ঝুলে আছে উর্ণনাভ
ঝুলে আছে উর্ণনাভ, পীতবর্ণ বিকেলে ছাইরঙ ফসিল।
বিবর্ণ দিগন্তরেখায় হলুদ আভা। এখানে
আকাশ নেই, বাতাসের পাখিরা ভ্রমর গুঞ্জণ শেষে
ঘুমিয়ে গেছে। মধ্যদুপুরের সুনসান নীরবতা। শুধু
তুমি ঝুলে আছ। উল্টোভাবে চামচিকে সদৃশ।
মুখের কষে শুকিয়ে আছে রক্তজড়ানো বমি।
টিকটিকির মতোন তোমার শুধু লেজ গজায়নি। তুমি
ঝুলে আছ। পটলচেরা অক্ষিদ্বয় কোঠারচ্যুত।
নির্মিলিত। পচনের পূর্বে ধ্যানস্থ অবলোকন।
কাঠবিড়ালির করুণ আর্তনাত। দানবীয় তাণ্ডবে
ছিন্নভিন্ন আসবাব। তোমার চৌত্রিশ বক্ষবন্ধনী ঝুলে আছে
ভজনালয়ের গম্বুজ। যেন আলেকজান্দ্রিয়ার চূড়ায়—
উড়ছে মানবতার ব্যঙ্গ নিশান।
ঝুলে আছে ঊর্ণনাভ, মধ্যপ্রহরে ঘৃণার বিষবাষ্প,
চৌচির অন্তর, প্রেমহীন ধর্ষিত পৃথিবীতে নীলাভ্র
আকাশ। নীলকন্ঠ গরলে ঘৃণার রশিতে তুমি ঝুলে আছ।
আহারে মাতৃকূল, মমতাহীন পৃথিবীজুড়ে শুধু যন্ত্রণার এপিটাফ
বুনো ঘোড়ার লাগাম বা খালিদ আহসান বৃত্তান্ত
নন্দন কাননের চড়াই-উৎরাই পথ। চূড়ার মাথায় প্রকাণ্ড পাকুড় বিরিক্ষি
আধখানা চাঁদ উঠে এসেছে চার্চ রোডে শিশির দত্তের বাড়ি বরাবর।
খালিদ আহসানের মগ্ন-চৈতন্য খুঁজে বেড়ায় ত্রিমাত্রিক ফর্ম
ক্রমাগত ওর উচ্চারণ, ‘মানুষের মুখাবয়ব।’
ও তো ঘাস ফড়িং হয়ে ফিরে যায় জীবনানন্দের বাড়ি।
অহর্নিশ অন্তহীন আনন্দ-বেদনায় দোয়েলের জীবন হয়ে ওঠে।
চন্দ্রাহত শিল্পী, নিজকে পোড়ায়। চর্মে কালসিটে দাগ। চোয়ালে পরাজিত
প্রেম। শুধু হঠাৎ হঠাৎ চোখের ভাঁজে জেগে থাকে তৃতীয় বিশ্বের
অনার্য শ্রমিকের আদল। যে কেবল শিল্পের বেসাতিতে পণ্য হয়ে ওঠে।
‘বোকা নিয়মকানুন শিখিসনি কিছু।’
সব পাল্টায়। পৃথিবীর তাবৎ নির্মাণ। সময় পাল্টে নিয়ে যায় নস্টালজিক জমিনে।
কিলবিল করে শিল্পের ভ্রূণ। আর তখন একান্ত গভীর গোপনে আইভি লতায়
জড়িয়ে রাখে শিল্পের অর্গল। পাতক শিল্পী, সহস্র বর্ষ মগ্ন নার্সিসাস।
মধ্যরাত হা হা করে ঝংকার তোলে। টাইগারপাসের কাছে আসতেই কেটে পরে
কবি ওমর কায়সার। ধাবমান পথচলায় থমকে দাঁড়ায়, ল্যাম্পপোস্টের আলোয়
কাফকা’র মতন তাকায় চারদিক। শিল্পভূক নাদান কাঙাল।
দেওয়ানহাট ব্রিজে উঠতেই মধ্যরাতের তক্ষক ডেকে ওঠে,
চাঁদ হেলে পড়ে নিঝুম ষোলশহর ইস্টিশনে।
টমাহকের পাশে শুয়ে আছি
টমাহকের পাশে শুয়ে আছি।
দিশেহারা;
ওই সব ভয়ানক মারণাস্ত্রের পাশে শুয়ে
তুমি মনপবনের নৌকায় পাল তুলে
বাণিজ্যের কড়ি বাজিয়ে ধেয়ে আসো
দজলার তটরেখায়।
সত্যি দিশেহারা;
মুঠোফোনে ছবি
আরব সাগরে রণতরীর মাস্তুল,
বঙ্গোপসাগরে হাঙরের উৎপাত
মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে জনতার তীব্র চিৎকার।
আমি বলি, আমার অন্ধপিতার শিয়রে কিছু নেই।
শূন্যতা, আহ? ধোঁয়াশায় আড়াল আছে,
অন্ধকারের দেয়াল।
কারও কিছু জানা নেই
শুধু এ কান থেকে ও কান…
টমাহকের পাশে শুয়ে আছি
নিদ্রাহীন স্বপ্নহীন ভেজা চোখ।
শুধু হন্তারকের বসবাস,
টুক-টাক এক্কা-দোক্কা খেলা
সাবাস টমাহক মামা।
আরব সাগরের নীল জলরাশি
শেষ সূর্যের সঙ্গে মীনের লম্ফ ঝম্ফ নেই
গাঙচিলের ডানায় নীলাভ আকাশ
শুধু ফিসফাস গুঞ্জন নিয়ে আসে-
একখণ্ড কালো মেঘ—
আর লালমুখো ঈগলের লোভাতুর চোখ ।
আকস্মিক আমার অন্ধপিতা বলে,
নীলেই থাকো বঙ্গোপে ঘোলাজল।
আর আমি টমাহকের পাশে দেখি,
পরান শেখ কাস্তে উঁচিয়ে আছে।
ত্রিকালদর্শীর বয়ান
ওই বেঞ্চে সে বসে থাকে
সূর্যের আলো নিভে যাওয়া পর্যন্ত বসে থাকে
অনেকটা ত্রিকালদর্শীর কুশীলব সেজে কথা বলে
দূর দিগন্তে বিলয়মান টিয়ের দঙ্গল,
বনভূমির রেখায় ধুসর সবুজ
ও পাড়ার শ্রীবাস নাপিত, জেলে পাড়ার পালাৎ জমাদার
‘ওই কালবাউসের নাগাল পাচ্ছিনে কর্তা,
জলে মাছ কমতির দিকে।’
ব্রিজ থেকে লাফিয়ে পরা বালকের দল,
লরীর টায়ার ফাটার শব্দ, দীর্ঘ মিছিল,
হালিমন পাগলি’র খিস্তিখেউড় পৃথিবী।
লালন এক তারায় ব্রহ্মাণ্ড খোঁজে
হাছন ঘর ছেড়ে বাউল হতে চায়
আইনস্টাইন বিড়বিড় করে পড়তে থাকে…
কেতন উড়িয়ে বলে, ‘আমি নজরুল
ব্রাত্যজন, মানুষের কবি
রবীবাবু, আমার দাদা হন।’
এই বেঞ্চে বসে প্রিয় ত্রিকালদর্শী
কী সুখেই না আছে।
তারপরও সে বলে, অপেক্ষা করছি
কতকিছু না অজানা রয়ে গেছে
সময় বহিয়া চলে
বর্ণিল গোধূলিকে প্রিয়তম সময় মেনে দাঁড় বেয়ে চলে
নৌকার মাঝি। শেষবার জাল ফেলে চৌকষ ধীবর তুলে
আনে ডানকানা-পুঁটি, নিরীহ বেতরঙ্গী। দূরে ভাটিয়ালী
গায় গ্রাম্য চাষা। ডাস-মিউজিক ছাড়া প্রকৃতি কাঁপে।
ও মাঝি, ও ধীবর, ও চাষা বিস্তীর্ণ তটরেখার পাশ দিয়ে
একটি পথ চলে গেছে দূর-বহুদূর-আসমানিদের
ভেন্নাপাতার কুটিরে। আসমানি কি ও গাঁয় থাকে?
মৎস্যের নদী, কল্লোলিত জলের শব্দ, দূরাগত ক্রন্দনের
মতো কেবলই নস্টালজিক নিকষিত হেম।
মানুষ
সুদীর্ঘ রজনীর ঘেরাটোপে কুহক বারবার ওকে তাড়িয়ে বেড়াচ্ছিল।
ও পাখি ও বিহঙ্গম। কণ্ঠ মন্থন করে রাতভর বৃক্ষ কর্তনের
আসুরিক নিনাদে চৌচির। কী কষ্ট ওর। কষ্টের মধ্যে পৃথিবীর
ক্রন্দন। সাবধান। ক্লোরোফিলকাতর ন্যাড়া পাকুরতলায়
গল্পগুলো উপন্যাস হয়ে যায়। উপন্যাস ঝুলে থাকে জলপাইর
মগডালে। পদাবলির নায়িকা কী জানে, আত্মঘাতী মনুষ্যকূল—
কালোবীজ জরায়ু শরীরে। কাতরায় মানব ক্লোন। হায়
ঈশ্বর! কে বলবান? মানুষ-মানুষ-মানুষ…আমি তো তাই।
মেঘ বালিকার গল্প
হাউজিং আকাশজুড়ে অ্যারোপ্লেন ওড়ে,
শরতের মেঘ ছুঁয়ে যায় গৃহবধূর স্বপ্নজাল
হাত দিয়ে ধরতে ধরতে জানালার পর্দায় খেলা করে
রৌদ্রস্নাত ভোরের সকাল। চিলতে বারান্দাজুড়ে সাদা
মেঘ বালিকার কলরব। ক্যাসেটে প্রিসলি’র রক অ্যান্ড রোলের
তুমুল সিম্ফনি। টবে এইমাত্র ফুটেছে নাইনোক্লক।
ওর নাম সুস্মিতা। ও ইডেনে সাহিত্য পড়ে। চন্দ্রাবতীর নায়িকা—
করুণ বিহাগে গেয়ে ওঠে, এভরি নাইট ইজ মাই ড্রিম…
রিসার্চ স্কলার যৌবন পুরুষ ইলিনার ডরমেটরিতে ক্যাথি’র
কোমর জড়িয়ে ট্রাভোল্টার মুদ্রায় মদালস প্রহর কাঁপিয়ে তোলে
সুস্মিতা, মাই ড্রিম—
স্বপ্ন সঙ্গমে সময় বাড়ে। আহারে মধ্যবিত্ত জীবন!
পথরেখা
পথরেখা মুছে গেছে
ষোল ফিট প্রশস্ত কংক্রিট রাস্তা চলে গেছে গঞ্জের দিকে,
সরু রাস্তার পাশের লাজুক লজ্জাবতী
ঢাকা পরে গেছে অনেক লতাগুল্ম বর্ধনশীল তরু প্রজাতি।
না! কোনো চিহ্ন নেই
গহীন বনভূমির নিঃস্তব্ধতায় উদাসীন দুপুর
একদা প্রবল বর্ষণে উত্তরের ধেয়ে আসা জল
লালমাটির খাড়ি বেয়ে ভিজিয়ে দিয়েছে
বিস্তীর্ণ সার সার তমাল-তরু—সেগুন আর গজারীর শরীর।
আর ক্যানিয়নে জালি পেতে যে কিশোর শত শত দিনরাত্রি
ডানকানা, আর বেতরঙ্গীর পিছনেই জমা রেখেছে
কষ্টকর ফেনায়িত সময়ের ফলক।
সাক্ষী আছে, অশীতিপর হামিদা বেওয়া
উপত্যকায় বসে থাকে জলপাত্র হাতে
ক্লান্ত পথিকের জলতৃষ্ণা নিবারণের দরদি মানবী।
সাক্ষী আছে, ঝাঁক ঝাঁক হরিয়াল আর টিয়ের দঙ্গল
না ওরা এখন কেউ নেই।
বৃক্ষকর্তন করে বনভূমি জুড়ে গড়ে ওঠেছে সামরিক ব্যারাক
প্রতিদিন তারস্বর চিৎকার করে কনভয় ছুটে যায়
দিনভর চানমারি’র শব্দে পাখিদের দল পালায় দূরে
প্রাকৃতিক এইসব সন্তানেরা সন্ত্রস্ত পথভারে হেঁটে যায়।
কংক্রিটে প্রতিদিন সহস্র ফৌজি পা লেফট-রাইট লেফট-রাইট—
শুধু আমার পদরেখা মুছে গেছে।
চন্দ্রাবতী
মুঠোফোনে কেবলই তোমার ক্বাসিদা
‘হ্যালো!’
‘তুমি কি চন্দ্রাবতীকে চেনো?’
‘চিনি।’
‘তাহলে তো তোমার কাছেই যেতে হবে।’
নেপালের ত্রিভুবন বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্জু দুবে কাঞ্চলী।
ইংরেজী সাহিত্য পড়ে। একদা কবিতা কুমারীর প্রেমে পড়া যুবক,
কবিতা কন্যা নিয়ে বুড়িগঙ্গার স্বচ্ছজলে দেখেছিল দশমীর চাঁদ।
জলে ভাঙ্গা চাঁদ। জীবনবাবুকে নিয়ে ঘনঘোর রাত। চিৎপাত
নৌকোর গলইয়ে শুয়ে জেনে নেয় বাৎসায়নী পাঠ। ও কুমারী
কি অরিন্দম জননী সামসাদ?
হতে পারে সবকিছু। কিছুদিন ভালোবাসার পুঁথিপাঠ, তারপর
কাতর যুবক এক দুই তিন হিসাব করে দিবারাত্রির পতন।
মৃচ্ছকটিকে জমে-না ফেরা সংগীত। বুড়িগঙ্গার জল
ধারণ করে ঘনকৃষ্ণ ছায়ায়। নীল পালিয়ে যায়।
সাদা মেঘের আড়ালে ঢাকা পড়ে স্বপ্নের চাদোয়া। মঞ্জু, তুমি
এখন কোথায়? কবিতার কারিগর।
অরিন্দম জননী সামসাদ। প্রগলভা বঙ্গীয় রমণী। পতিকে
জানে ঈশ্বর। সংসারের জটিল নিয়ম জেনে লাভ কী?
সারল্য বিছিয়ে দিয়েছে সংসারে, কবি তাকে দিয়েছে অনেক…
চিনেছে সহস্র শব্দের কাঁটায়। তারপরও
কেমন সুখ পাখি হেঁটে বেড়ায়।
আহারে মধ্যবিত্ত জীবন।
এতদিন পর মুঠোফোনে মঞ্জু’র নির্লিপ্ত জিজ্ঞাসা।
‘চন্দ্রাবতী আমার বিষয়।’
‘বলেছিলে।’
‘বললে না কিছু?’
‘কী বলব!’
‘তাই তো।’
‘এতদিন পর।’
‘মনে রেখেছি।’
‘তাই!’
‘চন্দ্রাবতী পড়তে গিয়ে বারম্বার তোমাকে মনে পড়ছে।
কী তরুণ যুবক! একরাত মৈথুনের কারুকাজ শিখে ভুলে
গেছি যৌবনের পাঠ। আহ!’
‘ইসকুল শিক্ষিকার নস্টালজিয়া।’
‘ধ্যাৎ, তুমি বিরহী যুবকের মতো কথা বল।’
‘এশিয়ান পোয়েট্রি ফেস্টিভালের জমজমাট আসরে
তরুণ কবিকে নিয়ে মঞ্জু’র যত স্বপ্নজাল বোনা।’
‘রাষ্ট্রিক সীমানা পৃথক করে দিয়েছে তরুণ-তরুণীর
প্রণয় অবতারণিকার পাঠ।’
‘খোঁড়া যুক্তি।’
‘এটাই সত্যি।’
‘একরৈখিক।’
‘আচ্ছা বুড়িগঙ্গার জল কি স্বচ্ছসলিলা?’
‘না, বুড়িগঙ্গার জলে রাসায়নিক বিষ। পাড়ের
বাসিন্দা যুবক জল খেতে চায় না। পান করে কেমিক্যাল পানীয়।’
‘রবি ঠাকুর বলেছে, যেদিন গ্যাছে! হায়!’
নাম: চন্দ্রাবতী, কবি
পিতা: কবি দ্বিজ বংশী দাশ
পেশায়: কৃষক
সাং: পাতুয়ারী, করিমগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ
গ্রন্থ: দস্যু কেনারামের পালা, মনসা দেবীর গান, মনসা ভাষা,
মলুয়া (কারো কারো মতে মলুয়া উপাখ্যান চন্দ্রাবতী’র রচনা)
প্রেমিক: জয়চন্দ্র, কায়স্থ ব্রাহ্মণ।
‘চন্দ্রাবতী’র জন্য আমার কষ্ট হচ্ছে।’
‘আমার হয় না।’
‘কেন?’
‘জয়চন্দ্র কুলীন ব্রাহ্মণ। শঠতা, ছলনা জানে। চন্দ্রাবতী
শুধু প্রেমী। ভালোবাসার গরল ধারণ করে হয়েছে কবি।’
‘কে বেশি পাতক?’
‘জয়চন্দ্র, সমাজ।’
‘বুড়িগঙ্গার জলে স্বপ্ন হন্তারকও থাকে।’
‘চন্দ্রাবতী’র কবিতা উপাখ্যান হয়ে যায়। হিমালয়জুড়ে
হিমযুগ নেমে আসে নবীন চন্দ্রা’র আত্মায়। কবি শুধু
কড়িকাঠ গোনে।’
সুনসান নীরবতা। মুঠোফোনে গাঢ় নৈঃশব্দ্যের পাখি
উড়তে উড়তে আকাশ ছুঁয়ে যায়।
‘আমার কষ্ট বাড়ছে।’
‘কেন?’
‘তোমার জন্য। চন্দ্রাবতী’র জন্য।’
‘হায় চন্দ্রাবতী! এতদিন পর!’
যুদ্ধ ‘৭১
ওরা তাকে বাংকারে টেনে নেয়।
কাপালিক দস্যুতায় রাতুল কুমারী হারিয়েছে যৌবন
জীবন, স্বপ্নময় সংসার, কাঙ্খিত মানব শিশু;
গেরিলারা খুঁজে পেয়েছে ছিন্নভিন্ন শরীর
এলোমোলো চুল, রক্তাক্ত পেটিকোট, ব্লাউজ-ব্রা
গেরিলারা ওর মুখ চেনে নাই ।
পরিত্যক্ত বাংকারে জননী বঙ্গভূমি শুয়ে আছে।