[কার্লোস ফুয়েন্তেস (১৯২৮-২০১২) স্পেনিশ ভাষার কালজয়ী কথাসাহিত্যিক। ১৯৮০ সালের আগে পর্যন্ত ফুয়েন্তেসের খ্যাতি ও প্রচার ছিল স্পেনিশ ভাষাভাষী দেশগুলোয় সীমাবদ্ধ। ‘প্যারিস রিভিউ’ তাঁর একটি গভীর, মননশীল ও সুদীর্ঘ সাক্ষাৎকার প্রকাশ করে। বলতে গেলে, ইংরেজিভাষী সুধী পাঠকদের কাছে তাঁর প্রথম ও বিস্তৃত আত্মপ্রকাশ। ধ্রুপদী সাহিত্যিকরাই তাঁর প্রিয়; ফরাসি কথাসাহিত্যিক মার্সেল প্রুস্ত তাঁর জীবনের ধ্রুবতারা। তার প্রথম উপন্যাস ‘লা রেহিওন মাস ত্রান্সপারেন্তে’ অর্থাৎ ‘যে অঞ্চলে আকাশ পরিষ্কার’ প্রকাশিত হয় ১৯৫৮ সালে,ফুয়েন্তেসের বয়স তখনও তিরিশ ছোঁয়নি। প্রকাশের সঙ্গে-সঙ্গেই সফলতা আসে। তাঁর দ্বিতীয় উপন্যাস ‘লাস বুয়েনাস কনসিয়েনসিয়াস’ (উত্তম বিবেক) আকারে ছোট। ১৫০ পৃষ্ঠার। অনেকের মতে প্রথাসিদ্ধ মার্কসবাদী এই উপন্যাসে লেখকের রচনাশৈলীর বৈচিত্র্যের প্রকাশ ঘটেছে। লেখকের কালজয়ী, রূপকাত্মক উপন্যাস ‘লা মুয়ের্তে দে আর্তেমিও ক্রুস’ (আর্তেমিও ক্রুসের মৃত্যু) প্রকাশিত হয় ১৯৬২ সালে। আধুনিক লাতিন আমেরিকার সাহিত্যের সবচেয়ে সম্ভাবনাময় গ্রন্থ। সময়ের সঙ্গে-সঙ্গে উপন্যাসটি অনেক জনপ্রিয়তা পায়। উপন্যাসটির আংশিক অনুপ্রেরণা অরসন ওয়েলস পরিচালিত সুখ্যাত চলচ্চিত্র ‘নাগরিক কেইন’ (সিটিজেন কেইন) চলচ্চিত্রের অনেক কলাকৌশলের ব্যবহার রয়েছে উপন্যাসটিতে। ফুয়েন্তেসের উপন্যাস ‘দ্য ওল্ড গ্রিঙ্গো’ ইংরেজিতে অনূদিত হলে মার্কিন বেস্ট সেলারের তালিকায় স্থান পায়। জীবনের শেষদিন পর্যন্ত তিনি ছিলেন সক্রিয়, মুখর। ১৫ মে, তাঁর মৃত্যুর দিনেই ‘রিফর্মা’ সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয় ফ্রানসের নতুন সরকার ও তাঁর সমাজতন্ত্রী নেতার বিষয়ে লেখকের প্রবন্ধ। ফুয়েন্তেসের নাম গত এক দশক ধরে নোবেল বিষয়ে জল্পনা-কল্পনার শীর্ষে থাকলেও শেষ পর্যন্ত নোবেল পুরস্কার পাননি। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন ডার্মায়োথ কলেজের শিক্ষার্থী লিলি ক্যানজো।]
লিলি: আপনি একজন প্রভাবশালী লেখক, যিনি সমসাময়িক রাজনৈতিক ঘটনাগুলো নিয়েও লেখার চেষ্টা করেছেন। শিল্প, সাহিত্য কিংবা রাজনীতির দিক থেকে যদি বিবেচনা করা হয়, তাহলে লাতিন আমেরিকা ও আমেরিকার মধ্যে আসলে কী রকম যোগসূত্র আছে বলে আপনি মনে করেন?
ফুয়েন্তেস: এখানে (যুক্তরাষ্ট্রে) সবকিছু তুলনামূলক ভালোই ঘটে। যদিও এদেশে পৃথিবীখ্যাত অনেক বুদ্ধিজীবী আছেন, বিশ্ববিদ্যালয় আছে কিন্তু যারা সরকারি কাজ পরিচালনা করেন, তাঁরা অনেকটা মাঝারি মানের। এখানকার চেয়ে লাতিন আমেরিকার অবস্থা অনেকটা আলাদা। কেননা, সেখানে লেখকরা শুধু বঞ্চিতদের কথা বলেন। সেখানে দারিদ্র্য, শিক্ষার হার অনেক কম। যদিও এখন পরিস্থিতি অনেকটা উন্নতির দিকে যাচ্ছে। গণতান্ত্রিক সরকারের কারণে সেখানকার পরিস্থিতি অনেকটা পরিবর্তিত হয়েছে। বর্তমানে মেক্সিকানরা গণতান্ত্রিক অধিকার পেয়েছে। সেখানে মত প্রকাশের একটা উদ্দেশ্য আছে। রাজনৈতিক দল আছে। রাজনৈতিক মতভেদ নিয়ে লেখকদের মধ্যেও বিভাজন হয়েছে। মেক্সিকোর অনেক লেখক সরকারি বড় বড় দায়িত্বে আছেন। অনেক প্রকাশনা আছে। পরিস্থিতি আর আগের মতো নেই যে, লেখকদের খুব হিমশিম খেতে হবে জীবনযাপন করতে গিয়ে। সুশীল সমাজই এখন সেখানকার প্রধান চরিত্রে অবতারণা করেছে।
লিলি: আপনি কি সত্যি নিজেকে একজন নির্বাসিত লেখক মনে করেন?
ফুয়েন্তেস: আমি কখনোই নিজেকে নির্বাসিত লেখক মনে করি না। আমি আমার নিজের শহরে বেড়ে উঠেছি। আমার বাবা একজন কূটনীতিক ছিলেন। বাবার চাকরি সূত্রে আমি ব্রাজিল, চিলি, আর্জেনটিনা, আমেরিকায় আমার শৈশব-কৈশোর কাটানোর সুযোগ পেয়ছি। আমি পড়াশোনাও করেছি সুইজারল্যান্ডে। এতগুলো সংস্কৃতির সংস্পর্শে বেড়ে ওঠার মধ্যে দিয়ে বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে আমি আমার দেশকে পর্যবেক্ষণ করার সুযোগ পেয়েছি। এ জন্য আমি অনেক কৃতজ্ঞ। আমাদের মহৎ ঔপন্যাসিক জুয়ান রোলফো কখনোই তাঁর শহর ত্যাগ করেননি। সে শহরেই তিনি টায়ার এর ব্যবসা করতেন। শহরের চারপাশে ঘুরে নানা গল্প সংগ্রহ করতেন। আমার অবস্থান অনেকটা ভিন্ন। কেননা আমি সেই ছোটবেলা থেকেই মেক্সিকো শহরকে বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখার সুযোগ পেয়ছি। আমি যখন দশবছরের বালক ছিলাম, তখন প্রেসিডেন্ট কার্ডেনাস বেদেশি কোম্পানিকে তেলের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। তখন যুক্তরাষ্ট্রে মেক্সিকানদের বিরোদ্ধে প্রতিবাদ হয়েছিল। তখন একটা শিরোনাম হয়েছিল পত্রিকায়, ‘মেক্সিকান কমিউনিস্টরা আমাদের তেল চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে।’ তখন স্কুলে মেক্সিকান বন্ধুদের আমি সন্দেহের দৃষ্টিতে দেখতাম। আমি সবসময় মেক্সিকোর বাইরেই বড় হয়েছি। তবে সবসময় এটা ধারণ করতাম—আমি একজন মেক্সিকান। মেক্সিকোর বাইরে বেড়ে ওঠার কারণে আমার জীবনে একটা চমৎকার অভিজ্ঞতার সৃষ্টি হয়েছিল। যখন আমি আর্জেন্টিনা ও চিলিতে ছিলাম, তখনো নিজেকে মিক্সিকান হিসেবেই ভাবতাম। কেননা মেক্সিকো সমসময়ই আমার জন্য একটা রহস্য ছিল। তুমি হয়ত জানো, মার্কেজ যখন মেক্সিকোর রাজনৈতিক পরিস্থিতি বুঝতে পারছিলেন না তখন মেক্সিকোর জাতীয় নৃতত্ত্ব জাদুঘরে গিয়ে ‘অ্যাজটেক’ জাতিগোষ্ঠীর প্রধান দেবীর (সর্পবেষ্টিত) মূর্তির সামনে গিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। সত্যি মেক্সিকো একটি জটিল ও রহস্যাবৃত দেশ। আমি নিজেও মেক্সিকো সম্পর্কে তেমন বেশি কিছু জানতে পারিনি। তাই আমার অনেক লেখায় আমি তা বোঝার চেষ্টা করেছি।
লিলি: আপনি অনেক নির্বাসিত লেখককে নিয়ে কথা বলেছেন। যতদূর জানি, নির্বাসিত স্প্যানিশ লেখক জুয়ান গয়তিসুলো আপনার একজন ভালো বন্ধু।
ফুয়েন্তেস: আমি জুয়ানকে নিয়ে অনেক মন্তব্যই করেছি। আমি মনে করি, স্পেনের একজন মহৎ লেখক হলেন জুয়ান। যদিও আমি তাকে একজন স্প্যানিশ লেখক হিসেবে মনে করি না। অনেক বছরই জুয়ানের কোনো লেখা স্প্যানিশ ভাষায় প্রকাশিত হয়নি। আমি মনে করি, মার্কেজের মতো জুয়ানও স্প্যানিশ-আমেরিকান লেখক। জুয়ান লেখার ক্ষেত্রে খুব ঝুঁকি নিতে প্রস্তুত ছিলেন সবসময়। যদি লেখক হিসেবে তুমি একবার নিশ্চিত হয়ে যাও, যে বিষয়বস্তুকে তুমি একরকমভাবে তোমার লেখায় উপস্থাপন করতে যাচ্ছ এবং তুমি এতে স্বস্থি বোধ করছ, তাহলে আমি বলব, তুমি অনেকটা ভুল সিদ্ধান্তেই উপনীত হয়েছ। তোমাকে অবশ্যই তোমার বিষয়বস্তু নিয়ে উদ্বিগ্ন থাকতে হবে। এবং সবসময় নতুন, একটু আলাদা কিছু একটা করার কথা ভাবতে হবে। জুয়ান সেরকমই একজন লেখক ছিলেন। কখনোই স্থির থাকতেন না। ওই সবসময় লেখায় নতুন কোনো বিষয়কে পরীক্ষামূলকভাবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করতেন।
লিলি: জুয়ান একজন স্প্যানিশ লেখক ছিলেন, যিনি আরবীয় সংস্কৃতিকে ধারণ করেছেন। তিনি সতের শতকে স্পেন আগত আরবদের নিয়ে লিখেছেন। আপনি এ বিষয়ে কী ভাবেন?
ফুয়েন্তেস: আসলে আরব সাহিত্য ও স্প্যানিশ সাহিত্যের মধ্যে একটা মিল ঘটানোর চেষ্টা করছেন জুয়ান। স্প্যানিশ ভাষায় ব্যাবহৃত প্রায় চল্লিশ ভাগ শব্দই আরবি থেকে নেওয়া। আরবরা সতের শতকের পুরোটাই স্পেন দখল করেছিল। আরবরাই স্পেনে জল নিয়ে আসে, স্থাপত্য নিয়ে আসে, সংগীত নিয়ে আসে। আরবরা স্প্যানিশদের পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হতেও শিখিয়েছে। আরবরা আসার আগে স্প্যানিশরা কখনো স্নান করতে শেখেনি। জুয়ান আসলে দুই সংস্কৃতির মধ্যে একটা মেলবন্ধন করতে চেয়েছিলেন।
লিলি: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসনের বিষয়ে আপনার মতামত জানতে চাই…
ফুয়েন্তেস: আসলে একটা উভয়মুখী দ্বন্দের মতো। প্রকৃত অর্থে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মী চাই। মেক্সিকান কর্মী ছাড়া মার্কিনিরা এক কাপ চাও পান করতে পারে না। তাদের যেকোনো কাজের জন্য চাই অন্যদেশের কর্মী। আমি আশা করি, এক সময়ম মেক্সিকো এই বেকারত্ব দূর করতে পারবে। যুক্তরাষ্ট্র এখনো মনে করে, এটা সেই উনিশ শতকের ‘পোস্ট-ইন্ডাস্ট্রিয়েল’ সমাজ ব্যবস্থা। এখন আর সেরকম পরিস্থিতি নেই। এখন আমরা একটা নতুন বাস্তবতায় উপনীত হয়েছি। তবে মেক্সিকো সরকারকেও সম্পূর্ণ দায়িত্ব নিতে হবে। তাছাড়া আমার বিশ্বাস ধীরে-ধীরে এ ব্যবস্থার পরিবর্তন হবে। মেক্সিকোতেও এখন জনশক্তির প্রয়োজন আছে।
লিলি: আপনার কি মনে হয় না যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত লাতিন আমেরিকানরা একটা ভীতিকর পরিস্থিতির মধ্যে আছে।
ফুয়েন্তেস: না মোটেও না। যখন আমি দেখি লস অ্যাঞ্জেলস কিংবা সিটলের মতো প্রদেশে রাস্তায় লাখ লাখ মানুষ প্রতিবাদী হয়ে উঠছে, তখন ভয়ের কিছু নেই। এখন অভিবাসীরাও রাস্তায় নেমে আন্দোলন করছে। আমি বলব, এদেশের মানুষের নিজেদের কিছু করার ক্ষমতা নেই। মেক্সিকান কর্মীদের ছাড়া মার্কিনরা কিছুই করতে পারে না।
লিলি: আপনার কি মনে হয় কর্মক্ষেত্রে মার্কিনিরা অনেকটা শ্রেণী প্রথা চালু করেছে, যে কারণে অনেক বিদেশি কর্মী নাগরিকত্বের চেয়ে কর্মক্ষেত্রে তাদের অধিকার বেশি দাবি করেন। যদি এমন কিছু ঘটেই থাকে তাহলে কি এটা বলা যায় না এই কর্মীরা হচ্ছেন আধুনিক দাস।
ফুয়েন্তেস: আসলে অভিবাসীদের মধ্যে একটা নতুন ধারণা সোচ্চার হয়েছে। তবে অভিবাসন প্রক্রিয়াটি হচ্ছে একটা সুযোগ কোনো সমস্যা নয়। এবং এটি একটি সুযোগ এই অর্থে যে, এটা একতরফা আইন দিয়ে শুরু হয়েছে, কেনেডি-ম্যাককেইনের আইনের কথাই বলা যাক। যুক্তরাষ্ট্র ও মেক্সিকোর মধ্যে এটা একটা দ্বিপাক্ষিক চুক্তিও বটে। এই সমস্যা শুধু একটি জাতীয় সমস্যাই নয়। আমি অভিবাসী কর্মজীবিদের সমস্যা সমাধানের জন্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সহযোগিতা প্রত্যাশা করি।
লিলি: আমি একটু ভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলতে চাই। অন্য দেশকে গণতন্ত্রে উন্নীত করার ক্ষেত্রে আমেরিকার সিদ্ধান্তকে আপনি কিভাবে দেখেন?
ফুয়েন্তেস: গণতন্ত্র এমন স্বস্তা কিছু নয় যে, চাইলেই কোকাকোলার মতো অন্য দেশ থেকে আমদানি করা যায়। মেক্সিকো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে রূপান্তরিত হয়েছে। কেননা মেক্সিকানরা দীর্ঘদিন যাবত গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছিল। তাঁর জন্য দীর্ঘদিনের সংগ্রাম, সম্ভাবনা, ইতিহাসের প্রয়োজন হয়। গণতন্ত্র জোর করে অর্জন করতে গেলে তার ভিত্তি দুর্বল থাকে। এটা ভাবা হাস্যকর হবে যে, কোনো দেশের একনায়কতন্ত্র কিংবা রাজতন্ত্র ভেঙে গিয়ে গণতন্ত্রের উত্থান ঘটবে কেবল যুক্তরাষ্ট্রের কল্যাণেই। লাতিন আমেরিকার সব একনায়করাই যুক্তরাষ্ট্রের হাতের পুতুল, তাহলে সত্যিকার অর্থে আমরা কোন গণতন্ত্রের কথা বলছি? গণতন্ত্র কেবল কোনো নির্দিষ্ট ভূ-খণ্ডের জনগণের আকাঙ্ক্ষার দ্বারাই গঠিত হতে পারে।
লিলি: আপনি কি এখনো বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় বক্তৃতা দিতে পছন্দ করেন ?
ফুয়েন্তেস: শোনো আমি একজন লেখক। আমি আমার দিন শুরু করি লেখালেখির মধ্য দিয়েই। এটা আমার জীবন। তবে শুধু লেখালেখি আর পড়াশোনার পাশাপাশি একটু বিশ্রামেরও প্রয়োজন হয়। বক্তৃতা দেওয়া কিংবা ভ্রমণ করা এগুলো আসলে লেখালেখির ফাঁকে একটু বিশ্রামের কাজ দেয়। যা আমি উপভোগ করি। তবে আমি একেবারে নতুন মানুষদের সঙ্গে পরিচিত হতে খুব পছন্দ করি—বিশেষ করে তরুণদের সঙ্গে।
লিলি: আপনার পছন্দের বইয়ের নাম যদি জিজ্ঞেস করি?
ফুয়েন্তেস: আসলে আমার পছন্দের বইয়ের তালিকাটা অনেক দীর্ঘ। চাইলেই কয়েকটার নাম বলতে পারি না।
লিলি: ছুটিতে বেশিরভাগ সময় কিভাবে কাটান?
ফুয়েন্তেস: কিছুটা সময় লন্ডনে থাকি। সেখান থেকে মেক্সিকো। বাকি সময়টা ইউরোপের নানা দেশ অথবা যুক্তরাষ্ট্রে কাটাই।