অন্যপাত্রে অশ্রুপাত
চোখের জল ধারণের মতো পাত্র পৃথিবীতে নেই।
আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি—
ফিলিস্তিনি কবি হেবা কামালকে যেদিন ওরা খুন
করলো, সেদিন বিশ্বের কেউ কাঁদেনি!
কাঁদার মতো যোগ্যতা তাদের নেই, কিংবা ছিল না
যেমনটি হাত উঁচু করার ক্ষমতা
. অনেক মানুষের থাকে না;
অনেকে অন্ধত্বের অভিনয় করে, নদী পার হতে চায়—
অনেকে গোলাপের মতো লাল,
. শিশুর রক্ত দিয়ে ঘটায় তাদের ভোরের অভিষেক
সূর্য কখনো কাউকে নিজের প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করেনি।
যারা স্বাধীনতাকামী,
যারা গোলার শব্দ শুনতে শুনতে জন্মদাগে রাখে
নিজেদের স্বাক্ষর,
. জগতে মূলত এরা সূর্যের অধিক।
বুকে অগ্নিলাভা নিয়ে এরা প্রধানত নিজেকে
. লুকিয়েই রাখে।
০২.
আমি আত্মগোপনের ইতিহাস পাঠ করতে করতেই
পৃথিবীর সকল শিশুকে আড়ালবিদ্যা শিখিয়ে যাচ্ছি!
যে সত্তা সৃষ্টির নিগূঢ়তত্ত্ব ভালোবাসে,
সে কখনোই সামনে আসতে চায় না,
কিংবা এই যে গেরিলাযুদ্ধের খণ্ড খণ্ড প্রচ্ছদ
সাজিয়ে রেখেছে বিশ্বের সবুজতম আঙিনা—
তারাও জানে, মানুষ একদিন শান্তিতেই ছিল
পাতাপোশাকে,
জঙ্গলে কাঠাগুনে ঝলসানো খাদ্যই ছিল তাদের
তৃপ্তির পরিপূর্ণ রসদ।
০৩.
যুদ্ধকে যারা উপাসনা মনে করে, কোনো ভোগবাদই
তাদের স্পর্শ করতে পারে না।
গুহা অথবা সুড়ঙ্গই তাদের কাছে সিংহাসনের মর্যাদায়
আলো ছড়ায়। সেখানে পাখি না থাকলেও,
মৃতপাখির পালক থাকে,
বাতাসে ভেসে বেড়ানো কৃষ্ণচূড়ার সুগন্ধ থাকে,
মৃত্যুর মতো মহিমার উজ্জ্বলতা থাকে,
. শুধু ভয় থাকে না।
আমি গাজা উপত্যকার নির্যাতিত মানুষের জন্যে
এই যে এলিজি লিখছি,
জানি, তা পাঠের যোগ্যতাও অনেকের নেই!
অযোগ্য জাতিসংঘকে আমি তো এর আগে
বহুবারই বলেছি,
. তোমার ছাদের নিচে, চোখে গ্লিসারিন দিয়ে
যারা কাঁদে, তাদের চোখগুলো চিরতরে বিনাশ হোক,
বিশ্বশুমারীতে এই গ্রাফ সংযোজিত হোক,
ধরণীতে অন্ধের সংখ্যাই বেশি!