সংঘাত
কবিতা লেখেন অথচ জানি না!
একসাথে এতগুলা দিন কয়েকটি রাত ভীষণ
প্রেমে কাটালাম,
অথচ কবিতা লেখেন জানি না…
সরল বিশ্বাসে অকবি বলেই এগিয়ে এলাম!
কবিরা চরম মিথ্যাবাদী হয়
একমাত্র আপনি বোঝালেন
অথচ নিজেকে কবি ভেবে চরম তৃপ্তি পাই
আপনার মতো মিথ্যা কথা বলি না একদম
বোঝালেন কবিরা মিথ্যাবাদী!
আলগোছে চুমু খেতে গিয়ে বলেছিলেন
বেকুব কোথাকার…নিমেষেই বাষ্পীভূত
হাওয়ায় মেঘ বুকে ফিরে গেলাম শূন্যে…
এই অসার অজ্ঞতা নিয়ে আপনার বুকে লাগিয়েছি
চারাসমেত সুখ
আপনি কবিতা লেখেন অথচ জানি না আমি
কবিতা বিষয়ক বিষাদ
কী যে করি—
দুঃখী না হলে শব্দ আসে না
তাই বলে কি লিখবো না!
এই যে গতকাল রাতে তুমুল বিষাদে
একচোট হলো—
দুঃখ জেতার কৌশল শিখে সব ভণ্ডুল—
ঈশ্বরের প্রতি অভিযোগ নেই
মানুষের প্রতি অভিযোগ নেই
এমনকী নিজের প্রতিও
জ্বালামুখে বরফি আকাশ
আসলে ভালোবাসাহীন কবিতাগুলো
বিখণ্ডায়ন কারসাজি—
নিজেকে দুঃখী ভাবতে পারছি না
সুখীও ভাবতে পারছি না
বৃষ্টি হলে মন খারাপ হয়
রোদ হলে মন খারাপ হয়
মন খারাপ হয় কাঠখোট্টা দিনে
কোনো সমাধান খুঁজে পাচ্ছি না
তা-ই বলে কি কবিতা লিখবো না!
কী যে করি—
এশক বন্দনা
এই যে জিকির দুআ বাতলে
রোজকার মতোই বুকের খাঁচাসমেত পরান
ব্যথা করে|
কপালের ওপরে যেটুকু দাগ লেগে আছে,
কব্জি কনুই ও আঙুলের ফলায় কালো বিষাদি
সব তো তোমাকে উদ্দেশ করে|
এই সব মহার্ঘ্য ব্যাঞ্জনায় না পেয়ে
নিদারুণ নিরাগ্রহে হাত বাড়িয়ে দাও|
প্রেম শেখাতে এসেই এশকের রাস্তা ভুলে
বিবাগী—
ওসব ছলবল প্রয়োগে ঘায়েল তেমন
করতে না পেরে হতাশা ঝেড়ে ফেলো|
সবই তোমার লীলা
লীলা-লাস্যে লীগে ও রাগে শূর্পনখা
বেচারীর নাসিকাকর্তন করে দেওয়া,
অর্ঘ্য যেচে অনেকের এমনিতেই—
হয় না, হবে বলে কথা দেওয়া
ভণ্ডুল ভণ্ডামি কামেল মশায়েখ সব সব তুচ্ছ
কলি কাকলী বিছিয়ে এতটা ভালো হওয়ার
নাটক মঞ্চে উঠে ধিনতাধিন নেচে-কুঁদে
ফিরে যান প্রপিতামহদের কাছে….
চুমুবিষয়ক কবিতা
চুমু নিয়ে প্রচুর কবিতা লিখতে চাই—
একটা শব্দও জোড়া লাগছে না;
জানতাম লজ্জায় লাল একমাত্র নারী হয়,
আজকাল শব্দরা লজ্জা পায়!
চুমু বহুজাতিক অনুভূতি
ডাল-ভাতের মতো—
দিতে এবং খেতে পয়সা ও ঝাল কোনোটাই লাগে না
অন্তর পোড়ে না
শিরায় শিরায় টোকা মারে অলকা আকাশ
পথে-ঘাটে হরদম নিকোটিন ও ঠোঁটের সন্তরণ
কথা নেই শালিসি প্লট নেই
দশে ও দোষে আক্রান্ত চুমুই দীর্ঘজীবী।
একা থাকি
এখন ভালো থাকা শিখে গেছি—
মন আহত হয় না, ব্যথায় বুক টনটন করে না;
কারও জন্য কোনো অপেক্ষায় থাকতে হয় না,
এখন বাঁচতে হয় না কারও প্রয়োজনে,
আজকাল দিনের পর দিন ফোন সুইস স্টপ থাকলেও
একবারের জন্যও মনে হয় না কেউ গাল ফুলিয়ে অগ্রসর হবে—
আগুনে পুড়তে পুড়তে আগুন অতটা পোড়ায় না এখন
ব্যথারা পেঁজাতুলোর মতো এদিক-সেদিক ঘোরে-ফেরে!
খুব মন খারাপ হলে দিনের আলো আরও উজ্জীবিত হয়ে ওঠে—
বৃষ্টিতে ভিজে যাচ্ছি ক্রমাগত
বৃষ্টিও জানে সে কথা—
এই তো সেদিনও মৃত্যুরা দলবেঁধে দাঁড়িয়ে থাকতো
এখন ওরাও জানে নিজেকে কতটা ভালোবাসি!
যেহেতু আমার কোনো বাড়ি নেই।
বাড়ির জন্য ছটফটানি একদম নেই—
নিজেকে ভালো রাখার কৌশল শিখেছি
সুদীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে—
এখনো পায়ের ফোস্কার দাগ ঠিকমতো মোছেনি।
মনের স্মৃতি রোমন্থন করতে ভুলে গেছি।