(কাজী আরিফ, শ্রদ্ধাস্পদেষু)
আয়ুর বন্ধন খুলে ফেলতে ওদের হাত কেঁপেছিল খুব।
কিংবা নিঃশ্বাস সরবরাহকারী যে সিলিন্ডার—
নেপথ্যে দাঁড়িয়েছিল, সে ও জানিয়েছিল অসম্মতি। বলেছিল,
আরও কিছুদিন থাকা যায় না পথিক?
শব্দের ধ্বনি ওড়াতে ওড়াতে যেসব পাখি উড়ে যায়,
সেই পাখিরাজ্যে একদিন আমাদের দেখা হয়েছিল প্রথম,
মনে পড়ে। ওজনদার ঢেউ বহন করে যে পদ্মা আমাদের
ভালোবাসা বিলায়,সেই স্রোতের মতোই আমরা হেঁটেছিলাম
কবিতার মাঠে। আর বাংলা ভাষার সকল নৈবেদ্য আমাদের
আরাধ্য হবে,এমন প্রত্যয়ে দেশে-দেশে রোপণ করেছিলাম
মানুষের কাব্যবৃত্তি।
বন্ধন ছিঁড়ে ফেললেই বিকল হয়ে যাবে সকল আলো-সম্পর্ক,
তা জানতো তারা। তাই দেরি করেছিল খুব। সব্যসাচী ভোরের
জন্য অপেক্ষা করেছিল, কয়েকটি কুসুম। কিছুদূরে দাঁড়িয়েছিল
যে মেঘ, সেও বলেছিল আমি পোশাক বদলে তোমার পাশেই
দাঁড়াব বন্ধু।
যারা যেতে চায়—তাদের থামানো যায় না জেনেও
নিউইয়র্কের আকাশে জেগে থাকা একলা চাঁদ,
বিষাদে মিশে গিয়েছিল আটলান্টিক মহাসাগরে।
এই তো, এই সাগরের তীর ঘেঁষে একদিন হাঁটতে
হাঁটতেই আমরা যৌথপাঠ করেছিলাম শামসুর রাহমান।
আর ঋষী রবীন্দ্রনাথের ছায়া আমাদের অনুসরণ করতে
করতে বলেছিল, জীবন কবিতার মতো পবিত্র হোক।
সেই পবিত্রতার শেষ শিশিরবিন্দু বহন করে যে পাখি
আজ দেশান্তরি হচ্ছে, আমি তার দিকেই তাকাচ্ছি
বার বার—পথিক!
এই পথের কিনারে—আজ
. কেন এত মানুষ দাঁড়িয়ে আছে!