বাঙালি শংকর জাতি। মতে, চেহারায় মেলে না। কালো, বেঁটে, লম্বা, সাদা, দুধসাদা, গোলাপি, খয়েরি নানান কিসিমের লোকজনের সমন্বয়ে বাঙালি জাতি গঠিত। এই জাতির পূর্বপুরুষের কোনো ঠিক নেই। ইংরেজ, পর্তুগিজ, ওলন্দাজ, আরবি, আর্য-অনার্য হরেক জাতের পুরুষ এসে এদেশের নারীদের সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্ক গড়ে তুলেছে। তাদেরেই উত্তরসূরি বর্তমান বাঙালি জাতি। যে কারণে কেউ মানবতাবাদী, কেউ নারীবাদী, কেউ সুবিধাবাদী, কেউ বিবাদী, কেউ ভোগবাদী, পুঁজিবাদী, উগ্রবাদী কিংবা জাতীয়তাবাদী। তাই তো কেউ ধর্ষক, কেউ ধর্ষণের শিকার, কেউ সুদখোর, ঘুষখোর, গাঁজাখোর, ইয়াবাখোর কিংবা মদখোর। তবে, প্রত্যকেই দিনশেষে একেকজন বাঙালি।
ধর্মান্তরিত লোকজনকে নওমুসলিম বলে। হিন্দু, বৌদ্ধ, থেকে মুসলিম খ্রিষ্টান হয়েছে। কিন্তু মুসলিম থেকে কেউ হিন্দু ধর্মে কনভার্ট হয়েছে কি না, জানি না। বাঙালি মুসলমানদের ইতিহাস খুব করুণ। উচ্চবর্ণের হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন যখন নিম্নবর্গকে ঘেন্না করতো, তখন তাদের অত্যাচারে অতীষ্ঠ হয়ে ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত হয়।
মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজনের বয়স চৌদ্দ শ বছর। আর পৃথিবীর বয়স কয়েক হাজার বছর। ইতিহাস বলে একেশ্বরবাদের প্রচলন করেন রাজা হাম্বুরাবি। এটি সম্ভবত ব্যবলিয়নীয় সভ্যতায় ছিল। গাছপালা, আগুন, পানি, বাতাস, নারীকে ঈশ্বর বলে মানতো। নারী সন্তান জন্মদান করে বলে সম্ভবত এই জন্য দেবীর আসনে বসিয়ে পূজা অর্চনা করতো প্রাচীন কালের মানুষ।
শুধু বলি, নারী আপনি মানুষ, আপনি আপনার। আপনার ইচ্ছেয় বাঁচুন। পোশাক পরুন। প্রেম করুন। সংসার ভাঙুন।গড়ুন। ইচ্ছে। কে কী বললো, তাতে কী এসে যায়। বিয়ে-সংসার-পুরুষ এসবে কোনো সমাধান নেই।
আজকের জেনারেশন ইতিহাস পড়ে না, ভূগোল পড়ে না, পড়ে সায়েন্স বইয়ের খুঁটিনাটি। সায়েন্স পড়ে লোকজন ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার হচ্ছে কিন্তু মানুষ হচ্ছে না। কারণ এই জেনারেশন বই পড়ে না, ইতিহাস পড়ে না, ইউটিউব জাকির নায়েকের লেকচার শুনে শুনে ধর্মবিজ্ঞানকে একত্রিত করে জগাখিচুড়ি বানিয়ে যাচ্ছেতাই করে।
শুনেছি আমার নানি-দাদিরা কাপড়ের নিচে পেটিকোট ও ব্লাউজ পরতেন না, দুই ভাগ করা কাপড়কে ডুমা বলতো। একপাট কোমরে জড়াইতেন অন্যপাট আঁচলে।
এখনকার মানুষ সভ্য হয়েছে, পোশাকের গ্রেড বাড়ছে। শাড়ি ব্লাউজ, পেটিকোট, পেন্টি, ব্রা, বোরখা, হিজাব, কটি ওড়না ইত্যাদি পরেও ধর্ষণের শিকার হচ্ছে। তারপরও একশ্রেণীর লোক পোশাকের দোহাই দিয়ে ধর্ষণের পক্ষে সাফাই গায়। নারীকে আরও কত প্রকার পোশাক পরালে ধর্ষণের মতো জঘন্য কর্ম বন্ধ হবে জানি না। শুনেছি জার্মানিতে যখন বউ-বাচ্চা নিয়ে বিচে ঘুরতে যায়, সেখানে সবাই নগ্ন ও অর্ধনগ্ন হয়ে থাকে। সে খানে ধর্ষণ হয় কি না, জানি না। তবে যদি কোনো বাঙালির বাচ্চা থাকে নিশ্চিত দফা-রফা করবে।
আমার বিশেষ কোনো পরামর্শ নেই, শুধু বলি, নারী আপনি মানুষ, আপনি আপনার। আপনার ইচ্ছেয় বাঁচুন। পোশাক পরুন। প্রেম করুন। সংসার ভাঙুন।গড়ুন। ইচ্ছে। কে কী বললো, তাতে কী এসে যায়। বিয়ে-সংসার-পুরুষ এসবে কোনো সমাধান নেই।