ক্রিসমাসের চিঠি
ঝিমিয়ে পড়েছে পাইনগাছের পাতা,
জলপাই বন,
ডিসেম্বরের তুষার ইউরোপ জুড়ে হয়ে উঠেছে
. সাদা পৃষ্ঠা—
আমি একটা চিঠি লিখছি
বরফের উপর খোঁদাই করা চিঠি
যদিও আমার হাত জমে যাচ্ছে
তুমি হয়তো বেথলেহেমের পথে
হাঁটছো…হাঁটছো…বহু যুগ আগে
জানি না বরফে লেখা চিঠি
তোমার নুড়ি পাথরের দেশে পৌঁছবে কি না!
সুখপাখি
হিমালয় পেরিয়ে আরো পূর্বে আমাদের গ্রাম
ঝাউ আর দেবদারু বনে ঘুরে বেড়াই
বরফ ছুঁয়ে কুয়াশা ছুটে আসে গ্রামে
আমরা তাতে সৌভাগ্যের ছায়া খুঁজে ফিরি
শীত এলেই উত্তরে তাকিয়ে দেখি
আকাশে ঝুলে আছে মেঘে ঘেরা কাঞ্চনজঙ্ঘা
এবার ডিসেম্বরে
. কুয়াশায় জেগে ওঠা আলোর মালায়
ঝাউ আর দেবদারু বন সাজিয়ে নেব
বড় দিনের আগে যদি কোনো সুখের পাখি
উড়ে আসে আমাদের গ্রামে
ঝাউ আর দেবদারু বন সাজিয়ে দেব
যিশু
লোকটার ধূলো-মাখা পায়ের চিহ্ন দেখে
এখানে এসেছি; এই মরুতপ্ত পাথরের দেশে
ঝকমকে সাদা আলখাল্লায় তার
স্বর্গের উদ্যান লুকিয়ে আছে
সেখানে অজস্র ফুল!
লোকটার স্বপ্নের পেছনে ছুটতে ছুটতে
মেরু ও মরুর
বরফ ও বালি
এক হয়ে গেছে আমাদের হৃদয়ের সমুদ্রে!
পঁচিশ ডিসেম্বর
আমি ও মেষপালক মানবজন্মে দুই ভাই
আমি আর সে জন্মেছিলাম ডিসেম্বরে
সে আগে; আমি পরে
কাঠশিল্পের ক্ষয়ক্ষতি রক্ষা করতে করতে
সে আমার বহু আগে ক্রুশের যিশু হয়ে গেছেন!
আমি তার বহু পরে ভাই হারানোর বেদনায়
ডুকরে ডুকরে কেঁদে উঠি পবিত্র গ্রন্থগুলো পাঠে
ভাবছি এবার আমাদের উত্তর গোলার্ধে
পঁচিশ ডিসেম্বর এলে উৎসবের আলো জ্বেলে
. ছোট দিনটাকে বড় করে নেবো!
ক্লান্ত যিশু
ভাইরাস জ্বরে গলে যাচ্ছে ডিসেম্বরের বরফ
সান্টাক্লজের মোজায় শুধু প্যারাসিটামল
ঝিমিয়ে পড়ছে ক্রিসমাস ট্রি
মানুষগুলো শীতের চেয়ে জ্বরে কাতর
বাইরে শীত, ঘরের উষ্ণতা ক্রমশ বেড়ে যাচ্ছে
দেয়ালের কোণে মাকড়াও জালের ট্যন্ট তুলে
প্যরাসিটামলের খোঁজে ছুটছে প্যারেড গ্রাউন্ডে
মুখোসে ঢাকা মানুষগুলো যেন ক্লান্ত যিশু!