মানুষ
ঘর ছাড়া একটা পাখি
বাঁধন ছাড়ার গান
বেঁধে ফ্যালে তারে
নানান প্রশ্নবান!
অশান্তির পাখি শান্ত হতে
এক দীর্ঘ ক্ষয় সহ্য করে যায়!
মানুষ মানুষরে গিলতে গিলতেই
নতুন মানুষের জন্ম হয়।
জীবন বিষণ্ন এক নদীর মতোন
স্থির পানিতে প্রতিসরিত আলোয়
জমানো দৃশ্যের সারি দেখি,
জীবনকে থেমে থাকা—
বিষণ্ন এক নদী মনে হয়।
থেকে থেকেই ঘাই মারে মাছেরা—
দৃশ্যরা ভাগ হয়ে যায় জলতরঙ্গে!
চোখ চলে যায়
দৃশ্যের জননীর পানে!
সাত জোড়া শালিক
আর দুই জোড় ঘুঘু
প্রেম ছড়ায় পালকে পালকে!
নিয়ত ভালোবাসার জন্ম দিয়ে
হাওয়ায় উড়াল দ্যায়
ঠিক তোমার মতোই!
এক চড়ুই এসে মুখোমুখি বসে—
দুইজন দুই জগৎ দেখে মাথার ভেতর!
আঁকাবাঁকা লেকের দুই ধারে পাশাপাশি দাঁড়িয়ে থেকে
নিজেদের চিনে নেয় গাছেরা—কাছে যাওয়ার সুযোগ নেই।
ডালপালা ছড়ায়—ডালে ডালে জড়িয়ে কথা কয় কেউ কেউ!
নির্বাক দৃশ্যের মহড়া চলে সারাক্ষণ—!
পানির ভেতরে জগৎ উল্টো হয়ে ধরা দ্যায়
মাঝে মাঝে মাথার ভেতর যেমন ধরা দ্যায়—জীবন!
পূর্ণতা ধীরে ধীরে ক্ষয়ে ক্ষয়ে ক্ষয়ের সাম্রাজ্য গড়ে
জীবনকে থেমে থাকা—
বিষণ্ন এক নদীর মতো মনে হয়!
দৃশ্যরা ঘোলাটে হয়,
চোখ উল্টে মাছেরা ডিগবাজী খায়—
তাদের খেয়ালে।
দুঃখকে মনে হয়,
তার আপন খেয়ালে বয়ে যাওয়া—এক মাদারচোদ অনুভূতি!
খেয়ে খেয়ে ক্ষয়ে ফেলে—
তবুও জীবনকে বয়ে নিয়ে যায় নিরবধি!
আনন্দকে মনে হয়,
দুঃখের বাপ-মায়ের সঙ্গমের আবশ্যিক ফলাফল!
তবুও নিরবধি বয়ে যাওয়া—একমুখী জীবনের ভেতর জন্মায় বহুমুখী জীবন!
মনে হয় কেটে কেটে টুকরো টুকরো করে
জীবনকে নিয়ে খেলি যেমন ইচ্ছে তেমন।
কেউ কেউ জীবন নিয়ে খেললে,ক্ষতি নেই তেমন!
অবশ্য সবাই খেলে জীবনকে নিয়ে!—কোনো না কোনো সময়।
অথচ জীবন এমন—না খেললে, কেউ না কেউ খেলে দ্যায় ঠিকই!
প্রেম
শব্দের যে ঝংকারে খেলে যায় জীবন—
হৃদয়ে বাজে তার আগাম প্রতিধ্বনি।
শো শো বাতাসের গায়ে কান পেতে শুনি—আশ্চর্য সে কণ্ঠস্বর!
কী য্যানো এক লহমায় কোন খেয়ালে আমারে ডুবায় তোমার স্বরে!
কোন সেইসব সুরে বাঁধা পড়ে এই বেরহম জীবন!
একিন করো, কসম বাকহীন পাখি আর ঝরে যাওয়া শিউলি ফুলের!
মানুষ বোঝেনি এখনো তার খেয়ালের আবদার!
তোমারে জেনেছে যেই সুর—তারে কোথা লুকাই নীরবে!
ভাষা
একটা মাছির ভাষার ভেতর—
ভেসে যায় মানুষের বোবা ব্যথা!
ধরো,এই শীতল হাওয়ায়—
তুমিও মাছির মতন!
বোবা কথায় ব্যথা ছড়াও—
দারুণ আহত ভাষার ব্যথায়!
ধরো,যদি আর বেজে না উঠি মিহি সুরে!
যদি আর না ধরি অনুভূতির ইশারা—
স্তব্ধতার ভেতর তব্দা খেয়ে যদি ঝিম মেরে থাকি শব্দের মন্দার ভেতর!
ভাষার কাছে অর্থের যে প্রাণ,
কিংবা অর্থের কাছে ভাষার যে মান—
তুমি তাদের কাছে কী আর্জি করবে প্রকাশের ভঙ্গিমায়?
প্রেম চলে গেলে ভাষা হয় বোবা—
অর্থের কাছে শব্দের ঋণ ম্যান্দা মেরে বসে থাকে,
শব্দের কাছে অর্থের ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে!
ইয়া মাবুদ—
শূন্যতায় প্রাণ দাও!
ইয়া ইলাহী—
প্রেমের ভাষা দাও শুষ্ক কাঠে প্রাণ ফুটবার লাগি!
অন্ধকারের ভাষা মুছে প্রেমের ভাষায় কথার হুল ফোটাও হে প্রাণ!