লাশ
কুশলে সহজেই জেনে নিলে নাম—সৈয়দ রুম্মান।
তারপরও রাস্তায়, মাঠে, বাজারে, মসজিদে ও ইশকুলে বহুবার নিজেকে করেছি বর্ণনা।
তবু কেউ কেউ তার কিছুই দেখো না।
ইদানিং টিভির স্ক্রলে, পত্রিকার ইলাস্ট্রেটেড হরফেও পড়ে নাও
আমার নামের হুলুস্থুল, কীর্তি ও পিরিতি।
আর বৈঠকে ও মজলিশে আমাকে করে নাও
পরবর্তী ট্যাগের শিকার;
লাইকের বাটনে সিক্ত সৈয়দ রুম্মানের শার্টের প্রতিটা বোতাম।
অথচ হঠাৎ আজ রাতে মরে গেলে
আমিও বাবার ঠোঁটে হয়ে যাই লাশ!
মাটির প্রেমিক
থেকে থেকে পড়ে নেওয়া যায় কবিতা;
ভালোও বেসে ফেলা যায় কিছুটা বিলম্বে।
আর আমাকে পড়তে গেলেই
পৃথিবীটা তোমার কাছে বাজারের ফর্দে হয়ে ওঠে কিম্ভুতকিমাকার!
আমি তাই তোমার নই—থকথকে মাটির প্রেমিক।
পিতা
বিলেতি দহনে মন কেন এত পোড়ে!
সেই অপলক, উৎসুক চোখে অগণিত জিজ্ঞাসা—
তবু আজও তাঁর প্রেমের দৈর্ঘে ব্যর্থ দাবার ঘোড়া!
না-ফেরার থেকে সনাতন সুরে আসে—
আমার জানের লিমন ও রুম্মান!
শৈশব থেকে কৈশোর বেয়ে যৌবনে জোড়া ক্রাচ,
তোমার হাতের স্পর্শে পথের টান,
আমাকে দেখিয়ে তুমিও ছুঁয়েছো স্বপ্নের লাল ঘুড়ি—
যতবার হয়েছি বাকাট্টা প্রায়, তর্জনী এসে দেখিয়েছে বাতিঘর।
যে তোমার সাথে স্থূল ব্যবধানে অঙ্কিত হতো ছবি—
সেইসবই আজ আমার গেরস্থালি।
ঠোঁটে চেপে রাখা সিগারেটে দম ছেড়ে
লুকাতে তোমার বেদনার বালিয়াড়ি;
স্মিত হেসে তুমি ডেকে উঠতে—
আমার জানের লিমন ও রুম্মান!
নির্মোহ দিনে কতো এঁকে গেছ ঢেউ,
যুঝার জিয়নে বুনন হয়েছে ময়ূরসিংহাসন।
লাল-সবুজের বৃত্তে বেঁধেছো আমার মায়ের মুখ…
পূর্ণিমা ভরে শাসন করেছো জলোচ্ছ্বাসের ক্রোধ।
না-পাওয়ার মাঝে হৃদে ধনবান পিতা।
বৈষয়িকতা মেঘ-জঞ্জাল ফেলে
তোমার চাওয়া ধমনী শিরায় ওঙ্কার তোলে আজও—
আমার জানের লিমন ও রুম্মান!