আমিই তোমার গ্রন্থ
আমিই তোমার গ্রন্থ। পাঠ করো নিবিড় মগ্নতায়। প্রথম পাতা খুলতেই যদি প্রজাপতি উড়ে যায়—তাকে ধরো। বর্ণিল রঙে স্নান করে কেটে ফেলো নখের জ্যামিতি। নগ্ন হতে হতে ভাষার অধীনে যাও—কচুপাতায় লিখতে শেখো পিদিম পিরিতি। পৃথিবীর আয়ুরেখা ধরে যে নদী শিখিয়েছে সাঁতার কাহিনি—তার কাছে বসো। উবু হও। দৈত্যের ডানা কেটে চাঁদটাকে চুমু দিয়ে আসো।
আমিই তোমার গ্রন্থ—পাঠ করো আর নানা ব্যঞ্জনে বাজাও…
গোল গোল গর্ত
কিরিকিটি কিরিকিটি
কিতকিত কুতকুত
টেনিস বলের ধরিয়াছ খুঁত…
পথগুলো সব পাগল হয়ে যায়। পাগলগুলো গোডাউনের পথ। উন্মাদ ঝিঁঝি শুনিয়েছে বেড়ালের সুর। বিলাই বিলাই, কাকে বিলাও বিলাতি দুধ? চিনিয়াপুকুরে জলের বদলে গজিয়েছে চুল। চুল দিয়ে চাল ভাজো, ঝাল দিয়ে নুন। নিরানব্বই বসন্তের শিমুল—ফুটিয়েছে থোকা থোকা ফুল। ফুলগুলো দুধে ঢালো। দুধফুলে নড়ে ওঠে পাগলের নাও। খোলসে খোকসা কেন? জোরে ঝাঁকাও ডুমুরের গাছ। ফকনার ফাঁক করে দেখে নিচ্ছে রূপচাঁদা মাছ।
হুক্কা হুঁয়া হুক্কা হুঁয়া
কিয়া হুয়া? কিয়া হুয়া?
ইঁদুরে মারিয়াছে গুয়া…
মানসে গোল গোল গর্ত, এক হাজার বিশটা শর্ত। শাসন-ত্রাসনে জেরবার বিনয়ের দরবার। সৈয়দের বারান্দায় কে খায় তিসিমাখা ভুট্টার ঝোল? নদী সব ছেড়ে যায় ঘাট। মজনু লুটে নিচ্ছে হৃদিমাঠ। মাঠ মাঠ মজনু। মাঠ মাঠ ইরম। কী গরম! কী গরম! ঘটিতে চানাচুরের বদলে পুড়ে যাচ্ছে ঘি। ফরাশে ফুঁ দিলে নিচে জ্বলে আগুন, খেজুরগাছে রান্না হয় ভেন্নার ভাত। বলো দেখি, ফুকো কেন বাতি নিভিয়ে বাথরুমে যায়?
পাগল-লোক
পাগল এসে লোকটিকে বলল: ‘কাকা এই কাটা হাত লইয়া আমি কী করিব! আপনি লন। মুরগার বদলে আজ হাত লইয়া যান। ভালো মাল ও মসলা দিয়া রান্না কইরা খান।’ একথা শুনে লোকটির চোখ মাথায় উঠল। পা দুটো উঠে এলো চোখের ডেরায়। পাগলটা জিজ্ঞেস করল : ‘আপনের সাইকেল কই? টায়ার কি লিক হইয়া গেছে? কাকলি বাড়িত আছে, আজ তারে কলা দেন নাই?’ লোকটি এবার ফ্রিজ হয়ে গেল। যেন বাষ্পহীন নিথর দেহ। ‘ধুর মিয়া আমি যাইগা’ বলে পাগলটা মিশে গেল মানুষের ভিড়ে।
শুধু কাটা হাত ঝুলে রইল রিকশার হাতলে।