সাহিত্য যাঁকে একবার পেয়ে বসে তাঁর আর নিস্তার নেই। তিনি যত বড় শিল্পপতিই হন না কেন, সাহিত্য শিল্পের মায়াবী হাতছানি উপেক্ষা করতে পারবেন না। শীর্ষ ধনকুবের বর্ণাঢ্য জীবনযাপন তাঁকে পূর্ণ পরিতৃপ্তি কিংবা স্বস্তি দিতে সক্ষম হবে না। তিনি ফিরে যেতে চাইবেন কিংবা একসময় ফিরে যাবেন সাহিত্যের সবুজ-শ্যামল ভুখণ্ডে। হ্যাঁ, শীর্ষ কর্মকর্তা, শিল্পপতি কিংবা রাষ্ট্রপতি; যিনিই হোন না কেন তিনি আবার ফিরে যাবেন সাহিত্যের পলিমাটিতে। এমন ঘটনা অতীতে যেমন প্রত্যক্ষ করেছি, বর্তমানেও দেখছি। আর ভনিতা নয়, আমি বলছি জ্বলজ্বলে জীবন্ত সাহিত্য প্রেমিক স.ম. শামসুল আলমের কথা।
ছেলেবেলা থেকেই লিখে আসছেন স.ম. শামসুল আলম। সেই ছেলে বেলাটার শুরু কবে থেকে? ১৯৬২ সালের ২৫ আগস্ট তাঁর জন্ম রাজবাড়ী জেলার কালুখালী উপজেলাধীন শিকজান গ্রামে। তাঁর প্রথম লেখা ছাপা হয় ১৯৭৯ সালে ফরিদপুর জেলা পরিষদের মুখপত্র মাসিক ‘গণমন’ এ। তিনি ১৯৮৪ সালে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং এ ডিপ্লোমা করেন। সাহিত্য চর্চা করতে করতে কিছুদিন কচি কাঁচার মেলায় রোকনুজ্জামান খান দাদাভাই এর ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে কাজ করেছিলেন। ১৯৯৭ সালে প্রকাশিত হয়েছিল তাঁর প্রথম ছড়ার বই ‘হেসে ফেটে দম’। ভূমিকায় দাদাভাই গ্রন্থটির পরিচয় তুলে ধরেছিলেন। তার কিছু অংশ এখানে তুলে ধরা হলো।
‘শামসুল আলম আমাদের গ্রামের সাধারণ মানুষ, প্রকৃতি আর বিচিত্র মানসিকতার খেয়ালি মানুষকে তুলে এনেছেন তাঁর লেখায়। ৩৮টি ছড়া-কবিতার সমষ্টি নিয়ে বইটি প্রকাশিত। শিশুরা হাসতে চায়। হাসি-আনন্দকে তারা ভালোবাসে। আর তাদের হাতে তিনি তুলে দিয়েছেন এই হাসির খোরাক।’
বইটির নাম ‘হেসে ফেটে দম’ হলেও হাসতে হাসতে দম ফাটবে এমন নয়। তবে তাঁর হাস্যরস ও ব্যঙ্গ-রসিকতা সৃষ্টির সহজাত ক্ষমতা আছে; তা প্রমাণ করে ছড়াগুলো। এ গুলোতো আর হাসির চুটকি নয়। হাস্যরস লুকিয়ে আছে ছড়াগুলোর অন্তরালে। যেমন ইঁদুর ধরতে বিড়াল আনা হলো, সে খেয়ে ফেলে দুধ। বিড়াল ধরতে কুকুর আনা হলো, সে খেয়ে ফেলে খোকার হাতের মোয়া কিংবা লাড্ডু। আমাদের রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষাকারী পাহারাদারদের কথা মনে করিয়ে দেয় ছড়াটি। অন্যদিকে, হাসি লুকিয়ে আছে ছড়াটির অন্তরালে। ‘আজব কল’ নামক ছড়াটির কিছু অংশ পড়ে দেখা যেতে পারে।
ধানের গোলা লুটছে ইঁদুর
কেউ পারি না ধরতে,
ধান ঠেকাতে কল আনি তাই
ইঁদুর নিধন করতে।ওমা সে কি! দুধ খায় কল,
মাছ খায় মড়মড়িয়ে
বিড়াল নামের এ কলটাকে
দিতেই হবে ধরিয়ে।
এ বইয়ের যে ছড়াটিকে সবচেয়ে বেশি পাকা হাতের লেখা মনে হয়েছে, তার নাম ‘বিশ্বকাপ ৯৪’। ছড়াটির কিছু অংশ এখানে তুলে ধরা হলো:
খেয়ে আদা-জল-নুন
মাঠে নামে ক্যামেরুন
ল্যাং মেরে জিতে যাবে, আছে সেই বিশ্বাস।
রাশিয়া-কোরিয়া তাই
আলস্যে তোলে হাই
নাইজেরিয়াও ফ্যালে ঘন ঘন নিঃশ্বাস।ফের পানি পেতে হালে
‘সাম্বা’র তালে তালে
মাঠে নামে নামকরা ব্রাজিলের দলটি।
মেক্সিকো, সুইডেন
বেলজিয়াম, স্পেন
সকলেই গোলে ঠেলে দিতে চায় বলটি।
ছড়াটিতে বিশ্বকাপ ’৯৪-এ সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর নাম ছন্দ ও তাল বজায় রেখে অন্তর্ভুক্ত করেছেন। এটা তাঁর দক্ষতা ও নৈপুণ্যেরই পরিচয়। লেখাটিতে বিশ্বকাপের পরিবেশ এবং প্রতিটি দলের খেলার বৈশিষ্ট্য ফুটে উঠেছে। ছড়াটি একটানে পড়ে ফেলা যায়।
‘হেসে ফাটে দম’ ছড়াগ্রন্থ প্রকাশের পনের-ষোল বছর পর ‘আনন উফার ছড়া’ বইটি প্রকাশিত হয়েছে ২০১৩ সালে। ছড়াগুলোর ভাষা সহজ-সরল। অন্ত্যমিল আকর্ষণীয়। এ বইয়ের লাল টিয়ে ছড়াটি এ রকম:
উফার আছে বায়না
যে পাখি ভাত খায় না
উড়াল দিয়ে যায় না
ঘুমায় শুয়ে খাটে
সেই পাখিটা পাওয়া গেলে হাটে
আনতে হবে ঠিকই উফার জন্য
নিবে না সে অন্য কিছু অন্য।
‘আনন উফার ছড়া’ বইটির সমধর্মী ছড়াগ্রন্থ ‘ব্যাঙ বেড়ালের ছড়া’। এটিও প্রকাশিত হয়েছে ২০১৩ সালে। ছড়াগুলো চিত্রধর্মী। ‘চৌদোলে বউ দোলে’ ছড়াটির প্রথম কয়েকটি পঙ্ক্তি তুলে ধরছি:
চার বেহারার চৌদোলে
লাল টুকটুক বউ দোলে
বউয়ের বাড়ি বরিশাল
বরিশালের লম্বা খাল
লম্বা খালের সাঁকোর বাঁশ
উল্টে আছে সর্বনাশ!
স.ম. শামসুল আলমের কিশোর কবিতার বই ‘আমার মনের আকাশ জুড়ে’ প্রকাশিত হয় ২০০৪ সালে। আমার মনের আকাশ জুড়ে, একটি পতাকা, আর পাবো না ফিরে, চাষির গান, রঙবেরঙের ভাবনা, নদী পাখি গ্রাম, স্মৃতির কবর, মাটির কথা বলি, প্রশ্ন নিশির মনে, পাঠশালা, বাংলাকে নিয়ে, অনেক সুখের দিন আছে প্রভৃতি কবিতা নিয়ে তৈরি হয়েছে বইটি।
কিশোর কবিতার জন্য যে নিসর্গ চেতনা, স্মৃতিকাতর অনুভূতি এবং বিশ্লেষণ ও ভাব-ভঙ্গির প্রয়োজন; সবই তাঁর কবিতায় বিরাজমান।
তাঁর ‘আমার মনের আকাশ জুড়ে’ কবিতা থেকে কয়েকটি পঙ্ক্তি তুলে ধরা হলো।
আমার মনের আকাশ জুড়ে চাঁদ-তারাদের মেলা
আলোর হাসির বন্যা জলে রঙিন ঢেউয়ের খেলা
ইনিকবিনিক ফিনিক ফোটে চুমকি দিঘির বাঁকে
শিশুর হাসি মাতিয়ে রাখে মাটি এবং মা-কে
সূর্য ওঠে দিন ও রাতের সঠিক হিসেব দিতে
ছায়ার মত আঁধার থাকে আলোর বিপরীতে
মেঘের পাহাড় উড়ে বেড়ায় দেশ ও দেশান্তরে
রোদের সাথে হেসে-খেলে বিষ্টি হয়ে ঝরে
সাতটি রঙের মিল হয়ে রঙধনু ওঠে বাঁকা-
সবার সাথে মিলেমিশে আপন হয়ে থাকা।
নদী, পাখি, গ্রাম নামক কবিতায় কবি দুঃখ প্রকাশ করেছেন, নদী শুকিয়ে গেছে, দোয়েলের সেই ডাকাডাকি নেই এবং গ্রাম পড়েছে ঝিমিয়ে। কবিতাটি প্রকৃতির অবক্ষয় নিয়ে কবির বেদনা সুস্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে। কিছুটা আমরা পাঠ করে দেখতে পারি।
ছন্দ ঢেউয়ের দোলা নিয়ে
গ্রামের পরে গ্রাম পেরিয়ে
প্রিয় নদী চন্দনা তুই আগের মতো
যাস নে কেন বয়ে?যাস নে কেন সবার আপন হয়ে
অনেক অনেক দূরে?
এমন করেই শুকিয়ে গেলি!
তোর বুকে নাও ভাসায় না কেউ
ভাটিয়ালির সুরে।
তাঁর কিশোর কবিতায় নিসর্গ আছে, নিসর্গ নিয়ে দুঃখ-বেদনা-আক্ষেপও আছে। প্রকৃতি ছাড়াও বিভিন্ন বিষয় এসেছে তাঁর কবিতায় উপজীব্য হয়ে। এসেছে পতাকা, পাক বাহিনীর অত্যাচার, বায়ান্ন-উনসত্তর, শিশু অধিকার, পল্লী কবির কবর, সুফিয়া কামাল, শিল্পাচার্য, দাদাভাই প্রভৃতি বিষয় ও ব্যক্তির কথা।
স.ম. শামসুল আলমের অন্য কিশোর কবিতার বই ‘বাবার কবর’। এটি একটি মাত্র কাহিনীর ভেতর দিয়ে কবিতাটি শেষ হয়েছে। পিতৃবিয়োগের ব্যথা যে কত গভীর হতে পারে, তার উৎকৃষ্ট দলিল এই বইটি।
পিতৃহীন পুত্রের মুখ থেকে বেরিয়ে আসা বেদনা ভারাতুর কথাগুলো পাঠক হৃদয় স্পর্শ করে এবং সৃষ্টি করে এক করুণ আবহ। কাহিনি কবিতাটির ভেতর দিয়ে কবি তাঁর বাবার চরিত্র, তাঁর কর্মকাণ্ড, স্নেহ-মায়া-ভালোবাসাসহ নানা হৃদয়স্পর্শী চিত্র নিপুণভাবে এঁকেছেন। কোন্ পথে বাবা মসজিদে যেতেন, কোন্ পথে ডাক ঘরে; এসব স্মৃতি ঘুরেফিরে আসে কবির মনে। পোস্ট মাস্টার বাবার বদলে পোস্ট মাস্টার আসেন, গুছিয়ে নেন অফিসের কাগজপত্র। এইতো পৃথিবীর রীতি-নীতি। পড়তে পড়তে অশ্রুসজল হতে হয়। দীর্ঘ কবিতাটির কিছু অংশ এখানে তুলে ধরা হলো:
পুকুর চালায় বাঁশের বাতায় ঘেরা দেয়া চারপাশ
এখানে আমার বাবার কবর; ফেলে নিই দীর্ঘশ্বাস
তারপর বলি, কত স্মৃতি ছিল আমার বাবাকে নিয়ে
খোরমা, জিলাপি কিনে দিত বাবা সোনাপুর হাটে গিয়ে।সন্ধ্যাবেলায় কোলে-কাঁধে নিয়ে দেখিয়েছে বাঁকা চাঁদ,
প্রশ্ন করেছি, চাঁদ কেন বাবা ধরে না তোমার কাঁধ।
বাবা হেসে খুন, মাকে ডেকে বলে, শুনেছ ছেলের কথা!
এতটুক ছেলে ভাঙবেই বুঝি জোছনার নীরবতা।
ষাট দশকের শুরু থেকে রাজনৈতিক ছড়ার ধারাটি ক্রমশ প্রসারিত ও গতিশীল হতে থাকে। শিশুতোষ ছড়ার পাশাপাশি লেখা হতে থাকে প্রচুর রাজনৈতিক, আর্থ-সামাজিক অর্থাৎ বক্তব্যধর্মী ছড়া। এক সময় আইয়ুবী দুঃশাসনের বিরুদ্ধে ছড়াকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করেছেন ছড়াকারবৃন্দ। স্বাধীনতা পরবর্তীকালে কয়েকজন তরুণ ভালো ছড়া লিখতেন। অতিরিক্ত দলীয় আনুগত্য ও সরকারি অনুকূল্য লাভের ফলে তাদের নিরপেক্ষ রাজনৈতিক চেতনাটি নষ্ট হয়ে যায় এবং ছড়ার নামে বাণী রচনা ছাড়া তাদের আর কিছু করার থাকে না।
কেউ কেউ নিজ দলের মুখপাত্র হিসেবেও কাজ করেন ছড়া রচনার মাধ্যমে। চলমান সময়ে সময়ের শোষণ-পীড়ন, গণতন্ত্রহীনতা, শেয়ার বাজার ধ্বংস, ব্যাংক লুট, পরিবেশ দূষণ প্রভৃতি বিষয় নিয়ে লিখতে গেলে একটি বিদ্রোহী সত্তা প্রয়োজন। সুবিধাবাদী মানুষদের তা থাকে না। স.ম. শামসুল আলমের ‘চমক দেব ধমক দেব’ রাজনৈতিক ছড়ার বইতে সরাসরি ঘটনার সমাগম স্বল্প, তবে ঘটনার আঁচ পাওয়া যায় ছড়াগুলো পড়তে পড়তে। ঘটনা ও ঘটনার আঁচ; দু’টোকে উপজীব্য করেই ছড়া লেখা যায়। দেখতে হবে বিষয়-ছন্দ ও কারুকাজে ছড়াটা কতটা জমানো গেল, কালোত্তীর্ণ করা গেল। ছড়াকারের ‘কেমন আছি’ ছড়া থেকে উদাহরণ তুলে ধরা হলো:
আকাশ ভাঙে পাহাড় ভাঙে
বুকে তুফান ঢেউ
এই জনগণ কেমন আছি
খোঁজ নিল না কেউ।আমরা এখন কেমন আছি?
যেমন ছিলাম তেমন আছি,
একই ভাবে কালকাটে।
রাজার গদি পাল্টে দিলেও
গদি ঠিকই তাল কাটে।
‘রাজনীতি করি’ ছড়ায় ছড়াকার রাজনীতির রূপ ফুটিয়ে তুলেছেন এভাবে:
চাঁদাবাজি ছিনতাই
হলে কমিশন পাই।
বিপক্ষে গেলে কেউ
নিজ হাতে ইতি করি।
আমি রাজনীতি করি।
রাজাকারের বিষয়টি আমাদের রাষ্ট্রীয় জীবনে স্থায়ী আসন গেড়ে বসেছে। কবে এই সমস্যার সমাধান হবে, তা নিশ্চিত করে বলা যায় না। এই বইয়ের ‘পারা’ ছড়াটি খেকে একটি উদাহরণ দেওয়া যেতে পারে। ছড়াকার দেখিয়েছেন ‘রাজাকার’ বহাল তবিয়তেই আছে।
ধরবে কে আর আমার লাগাম
দিচ্ছি বাণী আগাম আগাম
হবেই কিল্লাফতে।
কেউ রাজাকার বলছে কত
তবু আছি রাজার মত
বহাল তবিয়তে।
রাজনৈতিক ছড়ার যুগলগ্রন্থ ‘চমক দেব ধমক দেব’ এবং ‘শরম দেব গরম দেব’। দু’টি গ্রন্থের চরিত্রের মধ্যে ভিন্নতা আছে। শেষের বইটিতে সরাসরি ঘটনার প্রাধান্য চোখে পড়ে।
‘শরম দেব গরম দেব’ছড়াগ্রন্থটি প্রকাশিত হয় ২০১৩ সালে। ছড়াকার সমকালীন ঘটনাগুলো সরাসরি তুলে এনেছেন তাঁর ছড়ায়। পড়ার সঙ্গে সঙ্গে পাঠক চমকে উঠবেন; সাড়া জাগবে তাঁর প্রাণে। উদাহরণ তুলে ধরছি ‘তোমরা এবং আমরা’ নামক ছড়া থেকে:
পদ্মা সেতু গড়ার আগেই
পদ্মাকে খাও গিলে,
চোরের মায়ের গলা শুনে
চমকে ওঠে পিলে।শেয়ার বাজার ধ্বংস করে
হাসছো কুটিকুটি
গরিব মারার ভাও বুঝি না
আমরা চুনোপুঁটি।
ছড়াকার তাঁর ‘আর কত’ ছড়ায় আমাদের জাতীয় জীবনের সবচেয়ে বেদনাদায়ক ও কষ্টকর কথাগুলো বলেছেন এভাবে:
এত খুন এত লাশ ক্ষমতার দম্ভ
সরকার যা করে তা দেখে হতভম্ব
নিজ দলে হলে ক্ষমা পায় অপরাধীরা
ধরা পড়ে গোবেচারা আবদুল হাদীরা
বুঝি ঠিকই বিচারের ধার কত
আর কত, আর কত?
এই ছড়ায় নিজেকে স্পষ্টবাদী ও নির্ভীক প্রমাণিত করেছেন ছড়াকার। লেখকদের জন্য নির্বিচারে দলীয় আনুগত্য আত্মহত্যার শামিল। এই ছড়া লেখক সেদিকে না গিয়ে নিজেকে রক্ষা করেছেন।
আমাদের সময়ের সবচেয়ে উজ্জ্বল ঘটনা শাহবাগের গণজাগরণ প্রসঙ্গ এসেছে ছড়াকারের ‘জন-জোয়ার’ ছড়ায়।
জন্ম থেকেই সারাজীবন এই বাঙালি জাতি
খাচ্ছি কেবল একাত্তরের ঘাতকদলের লাথি।
সহ্য করা যায় না, এসো বুকেতে বুক বাঁধি
আর যেন পার না পায় এবার যুদ্ধ-অপরাধী।
ভাঙতে হবে অপরাধীর বেঁচে থাকার খোয়াড়
শাহবাগে তাই গর্জে ওঠে বোধের জন জোয়ার।
এই বইয়ের প্রতিটি ছড়ায় আমাদের সমাজ ব্যবস্থার ছবি আঁকা হয়েছে। সত্যি ছড়াকার তথাকথিত রাজনৈতিক-রাষ্ট্রচালকদের শরম দিয়েছেন আর গরম দিয়েছেন নিপীড়িত জনগণকে। ছন্দ-ভাষা-প্রকাশভঙ্গিতেও বইটি গ্রহণযোগ্য।
কবিতা প্রতিদিন আধুনিক হচ্ছে। কবিতার পাশাপাশি কথা সাহিত্য এবং সাহিত্যে এবং সাহিত্যের অন্যান্য শাখার বিষয় এবং প্রকাশভঙ্গির দিক থেকে বদলে যাচ্ছে। শাসমুল আলম হিংসার নক্ষত্র এক (১৯৮৭), দুঃখের কাছে আশ্রিত আমি (১৯৮৭), দাঁড়াবার পা কোথায় (২০০১), একদিন বুক জলে নেমে (২০১৪), সোনার বাসর (২০১৪), একটি আকাশবৃক্ষ আমাকে বলেছে (২০১৬); এই ছয়খানা কাব্য রচনা করেছেন। এখানে আমার হাতে পাওয়া দু’খানা বই সম্পর্কে সামান্য দু’চার কথা বলব।
বিগত শতাব্দীর ত্রিশ দশকেই আধুনিক কবিতা সাধারণ পাঠকের আওতা থেকে দূরে সরে গিয়েছিল। গতানুগতিক বিষয় ও প্রকাশভঙ্গি এড়িয়ে নব নব ধারা সৃষ্টিতে ব্যাপৃত হন আমাদের আধুনিক কবিগণ। জীবনের অচেনা অনাবিষ্কৃত জটিল দিকগুলোকে উপজীব্য করে তা নিজেদের সৃষ্ট নতুন প্রকাশভঙ্গির মাধ্যমে তুলে ধরেন পাঠকের কাছে। পাঠক বলেন, বড্ড দুর্বোধ্য আধুনিক কবিতা। সে সময় জীবনানন্দ দাশ কী করলেন? নিসর্গে ফিরে এলেন। আমাদের দুয়োরের সামনের নিসর্গ থেকে ভোরের বাতাসে কাঁঠাল পাতাটি ঝরে পড়ার দৃশ্য দেখালেন, ডুমুরের গাছে ছাতার মতন বড় পাতাটির নিচে বসে থাকা দোয়েল পাখিটি দেখালেন, আরও দেখালেন ধানসিড়ি-জলসিড়ি নদী; নিসর্গের আরো কতনা রূপ!
প্রসঙ্গ স.ম. শামসুল আলমের কবিতা নিসর্গ চেতনা এখন জীবন যন্ত্রণা বা বৈদগ্ধের নিচে চাপা পড়ে আছে। সেখানে স.ম’র কবিতা হারানো দিনগুলোর ছোঁয়া দিয়ে যায় প্রাণে। ‘একদিন বুকজলে নেমে’ কবিতায় বাড়ির পাশের বর্ষায় ডুবে যাওয়া আমনের ক্ষেত দেখলাম, ডাহুকের ডাক শুনলাম। বর্ষার জলস্নাত সবুজ নিসর্গের পাশাপাশি এই কবিতায় আছে মনভোলানো প্রেমঘন পরিবেশ। পড়তে পড়তে স্মৃতিকাতরতা পেয়ে বসে। আজকের সভ্যতায় দাঁড়িয়ে আমরা অতীত দীনের যে সব সম্পদ হারিয়েছি তা নিয়ে কবির বেদনাঘন অভিব্যক্তি পাঠক হৃদয় স্পর্শ করে। কবিতাটির অংশ বিশেষ উদ্বৃত করা গেল:
বহুদিন আগে একদিন বুকজলে নেমে ডাহুকের খোঁজে আমি তোমাকে পেয়েছি
আজ বহুদিন পরে আমি ডাহুক দেখি না, আমন দেখি না, দেখি না স্বচ্ছ জল
ঘরে চেরাগ দেখি না, সাঁঝের মায়াকে দেখি না, দেখি না আবছা আঁধার
বিজলি বাতিতে আজ ছেয়ে গেছে সারা গ্রাম, সারা মাঠ, সারাটা শহর
এমন আলোয় আমি তোমাকে দেখি না।
কেবল নিসর্গ কিংবা প্রেম নয়, এই গ্রন্থে জীবনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেছেন কবি। তাঁর দৃষ্টি থেকে গাভীর সঙ্গে প্রজনন কর্ম নিমগ্ন দৃষ্টিও হারিয়ে যায়নি। হারিয়ে যায়নি সেইসব বালক যারা দৃশ্যটি দেখে মজা করে হাসছিল। তখন কাছে থাকা লোকটি যেন বোঝাতে চাইল:
হে বালকগণ
তোমরাও একদিন পৃথিবীতে এ ভাবেই এসেছিলে
এ ভাবেই সকলকে আসতে হয়
এবং এ ভাবেই প্রজনন কর্ম চলে
‘যেতে যেতে দেখলাম’ কবিতায় কবির পর্যবেক্ষণ: ’এবং বালকেরা খেলা ছেড়ে বয়স্ক হয়ে উঠেছে।’ কবির অন্য কবিতাগ্রন্থ ‘সোনার বাসর’ প্রকাশিত হয় ২০১৪ সালে। এই গ্রন্থে স.ম. শামসুল আলম একদিকে যেমন লোককবির সহজিয়া ভাষায় মিশেল দিয়ে প্রেমের কবিতা লিখেছেন, অন্যদিকে আধুনিকতম ভাষায় ব্যক্ত করেছেন জীবনের জটিল দিকগুলো। প্রথমে সহজিয়া ভাষায় রচিত। ‘সোনার বাসর’ কবিতাটির অংশ বিশেষ এখানে তুলে ধরছি:
তোমার কাজল ভুরু নীলের লাহান
মোনালিসা হাসিমুখ সহজ সরল
গেয়ে যাও স্মৃতি-সুরে ভাটির গাহান
রঙিন হৃদয় যেন নধর তরল
তোমার কাজল আঁখি নীলের লাহান
আমারও কন্ঠে তাই প্রেমের গাহান।
জীবনের জটিলতার দিকে এগিয়ে যেতে যেতে সুখপিয়াসী কবি ‘যদি সুখ নিয়ে এসো’ কবিতায় বলেন:
ক্ষয়িষ্ণু দেহের কষ ও কোষে
তোমাকে জড়াব
যদি দুঃখের প্লাবন থামাতে
দুঃখের দহন নেভাতে
হাহাকার অগ্নি থেকে এক বিন্দু সুখ নিয়ে এসো।
কবি তাবৎ সংসার ধংস করতে বলেন, কেননা পুরুষ কিংবা নারীর চরিত্র যেখানে সততার বেষ্টনি লংঘন করে সেখানে ভালোবাসা মূল্যহীন। তিনি তাঁর ‘চুর্ণ কর তাবৎ’ কবিতায় বলেন:
চুর্ণ কর তাবৎ সংসার
যেখানে বৈধব্য বসতি
পুরুষেরা অসৎ আর রমণীরা অসতী।চুর্ণ কর তাবৎ ভালবাসা
যেখানে বৈষম্য বিবিধ
পুরুষ ও রমণীরা থাকে সর্বদাই দ্বিবিধ।
এই বইয়ের বিভিন্ন কবিতা থেকে উদাহরণ তুলে ধরা যায়, যে সব পঙ্ক্তিতে আছে সুখ-দুঃখ-হাসি-কান্না; জটিলতার নান্দনিক উচ্চারণ। ২০০১ সালে প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ ‘দাঁড়াবার পা কোথায়’ পড়ে বিমোহিত হয়েছি। আত্মচরিত নামে তাঁর প্রথম কবিতাটির শুরুটা এরকম:
বিষকাঁটা ঈর্ষার সুঁই ও সুতোর সূক্ষ্ম সীবনে
গাঁথো যদি কখনো আমাকে আরো বেশী দুঃখ দিতে
অমন দুঃখের ভয় একবারও করি না জীবনে
আমার অনাদি সুখ দেখে তোমরাই বুঝে নিতে।
এখানে তিনি সীবনের সঙ্গেথে জীবনের মিল দিয়ে জীবনকে গেঁথে রাখার অপূর্ব এক চেষ্টা করেছেন। কবিতাটির শেষ দু’লাইন তিনি লিখেছেন:
আমি পরাজিত শুধু ভালবাসা চম্বুনের কাছে
কারণ এ-জাতীয় শব্দ আমারই বেশি জানা আছে।
এই গ্রন্থে তিনি সমাজ, সংসার, প্রেম ও প্রকৃতি ইত্যাদি বিষয় তুলে এনেছেন এক একটি কবিতায়। জীবনকে দেখেছেন অন্য এক আঙ্গিকে। জীবনসঙ্গীত শিরোনামে দীর্ঘ কবিতাটি প্রতিটি মানুষের বাস্তবতার চিত্র। ছড়ার ছন্দে অর্থাৎ স্বরবৃত্ত তার বেশ কিছু কবিতা হৃদয়কে আন্দোলিত করে। যেমন:
সোনার জীবন শেষ করেছি
বেশ করেছি বেশ করেছি
কার তাতে কী যায় এসে যায়, কার?
আমার জীবন বুঝব আমি
মন্দ কোথায় খুঁজব আমি
এমন করে মন্দ হওয়ার কে নেবে দায়ভার?
এবারে স.ম. শামসুল আলমের গদ্য-সাহিত্যে আসা যাক। প্রথমে ধরলাম শিশুসাহিত্য ‘লিজার বাগান বাড়ি’ একটি গল্পগ্রন্থ। গল্পের সংখ্যা একটি। লিজা তার বাগান বাড়িতে একটি মুরগি পালে। একটি শিয়াল মুরগিটাকে খেতে চায়। একদিন বাড়িতে ঢুকে খেকশিয়াল মুরগিটাকে প্রায় ধরেই ফেলেছিল। মুরগিটা করুণ স্বরে লিজাকে বলল, তুমি যখন আমাকে আনলে, তাহলে শিয়ালের কাছে ছেড়ে দিলে কেন? বোন, তুমি আমাকে বাঁচাও। লিজা অতি সতর্ক হলো। মুরগির পরামর্শে কুকুর রাখা হলো পাহারা দেয়ার জন্য। ওদিকে, শিয়াল করুণ কণ্ঠে বলল, সে না খেয়ে মারা যাবে। কুকুরটাকে অন্য জায়গায় পাঠানো হোক, না হয় তার জন্য অন্য একটা মুরগি এনে দেয়া হোক। শিয়ালের জন্য লিজার মায়া হলো। সে তার অনুরোধে সাড়া দিল। শিয়াল হলেও প্রাণি হিসেবে তার বেঁচে থাকার অধিকার মেনে নিল লিজা। এখানে গল্পটি শেষ হলে ভালো হত। গল্পের পরিণতি অস্পষ্ট মনে হয়।
গদ্য সাহিত্যে স.ম. শামসুল আলমের শ্রেষ্ঠ কর্ম তাঁর গল্প রচনা। কিশোরদের জন্য তাঁর লেখা গল্পের বই ‘আব্বুর ফিরে আসা’ নানা কারণে উল্লেখযোগ্য। এতে কিশোরদের আচার-আচরণ, চিন্তা-চেতনা, হাসি-কান্না, দুষ্টুমি-দুরন্তপনা অর্থাৎ তাদের সার্বিক কর্মকাণ্ড নৈপূণ্যের সঙ্গে তুলে ধরা হয়েছে। গল্পের মধ্যে কোথাও কৃত্রিমতা নেই, কথার ফুলঝুড়ি আর অনাবশ্যক কবিত্ব ও পাণ্ডিত্য দিয়ে গল্পের গোঁজামিল ঢাকার অপপ্রয়াস নেই।
‘আব্বুর ফিরে আসা’ গল্পগ্রন্থে অন্তর্ভুক্তি ‘সবুরে মেওয়া ফলে’ গল্পে আন্দু ও তার সহপাঠীবৃন্দ, ‘কোঁকড়ানো চুল’ গল্পের ডানপিটে ছাইফুল ও দুষ্টু টিটু, ‘আলী আহাদের সোনার জুতো’ গল্পের আলী আহাদ, শামীম, শম্পা, লম্বা চুলঅলা, নাপিত, রাজ্জাক সাহেব; সবাই আনন্দ দেবে কিশোরদের। আর এই গল্পের পালিশঅলা ছেলেটা রেখে গেছে সততার বিরল দৃষ্টান্ত। ‘চোপা ফোলান’ গল্পে আনন তার চোপা ফুলিয়ে নায়কের মত চেহারা বানানোর জন্য হিশামের পরামর্শ অনুসরণ করে। ফল হয় উল্টা। হিশাম ক্ষমা চায়। ‘ক্যাসিনি রহস্য’ গল্পে ক্যাসিনি বিস্ফোরণের আশংকায় কাঁদছে আন্দু। পরে স্যারের বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ শুনে সমাধান পায় সে। ক্লাসের ছাত্ররা হেসে ওঠে। ‘বড় আবিষ্কার’ গল্পে শিহাম সর্ববৃহৎ আবিষ্কারের প্রতীক্ষায় থাকে।
এই বইয়ের শেষ গল্পটির নাম ‘আব্বুর ফিরে আসা’। গল্পটির বড় কৃতিত্ব এর সমাজ বাস্তবতা। মুক্তিযুদ্ধের শুরুর দিকে আব্বুর ফিরে না আসার উৎকণ্ঠা-উদ্বেগ পাঠককে স্পর্শ করে। হ্যাঁ, আব্বু ফিরে এসেছিলো; দাদার খোঁজে আবার চলে গেল; আর ফেরেনি। দাদাকে কবরে নামিয়ে গুলি করা হয়েছে। আব্বুও রক্ষা পায়নি। দিয়ে গেছে স্বাধীন দেশ।
অনুষঙ্গ হিসেবে গল্পটিতে এসেছে বেঈমান বাঙালি ও দুশমন বিহারীদের নৃশংসতার ঘটনা। আসলে মুক্তিযুদ্ধের সাহিত্যে সমাজ বাস্তবতা না থাকলে সে সাহিত্যের স্বার্থকতা থাকে না। সে ক্ষেত্রে এই লেখক একজন স্বার্থক গল্পকার।
‘অচল পা’। একটি এক রৈখিক উপন্যাস। প্রকাশভঙ্গি ঋজু; অর্থাৎ ভাষা সহজ-সরল। আধুনিক কথা সাহিত্যে-ঋজু-সরল প্রকাশভঙ্গির স্থান নেই বললেই চলে। দুর্বোধ্য কথামালার অরণ্য সৃষ্টি করে কাহিনি-ঘটনা বা বিষয়কে আড়ালে রাখার প্রয়াস লক্ষ্য করা যায় আধুনিক কালের কথাসাহিত্য। তবে প্রকাশ সরল কিংবা জটিল যাই হোক না কেন, প্রকৃত সাহিত্য কালকে জয় করে কালোত্তীর্ণ হবেই। ভাষার ধুম্রজাল সৃষ্টিকে সম্বল করে যারা উপন্যাস; ছোটগল্প লেখেন, তারা পাঠকের কাছে পৌঁছতে পারেন না। মোটা মোটা বাক্য রচনাই সার হয়।
বলছি ‘অচল পা’-এর কথা। প্রথম মনে হয়েছিল এটি আত্মজৈবনিক প্রেমের উপন্যাস। এলিস চরিত্রে এসে দেখতে পাই উপন্যাসটি নতুন বাঁক নিয়েছে। উপন্যাসের নায়ক ভার্সিটির ছাত্রটি লজিং জীবনে উপহাসের পাত্র হয় সুহিতা নামের এক তরণীর কাছে। এক পর্যায়ে তাদের সম্পর্ক প্রেমের দিকে গড়ায়। কিছুদিন পরেই লজিং বাড়ির মেয়ে পঙ্গু এলিসকে দেখতে পায়; তার ডাকে সাড়া দেয় নায়ক। এলিসের শিক্ষিত-মার্জিত রুচি, স্নিগ্ধ বাচনভঙ্গি নায়ককে আকৃষ্ট করে। সেই তরুণীর প্রতি সমবেদনা ও গভীর মমত্ববোধ নায়কের জীবনের ধারাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করে। একসময় সুহিতাকে নয়, এলিসকে বিয়ে করে সে। সুহিতা আপত্তি করে না বরং একটি পঙ্গু মেয়েকে বিয়ে করার জন্য নায়ককে অবনত মস্তকে শ্রদ্ধা জানায়।
এলিসকে নিয়ে সংসার শুরু। তাকে টয়লেটে নিতে হয় নায়কের। মা কাঁদেন পঙ্গু পুত্রবধূ পেয়ে। এলিস সন্তানসম্ভবা হয়। মা আবেগে আপ্লুত হয়ে পুত্রবধূকে বরণ করে নেন।
এই উপন্যাসে সুহিতা ও এলিসের সঙ্গে নায়কের সম্পর্ক, আচরণ, বাকভঙ্গি কোথাও কোথাও আকস্মিক মনে হয়েছে। এলিসের সঙ্গে বিয়ের ঘটনাটি সমাজে বিরল হলেও অবাস্তব নয়। সমাজে যেমন পাষণ্ড আছে, তেমন আছেন মহৎ ব্যক্তিও। অন্ধ নারীকে ভালোবেসেছেন, বিয়ে করেছেন; তেমন উদাহরণও আছে এ দেশে ।
আমার এই প্রবন্ধে আলোচিত বইগুলোর বাইরেও এই লেখকের রচিত কিছু বই রয়েছে। এগুলোর মধ্যে গল্পের বই ‘শরীরী উপাখ্যান’, রাজনৈতেক উপাখ্যান গ্রন্থ ‘বাঙালী জাতি ও কতিপয় জানোয়ার’ এবং রম্য রচনা ‘শব্দ রম্য’ উল্লেখযোগ্য।
স.ম. শামসুল আলমের সাহিত্য সাধনার ধারাটি বহমান থাক আজীবন; এই কামনা করে লেখাটির ইতি টানছি।
________________________________________________________________________________________________
২৫ আগস্ট কবি, ছড়াকার ও কথাশিল্পী স.ম শামসুল আলমের জন্মদিন। এ উপলক্ষে চিন্তাসূত্রের বিশেষ নিবেদন।