ঘুমের পরী দু’খান চোখে
দাওনা কিনে রঙিন ঘুড়ি ইচ্ছে মতোন হাওয়ায় উড়ি
ইচ্ছে করে পড়ার সাথে এক্ষুনি দিই আড়ি।
এদেশ ওদেশ বনের পাশে প্রজাপতি নিত্য আসে
তাদের পাখায় ভীন দেশেরই স্বপ্ন চোখে ভাসে।
তালের গাছে বাবুই বাসা জোনাক জ্বলে রাতে,
নিত্যপিসি কাঁদছে বসে খিল ধরেছে বাতে।
আউস ক্ষেতে আমন চাষে বকের সারি সারি
কোথায় তাদের ঘরবা আছে কোথায় দেশের বাড়ি।
রঙিন ঘুড়ির সুতোয় বাঁধা ফড়িংরাজার পাখা,
দেখবে নাকি আকাশ কেমন রামধনু রঙ মাখা।
পলাশ বনে আগুন জ্বেলে ফাগুন হাওয়ায় মাতে,
পুকুর জলে ডুমুর ভাসে উজান গাঙ্গের সাথে।
রঙিন ঘুড়ির সুতোয় বাঁধা আকাশ রাঙ্গা নীলে,
ছোঁ মেরে নেয় রঙিন ঘুড়ি পাহাড় চাটা চিলে।
অবাক চোখে ছোট্টখোকা ঘুড়ির গল্প শোনে
ঘুমের পরী দু’খান চোখে রামধনু রং বোনে।
মোল্লা সেটা কুড়িয়ে পেলেন
আলাউদ্দিন খাঁয়ের গানে মত্ত সময় কাটে
ভোরের আলোয় নেমে আসেন গোয়ালন্দ ঘাটে
চাঁদের দেশের মুন্সী গ্রামে একলা থাকেন তিনি
পরীর পালক হীরের ঝালর করেন বিকিকিনি।
এসব দেখে মোল্লা নাসির বেজায় হলো হুপিং কাশি
সাজাহানের বাপের মাসি জানি সে যে লখনোবাসী
আমীরসাহী লুকিয়ে সেসব দেখেন রাত্রিদিনে
নিলেন তিনি এক হাবেলি নগদ টাকায় কিনে।
মোল্লা বলে আসরাফি দাও সঙ্গে কিছু ফাউ
নবাবজাদা খিদের চোটে খেলেন কিনে চাউ।
খেয়েই তিনি লুকিয়ে থাকেন অযোধ্যার এক ধামে
মোল্লা সেটা কুড়িয়ে পেলো নীল রঙের এক খামে।
কপাল আমার বড্ড খারাপ
কপাল আমার বড্ড খারাপ গ্রহের রকম ফেরে,
বিলাপ শুনে দাদু আমার বলছে ডেকে কে রে!
উঠোনজুড়ে সকালবেলায় কান্না শুনি এ কী,
ঘরের থেকে বেড়িয়ে আমি অবাক হয়ে দেখি।
বিশ টাকা ধার নিয়েছিলেন পাশের বাড়ির মেশো
এখন সেটা সুদ আসলে হয়েই গেছে দু’শো।
দাদু বলেন ধার নিয়েছো এখন কেন কান্না,
শোধ করোনি সবই গেছে বন্ধ রান্না বান্না।
সুখে থাকতে কিলোয় ভূতে ধারের টাকায় খেলা,
বোঝ এবার সুদ কত হয় বুঝছো তো এই বেলা।
লাগতো টাকা বলতে আমায় দিতাম তোমায় আমি,
আমার থেকেও সুদখোরেরা ভীষণরকম দামী!
হিসাব দেখে বললে দাদু করছ ভীষণ পুণ্য
কুড়ি টাকার পাশেই দেখি যোগ করেছ শূন্য,
ন্যাপলা মুদির সুদের খাতায় দু’শো টাকার পাশে
মেশোর হাতের স্বাক্ষরটা চোখ পাকিয়ে হাসে।
বলেন দাদু কপাল তোমার সত্যি গ্রহের ফেরে,
কুড়ি টাকা সুদের ঠেলায় দু’শোর অঙ্কে ঘোরে।
ন্যাপলা মুদির সুদের খাতায় এমন অনেক আছে
বলছে না কেউ মুখ ফুটে আর ধরা পড়েন পাছে!