বৃষ্টির মুহূর্তে আঙুলের টোকা
পাথরের আলো পড়েনি আমার চোখে
তবুও কে যেন আলো জ্বালিয়ে রাখে
পাথুরে শয্যায় হিম ঠাণ্ডা হয়ে যায়
হৃদয় কুয়াশার ইশারায়
নেপথ্যে কে যেন সুবাস ছড়ায় গোলাপের পাহারায়।
প্রেম আলো হয়ে নীলিমায় উড়ে
জীবনের পঞ্চভুজে মানুষের বিশ্বাস থাকে
ভেতরে ভেতরে, জলমগ্ন স্বপ্নে রমণীর প্রেম দেখি না
তবু কুহেলিমায় থাকি আমি জবুথবু।
সূর্যকে টেনে নিয়ে যেতে পারে কে?
হাওয়ার আগে হাঁটে যে,
বৃষ্টির মুহূর্তে আমার বুকে লাগে কার আঙুলের টোকা
এ মুহূর্তে এই পৃথিবীতে; আমি সব চেয়ে বোকা।
মেঘদলে যে আছে সঙ্গীতমুখর
সুখের লেন দেন হলেও
দুঃখের লেন দেন হয় কী করে?
দুঃখ আরো দুঃখ নিয়ে
দুঃখের ঘাটে গিয়ে
ভিড়ে বিদ্বেষপরায়ণ চারদিক
সক্রিয় থেকে সক্রিয় হতে থাকে
বহ্নিমান এই সময়ে জলেও নিভে না
আগুনের বেহায়া অনুরাগে ।
দুঃখ ধুলোয় মিশে চোখে দেখছি না কিছুই
বৃষ্টির সুরে গান গাওয়া ভুলে গেছি কবেই,
অকণ্টক ফণিমনসায়ও কণ্টকিত হই
রুক্ষ মরুর বুকেই তৃষ্ণা নিয়ে রই।
ময়লা জমিয়ে জমিয়ে আরও ময়লা হচ্ছি
অসুস্হির জীবনে প্রকাশ্যে চোখ মুছছি,
মেঘদলে যে আছে সঙ্গীতমুখর
সে জানে জীবন ও প্রকৃতির ফাঁক-ফোকর।
মূঢ় নৈঃসঙ্গ্যে আমি
তোমার শহরে আমার বুকচেরা জ্যোৎস্না
আমি এখন অন্ধকারের শিকলে বন্দি
দেখছি আমি মানুষের কতো না ফন্দি
প্রতিকূল প্রবাহেও তোমার সঙ্গে আমার সন্ধি।
রাতের দ্বিপ্রহর তৃতীয় প্রহর
এমনকী প্রথম প্রহরে কী করো তুমি?
কী করে তোমার শরীর মনের উর্বরা ভূমি?
মূঢ় নৈঃসঙ্গ্যে তবুও আমি তোমাকে খুঁজি?
দূরে থেকে তুমি কী দেখো
কোন পথ দিয়ে হাঁটছি আমি ?
আমি এই জীর্ণঘরে তোমাকে যখন ভাবছি
তুমি কি জানো তোমার জন্যে আমি কাঁদছি?
আমার ইচ্ছাগুলো কিছুই পায় না
মানুষের ধূম্রজাল ছিঁড়ে আসতে চাইছি
নতুন মানুষ হবো বলে ,
ঘাসফুল নিয়ে খেলা করবো বলে
বাতজ্বলা ঘরে ঘুমে থেকে জেগে আছি।
জীবন, মানুষের জীবনের কতটা দ্যায়
আর কতটা কেড়ে নেয়?
কী কী দ্যায়, আর কী কী ছিনিয়ে নেয়
দূর থেকে কেউ কি হাত বাড়িয়ে দ্যায়?
আমার যেখানে থাকার কথা
সেখানে বেড়াতে যাওয়া হয় না,
আর তার কিছুই হারায় না
আমার ইচ্ছেগুলো হাতে কিছুই পায় না।
হলদেটে স্মৃতিতেও যেন মনে রাখি তোমারে
শস্যক্ষেত্রের পাশে দাঁড়িয়ে
আমি তার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করি অপরাহ্নের হাওয়ার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করি
স্বীকার করি বাংলার ধূলিকণায় বাঁচি আর মরি।
বাউলের বেশে ছাপান্ন হাজার বর্গমাইলের পথ চালি,
মানুষের স্নেহ আর ভালোবাসায় নিজেকে দ্রবীভূত করি
কোনো বিদেশি শত্রুর পরোয়া না করি জীবনের শিল্পে নিজেকে যেন গড়ি।
কারও আগ্রাসী থাবায় যেন না হই ক্ষত-বিক্ষত
এই জীবনের পথে কেউ যেন না দাঁড়ায় সঙ্গীন নিয়ে
উদ্যত হাজারো দুঃখেও যেন থাকি জীবনের জোয়ারে
হলদেটে স্মৃতিতে হলেও যেন মনে রাখি তোমারে।