মুক্তবদ্ধ
ডানা দুটো আমায় দিও পাখি
উড়বো একা করুণ হৃদয় নিয়ে
তাই তো প্রাচীন আকাশটাকে দেখি
পোড়াবো তা রুপোর আগুন দিয়ে।
বুকের ভেতর রাতটি যে খুব একা
একটা শহর দেখবো আলোর রূপে
নষ্ট জীবন আঁকায় বিষম রেখা
তোমায় খুঁজি স্মৃতির পরম ধূপে।
কতটুকুই কাছাকাছি ছিলে
কতটুকু গোপন অন্ত্যমিলে
কেউ জানে না কোথায় গেলে পাবো
জড়িয়ে থাকা শেষ চিহ্নটুকু!
তোমায় ভাবি সকল এবাদতে
সকল সময় হৃদয়পোড়া ক্ষতে
হৃদয়প্রতীম জায়নামাজে শোবো
তোমার পথেই সকল সেজদা-রুকু।
ঢেউ
প্রহর আসে প্রহর ফুরোয় মিথ্যে যেন সব
আলোকিত স্বপ্ন আঁকায় মত্ত কলরব
হাওয়ায় পোড়া স্পর্শ এখন হঠাৎ অট্টহাসে
বাস্তবতার নিরস দুপুর সময় স্রোতে ভাসে।
অন্ন-পদ্য
মুদ্রিত হোক ভাতের গদ্য পণ্যবেশী সুখে
জ্বলুক প্রহর মূর্খ জীবন মধ্যবিত্ত চোখে
ছিঁড়ুক শিকল যন্ত্রণাতুর দুঃখবতী নদী
জল জোয়ারে নিক ভাসিয়ে মিথ্যে নিরবধি
আগল খুলে খুব একলা রোদের খেলা দেখি
মায়া সাথের মৃৎ-জীবনীর অবাক সৌধ আঁকি
পেছন ফিরি, গাইতে দেখি স্বাধীকারের গান
স্মৃতিমোড়া একাত্তরের যুদ্ধ জয়ের তান
হেলায় ফেলি এসব কখন মৌনব্রত সাজে
চিরকেলে দুঃখিত মুখ হঠাৎ লুকোয় লাজে
এসব দেখে চুপসে গেছি হাজার ভিড়ের চোখে
হৃদয় এখন তৃষ্ণাতুরা অন্ন-হানির শোকে
সময় আবার গাইবে এ গান সাম্য-জয়ের সুর
পুরো জীবন স্বপ্ন এসব অনেক দূরের দূর।
প্রহর
একলা দুপুর নষ্ট নূপুর প্রহর এলোমেলো
একটা পাখি হঠাৎকখন হৃদয় চমকালো
উজলে ওঠে আড়াল থেকে রোদ্দুর রঙা পাখি
কার চোখে বল্ এই অবেলায় স্বপ্ন গেঁথে রাখি?
স্মৃতি শুধু স্মৃতিই কেবল সকল হাতড়ালো।
থমকে যাওয়া মুখের মায়ায় আছড়ে পরে সুর
দূরত্বকে পাঠায় সে যে দূর থেকে বহুদূর
স্পর্শ জানে এসব মানে আঁধার জমকালো।
মাতম
কেউ একটা আকাশ এঁকে দিক
চোখের ভিড়ে আঁকুক একটা চোখ
ছড়াক আলোর আচড় দিগ্বিদিক
অপরাহ্ণ মুছুক রোদের শোক
দীর্ঘতর আকাশ জানে আলোর সময়টাকে
কে কবে আর এই অ-দিনে হৃদয় জুড়ে থাকে?
ভালো থাকা সহজ, জীবন ভালো থাকার সুর
পাঁজর থেকেও সেও তো একা অনন্ত সুদূর
কার সাথে যে কোন পথে যাই মুক্ত বিকেল শোন
হৃত কমলের আলপনাতেই হাসির প্রলাপ গোন
ঘুমের ভেতরে জাপটে ধরে আকাশরঙা নদী
পালক পালক যায় সে ডেকে কামুক সত্যবতী
কেউ একবার জীবন হাতে নামুক
ব্যর্থ হতে নিঠুর এ সংসারে
গুটিয়ে যাক যেমন গুটায় শামুক
হৃদয় কাঁপুক নিজস্ব সংহারে।