চিন্তাসূত্র: এবারের বইমেলায় আপনার কী কী বই আসছে? প্রকাশক কে? প্রচ্ছদ কে করেছেন? প্রকাশিত বই সম্পর্কে কিছু বলুন।
শেখর দেব: এবারের গ্রন্থ মেলায় অনুবাদ বই ‘ব্ল্যাকবার্ড’ প্রকাশিত হয়েছে। প্রকাশ করেছে চন্দ্রবিন্দু। প্রচ্ছদ করেছেন আল নোমান। বইটিতে বিশ্বের চার প্রান্তের চারজন গুরুত্বপূর্ণ লেখকের গল্প দিয়ে সাজানো। তাঁরা হলেন লিও তলস্তয়, নগুগি ওয়া থিয়েঙ্গো, লিডিয়া ডেবিস ও আলেক্স লা গুমা।
চিন্তাসূত্র: সারাবছর লেখক-প্রকাশক বই প্রকাশ না করে এই একুশে বইমেলা এলেই বই প্রকাশের প্রতিযোগিতায় নামেন। মেলাকেন্দ্রিক বই প্রকাশকে আপনি কিভাবে দেখেন?
শেখর দেব: মেলাকেন্দ্রিক বইয়ের বাজার তৈরি হয়। পুঁজি ব্যবস্থার লক্ষ্যই বাজার ধরা। প্রকাশকের এই বাজারে লেখকের তেমন কিছু করার থাকে না। তাছাড়া বাংলাদেশের পাঠক এখনো ওভাবে দাঁড়ায়নি। আমরা যখন দীর্ঘ ট্রেন ভ্রমণে যাই, কয়জন বই পড়ে? ঘরের কথা তো আমরা জানি না। এক সময় হয়তো সারাবছর বই প্রকাশিত হবে, এখনো হয় না তা নয়, পরিমাণে অল্প। তবে ভাষার মাসে মেলা কেন্দ্রিক যে উদ্দীপনা তৈরি হয় লেখক-পাঠক-প্রকাশকের মধ্যে, সেটা অবশ্যই পজেটিভ।
চিন্তাসূত্র: একুশে বইমেলা বাংলাদেশের সাহিত্যে কী ধরনের প্রভাব ফেলছে?
শেখর দেব: বাংলাদেশের সাহিত্যে একুশে বই মেলার গুরুত্ব অনস্বীকার্য। এতে প্রতি বছর নতুন লেখক যুক্ত হচ্ছে যেমন পাঠকও বাড়ছে। নতুন লেখকরাই তো দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্যকে ধারাবাহিকতা দিয়ে সামনে এগিয়ে নিবে সাহিত্যকে।
চিন্তাসূত্র: একুশে বইমেলা প্রকাশনা শিল্পে তরুণদের উৎসাহিত করার ব্যাপারে কী ধরনের ভূমিকা রাখছে বলে আপনি মনে করেন?
শেখর দেব: তরুণদের বই প্রকাশ করতে গিয়ে নানা বাধা সম্মুখীন হতে হয় এটা সত্য। এই বাস্তবতা থেকে নতুন কোন লেখক হয়তো প্রকাশক হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে। তাছাড়া মেলা কেন্দ্রিক যেহেতু বইয়ের বাজার তৈরি হয় সেহেতু তরুণরাও প্রকাশনা শিল্পে উৎসাহিত হচ্ছে।
চিন্তাসূত্র: প্রকাশনা উপকরণের সহজলভ্যতার কারণে যে কেউ ইচ্ছা করলেই বই প্রকাশ করতে পারেন। এতে বছর বছর বাড়ছে বইয়ের সংখ্যা। বইয়ের সংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে মান বৃদ্ধি ঘটছে না বলে অনেকেরই অভিযোগ; বিষয়টিকে আপনি কিভাবে দেখেন। বই প্রকাশের ক্ষেত্রে কোনো নির্দিষ্ট নীতিমালা প্রয়োজন আছে কি?
শেখর দেব: নীতিমালা অবশ্যই নীতির মধ্যে রাখে, সে বই প্রকাশ হোক আর অন্যকিছু৷ এটা জরুরি। বেশি বই প্রকাশিত হওয়া অবশ্যই পজেটিভ। মানের প্রশ্নে কতটুকু উত্তীর্ণ সেটা পরের বিষয়, প্রকৃত পাঠক যা ইচ্ছা তাই পড়ে না। বই যেহেতু প্রোডাক্ট, অন্যান্য প্রোডাক্টের মতোই বই মানহীন হলে পাঠক তা অবশ্যই বর্জন করবে। তাই নবীন লেখককে সে গুণগত মান মাথায় রেখেই লিখতে আসা উচিত। ধন্যবাদ চিন্তাসূত্র এবং পাঠকদের।