মীর রবি—এ সময়ের কবি। ইতোমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে তার কবিতার বই ‘অ্যাকোরিয়ামে মহীরুহ প্রাণ’ ও ‘ইরেজারে আঁকা ব্ল্যাক মিউজিক’। এবার ২০২০ সালের অমর একুশে গ্রন্থমেলায় প্রকাশিত হতে যাচ্ছে তার তৃতীয় কবিতার বই ‘ক্রস মার্কার’। বইটি রচিত হয়েছে চারটি পর্বে। ঢাকা ট্রপিক, সেক্স অ্যান্ড পিস, পলি কনসার্ট ও লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড। ‘ক্রসমার্কার’ থেকে চিন্তাসূত্রে প্রকাশিত হলো চারটি কবিতা।
মেট্রোপলিটন সিটি
রেডিও কলোনি-ঝুম বৃষ্টি, মেট্রোপলিটন ছাতায় কনেস্টবল মাপে জলের গতিবেগ। আগামী বাহাত্তর ঘণ্টা রেইনি সিজন, রেড অ্যালার্ট দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। সিটি মেয়র নাগরিক সভায় চিন্তিত—তাকে কিছু নৌকা বানাতে হবে।
রাস্তার মোড়ে পুলিশ বক্স—বৃষ্টিতে ভিজছে—কাকভেজা কোনো কেরানি, ফুটো ছাতায় বাড়ি ফিরছে ঘোর সন্ধে। মেট্রোপলিটন আকাশে ঘন মেঘ—সাত শিশু জলে ডুবে গেছে, একজন বৃদ্ধ পড়েছে ম্যানহোলে—তাকে উদ্ধারে ব্যস্ত ফায়ার ব্রিগ্রেড। লাইভ টেলিকাস্ট করছে নিউজ টোয়েন্টিফোর।
মেট্রোপলিটন আয়নায় কলেজ না ফেরা ছাত্রীর মা কান্না মোছে। এফএম মর্নিং শো-রবীন্দ্রসংগীত, বৃষ্টি, শহরের মিশ্র প্রতিক্রিয়া—কাঁদছে নাগরিক ম্যুরাল…
ক্রিসমাস
ক্রিসমাসে ব্যাপ্টিস্ট চার্চে গেলে দেখতে পাবে একটা কালো মুখ—ক্যালিফোর্নিয়ার শাদা চামড়া ঢেকে দাঁড়িয়ে আছে দীর্ঘদিন। মাছরাঙার মতো তীক্ষ্ণ প্রতীক্ষার চোখ—লী গোমেজ, শতবর্ষী দেবদারুর পাতায় কান্না মুছছে।
অপেক্ষা করলে মানুষ যেমন হয়—যা হওয়ার কথা, তার চেয়েও বেশি অভিমানী মনে হবে তাকে। ক্রিসমাস প্রার্থনার শেষ পর্যন্ত, কুয়াশার চাদরে উত্তরের রাত গভীরে গেলে লী চলে যাবে নিঃসঙ্গ পার্কে—যেখানে নগ্ন যিশুরা ঘুমায় শোক উদযাপনে চুমুর প্রার্থনা করে।
সান্তাক্লোজ দুঃখ নেবেন এই ভেবে—বাইবেলের কোথাও লেখা নেই—কেউ দুঃখ পাক। আর আমি জানালার পর্দা টানিয়ে শুয়ে পড়ব, স্বপ্ন হয়ে ঘুরবে অসমাপ্ত দাম্পত্যের দিন।
ডেমোক্রেসির ব্রা
রোদে শুকানো ব্রা, দুধের গন্ধ আসে। দুধ এখন রাষ্ট্রীয় ইস্যু—অধ্যাপক, শারীরিক তরল ফেলে নোংরা করবে না। টিএসসি থেকে শাহবাগ আসতে—ক’জন তরুণী ও তাদের প্রেমিকার সমাবেশ—প্যাড ভ্যাটমুক্ত করতে হবে। বড় পর্দার টিভিতে স্ট্রবেরি শো, কনডম দেখে তিনজন কাক ভাবছে—মানুষ আস্ত রাখবে না কিছু।
ভাবছি ফিডার খাওয়ানো শিশুর মুখ, গাভীর ওলান, তুলতুলে ত্বক—এক্স ভিডিও ডটকমে বড় বড় দুধ, চুমুবে রেস্ট রুমে। জার্নালে পড়েছি—ডেমোক্রেসির ব্রা অধিবেশনে যাবে—নারী ঢাকবে না বুক। ‘অধিক মাতৃদুগ্ধ পান শৈত্যনাশক’ বয়ান—দরজায় ফুটোয় দেখাবে সঙ্গমের শেষ দৃশ্য—গাভীরা ব্রা পরতে শিখছে।
সুইমিং পুলে
মামি ভাত রাঁধে—পানকৌড়ি মাংস, ঝোলে ভাত মেখে রপ্ত করি ডুব সাঁতারের কৌশল। জলে ডুবে মাছ সুইমিং পুলে যায়—লাফ দেওয়ার ভঙ্গি দেখে নিজেকে ব্যাঙ ভাবি।
একটা সাপ শিকারে ব্যস্ত, ধীর গতিতে এগিয়ে আসে—পাখি ও পালক ওড়ে। উড়ে গেলে ডুবি সুইমিংপুলে—শিকার হওয়া পানকৌড়ির মতো পড়ে থাকি সিঁড়ির ওপরে।