সময় নেই বেশি হাতে। হঠাৎ একদিন ঝুমুর ভীষণ অসুস্থ হয়ে পড়ে। সাধারণত বয়স অনুযায়ী অত রোগে শোকে ভোগে না ঝুমুর। রূপকথা ব্যস্ততা আর গবেষণায় বুঁদ হয়ে পড়ে থাকে বলে মায়ের খুব একটা খেয়াল করতে পারে না। মায়েরও কি তবে যাওয়ার সময় হয়ে আসছে? সেদিন লেখক আঙ্কেল কি এমন কিছুই বলছিলেন? চন্দ্রর বুকের ভেতরটা মোচড় দিয়ে ওঠে। হসপিটালের বেডে শুয়ে আছে ঝুমুর। এবার শীতে শ্বাসকষ্টে ভুগতে হচ্ছে বেশ। দু’দিন অক্সিজেন দিয়ে শ্বাস নিতে হয়েছে। আজ একটু ভালো। বয়সের কারণে যা হয়। বেশ কিছু জটিলতা ধরা পড়েছে। আর সবচেয়ে মারাত্মক যেটা,. তা হলো ব্লাড প্রেসার ফ্ল্যাকচুয়েট করছে। যেটা হঠাৎ মৃত্যুর কারণ হতে পারে। তাই রূপকথা চন্দ্রকথা বেশ খানিকটা ভড়কে গেছে। রূপকথা চন্দ্রকথা বিজ্ঞানী আকবর খান সবাই উপস্থিত হসপিটালে।
বুঝলি চন্দ্র, এখন তো মাকে নিয়ে একটা টেনশনই হয়ে গেল।
কেন দিদি?
কারণ যে প্রজেক্টটার সেকেন্ড পার্ট ওপেন করতে যাচ্ছি, সেটা তো মায়ের জন্যও খুব টেনশনের। আলটিমেটলি টেনশন সবারই। কিন্তু মা কি নিতে পারবে এর ওয়েট?
হুম।
ঝুমুর সবই শুনতে পায়।
না না। তোমরা ভেব না। আমি ঠিক হয়ে যাব। আর অত টেনশন নেব না। আমি জানি আমার রূপু সফল হবেই। ওর স্বপ্ন আর অত কষ্ট বিফলে যাবে না। বিধাতা মানুষের সততাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেন না। এ বিশ্বাস আমার সারাজীবনের অর্জন।
ঠিক বলেছেন মিসেস চৌধুরী।
আকবর খান বলে ওঠেন, আর আপনি না থাকলে আমরা তো টাইমমেশিনে ভ্রমণই করতে পারব না। আমাদের ভ্রমণের লাইফ লেঙ্গথ্ তো আপনার জন্ম সাল অবধি
তাই নাকি?
হ্যাঁ। রূপকথা বলেনি আপনাকে?
রূপকথার দিকে চন্দ্র আর মা ফিরে তাকায়,
না স্যার। এই কথাটা কোনো কারণে হয়তো বলা হয়ে ওঠেনি।
টাইমমেশিনে ভ্রমণের লাইফ লেঙ্গথ্ থাকবে নাকি?
অবশ্যই। বছর অনুযায়ী সেটাকে নতুন নতুন থিওরিতে সেট করতে হবে যে।
তাই নাকি? দারুণ তো?
আমরা আপাতত পেছনে ১৯৭৪ পর্যন্ত যেতে চাই।
হুম।
তারপর?
তারপর আর ভাবছি না আপাতত। এখন আপনি কত তাড়াতাড়ি সেরে উঠবেন তার ওপর সব নির্ভর করছে। তাড়াতাড়ি সেরে ওঠুন?
নিশ্চয়ই। আপনি একদম ভাববেন না।
সত্যিই তাই। মা সবাইকে ভাবনামুক্ত করলেন। সাতদিনের মাথায় ফিরলেন বাড়িতে। সুস্থ হাস্যোজ্জ্বল স্বাভাবিক।
চলবে…