ফেরারি
আপনারা কেউ কবিতাকে দেখেছেন?
নীল শাড়ি, খোলাচুল, লাল টিপ, সমস্ত শরীরে তার কাঠগোলাপের ঘ্রাণ―সাত সাগরের নুন চোখেমুখে মেখে আজ সে ফেরারি।
কেউ কি আবার বেআব্রু করেছে তাকে―খোলা চুলে ছুঁড়ে দিয়ে থুতুর নরক? নীল শাড়ি লাল টিপ দেখে; ঘরোয়া ফুলের গন্ধ শুঁকে কেউ কি টেনেছে খুব কাছে? ওর প্রতীক্ষায় থাকে―নিযুত নক্ষত্র নীল মেঘের মুকুট―অন্ধকার ছায়াপথে কৃষ্ণপক্ষরাতে। যদিও পোশাক বদলায়, শাড়ির বদলে পরে পাঞ্জাবি কামিজ,কখনো কামিজ খুলে টিশার্ট বা জিন্স; আলবত সে তো দয়িতা―জীবনজমিনজল;
আমার আমাদের সংসারে দুই ছেলেমেয়ে―আনন্দ ও আলো; আনন্দ সর্বদা ডান পাশে থাকে আলো বাম পাশে। আমি ওর আপাদমস্তক চিনি―ত্বকের তারকা কফিকালো তিল পাকা পুতিজাম―কোথায় কখন জেগে ওঠে ওরা সবটুকু জানি; শত সঙ্গমের ভ্রূণ জরায়ু জঠরে রেখে আজ সে ফেরারি।
রূপান্তর
চিতল মাছের মতো টুকরো কাঠের ফালি―তোমার আনন্দ বেদনার সহচর।
চন্দন কাঁকুইখানি সযতনে রাখো পশমি ব্যাগের জেবে; ঝকঝকে চকচকে চুলকে নাচায় রোজ চোখের পলকে; রেশমি কেশের নিচে কাছিমের পিঠে খেলে জোছনাদুপুর―জান বেকরার; সায়াহ্নের শাদা বক চন্দনের খুশবুতে নদী ভুলে যায়!
স্বপ্নের ভেতরে ডুবে সোনার কাঁকুই―গান হয়ে ফোটে, পাখি হয়ে ওড়ে সহসা ছিঁড়বে ওই ব্যাগের বোতাম; উড়ালবেলার রোদে চুল ছেড়ে মগজে পৌঁছুবে―বরষার বাতায়নে জেগে ভাঁজে ভাঁজে দুনিয়া রাঙাবে।
কলবের চোখগুলো মায়াপারে হাঁটে
কয়েকটি চোখ বেশ গোলগাল পাকা পানিফল―আমার ভেতরে বাঁচে; অস্তিত্ত্বে আলোকদানা―মৌনব্রতে মোহন জানালা―প্রত্যহ তোমাকে খোঁজে, তোমার নীরবতায় এক লহমায় ডাকে ধ্রুব শোক সভা। তোমাকে দেখেনি ওরা―হয়তো কখনো দেখবে না আর, কলজের চোখগুলো তবুও তোমাকে তুলে রাখে মমতায় ঢাকা সোনালি তোরঙ্গে―দরদে লুকিয়ে রাখে নীল আলোয়ানে―গভীর আঁধারে।
দ্রুতগতির ড্রোনের মতো কফিরং চোখ―আকাশঅলিন্দ ছেড়ে ভোর রাতে সুবে সাদিকের আগেভাগে―ঠিক ঠিক নন্দনকানন যায়।
কলবের চোখগুলো গোপনক্যামেরা―ক্ষিপ্র দূরগামী; জেগেজেগে অন্ধ নিমগ্নতায়―মাছরাঙার মতন একা একা ভাবে―বারতা পাঠায় ইথারের ডোরে; শূন্যতার সুর তোলে লোহু লালিমায়, মস্তিষ্কের ক্যানভাসে।
কাজল পিঙ্গল পাকা জামচোখ―জমাট শোণিতদলা―হৃদপিণ্ডে বাজে; জলের ওপর নাচে; আঁধারের আচকান খুলে মায়াপারে হাঁটে; পৃথিবী মঙ্গলে নয় তোমাতে আস্তানা যাচে―অমরতা মাগে।