ধ্বনি
আমাদের যৌথ কপাটে কখনো খিল ছিল না
উদ্দাম হাওয়ার ছুটোছুটি, মুক্তির হিল্লোল ছিল।
দখিনের জানালায় থাকতো যুগল চড়ুই, সূর্যাস্তের মায়াময় আভা
হাস্নাহেনার সাথে দুলতো প্রজাপতি
এখনো নদীতে কল্লোল, মাঝিদের কণ্ঠে দুরন্ত কোরাস
আগামীর সুর…
ধ্বনিকবলিত জমিনে দাঁড়িয়ে আমরা তাকিয়ে আছি ওপাড়ার দিকে
যেখানে নিরালম্ব ঝুলছে বোধ আর স্বপ্নগুলো
পূর্বাপর আমি ও আমরা লুফে নেবো প্রেম
ধুলির শরীর থেকে তুলে নেবো সোনা সোনা কণা
আর বাতাসের গান…
বেগানা গল্পের পৃষ্ঠা
বিলকুল ভুলে যেতে চাই মেকিমুখ,
অন্ধকার গলি,
ছায়া ও লৌকিক শুভেচ্ছার বাগান,
অপয়া পদচিহ্ন,
স্মৃতির বেগানা গল্পের পৃষ্ঠা উল্টে দিতে চাই।
সীমানা প্রাচীর থেকে বেরিয়ে কথার প্রকল্পে
ডুব না দিয়ে ফের পা যাবে আনন্দপুর, পরানগঞ্জ
ঝাপসা আলোয় খুঁজবে পালিয়ে বেড়ানো সহজ-স্বজন, জানি।
ঘোর-মেঘ সরিয়ে পূর্ণাঙ্গ না হউক আধেক নিশি কাটাতে চাই নির্মল স্বপ্নে, উদ্বেল জোছনায়।
মেঘনার তীরে চোখ ফেলে ঢেউ গুনতে চাই আরও একবার
জানি ওই প্রান্তে দাঁড়িয়ে সুবাস বিলাচ্ছে সন্ধ্যামালতি, জুঁই আর মাধবীলতা…
মা
শীতবিকেলে গম ভাজা আর নারকেল তারপর সন্ধ্যার বিষণ্নতা, দীর্ঘশ্বাস হলেন মা।
রাত, যাবতীয় সত্যগুলো জোগাড় করে করে চোখের পাতা জড়ানো, প্রয়াত কন্যার জন্য সুরে সুরে অশ্রুপাত হলো মা
সম্মোহন ভুলে সমূদয় আড়ষ্টতা; অবদমন, ক্ষুধার বিপরীতে আরেকটি প্রাচীন বর্তন কমমূল্যে বিক্রির ব্যবস্থা হলেন মা
সুর করে কোরআন তিলাওয়াত, রসুই ঘরে নীনা হামিদের গাওয়া গানে নিমগ্ন নারী হলেন মা।
বিপ্রতীপ কোণ ঠেলে অদূরের পথযাত্রা হলেন মা
প্রসবকাতরকালেও ছোট পুত্রের দিকে নিরালম্ব চোখ ফেলে উদাস তাকিয়ে থাকা হলো মা।
অনটন, স্বপ্নভঙ্গ, বাইলের বেড়ার ফাঁক দিয়ে পিতার অপেক্ষার নাম মা
কন্যার বিবাহের খুশিতে অচেতন দেহে জীবনের গল্প বোঝার নাম হলো মা।
আদতে মা এক অপার পৃথিবী…