জীবনানন্দীয় যাত্রা
আমাদের আনন্দ দিনে বৃষ্টির বেয়াড়াপনা
খানিকটা ব্যাঘাত ঘটালেও
অন্দরে উৎফুল্ল ফুল ঠিকই ফুটেছে
ফুলের সুবাসে পাড়ায় বৃষ্টি উৎসব হচ্ছে
ভেবে নিয়ে আমরা আগত কালের
প্রস্তুতি পর্বে দরজায় খিল দেই
রাত্রের বিশ্রাম শেষে সদ্য ধোয়া ভোর
পিঠে আলতো প্রলেপ ছোঁয়ালে
আমরা নির্ভার হই, জানি পাড়ি দিতে
হবে খানাখন্দ, সংগীতের লহরী
আওড়ানো শুধু নয় কাকের বাজখাঁই
আওয়াজও জীবনেরই অংশ
এই ভাবনা আমাদের মজবুত করে
যাত্রা শুরু হল জীবনানন্দের
তাঁর দিকনির্দেশনায় পৌঁছুব নিশ্চয়…
দাগায়িত জীবন
আমাদের সাদামনে যে দিন রঙিন দাগ লেগেছিল
সে দিন আমরা কি যে উৎফুল্ল হয়েছিলাম…
মনে হচ্ছিল এমন রঙিন জীবনই আমাদের নিয়তি
কেটে যাচ্ছিল দিন, ঝর্ণার কলকল ধ্বনি
ধ্বনিত হচ্ছিল বুকে, আমরা ছুটে যাচ্ছিলাম…
কোথায়? তা এখন আর মনে পড়ে না…
একদিন অঝোর প্লাবন এসে মুছে দিয়েছে রেখা
দাগায়িত আমরা কোথায় ভেসে গেছি, জানি না
এখন কাঁটাই দাগহীন একপেশে জীবন, বাজারের
রঙের ফেরিওয়ালা আর আমাদের ডাকে না…
সমুদ্রের জন্য এলিজি
সময়ের সাথে লুণ্ঠিত হচ্ছে সমুদ্র
তীরে পৌঁছানোর দায় নেই ঢেউগুলোর
আমাদের স্মৃতিকালে ছিল নোনাজল
রক্তের পিরিতি ছিল শামুকের খোলসের সঙ্গে
বালিয়াড়ি, হাঁস খেলা, সি-গালের পালক
তাড়িয়ে নেয় কিন্তু আর তাড়িত হয় না মন
সমুদ্রের জলরাশি থেকে উঠে আসা
শীতল বাতাস আর কি পুলক জাগায়?
না, শীতল বাতাসে মনে কাঁপুনি ধরে
অসহ্য লাগে সি-গালের ওড়া-উড়ি
ঢেউয়ের সাথে অহরহ লুকোচুরি খেলা আমরা
ঢেউয়ে আর ভাসি না, ঢেউ এখন আছড়ে দেয়
স্মৃতিকাল থেকে অনেক দূরে গেছে সমুদ্র
যা আছে তা শুধুই গর্জন, অক্ষম ক্রোধের…