এক কথার মানুষ আমি
এক কথার মানুষ আমি, কথা রিপিট করি না
একলা থাকি, একলা ঘরে, কারও কথায় মরি না।
এক কথার মানুষ আমি, কথা রিপিট করি না।
পাড়ার লোকে মন্দ বলে, তাদের কথায় নড়ি না
বইয়ের তাকে বই থাকলেও ভুল করেও পড়ি না
চোখের সামনে মরলেও কেউ, মুখে পানি ধরি না
এক কথার মানুষ আমি, কথা রিপিট করি না।
ঘরের মানুষ ক্ষুধায় মরে, খবর নেওয়ার সময় কই
আমার খবর হাওয়ায় ওড়ে, আমি ঘরের কোণে রই।
বিপদে কেউ পড়লে বলি, ধৈর্য ধরুন। নিজে ধৈর্য ধরি না
এক কথার মানুষ আমি, কথা রিপিট করি না।
বিয়ে বাড়ির দাওয়াত পেলে হাজির সবার আগে
কেউ পরিচয় জানতে চাইলে তাকাই গভীর রাগে
ধরা পড়ার ভয়ে থাকি, তবু ধরা পড়ি না
এক কথার মানুষ আমি, কথা রিপিট করি না।
ফেসবুকের কবি
ফেসবুকের কবি আমি, ফেসবুকের কবি
টাইমলাইনে লেখায় ব্যস্ত, আঁকায় ব্যস্ত ছবি
ফেসবুকের কবি আমি, ফেসবুকের কবি।
পথে-ঘাটে যাদের সঙ্গে কই না কোনো কথা
চ্যাটিং বক্সে তাদের সঙ্গেই চলে কথকতা
ছন্দে ছন্দে দেখাই দেমাক, পাঠাই এঁকে ছবি
ফেসবুকের কবি আমি, ফেসবুকের কবি।
সামনে যাকে দেখলে ভয়ে থরোথরো কাঁপি
ভার্চুয়ালি তার সাথেও তর্কে দাপাদাপি
কাউকে গোনায় ধরি না কো, হোক সে চন্দ্র-রবি
ফেসবুকের কবি আমি, ফেসবুকের কবি।
রাজপথের ওই মিছিল দেখে নিত্য পালাই ঘরে
দাবি-দাওয়ার আন্দোলনে থাকি সবার পরে
রাজনীতি ‘র’ জানি না, বলি, জানি সবই
ফেসবুকের কবি আমি, ফেসবুকের কবি।
মুখোমুখি তর্কে ডরাই, ভার্চুয়ালি বীর
রাজা-উজির মারতে মারতে ত্যাড়া আমার শির
টিকটিকিতেই ভয়ে মরি, স্বপ্নে হাঙর মারি
নিরীহদের ওপর করি নিত্য খবরদারি।
স্বাভাব আমার খারাপ নয় কো, জানেন তো ভাই সবই
ফেসবুকের কবি আমি, ফেসবুকের কবি।
আমাকে তো চেনো
কারও কথার ধার ধারি না, খাই না কারও ভাত
দিনের বেলা ঘুমাই কেবল, নিদ্রাবিহান রাত।
কারও সঙ্গেই বনিবনা হয় না কেন-যেন
আমাকে তো চেনো তোমরা আমাকে তো চেনো।
এই করোনায় ভয় করে না সেসব নর ও নারী
ত্রাণসাহায্য নিয়ে ঘোরে লোকের বাড়ি-বাড়ি
তাদের নামে কুৎসা দেওয়া আমার স্বভাব জেনো
আমাকে তো চেনো তোমরা আমাকে তো চেনো।
অনাহারীর মুখে কভু খাবার দেইনি তুলে
কারও চোখের জল মুছিনি আজও মনের ভুলে
লোকের সেবা করতে লাগে কেমন-কেমন যেন
আমাকে তো চেনো তোমরা আমাকে তো চেনো!