কবিতা যজম ভাইবোনের কোলাহল
অমন করে তাকিয়ে কী কীর্তি দেখছ তোমরা—পৃথিবীর প্রোফাইল না কি মানুষের বাগান—খুলির গান! মনিটরে ঝুলে আছে শাড়ির আঁচল—আঁচড়ে শিহরিত হচ্ছে সোফিয়া লরেন। তোমাদের তিন জোড়া চোখ একবিন্দুতে স্থির। কিন্তু কী ভাবছ তোমরা—ভাবছ ভিন্ন-ভিন্ন মনোদৈহিক অনুবাদ! ইংলিশ চ্যানেল পার হলেই বুঝি নমুদ্র উত্তাপ!
বাবার কোল স্বর্গে ড্রাগনফল উৎসব। কী আয়েশে বাম কাতে শুয়ে দেখছো জাতিসংঘের নাচ। তিনটি আঙুল অনায়াসে খেলা করছে মুখের ভিতর—ডেন্টাল ফ্লোস তাকিয়ে আছে-প্লাস্টিক দাঁতের আড়ালে। তোমার জমজ বোনটি ঠোঁট বাঁকা করে অর্ধচাঁদ হাসিতে ভাসিয়ে দিয়েছে সন্তানহীন দম্পতির দীর্ঘস্থায়ী বেদনা।
কবিতা এমন জমজ ভাই-বোনের কোলাহল। টেলিভিশন কী মা—কম্পিউটার কী বাবা—তোমরা কি রকেট-রকেট ধূমকেতু—শিশুরা কি সেটেলাইট-সেটেলাইট মঙ্গলগ্রহী! আমেরিকাকে কখনো নাভি দেখিয়ো না। এখানে কোনো মাইক্রোস্কোপিক মাইনোরিটিও নেই; তবু তোমাদের কস্তুরি থেকে তৈরি করবে সুগন্ধি যোজনগন্ধা। তারপর…তারপর তোমরা হবে খাসকামরায় কবিতার দুর্বোধ্য চিত্রকল্প…
গঞ্জনপুরের সার্কাসমায়া
তুমি হয়তো ভাবছ—ভুলে গেছে মানুষ! সময় আড়াল হলেও চোখ কিন্তু ভুলে না রাত্রির গহন তামাশা। নদী চুপসে গেলেও রেখাগুলো ইতিহাসের পদচ্ছাপ। আমি এখনো তোমার জমিনের আল বরাবর হাঁটছি। আর তুমি এখনো আড়ালে সাজাচ্ছ—আফিম-নেশার তারাবাতি উৎসব।
তোমার কোনো স্বপ্ন নেই। স্বপ্নগুলো বিচূর্ণ আয়নায় ললিতকলা। শাড়ির আঁচলে ঝুলে আছে ধোঁকাবাজি সংসার। তুমি উলঙ্গ হলেই—আয়নায় ভাসে ক্লেদাক্ত প্রতিবিম্ব। বসন্তগুলো গঞ্জনপুরের সার্কাসমায়া। তুমি আয়নামতির জল; তারপর আয়নাটি ভেঙে গেলো!
তোমার রাত্রিগুলো এখনো হাত বাড়িয়ে আছে—অচেনা সুরের দিকে। বাঁশির ছিদ্র দিয়ে ঝুরঝুর ঝরছে—তোমার বিষাক্ত চুম্বন। চোখ বন্ধ হলেই—ভেসে ওঠে গঙ্গামতির চর। রাতের শিহরণগুলো কি এখনো লুকিয়ে আছে বালিশের ছায়ায়!
তুমি যখন ছিলে—তখনো মানুষ সাঁতার কাটতো। তুমি নেই; তবুও ধানের দুধে মৌমাছির গুঞ্জন ওঠে। আয়নায় ফলিত হয় ‘তুমিবিম্ব’; বিজ্ঞানের সূত্রগুলো আরও উজ্জ্বল হয়েছে। তুমিহীন এই চরাচর—আয়নায় আরও আলোকিত প্রেমালয়।
বেদনার আরেক নাম মাহবুব মিত্র
অবান্তর ঢেউ, কোলাহল, হইহল্লা আর শুধু উৎসব আর উল্লাস। এত শব্দ কেন! বিছানায় ফুলের হাসি! বালিশে লালার দাগ! কুকুর-শকুনের ভোজসভা! টেবিলে ছড়িয়ে আছে নোবেল পুরস্কার! শুয়োরের পাল মিছিল ধরেছে; নেতা-নেত্রীরা দাঁত ব্রাশ করছে! আমি চোখ বন্ধ রাখি…
নিজস্ব শার্ট-প্যান্টে বোতাম নেই; ঝুলে আছে গাছের ডালে! শার্ট কোনো শব্দ করছে না, টাই খুব টাইট; চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে প্যান্ট। প্যানেল-প্যানেল গণতন্ত্র! জিকির-জিকির ধর্ষণ! মৌলবি চুপচাপ হয়ে যাচ্ছে~ভগবানের মন্দির! কোনো জবাব নেই; কাঁটাতারে ঝুলে আছে—শেফালি আর সুজিতের ভালোবাসা। কাঁটাতার পেরোতে পারলেই দমদম হাওড়া আর জোনাকির স্টেশন…
একদিন আমি গৃহত্যাগী হবো—এখনো সংসার বুঝি না; অথচ তারা কতো সন্তানের বাবা—যারা এখনো ভোর দেখেনি! আলোর প্রতিবিম্ব থেকে ছুঁড়ে দিচ্ছি—লাটভাইয়ের বিবাহবাসরের ঝুমঝুম গান।
সব আলো নিভে গেলে—আমি জ্বালিয়ে রাখবো—একটা মাটির পিদিম; যেখান থেকে ঝুরঝুর ঝরে পড়বে মানবতার শিখা। তারপর আমি হবো—শান্তির নোবেল কমিটি।
চারদিকে হইহই হট্টগোল—সকল রহস্য ভেদ করে—রচিত হবে চিত্রনাট্য। নায়ক মারা গেলেও—ধারাবাহিক জীবনের পর্ববিন্যাস চলতেই থাকে। ঘরের ভিতরে সাপ-বেজির বসবাস! শিয়াল-সিংহ গজল ধরে উজান-ভাটির! সবকিছু মেনে নিতে পারি না বলেই—আমি হুঙ্কার
তুলি—জলে-স্থলে-অন্তরীক্ষে। তোমরা সবাই বলতে থাকো মায়াঘোড়া—অন্ধকারে মায়াবী আয়নায় মুখ রেখে—বেদনার আরেক নাম মাহবুব মিত্র…
ঐপাড়ে জলসিঁড়ি
রুইমাছের মুখে জ্বলছে মোমবাতি!
মধুবন্তীপুর আর কত দূর;
কই আছে মাছের আড়ত
ভেঙে পড়ছে জলের ছায়া…
নদীর পাড়ে হেঁটে যাচ্ছে নায়িকা
নায়ক তাকিয়ে দেখছে ঐ পাড়ে জলসিঁড়ি
সারি-সারি কাটছে গাছের হাত দেহ
অকস্মাৎ ভেঙে পড়ছে নদীর পাড়
মধু-মধু করে উজাড় হলো বনের পাখি
কাঁকড়াফুলের মালায় গেঁথে রেখেছি প্রিয় মুখ,
রুমালে এঁকে দিয়েছে, ‘ভুলো না আমায়’
তারপর অনন্তকাল ধরে রুইমাছের মুখে জ্বলছে আগুন…
আন্ডারওয়্যার—ঝুলন্ত সাঁকো
আন্ডারওয়্যার—ঝুলন্ত সাঁকো। দিগন্ত: হরেকৃষ্ণ—মুহাম্মদ—যীশু—গৌতম বুদ্ধের খিলখিল হাসি! সাইজ হরেকরকম। হাতে ঘুমিয়ে আছে খেলনাপুতুল। ঝাউগাছ যেন আলনা।
আন্ডারওয়ার্ল্ড—ভ্যাকসিন-ভ্যাক্সিন যুদ্ধ। বিস্তৃত সড়ক-অন্ধ ট্রাফিক। লাল-সবুজ বাতি-জোনাকির মেলা। কোথাও সারি-সারি লাইট—কোথাও বাঁকা-বাঁকা আঁধার।
আন্ডারলাইনে বেদনা। চেয়ে আছে আবছা চোখ। ম্লান মুখে পরিখাপ্রাচীর। পাশে বাগান-বাগানে ভিমরুল। মালিরা উদাসীন—সময়ের ডেরায়।
আন্ডারগ্রাউন্ডে স্রোতের হাসি। গড়গড় নেমে যাচ্ছে জল। ভেঙে যাচ্ছে নদীর পাড়। নরেন্দ্র মোদি আর মমতা ব্যানার্জি হয়ে যাচ্ছে তিস্তা নদীর বাঁধ।
আন্ডারগ্র্যাডে রাজনীতি। সস্তা নেতার মিথ্যা ভাষণ। পরিত্যক্ত প্রস্রাবের ঘ্রাণের মতো সহোদরের চোখ। ওরা কি বুঝতেই চায় না! ওরা কি দেখতেই পায় না! ওরা কি জন্মমূর্খ দাঁতাল শুয়োর! ওরা দেখতে-দেখতে হয়ে যাচ্ছে—গলিত-দলিত বাজার আর এলিফ্যাটিক-এলিফাটিক অ্যাসিডের ঢেউ।
শূন্যতায় মনোরোগ
এত আলো, তবুও অন্ধকার!
মানুষ আর মানুষ; কিন্তু প্রেতাত্মাসম
এত মানুষ কেনো! কী চায় তারা
কী দেখছে আলোর প্রিজমে…
এত এত থোকা-থোকা গন্দম ফল
বাহারি রঙের লেন্স—নন্দন মঞ্চ—ফাঁকা শব্দ
বিভিন্ন ফ্লোরে লাইট-লাইট উৎসব—লিপস্টিক-কান্না
এত-এত এয়ারক্রাফট হাওয়া বিন্দুবিলাসে;
লাইট ক্যামেরা অ্যাকশন—হাওয়া-হাওয়া উন্মাদনা
সারি-সারি রুমে পেন্সিল স্কেচ; শুধু একটি মুখ নেই
আলো জ্বলছে আলো নিভছে—লেন্স হারিয়ে গেছে
লেন্স হারিয়ে গেলে বুঝি চোখ অন্ধ নাকি সবই অন্ধ!
জরায়ুর উনুন কিংবা হেমলকে দর্শনপিতা
তোমার রোজনামচা রোজ পড়ি। ডায়েরি থেকে খসে পড়ে শব্দ। আসি আর যাই। সেই থেকে নোটবুক কাঁদছে। ব্যথাতুর চক্ষুযুগল গলিত পারদঘর ছোঁয়ার নেশায় অবিরত কাঁপছে। আঙিনায় ছড়িয়ে আছে আম্রপালি। চলো নির্জনে, উঠবে ডাক। জলে হয়তো আগুন। শস্যদেবী টসটসে মাকালু। ঝোলা ভরেছে পরিত্যক্ত চুম্বনে। কামে অনন্ত শব্দের সম্ভাবনা। গোধূলিতে কাঁপছে প্রাতরাশের জনপদ।
ব্যক্তিগত স্তরে ভাঙছে অনৈর্ব্যক্তিক কলাবিদ্যা। শব্দগুলো এখনো অসংলগ্ন ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে অবিনশ্বর বিদ্যানিকেতনে। তোমার শব্দগুলো অবিরাম খেলা করছে কানের কোটরে। চিৎকারগুলো ডালপালা গজিয়ে এখন ডালপুরি। মোহন শীৎকারগুলো নদীর ভ্রূণফুল। তোমার বাড়িতে ভাসিয়ে দিয়েছি—বেহুলা-লখিন্দরের অনিশ্চিত ভেলা।
জল ছুঁয়েছে জলের মোকাম। মোহনায়-মোহনায় জলবিন্দুর জলবিম্ব ছায়া। জলমন্দিরে ন্যাংটো ইঁদুরের জলখেলা। তুমি চিৎ হলেই চাঁদের কলঙ্ক মুছে যায়—গুনগুন করে স্লেটে লেখা অক্ষর। বালিতে আঁকা-আঁকা অস্পষ্ট চিত্র ককিয়ে ওঠে—যেন তোমার অমীমাংসিত জাদুকরী প্রেম। সূচিপত্রহীন অপলক দৃষ্টি আর অপুষ্ট চুমুগুলো—হামাগুড়ি দিচ্ছে গন্তব্যহীন সৈকতজুড়ে।
জলের নিথরে জলের কারুকাজ। দেহে-দেহে এখনো জেগে থাকে ইংলিশ গ্রামার। ও আমার চিতাবাঘিনী—তুমি আজ চিতাবাড়ি দুঃখ আর তিতাবাড়ি গুমোটঝড়। বুকে পাথরের টনটন ধ্বনি। ও বালিকা বিজনে শোনো—মড়মড় করে ভেঙে যাওয়া ব্রিজের শঙ্খধ্বনি। হেমলকে ঘুমিয়ে আছে দর্শনপিতা। পলাশ ফোটানো দিনে~জরায়ুর উনুনে পোড়ে—আমার অনাগত শিশুদল। আজো অসংঘবদ্ধ বাতাসে বাজে—পৃথিবীর সবচেয়ে নীল অপরাজিতার নাম—সুপ্তা বিশ্বাস কিংবা নীলিমা বোস।
করাতকলের শব্দে তোমার স্বপ্ন
‘ঠিক ঠিক ঠিক’ বলে আমরা চেঁচিয়ে উঠি কখনো-সখনো। আদৌ কি পেরোতে পেরেছি সেই মাঠ; যার প্রাচীর মেঘের চামড়ায় ঢাকা। ফোটোটক্সিসিটির বাহিরে যেতে পারে না—দৃষ্টির লেন্স, দৃশ্যদৃষ্টি ম্লান-ম্লেচ্ছ হতে-হতে—হয়ে যায় কনডমের ঝিল্লি। তারা কি এখনো তা নিয়ে ভাবছে—কনডম না কি ইমার্জেন্সি এক্সিট পিল!
চিৎকার না-করে ছেড়ে দাও—চাকরি কিংবা দাসবৃত্তি। চাকরি খেয়ে ফেলে—গোপন সত্য ও সুন্দরবনের সুতরাং সুন্দর। কথাগুলো হয়ে যায়—বাকসংযম নিরীহ পায়রা। পায়রাগাছা থেকে পায়রাবন্দর—এখনো উড়ছে রঙিন ঘুড়ির ডোরাকাটা ফড়িং।
বাইকচালকের গেস্ট হয়ে এখন যাচ্ছো কোন অরণ্যে—কোন সমুদ্র পাড়ি দিচ্ছ পালকভাঙা যাযাবর পাখির মতো—প্রিয়তম সন্তান কি খুঁজে পাবে না জননীর কোল? না কি রূপকথার ঘোড়া সাঁড়াশি সাঁতার কেটে-কেটে ডুবে যাবে গুহার আঁধারে!
কত গোপন কথা এখনো বাকি রহিয়াছে…আবার যখন সময় হবে খুলে দেবো নিষিদ্ধ শিলাবাগান। কবিতার নতুন মজমায় বলে দেবো অসূর্যস্পর্শা মেঘের গল্প। এমন ভাবতে-ভাবতেই চোখে ঝিলিক দিয়ে উঠলো—সিমাস হেইনি আর ফিলিপ লারকিন; টেবিলে হেলান দিয়ে হেলমেট পরে দাঁড়িয়ে আছে ফিলওয়েল আর অস্টোজেন।
স্কয়ার অপসোনিন এখনো জানতে পারেনি~মাপতে পারেনি—তোমার কনডমের গভীরতা। ‘একদম একদম একদম’ ঠিক বলেই চিৎকার দিয়ে খুলে দিতে-দিতে—করাতকলের শব্দে তোমার স্বপ্নটা আর পূর্ণ হলো না…
সেলুলয়েড প্রেমিকা
পৃথিবী এখন খুব গোপনের—কুয়োতলে কুয়াশাচর
কোনো রাগ নেই—ভাসছে বেলুন—ফাটছে ছায়া,
বারবার কেটে ফেলছে ফটোগ্রাফ—গ্রিনহাউজে ধোঁয়া
বুকের গহীনে ভাসমান নাগিনীরা ফেলছে নিঃশ্বাস;
কাঁদছে বাসের জানালা—কষ্টরা নিত্য ফেরিওয়ালা
সারা বাসজুড়ে কাঁচা-পাকা গন্ধ—তুমিই ওড়াচ্ছো ছাই!
জানালা আর আয়নায় তোমারই দীঘল ছায়া দোলে
সরল মানুষের ডানায় চলন্ত বাসের ঘামক্লান্ত শরীর;
স্নানাগারে যাও—দ্যাখো, উদোম করেছে ঊরুর কপাট
আধঘণ্টা খুব বেশি নয় সময়—শুধু একবার এসো…
গন্ধ শুঁকে বুঝে নেবো তুমি পারিজাত প্রজাপতি
প্রেমের কোকিল যেভাবেই ডাকে—গান হয়ে যায়;
শুধুই দু’জন—প্রতিদিন বাসায় একই লাইটপাখি জ্বলে
রেডি হয়ে যাও—সেলুলয়েডে ছাপা হবে অর্ধনগ্ন নাভি,
রোজসংসার আর ভালোলাগে না—উড়িয়ে দাও মেঘ;
পৃথিবী দেখুক থমকে দাঁড়িয়ে—চলো পাখি হই ডানাহীন।
আজ কিছু একটা হবেই
তোমার হাসি রক্তের উল্লাস। দুরন্ত রোদ্দুরে তুমুল বৃষ্টি। আজ কিছু একটা হবেই। বিদ্যালয় উড়তে থাকবে ঘুড়ির মতো। বৃক্ষ ঘুমিয়ে গেলে শাখা-প্রশাখা হাঁটতে থাকবে। কাতুকুতুগুলো হবে কুতকুত পায়রা। বুকের উষ্ণতা হবে জলের শীৎকার। গঙ্গা মিশে যাবে ব্রহ্মপুত্রে। সুবোধ বালক হয়ে যাবে আগুনের ঢিবি।
চোখের ভেতর খেলাঘর—হারিয়ে যাও অতল তলে। চোখের ভিতরে নিয়ে—চোখের পাপড়ি বন্ধ করে দিলেই; চোখে সাঁতার কাটবে বিদ্যুতের প্রোটন। তছনছ ভাঙচুর ঝড় অগ্নিকাণ্ড উত্তাল ঢেউ—অসুখের সুখ অথবা সুখের মতো অসুখ, বাঁধ ভেঙে যাবে উল্লাসের জোয়ারে, অগ্নিকন্যা বিভূতি ছড়িয়ে হেঁটে যাবে বেদনার চরে।
আজ কিছু একটা হওয়া চাই, আজ হবেই; গঙ্গাপূজায় ভেসে যাবে প্রাসাদ-প্রাসাদ অন্ধকার। চারপাশে মূর্খরাই নিজেদের সুখী মনে করে; কিন্তু তারা জানেই না—তারা কতো অসুখী অন্ধকারে নিমজ্জিত! বিশ্ববণিকের ডেরায় বেড়ে চলেছে—নরমুণ্ডের ক্রমাগত ব্যবহার! আজ জাহাজ-জাহাজ সমুদ্র-সমুদ্র সুখ—ভেসে যাক অসুখের নামে, অসুরের আত্মায় ভর করেছে নরমুণ্ড প্রেতাত্মা; প্রাসাদের আড়ালে হাত ধরবে নাবিকের অসূর্যস্পর্শা।
আজ বুকের ভিতরে তোমার লণ্ডভণ্ডকাণ্ড। আজ কিছু একটা হবেই। দুধ লাল হবে আজ; বাতাসে উড়ে যাবে রক্তকণিকা—রক্তকরবীর ঠোঁটে ফুলে উঠবে জাহাজের পাটাতন। আজ কিছু একটা হবেই—গা কেঁপে-কেঁপে উঠবে, অনুসূয়া প্রাসাদ ভেঙে চলে আসবে আলোর প্রতিবিম্বস্রোতে। দম বন্ধ হতে-হতেই—শিস বাজাবে ভালোবাসার ঘাসফড়িং।