টুং টাং
ছড়া কি লিখতে পারি
ঠিক মতো ইদানিং?
ইদারায় বসে থাকি,
কী দাঁড়ায়? ‘খিদা নিন’
মনে-মনে আওড়াই৷
‘বাউড়িয়া’ কত দূর?
আমি কি ওড়িয়া ভাষী?
দেহমনে ক্ষত? ধুর!
কাকে যে বলছি কথা,
সুনসান চারিদিক
হাওয়ায় লিখছি ছড়া—
ভেসে ভেসে পাড়ি দিক৷
পাশে যে বাংলাদেশ
প্রাণখোলা সবুজাভ,
কাঁটাতারে বাধা, মানা?
সব ঠেলে তবু যাবো৷
এই যে অন্ত্যমিলে
মিশে গিয়ে ইদানিং
ছড়াতেই বেজে উঠি
টুং টাং, দ্বিধাহীন!
মানবতার মূর্ত প্রতীক
আগস্ট এত কষ্টে রাঙা
সে এক এমন কাহিনি,
বাংলাদেশের হৃদয় ছাড়া
কোথাও খুঁজে পাইনি৷
ইচ্ছে করে—খাক হয়ে যাক
কুৎসিত পাক বাহিনি,
নৃশংস সেই রাতটিকে, হায়!
আমরা কেউই চাইনি৷
ইতিহাসের করুণ গাথা
বইছি আজও চক্ষে,
জাতির পিতা আজও আছেন
আমাদেরই বক্ষে৷
বঙ্গবন্ধু—বাংলাভাষার
চিরকালীন সখ্যে
মানবতার মূর্ত প্রতীক,
সবাই যে তাঁর পক্ষে৷
গাঁয়ের কথা
এই তো আমার মাটির বাড়ি,
গোবর-লেপা দালানকোঠা,
ভোরের বেলায় তাকিয়ে দেখি
টুকটুকে লাল সূর্য-ওঠা৷
এই তো আমার ফুলের বাগান,
জল টলমল পদ্মদিঘি,
মাঠ পেরোলেই দিঘল-নদী—
তার বুকে এক ছোট্ট-ডিঙি৷
এই তো আমার পানের বরজ,
তার ওপাশে ধানের গোলা,
মাথার উপর সুনীল আকাশ
চাঁদ-তারাদের যায় কি ভোলা!
এই তো আমার লেখার খাতা,
পুরনো এক ঝরনাকলম,
তোমরা জানো গ্রামকে নিয়ে
এই ছড়াটি লিখছি প্রথম৷
দুরন্ত
অবাক ব্যাপার! সব বিষয়েই
দেখছি তাকে দুরন্ত,
এই আছে এই নাই সে হঠাৎ
কখন দেবে দেখা-সাক্ষাৎ
তার কি হিসেব আছে ভায়া?
বেলা যে যায় তুরন্ত৷
দেখলেই চোখ জুড়োন তো!
অনেক ভেবে ঠাম্মা তাহার
নাম দিয়েছেন ‘উড়ন্ত’৷
উড়তে-উড়তে সেই ছেলেটি
এক্কেবারে ভেল-ভেলেটি
হাতে নিয়েই চরকিবাজি
বোনকে বলে, ফুঁ দিয়ে দ্যাখ
হয় সে কেমন ঘুরন্ত!
চরকি ঘোরে ফুঁ-এর জোরে
বাতাস হাসে ঠারে-ঠোরে
অলক্ষ্যে কে বলছে চুপি
সকল আশা পূরণ তো?
কুলুকুলু বইছে নদী পদ্মা
কুলুকুলু বইছে নদী পদ্মা
দেখলে তাকে আপনি জাগে শ্রদ্ধা৷
দুই তীরে তার বৃক্ষরাজি
নৌকাতে গান গাইছে মাঝি
দৃশ্য দেখে কী খুশি আজ বড়দা৷
কুলুকুলু বইছে নদী পদ্মা
মাথার উপর আকাশ, নীল পর্দা৷
জলের ঢেউয়ে রোদের হাসি
কী অপরূপ! হাওয়ার বাঁশি
নিজেই যেন সাজছে সহযোদ্ধা৷
কুলুকুলু বইছে নদী পদ্মা
একে নিয়েই পদ্য লিখে, বোদ্ধা৷
কেউ-বা কবি, কেউ কলাকার,
দিক-দিগন্ত, শ্বেত-বলাকার…
ভালোবাসায় জাগিয়ে তোলে স্পর্ধা৷