ই হোক না কেন, শৈলী ও বিষয়বস্তু যা-ই থাকুক না কেন, তাঁর কবিতা হয়ে ওঠে এপিকধর্মী। তা যেন স্থাপিত হয় এক বিস্তৃীর্ণ ইতিহাস ও ভূগোলের প্রচ্ছদপটে, এবং অনেক সময়ই এক সীমাহীন দেশ-কালের পরিপ্রেক্ষিতে।
তাঁর এক গ্রন্থের থেকে অন্য গ্রন্থের কবিতা অনেকটাই আলাদা। দ্বিতীয় বইটির স্বভাবচরিত্র প্রথমটির থেকে অনিবার্যভাবেই আলাদা। সম্ভবত অনাগতগুলো হবে ক্রমেই আরও আলাদা, অন্যরকম। কী জানি! সংকলনের পর সংকলন পার হয়ে যাচ্ছেন তিনি তাঁর স্পষ্ট প্রস্থানচিহ্ন রেখে রেখে। পয়লা বই পাখিতীর্থদিনে-তে তাঁর কণ্ঠস্বরটি বেশ নিরীক্ষাপ্রবণ, আবৃত, ঘন, ও অনেকটা হারমেটিক স্বভাবের; কোথাও কোথাও বিজ্ঞান ও পুরাণগন্ধী। বলা হচ্ছে, ‘শুরু থেকেই দুটো বিষয় আদ্যোপান্ত আবিষ্ট করে রেখেছে তার কবিতার জগৎ : বস্তুর অপরিসীম উদ্ভাসের বিস্ময় আর শব্দের শ্রুতিমূল্য!’ দ্বিতীয় বই নদীকূলে করি বাস-এ তিনি যেন অনেকটা সহজিয়া সাধনায় মগ্ন। সেখানে কোনো কবিতায় দেখা যাচেছ মেটাফিজিক্যাল স্বরের সঙ্গে রোমান্টিক সুরের সহজ সমন্বয় (যেমন, সখাতত্ত্ব; বহুদিন পর আবার প্রেমের কবিতা; একটি ভোরবেলা: সদ্য-খসড়া-করা; যোগাযোগ)। কোনো কোনো কবিতার আবহাওয়া মেঘলা ও মেদুর; সেগুলোর কোনো কোনোটা আবার প্রেমজ, এবং কিছুটা কামজও বটে (বৃষ্টি- ও নিদ্রা-গুচ্ছের কবিতাগুলো; ধারাপাতগীতি; শ্রাবণে ও শৈশবে; সহবর্ণা, অতিসহজা আমার; বীজ ও বপনকেলি সংবাদ; লীলা; একজন বর্ণদাসী ও একজন বিপিনবিহারী সমাচার)। কোনো কবিতা হয়তো মেটাকসমিক কিংবা কসমো-মেটাফিজিক্যাল ঘরানার (বহুদিন পর আবার প্রেমের কবিতা, একটি ছুটির দুপুর; পরিভ্রমণ, দূরের আকাশে; একটি হারিয়ে যাওয়া নভোযান;) কোনোটা বা আবার ফ্যান্টাসো-ফিকশনাল (আতাফল; ২৬ বছর পর পিতামহের; একটি হারিয়ে যাওয়া নভোযান; ওসমান লঞ্চ ফেল করেছিল;)। এমনকি, কবিতায় এসেছে শ্লেষ, পরিহাস ও পরীবাদ— কখনো মৃদু, কখনো-বা তীক্ষè, তির্যক—যা তাঁর আগের দিককার কবিতায় সচরাচর দেখা যায়নি। বিজ্ঞানের তন্ময়তার সঙ্গে কখনো শিল্পের, কখনো বা সমাজ-দর্শন-রাজনীতির মন্ময়তার মিশ্রণ, ঘর্ষণ ও সমন্বয় (ইতিহাস; উপপাদ্য;)! আর অনেক কবিতাতেই দেখি, দূরের কোনো সত্তার সঙ্গে যোগাযোগ ও মিলনের জন্য আর্তি-আকুলতা, আন্তঃভৌবনিক সেতুরচনার উদ্বেলতা (সখাতত্ত্ব; বহুদিন পর আবার প্রেমের কবিতা; যোগাযোগ; একটি ছুটির দুপুর;)! তাঁর প্রথম বইয়ে এসব বিষয় ছিল দুর্লক্ষ্য। প্রথম বইয়ে যদি কবি আবির্ভূত হয়ে থাকেন এক নব্য সর্বপ্রাণবাদের মুখপাত্র হয়ে, তবে দ্বিতীয় বইটিতে তিনি আবির্ভূত হন এক নতুন সখাতত্ত্বের উদ্গাতা হিসেবে। এভাবে গ্রন্থ থেকে গ্রন্থে তিনি রেখে যাচ্ছেন তাঁর প্রাতিস্বিকতার চিহ্নরাশি।
অদেখা অচেনা অজানা এক সখার জন্য আকাঙ্ক্ষা, প্রাণের আকুলতা, কাষ্ঠের সঙ্গে লোহার পিরিত, মোটেই অর্থহীন নয় এইসব আকুতি-অনুভূতি, এমনকি এই আধুনিক নিষ্করুণ নাগরিক জীবনেও; বরং তা প্রতিভাত হয় আরও অর্থপূর্ণ, আরও তাৎপর্যমণ্ডিত হয়ে। এখন আর কবিতায় প্রেম, ফুল-পাখি, নদ-নদী নিয়ে কথা-কপচানোর দিন শেষ-এসব কথা যারাই বলুন, বলুক…খাঁটি কথা হচ্ছে, এসব বিষয়ও যে আবার নতুন বৈশিষ্ট্যে, নতুন ভাবে ও ভাবনায়, নতুন বিন্যাসে উপস্থাপিত হয়ে সম্ভব করে তুলতে পারে অসামান্য কাব্যকৃতি, এ সময়ের অপরাপর আরও কিছু জানা-অজানা কবিতার পাশাপাশি, সখাতত্ত্ব তার এক উৎকৃষ্ট উদাহরণ—
আমার সখারা দূরের, অনেক দূরের শহরে থাকে
শুধু
একটি সখার নদীর কিনারে বাস
বিদেশী নদীর রাংতা-মোড়ানো বাঁকে
আমার বন্ধু নদীর কিনারে থাকে।ভিন্ন ভুবনে ভিন্ন নদীর বাঁকে
সখাটি আমার নদীর কিনারে থাকে
দূরে তার দেশ কাঁপা-কাঁপা রূপকাহিনীর মতো কাঁপে
আমার বন্ধু নদীর কিনারে থাকে।
(সখাতত্ত্ব, নদীকূলে করি বাস)
বিকীর্ণ হতে থাকে এক অদ্ভুত আকুলতা কোনো এক অদেখা অচেনা সখার জন্য, এই আধুনিক নগরজীবন ছাপিয়ে, ছাড়িয়ে, পেরিয়ে, দূরে, দূর কোনো অজানায়।
এপিকধর্মিতা, অধিবাস্তবতা ও রোমান্টিকতা, ফ্যান্টাসি-ফিকশন, এসব হয়তো সাম্প্রতিক কাব্যধারায় খুব একটা দুর্লভ নয়; তবে তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় এই যে, একদিকে সর্বপ্রাণতা, অন্যদিকে সর্বভুবনতার যে নির্জন আপাত-কোলাহলহীন পদচিহ্নহীন অনিঃশেষ দেশকাল-প্রান্তর, সেই প্রান্তরে মাসুদ খান অনেকটাই যেন একা, এক, দ্বিতীয়রহিত; অন্বেষণমাতাল এক লোন রেঞ্জার!
মাসুদ খানের কাব্যভাষা ওজোগুণে সমৃদ্ধ। প্রথম বইয়ের কবিতায় তো বটেই, দ্বিতীয়টিতেও। শব্দব্যবহারে সেই অর্থে শুচিবায়ুতা নেই তাঁর। ভারি ভারি তৎসম অর্ধতৎসম শব্দের আশেপাশেই অবলীলায় ঘটিয়ে ফেলেন দেশী কিংবা আরবি ফারসি ইংরেজি হিন্দি কুলোদ্ভূত শব্দের সন্নিপাত। বিভিন্ন ধরনের শব্দের মধ্যে করিয়ে দেন মধুর মেলবন্ধন। রকমারি বাদী বিবাদী সমবাদী বিষমবাদী স্বরে ও সুরে, শব্দে ও
শব্দে ঘটিয়ে দেন সন্ধি। কিংবা, শব্দে শব্দবন্ধে করিয়ে দেন নানা সুষম-বিষম চুক্তি। সে চুক্তি কখনো শান্তির, কখনো অশান্তির; কখনো শান্ত আলাপ-য়ের, কখনো বিস্তারের, কখনো বা তীব্র ঝালা-র। নানা উপসর্গ অনুসর্গ প্রত্যয় আর সন্ধিসমাসযোগে সম্ভব করে তোলেন বিচিত্র নতুন নতুন শব্দের উদ্ভব এবং তাদের বিকাশ।
শব্দে শব্দে মেলবন্ধনে, ভাবের ঘরে রং লাগিয়ে, পুরনো পরিত্যক্ত প্রায়-বাতিল-বনে-যাওয়া বিষয় ঘষে মেজে নতুনভাবে উপস্থাপন করে ঝাঁ-চকচকে তাক লাগিয়ে দেয় তাঁর কবিতা, অনেক ক্ষেত্রেই। তুমুলভাবে সৃজনশীল তিনি আর তাঁর কবিতা, নতুন নতুন আইডিয়ায়। কবিতা যে এক উচ্চতর অনির্বচনীয় শিল্প এবং তা যে এক নিবিড়-গভীর সাধনায় পাওয়া ধন—এই সত্যটির দিকেই নজর ঘুরিয়ে দিতে চায় মাসুদ খানের কবিতা—
আজ অগ্রহায়ণের এই তাক-লাগানো প্রভাতবেলা—
একা আমি বসে বসে ওইসব পাখিহারা স্তব্ধ গাছে গাছে
একটু একটু করে পাখি আর মৌমাছি মেশাই,
একটির পর একটি মৌচাক বসিয়ে যাই ডাল থেকে ডালে—
কিছুটা বিশেষ্য করে তুলি।
অনির্দিষ্ট পথে না ঘুরিয়ে প্রতিটি কবিতাকে তিনি পৌঁছে দিতে চান, দিতে প্রয়াস পান, কোনো না কোনো এক নির্বিশেষ বিশেষ-এ, কোনো না কোনো এক নির্দেশহারা নির্দিষ্ট লক্ষ্যে— আর এখানেই সার্থক তিনি, এখানেই সার্থকতা তাঁর কবিতার।