সুর
এপারে একটি ফিঙে
ওপারেতে বুলবুলি,
নির্জনে খুঁজে নেয়
নিজেদের সুরগুলি।
সুরে সুর মিশে যায়
মনেরই আকাশ,
পদ্মা কী, গঙ্গা কী
একই তো বাতাস।
সুবাতাস লয় হয়
মনেরই নদী,
তুমি আমি এক সুর
গান হই যদি!
কাঁটাতার ভুল এক
বাঁধা কি সে যায়?
কোন বাধা বাধা নয়,
আছে তো উপায়।
বাধা আর কিছু নয়,
মনেরই আগল।
বাঁধ দিয়ে বাঁধবে কি?
চোখেরই তো জল।
শাপলা আর পদ্ম
দুটি তো আপন,
লালন আর রবিতে
মনেরই যাপন।
এই সুর মনে নিয়ে
বাঁধব যে গান,
সুরে সুরে মিলে হবে
মিলনেরই গান।
মিলনের গান বুকে
পেরোব যে দেশ,
গাছে আর ছায়াতে
সেই তো স্বদেশ।
ফিঙে আর বুলবুলি
মিলবে যেথায়,
মিলনের গান বুকে
মাঝি ডিঙা বায়।
মেঘমল্লার
এইখানে এসো।
বাগান পেরিয়ে, দরোজা পেরিয়ে এসো।
আকাশ ভাঙবে তুমুল
কলকল্লোলে এসো।
আকাশ গাইবে আজ,
মনে যদি পড়ে, তবে এসো।
আকাশছেঁচা জলে
মেঘমল্লারে এসো।
কলকল্লোলে, ফেনহিল্লোলে
উথলে উঠুক স্মৃতি
বুকের গভীরে তুমি
এ কোন রম্যগীতি?
বৃষ্টি নেমেছে এখানে
অথৈ বৃষ্টি একাকার
মন আজ বলে ওঠে,
এ কোন বৃষ্টি? কবেকার?
ছবি ভেসে আসে মনে
ছবি ভেসে আসে কত
বকুলের মালিকায়
জমে ওঠা ক্ষত যত।
অনেক যুগের আষাঢ়
উজাড় নেমে আসে,
হাসনুহেনার গন্ধ যেন
বুকের মধ্যে ভাসে।
সে কোন কৈশোরে
কাগজের নৌকোয়
মন ভেসেছিল জলে
হাসিকান্নার মুক্তোয়।
আকাশছেঁচা জলে
মেঘ হয়ে নেমে এসো
মল্লিকা, জুঁই, বকুলে
কদম্বরেণু হয়ে এসো।
সেই সুবাসখানি
বুকের মাঝেই থাকবে
হারাক যতেক চিঠি
বকুলের মালা থাকবে।
মুচকুন্দেরা ভিজবে
পাতায় পাতায় জল
বৃষ্টিও ঠিক দেখবে
নয়নের ছলোছল।
কবি ভাবছে একা
যত বর্ষা গাইবে
আষাঢ়ের কারুকাজে
মনের কথাই বলবে।
হঠাৎ বিদ্যুতে আর মেঘে
জমে গেল অভিমান।
আষাঢ়ের ধারাপাতে
হোক তার অবসান।