জন্মঘ্রাণ
একটি দারুণ সন্ধ্যা সুরভিত হয়ে উঠেছিল রূপশ্রী আলোয়
কবিতারা এসেছিল নেমে বুকে নিয়ে ধুলোমাটি প্রেমে;
সুখবতী ঘ্রাণে শব্দ বর্ণ কী অদ্ভুত সুন্দরে মুগ্ধতা নিয়েছে
যৌবনা শহরে, কবিতা যে মৌতাত তৃষ্ণায় গহিন পরান।
বিস্ময়ে যে দেখি ভালোবাসা নক্ষত্রের চেয়ে কতো বেশি
দ্যুতিময়, ঢেউআঁকা নদীতিকা রমণীর পুষ্পিত হাসিতে
মায়াবী নগর জাগে উৎসবে, নগরের সব কবির কবিতা আজ
শুধুই তোমার; সন্ধ্যা বাতাসে ভেসে আসে নদীর মরমী গান।
দূর আকাশ আঁচল পেতে এসেছিল নেমে ভালোবেসে
তোমাকে তৃষ্ণার্ত বুকে নেবে বলে; যেন মাতৃছায়া
রেখে গেলো শুভক্ষণে আশীর্বাদ। গোলাপ অর্কিড রজনীগন্ধা
লাবণ্য ও ঘ্রাণ দিয়েছে তোমার করে, সুন্দরে তোমার।
একটি দারুণ সন্ধ্যা অসম্ভব অভিজাত হয়ে উঠেছিল
ভালোবেসে পুষ্পকন্যা; ছবিরা এই তো প্রথম এ নগরে
কথা বলেছিল চৌচির চাহনী; এই ছবিতিকা মহুয়া মুগ্ধতা
কবিতার অধিক কবিতা টাঙ্গাইলের জিনিয়া বখশের জন্মঘ্রাণ।
দেউলে টানানো
কখনো কখনো কিভাবে যে বেশি পেয়ে যাই
বেশি পেয়ে গেলে কবিতার কাছে
ধ্যানী সন্ন্যাস হয়ে উঠি;
সমুদ্রের অতলে নিজেকে ভাবি
এত বেশি লাবণ্য এতো বেশি স্বর্গ কেন পেয়ে যাই!
কখনো কখনো রঙধনু পুরো আলোর আকাশ
কখনো কখনো কুঠিবাড়ির সুঘ্রাণ চামেলি মালতি
কখনো কখনো সবুজ দীঘল অবারিত দিগন্ত
কবিতার মতো পায়ে চলা স্বরবৃত্ত রমণীর প্রেম
কী আশ্চর্যভাবে পবিত্র প্রার্থনার মতো পেয়ে যাই।
কখনো কখনো মনে হয় নিসঙ্গ দোয়েল
অসীম শূন্যতা ডানায় মাড়িয়ে
অলিখিত নান্দনিক অধিকারের দলিল
দেউলে টানানো ঈশ্বরের ছবি তোমার মুখচ্ছবি।
কখনো কখনো মনে হয় প্রেম ও ধর্ম
মনের আরতি অধরা চিরকালের চৌচির আকুতি
বুকের গহিনে ভোরের রোদের ভিজে চুল
সুখভরা মুখ সবুজ জমিন
আমি পেয়ে যাই দূরের শহরে দেবতীবসতি।
আমার দেউলে টানানো ঈশ্বর তোমার মুখচ্ছবি;
এর থেকে বেশি সত্য আর কিছুতেই নেই।
প্রার্থনার মতো তুমি থাকো পবিত্র তৃষ্ণায়;
কখনো কখনো কিভাবে যে এত বেশি পেয়ে যাই!
সবাই কি পায়!
বহু নদী পেরিয়ে; সমুদ্র গভীর হয়ে
অধরা তোমাকে পেতে হয় শুধুই মনদেউলের প্রার্থনায়।
পতঙ্গবহ্নি
হেলেনের রূপে পুড়ে গেছে সেই কবে রূপজ নগরী ট্রয়
জয়নাবের রূপাগ্নিতে খুন আর রক্তে উন্মত্ত এজিদ;
রূপের চিতায় পোড়ে সাধক সন্ন্যাসী সম্রাট রাষ্ট্রের অধিকর্তা
আবার সন্ন্যাসী হয়ে যায় গোবিন্দলালের মতো জমিদার
মধু-বিষে মৃত্যু বেছে নেয় দুপুর রোদের মতো স্পর্ধিত সুরেশ।
দোদি তুমিও তো মরলে অপ্রতিরোধ্য প্রেমের সড়কে
বিল ক্লিন্টন কতো রাত নিদ্রাহীন; নিজ ঘরে পরবাসী;
মনিকা লিউনিস্কি যেনো তার শরীর জড়ানো বিষধর
সর্পিনী; তবুও এ খেলা কী যে ভয়ঙ্কর সুন্দর
. অগ্নিলাভার মতো নিষ্ঠুর দহন।
কতো সব ক্ষমতাধর আকাশমানুষ লুটোপুটি খায়
আফ্রোদিতি ভেবে বিষভর্তি যমুনা শরীরে
রামধনু ঠোঁটের অদ্ভুত রহস্য হাসিতে পৃথিবীর মতো
ঘুরে ঘুরে মরে পতঙ্গ যৌবন;
অনর্থক অমরত্ব লাভে কবিতার শব্দে অজস্র বিনিদ্র রাত্রি
রাতজাগা কবি পান করে দামি মদের মতো ক্লিওপেট্টা কিংবা
. ঐশ্বরিয়া সুন্দরিকা রিহানা শরীর।
রাত ভেঙে ভেঙে আরো অন্ধকার রাত হয়ে যায়
নগরীর আলো নিভে নিভে অসভ্য নগরী হয়ে যায়
জীবনের নৌকাঘাট ভেঙে ভেঙে ঘাটহীন হয়ে যায়
হুরপরী নটিনী কিন্তু তখনো ঠিকই দুর্লভ আলোর নগরী।