আমিই কবিতা
যেদিন ধসে পড়বে যৌবন, বয়সের ভারে;
সেদিন আমি কবি হবো
শব্দ দিয়ে মানুষেরে করবো আকর্ষণ।
একাল তো আমি কেবল রূপের
আলোকেই দূরীব বিকর্ষণ,
এ-যে আনন্দেরই সময়
কবিতার আউটফিটে দুঃখ ছড়াবার নয়।
কবিতা বিদ্রোহ, আমি বিদ্রোহী
কবিতা উত্তাপ জাগায়, আমি উত্তাপ ছড়াই
কবিতা দুঃখের কথা কয়, আমি দুঃখ বই
কবিতা জীবনের কথা কয়, আমি খোদ জীবন।
কবিতা ছন্দ, আমি ছন্দ
কবিতা সুন্দর, আমি সুন্দর
কবিতা হাসে, আমি হাসাই
কবিতা কবির পিতা
আমি খোদ কবিতা।
যাযাবর বচন
যাযাবর কহিলেন,
‘বিজ্ঞান দিয়েছে বেগ’
এত বেগ যে অস্থিরতা ফুরায় না,
কোনো হেতুতে মন টেকে না।
ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার সবই হওয়া যায়,
গুগল সার্চ বলিয়াছে তাই।
লক্ষ্য খায় ঘুরপাক,
ভেবে হই হতবাক!
‘অপেক্ষা’ শব্দখান আজ বইয়ের পাতায়,
কারণ সবই নাকের ডগায়।
ফের যাবাবর কহিলেন,
‘বিজ্ঞান কেড়ে নিয়েছে আবেগ’
মাথায় ওপর কনকর্ড আর তোলে না নাভিশ্বাস
টেন্ডারে জুটে শত প্রেমিক, বিশ্বাস মেলে না একে
ফোনের আড়ালে মাথা, না কি ফোনই মাথা
আসে না বুঝে!
পায়ের জোর বদলে গেলো গাড়ির চাকায়,
খোলা হাওয়া বদলে গেলো ফ্যানের পাখায়,
গলার স্বর বদলে গেলো কি-বোর্ডে,
বইয়ের পাতা বদলে গেলো পিডিএফ স্ক্রলে,
ব্ল্যাকবোর্ড বদলে গেলো মাল্টিমিডিয়ায়,
আড্ডা বদলে গেলো ভিডিও চ্যাটে,
পটকা বদলে গেলো নিউক্লিয়ার বোমায়,
মৃত্যু বদলে গেলো সংখ্যায়, আর
বিজ্ঞান বদলে গেলো আবেগহীনতায়,
আল-আহলি
একটি বই হাতে নিয়েছিলাম আমি,
আলস্যে গা এলিয়ে বিছানায়
নাম তার ‘বকুল কথা’ বড়ই সুখপাঠ্য,
পঞ্চম পৃষ্ঠার মধ্যিখানে বাধ সাধলো
এক ভয়ানক বিস্ফোরণ,
বইখান গিয়ে পড়লো ফুট দেড়েক দূর;
এত সুখ কেন সইবে!
কেউ বলে একশ, কেউ বলে দু শ তো
কেউ তিন শ
জানি না আমি সে সংখ্যা মৃতের;
শুনেছি সে এক হাসপাতাল, আরোগ্য যার স্লোগান
আর
চতুর ধ্বংসের দেবী এবারে তারেই করলো আহ্বান।