পর্ব-১১
তিলক-কামোদ রাগের ঝাঁপতালে ধ্রুপদাঙ্গের গানের রেশ না কাটতে শুরু হলো প্রবল বাতাস। কুকুর মারা ঝড়ের পূর্বাভাস। সবাই ছুটল বাড়ির দিকে। রমিজ দৌড় দিলেন রকিবকে রেখেই। মর্জিনা স্টেজ থেকে নেমে রকিবের সামনে এসে বলে, উদ্বিগ্ন হবেন না, কুকুর মারা ঝড় হুট করে আসে, পূর্বাভাস থাকে না, এটা অন্য ঝড়। এ সময় ছোটাছুটি করলে গায়ে গাছ পড়বে, এই শিরীষতলায় কিছু সময় দাঁড়ান, ঝড় থামলে আপনাকে পৌঁছে দেব। ঝড় থামছে না, বড় সাইক্লোন ধেয়ে আসছে। তবু তারা দীর্ঘ সময় শিরীষতলায়।
মর্জিনা বলেন, বাইরে আর থাকা ঠিক হচ্ছে না, ঘরে যেতে হবে, আমার বাড়ি। আব্বাস গঞ্জে গেছে, রাতে ফিরবে না, ঝড়ের রাত কাটবে আপনার সঙ্গে গল্প করে। না বলবেন না প্লিজ।
– তা না হয় হলো, কিন্তু রমিজ দুশ্চিন্তা করবে।
– করবে না। সে মানুষ না, পিশাচ। রমিজ আপনার বন্ধু কীভাবে সে গল্প ঘরে গিয়ে শুনব। বিনিময়ে আপনি পাবেন খলিশাপুরের ইতিহাস, যা জানতে এসেছেন।
– চলুন তবে।
ঘরটা স্বপ্নপুরি বানিয়ে রেখেছেন মর্জিনা, ঘোর লাগা মৃদু আলো, ধূপ ছড়াচ্ছে জাফরানি ঘ্রাণ। এর মধ্যে ঘন দুধের সর রঙের শাড়িতে রান্নায় ব্যস্ত হলেন ইন্ডিয়ান ক্লাসিক্যাল মিউজিকের অন্তরালের রানি, যাকে ঘিরে নিগূঢ় রহস্যময় অন্ধকার। বোদ্ধারা জানেন শুধু নামটা- বিবি মর্জিনা। সুনীল গাঙ্গুলি এসে তার দশটি গান রেকর্ড করে নিয়ে গেছেন, মিউজিশিয়ান যন্ত্র আরোপ করে বাজারজাত করেন। এ কারণে কোলকাতায় বেশি আলোচনা। তাদের দূরদর্শন একাধিকবার ডেকেছে, মর্জিনা যাননি।
দিনে দিনে বড় হই। মাসি নাম দেন বিবি মর্জিনা। মাসি হিন্দু হলে নাম হতো কাঁকন দেবী অথবা মধুবালা।
বাইরে তুমুল ঝড়-বৃষ্টি, তাতে মর্জিনার কিছু যায়-আসে না, যেন এমন একটি রাতের অপেক্ষায় ছিলেন। ছাদ পেটানো পাকা ভবনে দুর্যোগ ততটা বোঝা যাচ্ছে না, শুধু প্রবল বাতাসের শোঁ শোঁ শব্দ। এর মধ্যে খাবার প্রস্তুত, অতি মনোরম সব খাবার। কে জানত, এই রাত এভাবে কাটবে। ঝড়ের পূর্বাভাস মর্জিনা দুপুরে রেডিওতে শুনেছেন, এমন পরিস্থিতি হয়তো তার পরিকল্পিত। বাসনা ও পরিকল্পনার নিখুঁত বাস্তবায়ন, জগতে রহস্যের শেষ নেই।
রকিব হঠাৎ লক্ষ করেন, মর্জিনা তাকে নাম ধরে ডাকছেন এবং তুমি।
– দেখো রকিব, বিদ্যায় তুমি অনেক বড়, কিন্তু আমার সাত-আট বছরের জুনিয়র। স্যার বা আপনি বলতে অস্বস্তি লাগছিল। অন্ধকারে তুমি বলতে চাই, দিনের আলোয় দেখা যাবে। ভড়কে গেলে?
– হুম, তবে ভালোই হলো। পুরো ঘটনা উপভোগের চেষ্টা করছিলাম, এখন সব সহজ হয়ে গেল। সবকিছু পূর্বপরিকল্পিত তাই না?
– হ্যাঁ। ঝড়ের সময়টা শুধু নিয়ন্ত্রণের বাইরে ছিল। তোমাকে গান শোনাবার প্রস্তাবটা আমিই রমিজকে দিয়েছি। সে প্রথমে না বলেছে, পরে কী ভেবে রাজি হয়েছে। সেটা কোনো বিষয় না, মূল ব্যাপার হলো, তোমার সঙ্গে সাক্ষাতের অদম্য আগ্রহ জন্মেছিল, জানি না কেন। মাস তিনেক আগে তোমার প্রকল্পের তিন কর্মকর্তা এই গ্রামে এসে গেছেন। দেশি এক, রাশিয়ান দুই। তারা অনেকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। তোমার সম্পর্কে অনেক কথা বলে গেছেন আমাকে আর স্কুলের হেড স্যারকে। তুমি মনে হয় কিছুই জানো না। ওরা তোমার নিরাপত্তা নিয়ে খুবই উদ্বিগ্ন। বলেছেন, তুমি খুব বড় মাপের একটা এক্সপেরিমেন্ট করছো, যা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। তোমার মিলিটারি কমান্ডো ট্রেনিং আছে, তারাই দিয়েছেন, তবু ভরসা পান না। জানো, তাদের এসব কথা শোনার পর থেকে মানুষটাকে খুব দেখতে ইচ্ছে করছিল। মনে হচ্ছিল, তোমাকে পেলে বুকের ভেতর বেঁধে রাখব, কেউ খুঁজে পাবে না।
– কেন?
– কেন জানি না, শুধু জানি তুমি বড় বিজ্ঞানী, তাই রক্ষা করা প্রয়োজন। রাশিয়ার ওরা অনুরোধ করে গেছেন, এই গ্রামে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে তোমাকে আমার নিয়ন্ত্রণে নিয়ে যেন সহযোগিতা করি। সেই মতো পরিকল্পনা।
– নিয়ন্ত্রণে নিয়েছেন, কিন্তু সাহায্য তো করছেন না।
– কী সাহায্য চাও বলো।
– খলিশাপুর গ্রামের একশ বছরের গল্প জানা দরকার আপাতত।
– আমার ব্যাপারে কোনো আগ্রহ নেই?
– আপনি তো গ্রামেরই অংশ, প্রসঙ্গ তো আসবেই।
– গল্পটা শুধু শুনবে, তোমার কিছু লিখতে হবে না, রেকর্ডার আছে। ভয়েস ডকুমেন্টসহ দিয়ে দেব। কেউ চ্যালেঞ্জ করলে কাজে লাগবে। জানো, গ্রামটা খুবই অদ্ভুত।
ফ্লোরিডার আটলান্টিক উপকূলের বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলের মতো এই গ্রামও একটি বারমুডা স্কয়ার মানে শয়তানের চতুর্ভুজ। পার্থক্য শুধু জল আর স্থল। বারমুডা এলাকায় কয়েকটি উড়োজাহাজ ও জলজাহাজ নিরুদ্দেশ হওয়ায় দুনিয়াজুড়ে তোলপাড় হয়েছে, কম্পাস ঠিকমতো কাজ না করায় হুমড়ি খেয়ে পড়েছিলেন বিশ^কর্তারা। অথচ এই বারমুডা স্কয়ারে ঘটে চলেছে আরও বীভৎস এবং চমকে ওঠার মতো ঘটনা। যেমন, কুকুর মারা ঝড়কে তুমি কী বলবে, এই ঘটনা দুনিয়ার আর কোথাও ঘটে কিনা খোঁজ নিতে পারো। গগন শিরীষতলার ঘটনবলির কী ব্যাখ্যা দেবে তুমি। সেখানে প্রতি রাতে বেশ কিছু অস্বাভাবিক ঘটনা ঘটে। শিরীষবনটি পানির ওপর ভাসমান, মনে হয় বিশাল একটি ফেরি। পূর্ণিমা তিথিতে সারারাত দুলতে থাকে, ভেসে যায় না, তলিয়ে যায় না। বছরের পর বছর একই ঘটনা ঘটছে। আছে কোনো ব্যাখ্যা?
– হুট করে বলা যাবে না, দেখতে হবে, এ বিষয়ে পড়তে হবে।
– আচ্ছা পড়ালেখা পরে, এখন শোনো। এখানকার সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো কুকুর। এই চতুর্ভুজ দ্বীপে বাইরে থেকে কোনো কুকুর আসতে পারে না, এখান থেকে বেরও হতে পারে না। সবাই জানে দেশের মধ্যে সরাইলের কুকুর বিখ্যাত। হতে পারে, কিন্তু এই গ্রামের কুকুর সম্পূর্ণ অন্য রকম। এরা আকারে বড় হয়; স্বভাব এবং আচরণ প্রায় মানুষের মতো। উল্টোভাবেও বলতে পারো, এখানকার মানুষের আচরণ কুকুরের মতো। এই জাতের কুকুরের প্রজননক্ষমতা অতি উচ্চ। ম্যালথাসের জনসংখ্যা তত্ত্ব অনুযায়ী, জ্যামিতিক হারে ক্রমবর্ধমান এইসব কুকুর নিয়ন্ত্রণ করে সেই বিশেষ ধরনের ঝড়। ঝড়ের সময় অধিকাংশ প্রাণী থাকে নিরাপদ আশ্রয়ে, কুকুর তখন বাইরে দিগি¦দিক ঘুরতে থাকে। কুকুর মারা ঝড় সামনে যা পায় নিয়ে নদীতে ফেলে, প্রকৃতির এক অদ্ভুত খেয়াল। বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলের উল্টো ঘটনা ঘটে বারমুডা স্কয়ারে। বিশেষ ঝড়ে মধ্যাকর্ষণ শক্তি অকার্যকর, বস্তু ওপরের দিকে হাওয়া হয়ে যায়।
গগন শিরীষতলার পাশ দিয়ে বয়ে গেছে শতরূপা নদী। সত্যিই শতরূপ তার, মনে হয় তারও বেশি। প্রতিদিন নতুন নতুন রূপে বয়ে যায় খরস্রোতা শতরূপা, বছর হিসাবে নদীর নাম ৩৬৫ রূপা হতে পারত। সম্ভবত শিরীষতলার তল দিয়েও বয়ে চলেছে শতরূপা। প্রতি রাতে নদী দিয়ে ভেসে আসে ততোধিক লাশ। প্রথমে তীরে ধাক্কা লাগে, কিছু সময় পর সব লাশ বিলীন হয়। নদীর ভাসমান সবকিছু যেমন ফেরির নিচ দিয়ে হারিয়ে যায়।
– আপনি এই গ্রামের মানুষ না, অত সব জানলেন কীভাবে?
– তুমি দুদিনে যা জানবে, তা যখন বলবে বা লিখবে, পাঠক-দর্শক তোমাকেও এই বারমুডা স্কয়ারের অধিবাসীই বলবে। অবশ্য হেড স্যার আমার চেয়ে দশগুণ বেশি জানেন। স্যার আমাকে কন্যার মতো ভালোবাসেন। তার কারণে এখানে আমি টিকে গেছি। মানব জনম কতটা দুর্বিষহ, যন্ত্রণা এবং কঠিন হতে পারে, আমি তার উদাহরণ। ল্যাংড়া জীবন একটা কাঁধে তুলে টেনে নিয়ে বেড়াচ্ছি।
দেখো, আমার ধর্ম-টর্ম নেই। কোথায়, কার ঘরে জন্মেছি কিছুই জানি না। বাবা কে, মা কে জানার প্রশ্নই ওঠে না। মা আমাকে হাসপাতালের সিঁড়িতে ফেলে চলে গেছেন। তিন দিনের ওই নবজাতককে এক দরিদ্র নারী কুড়িয়ে পেয়েছেন। দশ দিনের মাথায় গঞ্জের নটীপাড়ার মাসিকে দিয়ে চলে গেছেন। মাসি পরম মমতায় কোলে তুলে নিলেন। দিনে দিনে বড় হই। মাসি নাম দেন বিবি মর্জিনা। মাসি হিন্দু হলে নাম হতো কাঁকন দেবী অথবা মধুবালা।
অনেক বড় লেখক, সিনেমা মেকার, কবির স্পর্শে ধন্য হয়েছি, জীবনে বিজ্ঞানের মানুষ প্রথম কাছে পেলাম, কিছু তো বলবে।
গায়ের রংজনিত কারণে জীবনে বেশ কিছু সুবিধা আমি পেয়েছি। মানুষ মুগ্ধ হয়। সবসময় মনে হয়েছে, যে মানুষ যত বড়, তার মুগ্ধ হবার ক্ষমতা তত বেশি। মাসি কোনো ছোটলোকের সঙ্গে আমাকে দেখা করাতেন না। নাগরপাড়ায় মাঝেমধ্যে আমার সঙ্গে দেখা করতেন খুবই গুরুত্বপূর্ণ কিছু মানুষ। আপনি সম্ভবত সুনীল স্যারের নাম শুনেছেন। এ দেশের নামিদামি মানুষজন আসতেন ছদ্মবেশে।
– আপনি ক্লাসিক্যাল মিউজিক শিখেছেন কোথায়?
– তুমি এক রাতে সব জানতে চাও কেন? আমার জীবনের রচনা আরেক রাতে বলব। সব তো একসঙ্গে গুলিয়ে ফেলবে।
– একসঙ্গেই বলেন, আপনি তো অডিও রেকর্ড দেবেন, আমি আলাদা করে নেব।
– আমার জীবনটা বদলে দিয়েছেন ভারতের সিনেমা পরিচালক ঋতুপর্ণ ঘোষ। উনি আমার গান শুনে উন্মাদের মতো আচরণ করেছিলেন। দুদিন ছিলেন। যাওয়ার সময় বগলদাবা করে নিয়ে গেলেন। আশপাশে চাইলেন না, সোজা জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িতে।
অনেক চেষ্টা করেও ব্যর্থ হলেন আমাকে রবীন্দ্রভারতীর সংগীতবিদ্যা বিভাগে পুশ করতে, কারণ আমার যে অতীত লেখাপড়ার কোনো সনদ নেই। অচল মর্জিনাকে নিয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরলেন, জায়গা হলো না কোথাও। অবশেষে পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার বোলপুর শহরে ভিড়ল তরি। বিশ্বভারতীর ভিসি অনুরোধ রাখলেন। কোনো সনদ দিতে হবে না, আমি কেবল দুবছর এই ক্যাম্পাসে থাকব, সংগীত ভবনে যাতায়াত করব। ছাত্রী হোস্টেলে সিটের ব্যবস্থাও হলো। স্বপ্নের মতো লাগছিল সবকিছু।
দেখো রকিব, জীবন যে নাটকের চেয়েও নাটকীয়, তার প্রমাণ আমি অক্ষরে অক্ষরে পেয়েছি। তখন অনেক ছোট, কিশোরী বলা যায়, সময়টায় আমি উপমহাদেশের প্রখ্যাত শাস্ত্রীয় সংগীতের ওস্তাদ আখতার সাদমানী স্যারের সাক্ষাৎ পেয়েছিলাম। ঢাকার এই পণ্ডিতকে তোমরা চেনো বলে মনে হয় না। তাকে কীভাবে পেয়েছিলাম তা আপাতত বলছি না। ওস্তাদজির কাছে বেশ কিছুদিন উচ্চাঙ্গসংগীত শিখেছি। স্যার বলেছিলেন, নজরুলগীতির কণ্ঠ তোমার, তুমি তা-ই গাইবে। আমার সেই দীক্ষা কাজে লেগেছে বিশ্বভারতীতে। নজরুলের অনেক গান কঠিন বলে সেখানে অনেকে যথাযথ সুরে গাইতে পারতেন না। তখন আমার ডাক পড়ত। নজরুলের গোটা বিশেক জটিল তাল-লয়-সুরের গান আমি তুলে দিয়েছিলাম। যাই হোক, লম্বা গল্প। দুই বছর পর ঋতুপর্ণ স্যারকে না জানিয়ে দেশে ফিরি। অনেক জেনেছি, এক বাইজি অতো জেনে কি হবে, এ কারণে তার সঙ্গে আর যোগাযোগ রাখিনি।
জানো, জীবন নিয়ে কোনো আক্ষেপ নেই আমার। ওই যে বললাম, সুন্দর চেহারা আমাকে বাঁচিয়ে দিয়েছে। ফ্রয়েডের ফর্মুলাই ঠিক, যৌন যন্ত্রণার কাছে মানুষ সত্যিই অসহায়। এটাও ঠিক, কল্পনা ও দর্শনে অধিকাংশের মিটেও যায়। অসহায় মানুষ যৌনতায়ও অসহায় এবং নার্ভাস। কাছে এসে অনেককে ভড়কে যেতে দেখেছি। কেউ কেউ লজ্জা পেয়েছেন, স্পর্শও করেননি, গল্পে রাত পার করেছেন। তোমাদের ফ্রয়েড সাহেব আমার স্টেটমেন্ট পেলে হয়তো নতুন করে ভাবতেন, থিউরি পেত নতুন ডাইমেনশন।
সুনীল স্যার কোন জাতের বাসনা নিয়ে এসেছিলেন জানি না। বলেছিলেন, সরস্বতীর সঙ্গে শেষ পর্যন্ত যৌনতা চলে না। আমি অনেকবার স্যারের হাত ধরতে চেয়েছিলাম, উনি সচেতনভাবে গুটিয়ে ছিলেন। বাংলাদেশের বিখ্যাতদেরও একই অবস্থা। শামসুর রাহমান স্যার এসে শুধু তাকিয়ে ছিলেন, শরীর নয়, চোখ-মুখের দিকে, আমাকে একদণ্ড নড়তে দিলেন না। এক বসায় লিখেছিলেন দুটি কবিতা। এর একটি খুবই বিখ্যাত, শেষের প্যারাটা শোনো-
একজন রঙিন অতিথি ঘরটিকে দান করে অকৃপণ
সোন্দর্যের আভা, মুগ্ধ চোখে দেখি তাকে। মনে হয়,
একটি কবিতা যেন ওড়াউড়ি করছে এ-ঘরে,
অথচ দিচ্ছে না ধরা আমার একান্ত করতলে, যার ধ্যানে
দীর্ঘকাল মগ্ন ছিল কবিচিত্ত সম্ভবত অবচেতনায়
আধো জাগরণে কিংবা ঘুমের আংশিক এলাকায়।
বলেছিলেন, মূলটা রেখে আরেকটা কাগজে লিখে দাও হে প্রিয়ো, দুজনের হাতের পরশ রইল দুজনের কাছে। কবিতাটি পরে তার ‘ভাঙাচোরা চাঁদ মুখ কালো করে ধুকছে’ কাব্যগ্রন্থে দেখেছি। অনেক বড় লেখক, সিনেমা মেকার, কবির স্পর্শে ধন্য হয়েছি, জীবনে বিজ্ঞানের মানুষ প্রথম কাছে পেলাম, কিছু তো বলবে।
চলবে…
খলিশাপুরের কুকুরগুলো এবং রকিবের থিসিস-১০॥ মুস্তফা মনওয়ার সুজন