প্রেম ও মৃত্যু
মৃত্যুর মাথায় হাত চেপে বসে আছি,
হৃদয় রেখেছি খুলে প্রেম অন্বেষণে
ভয়ে ছিলো এক অবিনাশী পালাগান
মুখর নদীর জলে অনাদায়ী তবু
কিছু ঋণ রয়ে গেছে গোপন সিন্দুকে
ভালোবাসা শব্দ শুনে দাঁড়ায় পথিক,
মৃত্যুরাও পাশ ফিরে শুয়ে পড়ে পাশে…
একটুখানি গন্ধ
একটু খানি গন্ধ দাও না,
স্মৃতি বাজি রাখি
জীবন পোড়া গন্ধ পেলে জীবনে ফের
একলা জেগে উঠি।
রাতগুলো হায় থোকা থোকা আধাঁর-ছোঁয়া
কালো গোলাপ ফুল
মরণ-ছোঁয়া পাপড়ি গুলো তাৎক্ষণিকে
ঝরছে যে ব্যাকুল
স্বপ্ন আমার ধীবর জালে আটকে আছে
আগামীর এক হাটে
সাত সমুদ্দুর পাড়ি দিয়ে যাবো আমি
ব্রহ্মপুত্রের কূলহারা সে ঘাটে,
মাল্লাবিহীন নৌকা আমার চলবে বাতাস কেটে
অন্ধজনে ফিরে যেমন বাটে,
নীলের পরে নির্ভরতা আকাশ যেমন জানে
শ্রাবণ এলে কেউ বুঝি তা মানে
হারানো সে হাসির ঝরণা হেসে উঠুক মনে
হঠাৎ আসা নতুন জলের বানে…
মানুষ থাকি না
একজন মানুষকে ছেড়ে
আমি ছায়া হয়ে যাই
মানুষ থাকি না…
ছায়ার পালকে ভেসে যাই ছায়ালোকে
মাছরাঙা জল হয়ে যাই
শিকারি পাখির
পায়ের তলায়,
মানুষ থাকি না…
গাছের বাকলে অনাদৃত লতা-পাতা,
প্রকৃতির গোপন ইশারা হয়ে যাই
অবিচ্ছেদ্য-টানা,
মানুষ থাকি না…
না প্রেম না দুঃখ-কষ্ট—
সবই হারিয়ে যায়—বৈচিবনে ফের,
যেটুকু অনামা আমি
গলে গলে পলিকাদা,
নয়তো চৈত্রের শক্ত ঢেলা,
মানুষ থাকি না…
মধ্যাহ্নের সূর্যতাপে
ভেরেণ্ডা বিচির মতো ফুটে যাই
দহনের রক্তচাপে,
মানুষ থাকি না…
মাটিতে পা রেখে মনে হয়
এ মাটি আমার নয়,
নিজেরই চোখ-মুখ অবিশ্বাস্য রকম
অপরের হয়ে গেছে
হাঁটা-চলাসহ, কায়ার স্বভাব,
মানুষ থাকি না…
মানুষ থাকি না…
একি তবে পুনর্জন্ম? অন্য এক বৃক্ষের জীবন?
দোয়েল, ফড়িং কিংবা বানপ্রস্থ শেষে
অধম আশ্রম…?
একজন মানুষকে ছেড়ে
আমি ছায়া হয়ে যাই
মানুষ থাকি না…॥