নৈবেদ্য
রাত্রির নিস্তব্ধতা যেন কিছু বলছে
যেন তার কতো কিছু বলার আছে
যেন নীরবতাই তার প্রকট প্রকাশ
শুনে নিতে হয় ব্যগ্র বাতাসের কাছে,
কুয়াশার কাছে আর গোপন কক্ষের
যে প্রহরী, যাকে ঈশ্বর বলে ডাকলে
সাড়া মেলে, তার কাছে;
বিজনে সমস্ত নৈবেদ্য তার কাছেই
জমা হয়; কে, সে?
সে জানেন ঈশ্বর–আর জানে একটি
হলুদ পাখি; একদিন চিরমুক্তির পথে
উড়ে যেতে-যেতে বলে যাবে নিখিলে…
বর্ষাকাল
কখনো সন্ধ্যা নামার আগে
একটুকরো মেঘ উড়ে এসেছিল অরণ্যে
দুটো নালার সেতু পারি দিতে-দিতে
উড়ন্ত ঘুড়ির লেজে চোখ রেখে
উদ্ভ্রান্ত মেঘকে বলেছিলাম–
বর্ষাকালে একবার এসো…
দু’বার সূর্য অস্ত যেতে না যেতেই
মেঘটুকরো একটা দেয়া হয়ে গেলো
এরপর, ফালি হওয়া বুকের পাঁজরে ঢুকে
বারমাসই গুড়ুম-গুড়ুম ডাকে
নাথ
শোনো, ইদানীং হচ্ছে কী
পড়তে বসলে, খোলা বইয়ের অক্ষরগুলো
চোখ দিয়ে ঢুকে
মাথার প্রাচীর ভেদ করে বেড়িয়ে এসে
মাথার ওপর ওড়াউড়ি করে
বহুক্ষণ যাবত উড়ন্ত অক্ষর গুলোকে
বোধে আনতে ব্যর্থ হয়ে
দু’কানে গুঁজে দেই ইয়ারফোন, নিমগ্ন
সপাটে অন্তরাত্মা খুলে দিয়ে
তোমার পদধ্বনির অপেক্ষা করি, হে নাথ!
শঙ্খ-বীণ
একদিন, বহুদিন পরে
পৃথিবীর নির্জনতম কোনো দুপুরে
অশ্বত্থের ডালে ডালে
বেজে ওঠে যদি কাকের ডাক
জেনো, হারিয়েছে শঙ্খ-বীণ
বালিকার খোলা চুল ফণা তোলে না আর
গোধূলির সূর্য
‘পৃথিবী গোল’– এই সুত্রে, যদি
বহুকাল পরে দেখা হয়েই যায়
কপালে পড়া বলিরেখার ভাঁজে
ফিরিয়ে দিও–
তোমার বুকপকেটে জমা রাখা
আমার এক-গোধূলির রাঙা সূর্য