পদ্যের বিপ্রতীপ হালচাল
প্রথম যেদিন হাত ছুঁয়েছি দৃষ্টি ছিল অনেকদূর…
বন-পাহাড়ির মাদল বেজে ধরলো কাঁপন সমুদ্দুর
ছায়া-সোনা ‘রাতালগুল’-এ কলকলানি জলের ‘পর
পাখির ডানা সবুজ শাঁখে ফড়ফড়িয়ে উঠল ঝড়।
মনের বসত উল্টোস্রোতে ‘মাধব’ দ্বিধায়, কাঁপে রতি
ধবল মেঘে কানাকানি, চাঁদ ছড়ালো অরুণ-দ্যুতি
গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টিছটায় সারা অঙ্গে ছড়ায় জ্যোতি
মন রাঙালো আবীর লীনে শরীর খেলে বিদ্যুৎ গতি।
হঠাৎ…! কেন ওড়না ওড়ে রেললাইনের স্লিপের মাঝ
পাথরগুলো আকাশ ফুঁড়ে স্বপ্নছোঁয়ার নেইতো সাজ!
কোন সংকোচে ছিলে সেদিন ভাবলেশহীন কষ্টরাজ,
কোন্ খটকাটির বাটখারাটা বেদম পেটায় দ্বন্দ্ববাজ।
বহুদিন পর প্রথম ছোঁয়ার কুশিকাটায় সেই সুপুরুষ
নারীর বিহার, গমনে তার পৌরুষ চূড়া কি কাপুরুষ?
দ্বিধা-সংকোচ পাথরবুকে খাঁচার পাখি কিনে দিলখুশ্
একটু ছোঁয়ার যৌনসুখে পাল্লা দিলে হও ক্যান বেহুশ।
রক্ত-মাংসের নারী-পুরুষ এক প্রজাতির দুইটি লিঙ্গ,
যৌন ইচ্ছা সমান হলেও আগে চাইলেই খানকি অঙ্গ
জীবন তো নয় নারীর কুশন লজ্জাবতীর নকল রঙ্গ
এড্রোনালিন ফুঁসে উঠলেই তুমিও দাও লজ্জা ভঙ্গ।
কবিতার সেকাল-একাল
আধুনিক চাঁদ, চাই যে আমার
অনাধুনিকের ভেতর জ্বলছে ঝুলবারান্দা
প্রতিটি দশক।
বিহারি লালের ফ্যাকাশে মলাট
গোঁত্তা খেয়ে আছে। দূরবীন ঠোঁটে কাঁপে ঈশ্বর
উঁচু গলা বক।
গ্রিলের বাইরে আজতক যারা
নাইতে নেমেছে; শ্রাবণ-কাঁথায় হারে স্বরলিপি
পৌষের মাঠ।
অভোগী রাতের রতিসুখ ভুলে
নিমগ্ন কবি, প্রতি অক্ষরে সুরের আলাপ
একান্ত পাঠ।
উত্থিত শ্লোক লেখে খেরোখাতা
দশকের নয়, হাজার বছর আগে লেখা সব
নতুন কী বোধ?
উত্তরাধুনিক সিলসিলা বিষ
কচ্ছপি পায়ে হেঁটে আসে রোদে, মাকাল ফলের
মতো নেয় শোধ।
একার সন্ন্যাস
কলার পাতায় কয়লায় লেখা দু’চার চর্যা
মুছে ফেলি একা পোড়া রৌদ্রের উষ্ণ তাপ।
সংঘ ছাড়াই প্রসারণ হয়! কলমের কালি?
প্রতিষ্ঠানের মহাজনী সুদ বাড়ে কবিতায়
দলবদ্ধ, ও…কানার মিছিলে ছোটে প্রতাপ।
যে অক্ষমতা—বিশ্ব শোকেই করে ফালিফালি!
উত্তরীয়’র লোভাতুর বিষ ম্যাপল পাতায়
লিখে রাখে ধ্বনি, স্বর যন্ত্রণা, অবাক পৃথিবী।
তামাটে বালুর তল্লাটে খুঁজি জলজ জীবন।
পরিচয়হীন আত্মমগ্ন একা-সন্ন্যাসে—
পরিণত শ্লোকে, প্রতিটি সুক্ত বাঁধি বেহিসেবী।
যে শোক একার…ফর্মা ফর্মা বাতাসার ঘ্রাণ, হয় কি ওজন?